বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিরুদ্ধে তাঁকে ‘নিশানা করে ভিত্তিহীন’ অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক। তাঁর বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির সব অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন ও হয়রানিমূলক’ বলেও দাবি করেছেন তিনি। সম্প্রতি দুদকে পাঠানো এক চিঠিতে টিউলিপের আইনজীবী এই অভিযোগ উত্থাপন করেছেন।
টিউলিপ সিদ্দিক ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল লেবার পার্টির একজন পার্লামেন্ট সদস্য। তিনি দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘সিটি মিনিস্টার’–এর দায়িত্বে ছিলেন। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর গত জানুয়ারিতে সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি।
দুদক শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগ তদন্ত করছে। এগুলোর মধ্যে তিনটিতে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম এসেছে। সেগুলো হলো:
1. রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি থেকে লাভবান হওয়া।
2. ঢাকায় জমি দখল।
3. মুদ্রা পাচার।
দুদকের দাবি, রাশিয়ার সঙ্গে ২০১৩ সালে করা পারমাণবিক চুক্তি থেকে টিউলিপ সিদ্দিক সুবিধা নিয়েছেন। সংস্থাটি বলছে, টিউলিপ সিদ্দিকের লন্ডনের সাত লাখ পাউন্ডের ফ্ল্যাটটি ওই অর্থ দিয়ে কেনা কি না, সেটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
টিউলিপের প্রতিক্রিয়া:
টিউলিপ সিদ্দিকের আইনজীবী স্টিফেন হারউড দুদকে পাঠানো চিঠিতে বলেছেন, "দুদক বা বাংলাদেশ সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কেউ তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ সুষ্ঠুভাবে, সঠিক ও স্বচ্ছতার সঙ্গে আনেননি।" চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, "টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক অভিযোগ তৈরি বন্ধ করতে হবে এবং তাঁর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের লক্ষ্যে আর কোনো মিডিয়া ব্রিফিং ও প্রকাশ্য মন্তব্য করা যাবে না।"
পারমাণবিক চুক্তির বিষয়ে টিউলিপের আইনজীবী বলেছেন, লন্ডনের কিংস ক্রসের ফ্ল্যাটটি টিউলিপ সিদ্দিক ২০০৪ সালে তাঁর গডফাদার (ধর্মপিতা) আবদুল মোতালিফের কাছ থেকে পেয়েছিলেন। তিনি শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সে কারণে যখন চুক্তি হয়নি, তার থেকে তছরুপ করা অর্থ দিয়ে ওই সম্পদ কেনার বিষয়টি ‘অসম্ভব’।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তিতে টিউলিপ সিদ্দিকের ‘কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না’, যদিও তিনি মস্কো গিয়েছিলেন এবং প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে একটি ছবির জন্য পোজ দিয়েছিলেন। সরকারপ্রধানের রাষ্ট্রীয় সফরে পরিবারের সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি অস্বাভাবিক নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঢাকায় জমি দখলের অভিযোগ:
ঢাকার কূটনৈতিক এলাকায় প্লট পাওয়ার জন্য প্রভাব খাটানোর অভিযোগও অস্বীকার করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক। তাঁর আইনজীবী বলেছেন, সেখানে কখনো তাঁর জমি ছিল না। আর ঢাকার একটি জায়গায় বোনকে টিউলিপের ফ্ল্যাট হস্তান্তর বৈধ ও আইনসিদ্ধভাবে করা হয়েছে।
দুদকের প্রতিক্রিয়া:
দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, "টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত সব অভিযোগ যুক্তরাজ্যের আদালতসহ যেকোনো আদালতে প্রমাণিত হবে।" তিনি আরও বলেন, "দুদক নথি ও বাস্তবতার নিরিখে কাজ করছে এবং তদন্তে কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে না।"
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট:
টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং লন্ডনের হ্যাম্পস্টিড ও হাইগেট এলাকার সংসদ সদস্য। বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে তাঁর পারিবারিক যোগসূত্র থাকায় এই তদন্ত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। টিউলিপের আইনজীবী বলেছেন, দুদকের এই কর্মপদ্ধতি ‘যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের একটি অগ্রহণযোগ্য চেষ্টা’।
বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিরুদ্ধে তাঁকে ‘নিশানা করে ভিত্তিহীন’ অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক। তাঁর বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির সব অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন ও হয়রানিমূলক’ বলেও দাবি করেছেন তিনি। সম্প্রতি দুদকে পাঠানো এক চিঠিতে টিউলিপের আইনজীবী এই অভিযোগ উত্থাপন করেছেন।
টিউলিপ সিদ্দিক ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল লেবার পার্টির একজন পার্লামেন্ট সদস্য। তিনি দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘সিটি মিনিস্টার’–এর দায়িত্বে ছিলেন। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর গত জানুয়ারিতে সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি।
দুদক শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগ তদন্ত করছে। এগুলোর মধ্যে তিনটিতে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম এসেছে। সেগুলো হলো:
1. রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি থেকে লাভবান হওয়া।
2. ঢাকায় জমি দখল।
3. মুদ্রা পাচার।
দুদকের দাবি, রাশিয়ার সঙ্গে ২০১৩ সালে করা পারমাণবিক চুক্তি থেকে টিউলিপ সিদ্দিক সুবিধা নিয়েছেন। সংস্থাটি বলছে, টিউলিপ সিদ্দিকের লন্ডনের সাত লাখ পাউন্ডের ফ্ল্যাটটি ওই অর্থ দিয়ে কেনা কি না, সেটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
টিউলিপের প্রতিক্রিয়া:
টিউলিপ সিদ্দিকের আইনজীবী স্টিফেন হারউড দুদকে পাঠানো চিঠিতে বলেছেন, "দুদক বা বাংলাদেশ সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কেউ তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ সুষ্ঠুভাবে, সঠিক ও স্বচ্ছতার সঙ্গে আনেননি।" চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, "টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক অভিযোগ তৈরি বন্ধ করতে হবে এবং তাঁর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের লক্ষ্যে আর কোনো মিডিয়া ব্রিফিং ও প্রকাশ্য মন্তব্য করা যাবে না।"
পারমাণবিক চুক্তির বিষয়ে টিউলিপের আইনজীবী বলেছেন, লন্ডনের কিংস ক্রসের ফ্ল্যাটটি টিউলিপ সিদ্দিক ২০০৪ সালে তাঁর গডফাদার (ধর্মপিতা) আবদুল মোতালিফের কাছ থেকে পেয়েছিলেন। তিনি শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সে কারণে যখন চুক্তি হয়নি, তার থেকে তছরুপ করা অর্থ দিয়ে ওই সম্পদ কেনার বিষয়টি ‘অসম্ভব’।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তিতে টিউলিপ সিদ্দিকের ‘কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না’, যদিও তিনি মস্কো গিয়েছিলেন এবং প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে একটি ছবির জন্য পোজ দিয়েছিলেন। সরকারপ্রধানের রাষ্ট্রীয় সফরে পরিবারের সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি অস্বাভাবিক নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঢাকায় জমি দখলের অভিযোগ:
ঢাকার কূটনৈতিক এলাকায় প্লট পাওয়ার জন্য প্রভাব খাটানোর অভিযোগও অস্বীকার করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক। তাঁর আইনজীবী বলেছেন, সেখানে কখনো তাঁর জমি ছিল না। আর ঢাকার একটি জায়গায় বোনকে টিউলিপের ফ্ল্যাট হস্তান্তর বৈধ ও আইনসিদ্ধভাবে করা হয়েছে।
দুদকের প্রতিক্রিয়া:
দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, "টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত সব অভিযোগ যুক্তরাজ্যের আদালতসহ যেকোনো আদালতে প্রমাণিত হবে।" তিনি আরও বলেন, "দুদক নথি ও বাস্তবতার নিরিখে কাজ করছে এবং তদন্তে কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে না।"
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট:
টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং লন্ডনের হ্যাম্পস্টিড ও হাইগেট এলাকার সংসদ সদস্য। বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে তাঁর পারিবারিক যোগসূত্র থাকায় এই তদন্ত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। টিউলিপের আইনজীবী বলেছেন, দুদকের এই কর্মপদ্ধতি ‘যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের একটি অগ্রহণযোগ্য চেষ্টা’।