নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার চনপাড়ায় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ ঘটনায় আরও দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত উপজেলার চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত মো. হাসিব (২৮) চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রয়াত আনোয়ার হোসেন মোল্লার ছেলে।
গুলিবিদ্ধ রাসেল (৩০) ও বশর (৩২) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম জানান, আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে যুবদলের দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়ান। এতে গুলিবিদ্ধ একজন মারা গেছেন। বুধবার সকালে র্যাব ও পুলিশ চনপাড়ায় যৌথ অভিযান চালালেও সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
হাসিবের বড় ভাই যুবদল কর্মী মো. বাবু বলেন, “বুধবার রাত ২টার দিকে হাসিব গুলিবিদ্ধ হন। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর রাত ৩টার দিকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।” হাসিব এক সময় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালালেও বর্তমানে বেকার ছিলেন বলে জানান তার ভাই।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারাবির নামাজের পর চনপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মনির দেওয়ানের অনুসারীরা এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেন। তাকে স্থানীয় যুবদলের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ওই ব্যক্তিকে ছাড়িয়ে নিতে ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল করিম ও ২ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি গোলাম রাব্বানী ঘটনাস্থলে যান। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে, যা পরে সংঘর্ষে রূপ নেয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “তারাবির নামাজ শেষে উভয়পক্ষের লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র, টেঁটা, শাবল ও দেশি অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। ভোর পর্যন্ত এই সংঘর্ষ চলে। এতে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন।”
যুবদল নেতা মনির হোসেন বলেন, “চনপাড়াকে মাদকমুক্ত করার চেষ্টা করছি। গতরাতে এক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে লোকজন যুবদলের কার্যালয়ে নিয়ে আসে। পরে তাকে ছাড়িয়ে নিতে প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের ওপর হামলা করে। আমরা নিজেদের বাঁচাতে কেবল তাদের প্রতিরোধ করেছি। তবে আমরা কোনো আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করিনি।” প্রতিপক্ষের লোকজন আওয়ামী লীগের ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’ নিয়ে তাদের ওপর হামলা করেছে বলে দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে যুবদল নেতা আব্দুল করিম ও মো. রাব্বানীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ঘটনার পর থেকে তারা এলাকায় নেই। তাদের মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চনপাড়ার এক বিএনপি নেতা বলেন, “অভ্যুত্থানের আগে চনপাড়ার মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর অনুসারীরা। আওয়ামী লীগের আমলে এই চনপাড়া ছিল মাদক ও সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য। আগস্টে আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে বিএনপির কয়েকজন নেতা মাদক ব্যবসায়ীদের আশ্রয় দিচ্ছেন এবং চনপাড়ায় আধিপত্য বিস্তার করছেন। এ নিয়ে বিএনপির লোকজনের মধ্যেও কয়েকটি ভাগ তৈরি হয়েছে।”
রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাহফুজুর রহমান হুমায়ন বলেন, “চনপাড়ায় যুবদলের দুপক্ষের মধ্যে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের বিষয়টি শুনেছি। সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত নেতাকর্মীদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করবে এমন কারও দলে জায়গা হবে না।”
এ ঘটনায় বিকাল ৫টা পর্যন্ত রূপগঞ্জ থানায় কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সালাহ উদ্দিন কাদের।
বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার চনপাড়ায় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ ঘটনায় আরও দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত উপজেলার চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত মো. হাসিব (২৮) চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রয়াত আনোয়ার হোসেন মোল্লার ছেলে।
গুলিবিদ্ধ রাসেল (৩০) ও বশর (৩২) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম জানান, আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে যুবদলের দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়ান। এতে গুলিবিদ্ধ একজন মারা গেছেন। বুধবার সকালে র্যাব ও পুলিশ চনপাড়ায় যৌথ অভিযান চালালেও সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
হাসিবের বড় ভাই যুবদল কর্মী মো. বাবু বলেন, “বুধবার রাত ২টার দিকে হাসিব গুলিবিদ্ধ হন। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর রাত ৩টার দিকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।” হাসিব এক সময় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালালেও বর্তমানে বেকার ছিলেন বলে জানান তার ভাই।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারাবির নামাজের পর চনপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মনির দেওয়ানের অনুসারীরা এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেন। তাকে স্থানীয় যুবদলের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ওই ব্যক্তিকে ছাড়িয়ে নিতে ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল করিম ও ২ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি গোলাম রাব্বানী ঘটনাস্থলে যান। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে, যা পরে সংঘর্ষে রূপ নেয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “তারাবির নামাজ শেষে উভয়পক্ষের লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র, টেঁটা, শাবল ও দেশি অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। ভোর পর্যন্ত এই সংঘর্ষ চলে। এতে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন।”
যুবদল নেতা মনির হোসেন বলেন, “চনপাড়াকে মাদকমুক্ত করার চেষ্টা করছি। গতরাতে এক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে লোকজন যুবদলের কার্যালয়ে নিয়ে আসে। পরে তাকে ছাড়িয়ে নিতে প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের ওপর হামলা করে। আমরা নিজেদের বাঁচাতে কেবল তাদের প্রতিরোধ করেছি। তবে আমরা কোনো আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করিনি।” প্রতিপক্ষের লোকজন আওয়ামী লীগের ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’ নিয়ে তাদের ওপর হামলা করেছে বলে দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে যুবদল নেতা আব্দুল করিম ও মো. রাব্বানীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ঘটনার পর থেকে তারা এলাকায় নেই। তাদের মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চনপাড়ার এক বিএনপি নেতা বলেন, “অভ্যুত্থানের আগে চনপাড়ার মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর অনুসারীরা। আওয়ামী লীগের আমলে এই চনপাড়া ছিল মাদক ও সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য। আগস্টে আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে বিএনপির কয়েকজন নেতা মাদক ব্যবসায়ীদের আশ্রয় দিচ্ছেন এবং চনপাড়ায় আধিপত্য বিস্তার করছেন। এ নিয়ে বিএনপির লোকজনের মধ্যেও কয়েকটি ভাগ তৈরি হয়েছে।”
রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাহফুজুর রহমান হুমায়ন বলেন, “চনপাড়ায় যুবদলের দুপক্ষের মধ্যে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের বিষয়টি শুনেছি। সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত নেতাকর্মীদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করবে এমন কারও দলে জায়গা হবে না।”
এ ঘটনায় বিকাল ৫টা পর্যন্ত রূপগঞ্জ থানায় কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সালাহ উদ্দিন কাদের।