alt

শেরপুরে ঐতিহ্য হারাচ্ছে বেনারসি পল্লী, নেই ঈদ আনন্দ

তাঁতিদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না থাকায় শাড়ি তৈরি বন্ধ করে দেন

প্রতিনিধি, শেরপুর (বগুড়া) : বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

শেরপুর (বগুড়া) : বেনারসি পল্লীতে তাঁত বোনায় ব্যস্ত কারিগর -সংবাদ

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ঘোলাগাড়ি কলোনি গ্রামের বেনারসিপল্লিতে প্রায় ৭০টি পরিবার তৈরি করত বেনারসি শাড়ি। ওয়াহিদ রানা নামের একজন ছাড়া এখন প্রায় সবাই এই পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।

জানা যায়, দিন দিন ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলছে ঘোলাগাড়ি কলোনি গ্রামের বেনারসিপল্লি। তৈরি হচ্ছে না নতুন কোনো কারিগর। তাঁতিদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না থাকায় শাড়ি তৈরি বন্ধ করে দেন এই পল্লির তাঁতিরা। অথচ প্রতি বছর ঈদ এলেই তৈরি হতো লাখ লাখ টাকার বেনারসি শাড়ি। আর্থিক অনটন এবং সরকারি পৃষ্ঠাপোষকতা না থাকায় ধ্বংসের পথে ঐতিহ্যবাহী এ শিল্প। এ ছাড়া দেশে ভারতীয় শাড়ি বাজার দখল করায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এই পল্লির কারিগররা। তাই এখন বাধ্য হয়ে কারিগররা জীবিকা নির্বাহ করার জন্য অন্য পেশায় জড়িয়ে পরছেন। কেউ ভ্যান বা রিকসা চালাচ্ছেন আবার কেউ রাজমিস্ত্রি, টাইলসের কাজ করছেন। কেউবা আবার ভ্যানে করে ঘুরে ঘুরে সবজি বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন।

সরেজমিন দেখা যায়, ঘোলাগাড়ি কলোনি গ্রামে ৭০টি তাঁতি পরিবারের মধ্যে একটি তাঁত সচল রয়েছে। এছাড়া কয়েকজন স্মৃতি হিসেবে রেখে দিয়েছেন জং ধরা তাঁত। মেশিনগুলো জরাজীর্ণ আর মাকড়সার জালে আটকে রয়েছে তাদের স্বপ্ন। কয়েক বছর আগেও এই গ্রামে বেনারসি তাঁতের খুটখাট শব্দে মুখর ছিল। এখন ওই গ্রাম নীরব নিস্তব্ধ।

ওয়াহিদ বেনারসি তাঁতশিল্পের প্রোপাইটার মো. ওয়াহিদ রানা জানান, এক সময়ের বেনারসিপল্লিতে এখন আর জৌলুস নেই। আগে বেনারসিপল্লিতে তৈরি শাড়ির চাহিদা এতটাই ছিল যে, ঢাকার বিভিন্ন শাড়ির শো-রুম থেকে আগাম টাকা দিয়ে অর্ডার দেওয়া হতো। সারা বছরের পাশাপাশি দুই ঈদ ও পূজায় চাহিদা ছিল সবচেয়ে বেশি। তবে কয়েক বছর ধরে ভারত থেকে শাড়ি আসায় তাদের কদর কমে যাওয়ায় একের পর এক তাঁত বন্ধ হয়ে যায়। কারিগররা বেকার হয়ে পড়ায় অনেকেই ভ্যান-রিকশা চালিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। বর্তমানে তিনি তার কারখানা চালু রেখেছেন। তবে ঈদের পরে তিনিও কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবছেন। তিনি আরও জানান, সরকারি সুযোগ-সুবিধা থাকলেও প্রকৃত তাঁতিরা সেই সব সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে পারছেন না। ভুয়া তাঁতিরা সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিয়ে এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় গেছেন। প্রকৃত তাঁতিরা স্বল্প সুদে ঋণ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ফলে দিনে দিনে কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এখনো যদি প্রকৃত তাঁতিরা সরকারি পৃষ্ঠাপোষকতা পান তাহলে আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে বেনারসিপল্লির। এতে করে ফিরে পাবে তাদের বাপ-দাদার পেশা।এক সময়ের প্রাণচাঞ্চল্য বেনারসিপল্লিতে এখন আর নেই ঈদ আনন্দ। প্রতি ঈদে লাখ লাখ টাকার ব্যবসা হলেও এখন সেটি বন্ধ।

ছবি

কক্সবাজারে স্বামীকে হত্যার পর স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ, আটক ১

ছবি

সরকারি হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের প্রবেশে নতুন নিয়ম

ছবি

মাতামুহুরী নদী ভরাট ও বিষ দিয়ে নিধনকাণ্ডে বিপন্ন হচ্ছে দেশীয় মাছ

ছবি

‘অবৈধ বাংলাদেশি’ বলে হেনস্থা, পশ্চিমবঙ্গের অনেক মানুষ বিপাকে

ছবি

এবার আগারগাঁওয়ে ‘নিষিদ্ধ’ আওয়ামী লীগের মিছিল, আটক দুই

ছবি

১১ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ‘৮৬ হাজারের বেশি’

ছবি

পীরগঞ্জ সরকারী আব্দুর রউফ কলেজে তৃতীয় শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে তোলপাড়

ছবি

দুমকি প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল, সম্পাদক সাইদুর

ছবি

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি প্রত্যাহার

ছবি

ভালুকায় দুই বাসের সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ১৫

ছবি

বোয়ালখালীতে গৃহবধূর মৃত্যু

ছবি

ভুটভুটির ধাক্কায় সাইকেল আরোহী নিহত

ছবি

ডিমলা থানা পুলিশের কার্যক্রম চলছে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে

ছবি

জয়পুরহাটে স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যার চেষ্টা

ছবি

চাঁদপুরে জেলা প্রশাসক কাপ সাঁতার প্রতিযোগিতা

ছবি

বাল্কহেড চলাচলে ধলেশ্বরীর দুই তীরে ভাঙন

ছবি

শেরপুরে অটোরিকশা চালক আবু বক্কর হত্যার রহস্য উন্মোচন

ছবি

রায়গঞ্জে পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীদের কর্মবিরতি, গ্রাহকদের ভোগান্তি

ছবি

রাজবাড়ীতে শুরু হয়েছে ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল অলিম্পিয়াড সিজন ২

ছবি

ঝিনাইগাতীতে কৃষকের কাকরুল গাছ কেটে ফেলল প্রতিপক্ষরা

ছবি

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনায় আওয়ামীলীগের ঝটিকা মিছিল

ছবি

রাণীনগরে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিদ্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ

ছবি

শেরপুরে চাঁদা না দেওয়ায় ইমামকে হত্যাচেষ্টা, বিচারের দাবীতে মানববন্ধন

ছবি

শেরপুরে দুর্নীতির অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত

ছবি

গোবিন্দগঞ্জে রাতের আঁধারে কৃষকের আখ কর্তন ও চুরি

ছবি

সুন্দরগঞ্জে সেতু আছে সংযোগ সড়ক নেই

ছবি

কেশবপুরে জলাবদ্ধতা নিরসনে পলি অপসারণ শুরু

ছবি

বাঁশের সাঁকো ভেঙে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার

ছবি

কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামে ‘সরকারবিরোধী’ মিছিল: ছাত্রলীগের দুই কর্মীসহ চারজন গ্রেপ্তার

ছবি

নিহত নারীর মাথা উদ্ধার

ছবি

৩১ দফার লিফলেট বিতরণ করলেন বিএনপি নেতা শাহাফুজ আলম

ছবি

শারদীয় দুর্গোৎসব মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ

ছবি

ল্যাম্পপোষ্টের আলোয় আলোকিত মওলানা ভাসানী সেতু

ছবি

দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদনের প্লান্ট স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে

ছবি

মোরেলগঞ্জে রাস্তার বেহালদশা ৮ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ

ভৈরবে প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে দুই পরিবারের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

tab

news » bangladesh

শেরপুরে ঐতিহ্য হারাচ্ছে বেনারসি পল্লী, নেই ঈদ আনন্দ

তাঁতিদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না থাকায় শাড়ি তৈরি বন্ধ করে দেন

প্রতিনিধি, শেরপুর (বগুড়া)

শেরপুর (বগুড়া) : বেনারসি পল্লীতে তাঁত বোনায় ব্যস্ত কারিগর -সংবাদ

বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ঘোলাগাড়ি কলোনি গ্রামের বেনারসিপল্লিতে প্রায় ৭০টি পরিবার তৈরি করত বেনারসি শাড়ি। ওয়াহিদ রানা নামের একজন ছাড়া এখন প্রায় সবাই এই পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।

জানা যায়, দিন দিন ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলছে ঘোলাগাড়ি কলোনি গ্রামের বেনারসিপল্লি। তৈরি হচ্ছে না নতুন কোনো কারিগর। তাঁতিদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না থাকায় শাড়ি তৈরি বন্ধ করে দেন এই পল্লির তাঁতিরা। অথচ প্রতি বছর ঈদ এলেই তৈরি হতো লাখ লাখ টাকার বেনারসি শাড়ি। আর্থিক অনটন এবং সরকারি পৃষ্ঠাপোষকতা না থাকায় ধ্বংসের পথে ঐতিহ্যবাহী এ শিল্প। এ ছাড়া দেশে ভারতীয় শাড়ি বাজার দখল করায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এই পল্লির কারিগররা। তাই এখন বাধ্য হয়ে কারিগররা জীবিকা নির্বাহ করার জন্য অন্য পেশায় জড়িয়ে পরছেন। কেউ ভ্যান বা রিকসা চালাচ্ছেন আবার কেউ রাজমিস্ত্রি, টাইলসের কাজ করছেন। কেউবা আবার ভ্যানে করে ঘুরে ঘুরে সবজি বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন।

সরেজমিন দেখা যায়, ঘোলাগাড়ি কলোনি গ্রামে ৭০টি তাঁতি পরিবারের মধ্যে একটি তাঁত সচল রয়েছে। এছাড়া কয়েকজন স্মৃতি হিসেবে রেখে দিয়েছেন জং ধরা তাঁত। মেশিনগুলো জরাজীর্ণ আর মাকড়সার জালে আটকে রয়েছে তাদের স্বপ্ন। কয়েক বছর আগেও এই গ্রামে বেনারসি তাঁতের খুটখাট শব্দে মুখর ছিল। এখন ওই গ্রাম নীরব নিস্তব্ধ।

ওয়াহিদ বেনারসি তাঁতশিল্পের প্রোপাইটার মো. ওয়াহিদ রানা জানান, এক সময়ের বেনারসিপল্লিতে এখন আর জৌলুস নেই। আগে বেনারসিপল্লিতে তৈরি শাড়ির চাহিদা এতটাই ছিল যে, ঢাকার বিভিন্ন শাড়ির শো-রুম থেকে আগাম টাকা দিয়ে অর্ডার দেওয়া হতো। সারা বছরের পাশাপাশি দুই ঈদ ও পূজায় চাহিদা ছিল সবচেয়ে বেশি। তবে কয়েক বছর ধরে ভারত থেকে শাড়ি আসায় তাদের কদর কমে যাওয়ায় একের পর এক তাঁত বন্ধ হয়ে যায়। কারিগররা বেকার হয়ে পড়ায় অনেকেই ভ্যান-রিকশা চালিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। বর্তমানে তিনি তার কারখানা চালু রেখেছেন। তবে ঈদের পরে তিনিও কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবছেন। তিনি আরও জানান, সরকারি সুযোগ-সুবিধা থাকলেও প্রকৃত তাঁতিরা সেই সব সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে পারছেন না। ভুয়া তাঁতিরা সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিয়ে এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় গেছেন। প্রকৃত তাঁতিরা স্বল্প সুদে ঋণ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ফলে দিনে দিনে কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এখনো যদি প্রকৃত তাঁতিরা সরকারি পৃষ্ঠাপোষকতা পান তাহলে আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে বেনারসিপল্লির। এতে করে ফিরে পাবে তাদের বাপ-দাদার পেশা।এক সময়ের প্রাণচাঞ্চল্য বেনারসিপল্লিতে এখন আর নেই ঈদ আনন্দ। প্রতি ঈদে লাখ লাখ টাকার ব্যবসা হলেও এখন সেটি বন্ধ।

back to top