সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) : সরু সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ভ্যান গাড়ি -সংবাদ
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার রৌহা বাকপাড়া খালের সেতু নিয়ে উপজেলার দুই দপ্তরের কর্মকর্তার রশি টানাটানিতে সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে টেন্ডার আহ্বান করা হলেও এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলীর বাঁধার কারণে সেতু নির্মাণকাজ করতে পারছে না বলে অভিযোগ করেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা।
সূত্রে জানা যায়, সাটুরিয়া উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের বিভিন্ন খালের উপর নয়টি সেতু নির্মাণের অনুমোদন পান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও) অফিস। অনুমোদন পাওয়ার পর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে টেন্ডার আহ্বান করেন। এর মধ্যে দড়গ্রাম ইউনিয়নের রৌহা বাকপাড়া সড়কের খালের উপর একটি নতুন সেতু নির্মাণ হওয়ার কথা কিন্তু সেই পুরনো পরিত্যাক্ত সেতুটি অপসারণ না করে দীর্ঘদিন পাঁয়তারা করার কারণে প্রকল্পের টাকা ফেরত যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। সাটুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইমরুল হাসানের দাবি এ সড়কটি তাদের। এ সড়কের মধ্যে বা খালের উপর সেতু নির্মাণ করবে এলজিইডি বিভাগ।
সেতুর পাশের বাড়ির বাসিন্দা মো. হায়দার আলী বলেন, প্রায় ৪০ বছর আগে বাকপাড়া খালের উপর মানুষের পায়ে হাঁটার জন্য একটি সরু সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল। সেটি এখন ভগ্নদশা। সেতুতে বড় বড় গর্ত হয়েছে। রেলিং ভেঙে গেছে। এছাড়া সেতুটি সরু হওয়ায় দুই পাশ থেকে দুটি ভ্যানগাড়ি উঠে আসলে পাড় হতে পারে না। এই এলাকার সানুষ দীর্ঘদিন ধরে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে। শুনেছি এখানে নাকি নতুন সেতু হবে। সেটাও নাকি বন্ধ করে দিয়েছে।
সাটুরিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. খলিলুর রহমান মোল্লা বলেন, ডিএস, সিএস, এসএ ও আরএস পর্চায় সড়কের মালিক হয়ে ১৯৯৮ সাল হতে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এ সড়কে রক্ষাণাবেক্ষন করি আমরা। এছাড়া আন্তঃমন্ত্রাণালয়ের এক রেজুলেশনে আমরা যে কোনো সড়কের উপর সেতু নির্মাণ করতে পারি। এতে কোন বাঁধা নেই। কিন্তু এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী কেন সেতু নির্মাণে বাঁধা দিচ্ছে জানি না। এ বিষয়ে মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি সুরাহা করার জন্য ইউএনওর হস্তক্ষেপ চেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, এ প্রকল্পের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ করতে না পেরে সময় বৃদ্ধি চেয়ে আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ ২০২৬ এর ৩০ জুন পর্যন্ত সময় দেন। এ সময়ের মধ্যে সেতু নির্মাণ করা না হলে বরাদ্ধকৃত ২৭ লাখ ৮০ হাজার ২৫২ টাকা ফেরত যাবে। ফলে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হবে এলাকাবাসী। বাকপাড়া খালের উপর একটি সরু সেতু রয়েছে। তা নিলামের মাধ্যমে অপসারণ করার জন্য বলা হলেও এলজিইডি বিভাগ কোন কর্ণপাত করছে না। উল্টো ওই সড়ক তারা দাবি করছে। ফলে সেতু নির্মাণের কাজ বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইমরুল হাসান বলেন, কয়েক বছর আগেই রৌহা গ্রামের বাকপাড়া সড়কটি এলজিইডির যার কোড ৪০৬৪। ফলে ওই সড়কের যা কিছু উন্নয়ন করা হবে তা এলজিইডি বিভাগ করবে। আর বাকপাড়া খালের উপর সেতুর টেন্ডার আহ্বান করবে এলজিইডি বিভাগ। সেখানে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস কিভাবে এলজিইডির সড়কের উপর নতুন সেতু নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করেন।
সাটুরিয়ার দড়গ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলীনূর বকস রতন বলেন, রৌহা গ্রামের বাকপাড়া খালের উপর একটি সরু সেতু রয়েছে যা সাধারণ মানুষের কোন উপকারে আসে না। ওই সেতু দিয়ে একটি ভ্যান গাড়ি চলাচল করতে পারে না। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের আহ্বানে নতুন একটি সেতু করার প্রস্তাব করা হয়। সেটি পাশও হয়। কিন্তু সড়কটি দুই অফিসের কর্মকর্তাদের ঠেলাঠেলির কারণে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। ফলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ করতে না পেরে সময়ের জন্য আবেদন করেন। ২০২৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় দেয়া হলেও এলজিইডি বিভাগের বাঁধার কারণে সেতুটি নির্মাণকাজ করতে পারছে না ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ফৌজদার এন্টারপ্রাইজ। সেতুটি নির্মাণ না হলে প্রায় কযেক হাজার মানুষ চরম ভোগান্তি পোহাবে বলে তিনি দাবি করেন।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, দুই অফিসকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি চালাচালি করে সেতুটি দ্রুত নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে।
সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) : সরু সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ভ্যান গাড়ি -সংবাদ
বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার রৌহা বাকপাড়া খালের সেতু নিয়ে উপজেলার দুই দপ্তরের কর্মকর্তার রশি টানাটানিতে সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে টেন্ডার আহ্বান করা হলেও এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলীর বাঁধার কারণে সেতু নির্মাণকাজ করতে পারছে না বলে অভিযোগ করেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা।
সূত্রে জানা যায়, সাটুরিয়া উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের বিভিন্ন খালের উপর নয়টি সেতু নির্মাণের অনুমোদন পান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও) অফিস। অনুমোদন পাওয়ার পর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে টেন্ডার আহ্বান করেন। এর মধ্যে দড়গ্রাম ইউনিয়নের রৌহা বাকপাড়া সড়কের খালের উপর একটি নতুন সেতু নির্মাণ হওয়ার কথা কিন্তু সেই পুরনো পরিত্যাক্ত সেতুটি অপসারণ না করে দীর্ঘদিন পাঁয়তারা করার কারণে প্রকল্পের টাকা ফেরত যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। সাটুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইমরুল হাসানের দাবি এ সড়কটি তাদের। এ সড়কের মধ্যে বা খালের উপর সেতু নির্মাণ করবে এলজিইডি বিভাগ।
সেতুর পাশের বাড়ির বাসিন্দা মো. হায়দার আলী বলেন, প্রায় ৪০ বছর আগে বাকপাড়া খালের উপর মানুষের পায়ে হাঁটার জন্য একটি সরু সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল। সেটি এখন ভগ্নদশা। সেতুতে বড় বড় গর্ত হয়েছে। রেলিং ভেঙে গেছে। এছাড়া সেতুটি সরু হওয়ায় দুই পাশ থেকে দুটি ভ্যানগাড়ি উঠে আসলে পাড় হতে পারে না। এই এলাকার সানুষ দীর্ঘদিন ধরে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে। শুনেছি এখানে নাকি নতুন সেতু হবে। সেটাও নাকি বন্ধ করে দিয়েছে।
সাটুরিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. খলিলুর রহমান মোল্লা বলেন, ডিএস, সিএস, এসএ ও আরএস পর্চায় সড়কের মালিক হয়ে ১৯৯৮ সাল হতে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এ সড়কে রক্ষাণাবেক্ষন করি আমরা। এছাড়া আন্তঃমন্ত্রাণালয়ের এক রেজুলেশনে আমরা যে কোনো সড়কের উপর সেতু নির্মাণ করতে পারি। এতে কোন বাঁধা নেই। কিন্তু এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী কেন সেতু নির্মাণে বাঁধা দিচ্ছে জানি না। এ বিষয়ে মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি সুরাহা করার জন্য ইউএনওর হস্তক্ষেপ চেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, এ প্রকল্পের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ করতে না পেরে সময় বৃদ্ধি চেয়ে আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ ২০২৬ এর ৩০ জুন পর্যন্ত সময় দেন। এ সময়ের মধ্যে সেতু নির্মাণ করা না হলে বরাদ্ধকৃত ২৭ লাখ ৮০ হাজার ২৫২ টাকা ফেরত যাবে। ফলে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হবে এলাকাবাসী। বাকপাড়া খালের উপর একটি সরু সেতু রয়েছে। তা নিলামের মাধ্যমে অপসারণ করার জন্য বলা হলেও এলজিইডি বিভাগ কোন কর্ণপাত করছে না। উল্টো ওই সড়ক তারা দাবি করছে। ফলে সেতু নির্মাণের কাজ বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইমরুল হাসান বলেন, কয়েক বছর আগেই রৌহা গ্রামের বাকপাড়া সড়কটি এলজিইডির যার কোড ৪০৬৪। ফলে ওই সড়কের যা কিছু উন্নয়ন করা হবে তা এলজিইডি বিভাগ করবে। আর বাকপাড়া খালের উপর সেতুর টেন্ডার আহ্বান করবে এলজিইডি বিভাগ। সেখানে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস কিভাবে এলজিইডির সড়কের উপর নতুন সেতু নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করেন।
সাটুরিয়ার দড়গ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলীনূর বকস রতন বলেন, রৌহা গ্রামের বাকপাড়া খালের উপর একটি সরু সেতু রয়েছে যা সাধারণ মানুষের কোন উপকারে আসে না। ওই সেতু দিয়ে একটি ভ্যান গাড়ি চলাচল করতে পারে না। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের আহ্বানে নতুন একটি সেতু করার প্রস্তাব করা হয়। সেটি পাশও হয়। কিন্তু সড়কটি দুই অফিসের কর্মকর্তাদের ঠেলাঠেলির কারণে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। ফলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ করতে না পেরে সময়ের জন্য আবেদন করেন। ২০২৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় দেয়া হলেও এলজিইডি বিভাগের বাঁধার কারণে সেতুটি নির্মাণকাজ করতে পারছে না ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ফৌজদার এন্টারপ্রাইজ। সেতুটি নির্মাণ না হলে প্রায় কযেক হাজার মানুষ চরম ভোগান্তি পোহাবে বলে তিনি দাবি করেন।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, দুই অফিসকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি চালাচালি করে সেতুটি দ্রুত নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে।