কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কম্পিউটার অপারেটর আসাদুজ্জামান একই সঙ্গে ক্যাশিয়ার পদেও অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। সরকারি চাকরির বিধি অনুযায়ী, একজন কর্মচারী তিন বছরের বেশি একই কর্মস্থলে থাকতে পারেন না। কিন্তু আসাদুজ্জামান ক্ষমতার দাপটে কক্সবাজারে কাটিয়ে দিয়েছেন ১৭ বছর। সূত্র জানায়, সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের সহযোগিতায় তিনি এই দীর্ঘসময় কক্সবাজারে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। বদলির বিধান থাকা সত্ত্বেও ঢাকা এবং চট্টগ্রামের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এক জেলায় দুই পদ দখল করে রেখেছেন তিনি। অভিযোগ রয়েছে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সন্তুষ্ট রাখতে তিনি নিয়মিত কক্সবাজার থেকে কাঁচা মাছ ও শুঁটকি পাঠান। অফিস কম্পাউন্ডে প্রায়ই আস্ত ছাগল জবাই করে রাতের পার্টির আয়োজন করেন। তার সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী বাদল কান্তি দে, যিনি অবসর নেওয়ার পরও মাস্টার রোলের মাধ্যমে বেতন পাচ্ছেন। এছাড়াও রাতে বিনোদনের নামে অবৈধ কর্মকা- চালানোর অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে। ঠিকাদারদের কাছ থেকে ১-২% কমিশন আদায় করে ভুয়া বিল উত্তোলন করেন। ত্রুটিপূর্ণ কাজ করেও তিনি ঠিকাদারদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে বিল পরিশোধ করে দেন।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী, একজন কর্মচারী অতিরিক্ত দায়িত্বে মাত্র এক-দুই মাস থাকতে পারেন। কিন্তু আসাদুজ্জামান ১৭ বছর ধরে ক্যাশিয়ারের পদও ভোগ করছেন। এমনকি এই সময়ের মধ্যে দুইজন ক্যাশিয়ার পোস্টিং পেলেও তারা দায়িত্ব বুঝে পাননি, বরং হয়রানির শিকার হয়ে বদলি হয়ে গেছেন। সরকারি চাকরিতে ৩ থেকে ৫ বছর পরপর বদলির নিয়ম থাকলেও আসাদুজ্জামান এই নিয়ম মানেননি।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বদলি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। তার নিজের একাধিক ব্যাংক হিসাব রয়েছে, যেখানে নিয়মিত অবৈধ লেনদেন হয়। আঁখি ইন্টারন্যাশনালের প্রোপাইটর আজম খান বলেন, আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় ও আদালতে দুটি হত্যা মামলা রয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ঘুষ, টেন্ডারবাজি, অর্থ আত্মসাৎ ও ঠিকাদারদের হয়রানির অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘদিন একই পদে থাকার সুবাদে ঠিকাদারদের কাছ থেকে বিল উত্তোলনের নামে ঘুষও নেন তিনি। অফিসের সরবরাহ কাজ এবং টেন্ডারসহ সবকিছুতে তার একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কম্পিউটার অপারেটর আসাদুজ্জামান বলেন, আমার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব অভিযোগ করা হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে আনিত হত্যা মামলা ও অন্যান্য অভিযোগ সম্পূর্ণ পরিকল্পিত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইবনে মায়াজ প্রামাণিক জানান, আমি নতুন যোগদান করেছি, তাই কিছু বলতে পারবো না। অভিযোগ থাকলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখবে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আলী আজগর বলেন, এই ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফজলুর রহমান বলেন, এক ব্যক্তি কিভাবে দুই পদে বহাল থাকতে পারেন? যদি তার বিরুদ্ধে কোন অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি মোহাম্মদ ইলিয়াস খান বলেন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কম্পিউটার অপারেটর আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কম্পিউটার অপারেটর আসাদুজ্জামান একই সঙ্গে ক্যাশিয়ার পদেও অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। সরকারি চাকরির বিধি অনুযায়ী, একজন কর্মচারী তিন বছরের বেশি একই কর্মস্থলে থাকতে পারেন না। কিন্তু আসাদুজ্জামান ক্ষমতার দাপটে কক্সবাজারে কাটিয়ে দিয়েছেন ১৭ বছর। সূত্র জানায়, সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের সহযোগিতায় তিনি এই দীর্ঘসময় কক্সবাজারে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। বদলির বিধান থাকা সত্ত্বেও ঢাকা এবং চট্টগ্রামের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এক জেলায় দুই পদ দখল করে রেখেছেন তিনি। অভিযোগ রয়েছে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সন্তুষ্ট রাখতে তিনি নিয়মিত কক্সবাজার থেকে কাঁচা মাছ ও শুঁটকি পাঠান। অফিস কম্পাউন্ডে প্রায়ই আস্ত ছাগল জবাই করে রাতের পার্টির আয়োজন করেন। তার সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী বাদল কান্তি দে, যিনি অবসর নেওয়ার পরও মাস্টার রোলের মাধ্যমে বেতন পাচ্ছেন। এছাড়াও রাতে বিনোদনের নামে অবৈধ কর্মকা- চালানোর অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে। ঠিকাদারদের কাছ থেকে ১-২% কমিশন আদায় করে ভুয়া বিল উত্তোলন করেন। ত্রুটিপূর্ণ কাজ করেও তিনি ঠিকাদারদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে বিল পরিশোধ করে দেন।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী, একজন কর্মচারী অতিরিক্ত দায়িত্বে মাত্র এক-দুই মাস থাকতে পারেন। কিন্তু আসাদুজ্জামান ১৭ বছর ধরে ক্যাশিয়ারের পদও ভোগ করছেন। এমনকি এই সময়ের মধ্যে দুইজন ক্যাশিয়ার পোস্টিং পেলেও তারা দায়িত্ব বুঝে পাননি, বরং হয়রানির শিকার হয়ে বদলি হয়ে গেছেন। সরকারি চাকরিতে ৩ থেকে ৫ বছর পরপর বদলির নিয়ম থাকলেও আসাদুজ্জামান এই নিয়ম মানেননি।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বদলি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। তার নিজের একাধিক ব্যাংক হিসাব রয়েছে, যেখানে নিয়মিত অবৈধ লেনদেন হয়। আঁখি ইন্টারন্যাশনালের প্রোপাইটর আজম খান বলেন, আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় ও আদালতে দুটি হত্যা মামলা রয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ঘুষ, টেন্ডারবাজি, অর্থ আত্মসাৎ ও ঠিকাদারদের হয়রানির অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘদিন একই পদে থাকার সুবাদে ঠিকাদারদের কাছ থেকে বিল উত্তোলনের নামে ঘুষও নেন তিনি। অফিসের সরবরাহ কাজ এবং টেন্ডারসহ সবকিছুতে তার একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কম্পিউটার অপারেটর আসাদুজ্জামান বলেন, আমার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব অভিযোগ করা হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে আনিত হত্যা মামলা ও অন্যান্য অভিযোগ সম্পূর্ণ পরিকল্পিত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইবনে মায়াজ প্রামাণিক জানান, আমি নতুন যোগদান করেছি, তাই কিছু বলতে পারবো না। অভিযোগ থাকলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখবে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আলী আজগর বলেন, এই ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফজলুর রহমান বলেন, এক ব্যক্তি কিভাবে দুই পদে বহাল থাকতে পারেন? যদি তার বিরুদ্ধে কোন অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি মোহাম্মদ ইলিয়াস খান বলেন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কম্পিউটার অপারেটর আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।