ঈদ আসছে। দেশের বিভিন্নস্থান থেকে সড়ক পথে বহু সংখ্যক যাত্রী বরিশাল আসবেন। তবে ১০ লাখ যাত্রীর ভরসা ঢাকা-বরিশাল রুটের লঞ্চ। কিন্তু এই রুটের নৌ যোগাযোগ এখন মাফিয়ারা নিয়ন্ত্রণ করবে। রাষ্ট্রীয় নৌপরিবহন সংস্থার সীমাহীন উদাসীনতা ও ব্যর্থতা যাত্রীদের দুর্ভোগ আর হয়রানি বাড়বে। ৪টি প্যাডেল হুইল ও দুটি স্ক্রু-হুইল যাত্রীবাহী যাত্রী পরিবহনের নৌযান থাকার পরেও করোনা সংকটের আগে থেকে বিআইডিব্লিউটিসি বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের নিরাপদ নৌযোগাযোগ থেকে হাত গুটিয়ে বসে আছে। ফলে বেসরকারি নৌযান মালিকদের কাছে যাত্রীরা জিম্মি হয়ে পরে। ২০২২ সনের জুনে পদ্মা সেতু চালু হবার ৩ বছর আগে থেকেই রাষ্ট্রীয় নৌ বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানটি যাত্রীসেবা সংকুচিত করতে শুরু করে। এমনকি আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগে ও পরে রাষ্ট্রীয় নৌ ও আকাশ পরিবহন সংস্থা দুটি বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের ঘরমুখি ও কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের নিরাপদ পথ চলায় এখনও কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেনি। রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন সংস্থা বিআরটিসির বরিশাল বাস ডিপোতে বাড়তি যাত্রীবাহী বাস না থাকায় কোনো বাড়তি যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হচ্ছেনা। অপরদিকে বেসরকারী নৌযান মালিকগণও বিষয়টি নিয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেননি। তবে পদ্মা সেতুর ধুয়া তুলে ৩ বছর ধরে নৌ যান মালিক সমিতি বরিশালে যাত্রীদের জিম্মি করেই প্রতিদিন ঢাকা এবং বরিশাল থেকে মাত্র ২টি করে যাত্রীবাহী নৌযান চালাচ্ছে। ফলে এসব নৌযানে যেমনি ডেকে যাত্রীরা জায়গা না পেয়ে অনেকটা মানবেতরভাবে ভ্রমনে বাধ্য হচ্ছেন। অন্যদিকে একটি কেবিন টিকেটের জন্য দিনের পর দিন হন্যে হয়ে বেসরকারি লঞ্চ কোম্পানীগুলোর অফিসে ধর্না দিতে হচ্ছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, কোনদিন কোন বরিশাল আসবে আর ঢাকা যাবে তা আগের থেকে কারো জানা না থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বাড়ছে। ফলে অনেক যাত্রী নিরাপত্তার ঝুঁকি সত্ত্বে¡ও সড়ক পথকেই বেছে নিচ্ছেন। কিন্তু সড়ক পথেও ঝক্কি-ঝামেলার শেষ নেই। বরিশাল থেকে ১৬৫ কিলোমিটার দূরের রাজধানিমুখী মহাসড়কের ৯৫ কিলোমিটার সড়কই সরু ও ঝুঁকিপূর্ণ। বরিশাল থেকে ভাঙা পর্যন্ত ওই ৯৫ কিলোমিটার মহাসড়ক অতিক্রমে স্বাভাবিক অবস্থাতেই ৩ ঘণ্টা লেগে যায়। ঈদের আগে ও পরে প্রায় কুড়ি দিন যানবাহনের আধিক্যের সময়টায় আরও ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টাও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন পর্যবেক্ষক মহল। এমন অবস্থাতেই আসন্ন ঈদে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ঘরে ফেরা ও ঈদ পরবর্তী কর্মস্থলমুখি যাত্রীদের কতদূর দুর্ভোগ পোহাতে হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কারণ বরিশালের সঙ্গে যুক্ত অন্য ৫টি জেলার বেশিরভাগ এলাকার যাত্রীদেরও এই বিভাগীয় সদর হয়েই যাতায়াত করতে হয়। আসন্ন ঈদের আগে পরে ১০ লাখ বাড়তি যাত্রী রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে বরিশাল এবং এর সন্নিহিত জেলাগুলোতে যাতায়াত করবেন।
বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি বিআইডব্লিউটিসির বাণিজ্য বিভাগে আলাপ করা হলেও তেমন কোনো সুখবর মেলেনি। তবে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রের মতে, সংস্থাটির ২টি স্ক্রু-হুইল নৌযান প্রস্তুত আছে। মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত দিলেই ঈদের অগে-পরে ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে দক্ষিণাঞ্চলে যাত্রী পরিবহন করা হবে। অন্যদিকে, একাধিক নৌযান মালিক কর্তৃপক্ষ আসন্ন ঈদের বিশেষ নৌযান পরিচালনা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানাতে পারেননি। বিষয়টি নিয়ে বিআইডব্লিউটিএর তরফ থেকে তেমন কিছু বলতে না পারলেও ইতোমধ্যে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে ইতোমধ্যে আসন্ন ঈদ যাত্রাকে নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে করতে এক সভায় বাড়তি ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি প্রদানসহ বেশ কিছু দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। তবে দেশের প্রধান যাত্রীবাহী রুট ঢাকা-বরিশাল নৌ-পথে ঠিক কয়টি নৌযান যাত্রী পরিবহন করবে, সেই ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানা যায়নি। বিষয়টি অনেকটাই বেসরকারি নৌযান মালিকদের ইচ্ছের ওপরেই নির্ভরশীল হয়ে আছে এখনও।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫
ঈদ আসছে। দেশের বিভিন্নস্থান থেকে সড়ক পথে বহু সংখ্যক যাত্রী বরিশাল আসবেন। তবে ১০ লাখ যাত্রীর ভরসা ঢাকা-বরিশাল রুটের লঞ্চ। কিন্তু এই রুটের নৌ যোগাযোগ এখন মাফিয়ারা নিয়ন্ত্রণ করবে। রাষ্ট্রীয় নৌপরিবহন সংস্থার সীমাহীন উদাসীনতা ও ব্যর্থতা যাত্রীদের দুর্ভোগ আর হয়রানি বাড়বে। ৪টি প্যাডেল হুইল ও দুটি স্ক্রু-হুইল যাত্রীবাহী যাত্রী পরিবহনের নৌযান থাকার পরেও করোনা সংকটের আগে থেকে বিআইডিব্লিউটিসি বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের নিরাপদ নৌযোগাযোগ থেকে হাত গুটিয়ে বসে আছে। ফলে বেসরকারি নৌযান মালিকদের কাছে যাত্রীরা জিম্মি হয়ে পরে। ২০২২ সনের জুনে পদ্মা সেতু চালু হবার ৩ বছর আগে থেকেই রাষ্ট্রীয় নৌ বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানটি যাত্রীসেবা সংকুচিত করতে শুরু করে। এমনকি আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগে ও পরে রাষ্ট্রীয় নৌ ও আকাশ পরিবহন সংস্থা দুটি বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের ঘরমুখি ও কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের নিরাপদ পথ চলায় এখনও কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেনি। রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন সংস্থা বিআরটিসির বরিশাল বাস ডিপোতে বাড়তি যাত্রীবাহী বাস না থাকায় কোনো বাড়তি যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হচ্ছেনা। অপরদিকে বেসরকারী নৌযান মালিকগণও বিষয়টি নিয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেননি। তবে পদ্মা সেতুর ধুয়া তুলে ৩ বছর ধরে নৌ যান মালিক সমিতি বরিশালে যাত্রীদের জিম্মি করেই প্রতিদিন ঢাকা এবং বরিশাল থেকে মাত্র ২টি করে যাত্রীবাহী নৌযান চালাচ্ছে। ফলে এসব নৌযানে যেমনি ডেকে যাত্রীরা জায়গা না পেয়ে অনেকটা মানবেতরভাবে ভ্রমনে বাধ্য হচ্ছেন। অন্যদিকে একটি কেবিন টিকেটের জন্য দিনের পর দিন হন্যে হয়ে বেসরকারি লঞ্চ কোম্পানীগুলোর অফিসে ধর্না দিতে হচ্ছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, কোনদিন কোন বরিশাল আসবে আর ঢাকা যাবে তা আগের থেকে কারো জানা না থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বাড়ছে। ফলে অনেক যাত্রী নিরাপত্তার ঝুঁকি সত্ত্বে¡ও সড়ক পথকেই বেছে নিচ্ছেন। কিন্তু সড়ক পথেও ঝক্কি-ঝামেলার শেষ নেই। বরিশাল থেকে ১৬৫ কিলোমিটার দূরের রাজধানিমুখী মহাসড়কের ৯৫ কিলোমিটার সড়কই সরু ও ঝুঁকিপূর্ণ। বরিশাল থেকে ভাঙা পর্যন্ত ওই ৯৫ কিলোমিটার মহাসড়ক অতিক্রমে স্বাভাবিক অবস্থাতেই ৩ ঘণ্টা লেগে যায়। ঈদের আগে ও পরে প্রায় কুড়ি দিন যানবাহনের আধিক্যের সময়টায় আরও ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টাও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন পর্যবেক্ষক মহল। এমন অবস্থাতেই আসন্ন ঈদে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ঘরে ফেরা ও ঈদ পরবর্তী কর্মস্থলমুখি যাত্রীদের কতদূর দুর্ভোগ পোহাতে হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কারণ বরিশালের সঙ্গে যুক্ত অন্য ৫টি জেলার বেশিরভাগ এলাকার যাত্রীদেরও এই বিভাগীয় সদর হয়েই যাতায়াত করতে হয়। আসন্ন ঈদের আগে পরে ১০ লাখ বাড়তি যাত্রী রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে বরিশাল এবং এর সন্নিহিত জেলাগুলোতে যাতায়াত করবেন।
বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি বিআইডব্লিউটিসির বাণিজ্য বিভাগে আলাপ করা হলেও তেমন কোনো সুখবর মেলেনি। তবে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রের মতে, সংস্থাটির ২টি স্ক্রু-হুইল নৌযান প্রস্তুত আছে। মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত দিলেই ঈদের অগে-পরে ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে দক্ষিণাঞ্চলে যাত্রী পরিবহন করা হবে। অন্যদিকে, একাধিক নৌযান মালিক কর্তৃপক্ষ আসন্ন ঈদের বিশেষ নৌযান পরিচালনা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানাতে পারেননি। বিষয়টি নিয়ে বিআইডব্লিউটিএর তরফ থেকে তেমন কিছু বলতে না পারলেও ইতোমধ্যে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে ইতোমধ্যে আসন্ন ঈদ যাত্রাকে নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে করতে এক সভায় বাড়তি ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি প্রদানসহ বেশ কিছু দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। তবে দেশের প্রধান যাত্রীবাহী রুট ঢাকা-বরিশাল নৌ-পথে ঠিক কয়টি নৌযান যাত্রী পরিবহন করবে, সেই ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানা যায়নি। বিষয়টি অনেকটাই বেসরকারি নৌযান মালিকদের ইচ্ছের ওপরেই নির্ভরশীল হয়ে আছে এখনও।