এমন বাঙালি পাওয়া যাবেনা মাছ খেতে পছন্দ করেনা। মাছ খেতে হলেই কাটতে হয়। এই কাটাকুটি বিষয়টি অনেকের কাছে বিরক্তিকর। এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে মাছকাটাকে জীবিকা হিসেবে বেছে নিয়েছে অনেকে। এমন কিছু লোক পলাশেও আছে। কেউ কেউ এটাকে বাড়তি উপার্জনও হিসেবে নিয়েছেন।
পলাশে ছোটবড় বাজারের সংখ্যা ২২টি। এর মধ্যে বড় বাজার ১৪টি।
প্রতিটি বাজারের মাছ বাজারের পাশে ধারালো বটি নিয়ে বসে মাছ কাটতে দেখা যায় মাছ কাটুনীদের। ক্রেতাদের ইচ্ছামত তারা মাছ কেটে, পরিষ্কার করে পলিথিন ব্যাগে ভরে দেয়। কাটনীরা বড়মাছ প্রতি কেজি ২০টাকা, ছোটমাছ প্রতিকেজি ৫০-৬০টাকা নিয়ে থাকে।
সরেজমিনে বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব বাজারেই ৭/৮জন তাদের হেল্পারসহ মাছ কাটুনী রয়েছে। বাজারগুলোতে সকাল ৪/৫ ঘন্টা বিকেলের বাজারে ৫/৬ ঘন্টা তারা মাছ কাটে। পলাশ- ঘোড়াশাল শিল্পাঞ্চল থাকায় ক্রেতার সংখ্যা অনেক বেশি।
পলাশের বাজারগুলোতে অনেকদিন ধরে মাছ কাটছে হরিদাস দাস, লিটন দাস,আয়ান মিয়া। হরিদাস জানায়, আমরা যারা সকাল বিকেল মাছ কাটি প্রতিদিনই গড়ে ৬ শত হতে হাজার টাকা ইনকাম করি। সংসারও ভালই চলে।
অনেক বেকার ছেলে আগে কোন কাজ না পেয়ে মাছ কাটায় নেমে পড়ে। তারাও ভাল আয় করছে। ঘোড়াশাল বাজারে এক দম্পতি মাছ কাটে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহিলাকে তার স্বামী সাহায্য করে। জানা যায় এই দম্পতির আয় দৈনিক আটশত হতে বারশত টাকা। ভাগ্য ভালো হলে হাটের দুদিন ১৫০০ টাকাও হয়।
এই আয় দিয়েই তাদের সংসার ভালোই চলছে। সপ্তাহে ছুটির দিনগুলোতে বাজারে ক্রেতা বেশি থাকায় কিছুটা বাড়তি আয় হয়। তাই সপ্তাহের বন্ধের দিনের আশায় থাকেন তারা।
পঞ্চাশোর্ধ মাছ কাটুনী এক মহিলা আগে মানুষের বাসায় বাসায় কাজ করতো। টাকা জমিয়ে একটি ধারালো বটি কিনে সে মাছ কাটার কাজে নেমে পড়েন। এখন মাছ কেটে স্বাবলম্বী। প্রায় চার বছর সে এই পেশায় নিয়োজিত।
শুধুই মাছ কাটা নয়,মাছ কাটার পর মাছে আঁশ জমিয়ে শুকিয়ে বিক্রি করেও টাকা আয় করছে তারা।
এই পেশায় আয় কেমন হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাছ কাটলে তার আয় হয় ৪০০-৫০০টাকা। রাত পর্যন্ত করলে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা আয় হয়। তবে শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটি থাকার কারণে মাছের চাহিদা বেশি থাকে। চাকুরীজীবীরা এসে বাজার থেকে বেশি বেশি মাছ কেটে বাড়ি নিয়ে যান। এদিন একটু আয় ভালো হয়।
ঘোড়াশাল বাজারে মাছ কাটাচ্ছিলেন এলাকার এক গৃহিণী। তিনি বললেন, বর্তমানে সন্তানদের লেখাপড়া, স্কুল, কোচিংসহ সংসারের অন্যান্য কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। এরপর আবার রান্নাবান্নার কাজ করতে হয়। তাই মাছ কাটার তেমন সময় হয় না। বাড়তি ২০-৩০ টাকা খরচ হলেও সময় অল্প লাগে, ঝামেলা থেকেও বেঁচে যাই। পাইকসা গ্রামের ফজলুর রহমান বলেন, এখন তো টাকা দিয়েও কাজের মানুষ পাওয়া যায় না। তাই সময় বাঁচাতে বাজার থেকে কেনা মাছগুলো কেটে নিয়ে যাই। বরং তারা না থাকলে অনেক বড় ছোট মাছ খাওয়াই হতো না।
ঘোড়াশাল বাজার বণিক সমিতির সেক্রেটারি বলেন, মাছ কেটেও যে সংসার চালানো যায় এটা একটা সংসার চালানোর এক নতুন উদ্যোগ। তবে আমরা ক্রেতারাও তাদের জন্য উপকৃত হচ্ছি। কারণ অনেক দম্পতি দুজনই চাকরি করে, এতে তাদের সময়টা বেঁচে যায়।
সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫
এমন বাঙালি পাওয়া যাবেনা মাছ খেতে পছন্দ করেনা। মাছ খেতে হলেই কাটতে হয়। এই কাটাকুটি বিষয়টি অনেকের কাছে বিরক্তিকর। এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে মাছকাটাকে জীবিকা হিসেবে বেছে নিয়েছে অনেকে। এমন কিছু লোক পলাশেও আছে। কেউ কেউ এটাকে বাড়তি উপার্জনও হিসেবে নিয়েছেন।
পলাশে ছোটবড় বাজারের সংখ্যা ২২টি। এর মধ্যে বড় বাজার ১৪টি।
প্রতিটি বাজারের মাছ বাজারের পাশে ধারালো বটি নিয়ে বসে মাছ কাটতে দেখা যায় মাছ কাটুনীদের। ক্রেতাদের ইচ্ছামত তারা মাছ কেটে, পরিষ্কার করে পলিথিন ব্যাগে ভরে দেয়। কাটনীরা বড়মাছ প্রতি কেজি ২০টাকা, ছোটমাছ প্রতিকেজি ৫০-৬০টাকা নিয়ে থাকে।
সরেজমিনে বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব বাজারেই ৭/৮জন তাদের হেল্পারসহ মাছ কাটুনী রয়েছে। বাজারগুলোতে সকাল ৪/৫ ঘন্টা বিকেলের বাজারে ৫/৬ ঘন্টা তারা মাছ কাটে। পলাশ- ঘোড়াশাল শিল্পাঞ্চল থাকায় ক্রেতার সংখ্যা অনেক বেশি।
পলাশের বাজারগুলোতে অনেকদিন ধরে মাছ কাটছে হরিদাস দাস, লিটন দাস,আয়ান মিয়া। হরিদাস জানায়, আমরা যারা সকাল বিকেল মাছ কাটি প্রতিদিনই গড়ে ৬ শত হতে হাজার টাকা ইনকাম করি। সংসারও ভালই চলে।
অনেক বেকার ছেলে আগে কোন কাজ না পেয়ে মাছ কাটায় নেমে পড়ে। তারাও ভাল আয় করছে। ঘোড়াশাল বাজারে এক দম্পতি মাছ কাটে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহিলাকে তার স্বামী সাহায্য করে। জানা যায় এই দম্পতির আয় দৈনিক আটশত হতে বারশত টাকা। ভাগ্য ভালো হলে হাটের দুদিন ১৫০০ টাকাও হয়।
এই আয় দিয়েই তাদের সংসার ভালোই চলছে। সপ্তাহে ছুটির দিনগুলোতে বাজারে ক্রেতা বেশি থাকায় কিছুটা বাড়তি আয় হয়। তাই সপ্তাহের বন্ধের দিনের আশায় থাকেন তারা।
পঞ্চাশোর্ধ মাছ কাটুনী এক মহিলা আগে মানুষের বাসায় বাসায় কাজ করতো। টাকা জমিয়ে একটি ধারালো বটি কিনে সে মাছ কাটার কাজে নেমে পড়েন। এখন মাছ কেটে স্বাবলম্বী। প্রায় চার বছর সে এই পেশায় নিয়োজিত।
শুধুই মাছ কাটা নয়,মাছ কাটার পর মাছে আঁশ জমিয়ে শুকিয়ে বিক্রি করেও টাকা আয় করছে তারা।
এই পেশায় আয় কেমন হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাছ কাটলে তার আয় হয় ৪০০-৫০০টাকা। রাত পর্যন্ত করলে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা আয় হয়। তবে শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটি থাকার কারণে মাছের চাহিদা বেশি থাকে। চাকুরীজীবীরা এসে বাজার থেকে বেশি বেশি মাছ কেটে বাড়ি নিয়ে যান। এদিন একটু আয় ভালো হয়।
ঘোড়াশাল বাজারে মাছ কাটাচ্ছিলেন এলাকার এক গৃহিণী। তিনি বললেন, বর্তমানে সন্তানদের লেখাপড়া, স্কুল, কোচিংসহ সংসারের অন্যান্য কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। এরপর আবার রান্নাবান্নার কাজ করতে হয়। তাই মাছ কাটার তেমন সময় হয় না। বাড়তি ২০-৩০ টাকা খরচ হলেও সময় অল্প লাগে, ঝামেলা থেকেও বেঁচে যাই। পাইকসা গ্রামের ফজলুর রহমান বলেন, এখন তো টাকা দিয়েও কাজের মানুষ পাওয়া যায় না। তাই সময় বাঁচাতে বাজার থেকে কেনা মাছগুলো কেটে নিয়ে যাই। বরং তারা না থাকলে অনেক বড় ছোট মাছ খাওয়াই হতো না।
ঘোড়াশাল বাজার বণিক সমিতির সেক্রেটারি বলেন, মাছ কেটেও যে সংসার চালানো যায় এটা একটা সংসার চালানোর এক নতুন উদ্যোগ। তবে আমরা ক্রেতারাও তাদের জন্য উপকৃত হচ্ছি। কারণ অনেক দম্পতি দুজনই চাকরি করে, এতে তাদের সময়টা বেঁচে যায়।