alt

উপকরণের অভাবে বিলুপ্তির পথে চারঘাটের ঐতিহ্যবাহী খয়ের শিল্প

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী : বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫

রাজশাহী : চারঘাটার ঐতিহ্যবাহী খয়ের উৎপাদনে ব্যস্ত নারী -সংবাদরাজশাহী : চারঘাটার ঐতিহ্যবাহী খয়ের উৎপাদনে ব্যস্ত নারী -সংবাদ

বাংলাদেশে খয়ের উৎপাদনের একমাত্র প্রসিদ্ধ স্থান ছিল,রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা। খয়ের তৈরি উপকরণের অভাব দেয়ায় খয়ের শিল্প আজ প্রায় বিলুপ্ত হতে চলেছে। চারঘাটের উৎপাদিত খয়ের দিয়ে একসময়ে প্রায় সারা দেশের পান খাওয়া চলেতো। শুধু তাই নয়, এই খয়ের থেকে তৈরি হয়ে থাকে খয়েরি রং। এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিদের কাছ থেকে জানা গেছে, ১৯৪৭ সালের গোড়ার দিকে চারঘাটে খয়ের উৎপাদনের যাত্রা শুরু হয়। তারা আরো জানায়,পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে এই খয়ের শিল্পের উৎপত্তির স্থল।

খয়ের উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় খয়ের গাছ বর্তমানে তেমন একটা পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু চারঘাটের এই খয়ের শিল্প টিকিয়ে রাখার জন্য চারঘাটের তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মরহুম ড.নুর ইসলাম ইউসুফপুর পদ্মার চরে প্রায় ২০ হাজার খয়ের গাছের চারা রোপন করেন। এরপর থেকে সরকারিভাবে কোনো খয়ের গাছ লাগানো কোনো উদ্যোগ কেউ আর নেয়নি। চারঘাটের বিশিষ্ট খয়ের ব্যবসায়ী এনামুল হক বলেন, প্রথমে খয়ের গাছের উপরের ছাল তুলে ফেলা হয়। তারপর গাছটি কুচিকুচি করে কেটে মাটির পাতিলে করে আগুনে ফুটিয়ে করে রস বাহির করে নেওয়া হয়। এরপর বড় ড্রামে করে রস জাল করে গাঢ় করতে হয়। বড় মাটির পাতিলে ঢেলে রাখলে তা জমে যায়। যাকে বলা হয়,লালী খয়ের বা কাঁচা খয়ের বলা হয়ে থাকে। এই লালী খয়ের একমাত্র চারঘাটের হাটে কেনাবেচা হয়ে থাকে। যা বাংলাদেশের আর কোথাও কেনাবেচা হয় না। স্থানীয় খয়ের ব্যবসায়ীরা এই লালী খয়ের ক্রয় করে পুণরায় আগুনে জ্বাল করে ঘন করা হয়। তারপর, একটু ঠাণ্ডা হলে মেশিনের সাহায্যে চাপ দিলে বাহির হয়, চার কোণা আকৃতি খয়ের। গুটি করে কেটে নিয়ে ঘরের মধ্যে ঠাণ্ডা স্থানে শুকাতে হয়। কারণ, রোদে শুকালে খয়েরের দানা ও রং নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় রয়েছে। অনেক সময়ে খয়েরের গুটি শুকাতে ২ থেকে ৩ মাস সময় লেগে যায়। তারপর,পানের ভেতরে দেওয়া গুটি খয়ের প্রক্রিয়া করন শুধুমাত্র চারঘাট এলাকায় হয়ে থাকে। যার কারণে খয়ের ব্যবসায়ীদের তিনগুন পুজি (টাকার) প্রয়োজন হয়। গুটি শুকানোর পর স্থানীয় ব্যবসায়ীরা খয়ের গুটিগুলো ঢাকা, খুলনা যশোর রংপুর সৈয়দপুর জামালপুর শেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে থাকেন। তবে স্থানীয় অনেক ব্যবসায়ীরা আড়তদারদের নিকট হতে খয়েরের টাকা ঠিক সময় না পাওয়ার কারণে ব্যবসায় ভাটা পড়ে যায়। আবার অনেক ব্যবসায়ী দেশের বিভিন্ন স্থানে খয়ের টাকা বাকি পড়ে যাওয়ায় মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকে। চারঘাট সদরের খয়ের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর সঙ্গে আলাপ করলে তারা দুঃখ করে বলেন, আমার বাবার আমল থেকে প্রায় ৪০-৫০ বছর থেকে আমরা এই খয়ের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। আগের মতো এখন আর খয়ের ব্যবসায় তেমন একটা লাভ নেই। বর্তমানে চারঘাটের এই ঐতিহ্যবাহী খয়ের ব্যবসায় চরম মন্দাভাব চলছে। এই ব্যবসায় অনেক সময় ব্যবসায়ীক কারণে বিভিন্ন মোকামে টাকা পড়ে থাকে। এ কারণে খয়ের ব্যবসায় তিনগুণ টাকার প্রয়োজন হয়। সেজন্য স্থানীয় খয়ের ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ হয়ে আছে। বর্তমানে চারঘাটে ভালোমানে কাঁচা লালী খয়ের ৩৬ থেকে ৩৮ হাজার টাকা মণ বিক্রি হয়ে থাকে। আর শুকনা গুটি খয়ের ১৫শত টাকা হতে ১৬শত টাকা কেজি করে ঢাকায় ব্যবসায়ীদের নিকটে বিক্রি করা হয়। বর্তমানে চারঘাট এলাকা খয়ের গাছের অভাব দেখা দেওয়ায় আমরা লালী খয়ের নাটোর জেলার আব্দুলপুর, গোপালপুর, লোকমানপুর হতে আমরা লালী কিনে এনে গুটি খয়ের তৈরি করে থাকি। আর কিছু লালী খয়ের আমাদের নিজ এলাকায় উৎপাদন হয়ে থাকে।

চারঘাটের বিশিষ্ট খয়ের ব্যবসায়ী এনামুল হক বলেন,আমার বাবার আমল হতে খয়ের ব্যবসা করে আসছি। আমার ব্যবসায় ক্ষতি হলেও বাবার রেখে যাওয়া ব্যবসাটির ঐতিয্যে ধরে রেখেছি। চারঘাটে লালী এবং গুটি খয়ের তৈরি করা ব্যবসায়ীর সংখ্যা সবমিলে ১০ হতে ১২ জন এই পেশার সঙ্গে জড়িত হয়ে আছে। আগে বিভিন্ন এলাকায় অনেক খয়ের গাছ জন্ম হতো কিন্তু এখন এই খয়ের গাছ পাওয়া যায় না বললেই চলে। এখন বিভিন্ন এলাকা থেকে চারঘাটের শনিবার ও বুধবার সপ্তাহে ২ দিন হাটে এই খয়ের গাছ কেনাবেচা হয়ে থাকে। খয়ের ব্যবসায় যেমন এখন আগের তুলনায় লাভ কমে গেছে,তেমনি এখন খয়ের গাছ না পওয়ায়। এই খয়ের গাছও কিনতে হচ্ছে দ্বিগুন দামে। দেশের ভেতর একমাত্র চারঘাটের খয়েরগুলি ভেজাল ছাড়া উৎপাদন হয়ে থাকে। বাকি দেশের বিভিন্ন স্থানে যে খয়ের পাওয়া যায় সেগুলি কেমিক্যালযুক্ত দিয়ে তৈরি করা খয়ের। চারঘাট পৌর সদরের গোপালপুর এলাকার মৃত আজমুল হকের বড় মেয়ে আবিদা সুলতানা বাবার খয়ের ব্যবসার ঐতিহ্য ধরে রাখাতে পড়াশুনার পাশাপাশি সে এবং তার মা খয়ের ব্যবসা করছেন। চারঘাটের খয়ের ব্যবসায়ীরা এখানকার ঐতিহ্যবাহী এই খয়ের শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়ে আসছেন।

ছবি

দুর্গাপূজায় তিন স্তরে নিরাপত্তা, প্রয়োজনে ৯৯৯

ছবি

১৭ বিয়ের অভিযোগ ওঠা আলোচিত বন কর্মকর্তা সাময়িক বহিষ্কার

ছবি

জুলাই শহীদদের নিয়ে ‘আপত্তিকর’ প্রতিবেদন প্রকাশের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

ছবি

না’গঞ্জে ইজিবাইক চালক ও শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি হামলার অভিযোগ, আহত ১২

ছবি

চোখ রাঙানি বাড়ছেই এডিসের, কমছে না ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া

ছবি

দুবাইয়ে বিমানের যান্ত্রিক ত্রুটি, আটকে আছেন ১৭৮ যাত্রী

ছবি

বিআরটিসি বাস চালকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

ছবি

দাফনের পূর্বে শিশুর নড়াচড়া, হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় আটক

ছবি

পাঙ্গাস মাছের পায়েস, দুই ভাই ভাইরাল

ছবি

অফিস-কমিটি-মাঠ সবই আছে, নেই শুধু খেলার আয়োজন

ছবি

সরকারি মতিলাল ডিগ্রি কলেজে খণ্ডকালীন দিয়ে চলছে পাঠদান

ছবি

অনুপস্থিত থেকেও নিচ্ছেন বেতন-ভাতা

ছবি

নির্মাণের ১৪ মাসেও চালু হয়নি বরুড়ায় ২০ শয্যার হাসপাতাল

ছবি

দুমকিতে দূর্গোৎসব উপলক্ষে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

ছবি

পটিয়ায় অস্ত্রের মুখে মুরগি ব্যবসায়ী অপহরণের দুই ঘণ্টা পর উদ্ধার

ছবি

সখীপুরে ৮ মাসে ২৪০ জনকে সর্প দংশন, হাসপাতালে নেই অ্যান্টিভেনম

ছবি

শারদীয় দুর্গোৎসবে শ্রীমঙ্গলে জমজমাট পোশাকের বাজার

ছবি

বাক প্রতিবন্ধী মাসুম জীবনযুদ্ধে জয়ী, যা সবার অনুকরনীয়

ছবি

রাজশাহীতে ডাকাতির লুণ্ঠিত মালামালসহ আটক ৮

ছবি

জগন্নাথপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে বিনা খরচে মিলছে ডেলিভারি সেবা

ছবি

গোপালগঞ্জে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় চালকের সহকারী নিহত

ছবি

বাগেরহাটে মহাসড়কে প্রাণ গেল স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার

ছবি

চুনারুঘাটে ধর্ষণের অভিযোগে দুই কিশোর আটক

ছবি

সিরাজগঞ্জে বাবাকে হত্যায় ছেলের মৃত্যুদণ্ড

ছবি

আদমদীঘিতে ১ বছর ধরে বেতন বন্ধ খন্ডকালিন ৫ শিক্ষক-কর্মচারির

ছবি

অবৈধভাবে ভারত থেকে ফেরার পথে ৩ বাংলাদেশি আটক

ছবি

ঈশ্বরদীতে পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু

ছবি

শিবগঞ্জে মা ও ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা

ছবি

সিরাজদিখানে সড়ক পাকা করার দাবিতে মানববন্ধন

ছবি

দোয়ারাবাজার সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ভারতীয় গরু জব্দ

ছবি

ডিমলায় হিসাবরক্ষণ অফিসে সেবা গ্রহীতাদের ভোগান্তি

ছবি

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে জামাতের প্রার্থীর ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ

ছবি

কালিগঙ্গায় বালু লুট থামছে না

ছবি

ভৈরবে চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির বার্ষিক সাধারণ সভা

ছবি

ঝিনাইগাতীতে জানজট নিরসনে সক্রিয় ভিডিপির জিলন মিয়া

ছবি

ট্রাকের ধাক্কায় মা-মেয়ে নিহত

tab

উপকরণের অভাবে বিলুপ্তির পথে চারঘাটের ঐতিহ্যবাহী খয়ের শিল্প

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী

রাজশাহী : চারঘাটার ঐতিহ্যবাহী খয়ের উৎপাদনে ব্যস্ত নারী -সংবাদরাজশাহী : চারঘাটার ঐতিহ্যবাহী খয়ের উৎপাদনে ব্যস্ত নারী -সংবাদ

বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫

বাংলাদেশে খয়ের উৎপাদনের একমাত্র প্রসিদ্ধ স্থান ছিল,রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা। খয়ের তৈরি উপকরণের অভাব দেয়ায় খয়ের শিল্প আজ প্রায় বিলুপ্ত হতে চলেছে। চারঘাটের উৎপাদিত খয়ের দিয়ে একসময়ে প্রায় সারা দেশের পান খাওয়া চলেতো। শুধু তাই নয়, এই খয়ের থেকে তৈরি হয়ে থাকে খয়েরি রং। এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিদের কাছ থেকে জানা গেছে, ১৯৪৭ সালের গোড়ার দিকে চারঘাটে খয়ের উৎপাদনের যাত্রা শুরু হয়। তারা আরো জানায়,পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে এই খয়ের শিল্পের উৎপত্তির স্থল।

খয়ের উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় খয়ের গাছ বর্তমানে তেমন একটা পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু চারঘাটের এই খয়ের শিল্প টিকিয়ে রাখার জন্য চারঘাটের তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মরহুম ড.নুর ইসলাম ইউসুফপুর পদ্মার চরে প্রায় ২০ হাজার খয়ের গাছের চারা রোপন করেন। এরপর থেকে সরকারিভাবে কোনো খয়ের গাছ লাগানো কোনো উদ্যোগ কেউ আর নেয়নি। চারঘাটের বিশিষ্ট খয়ের ব্যবসায়ী এনামুল হক বলেন, প্রথমে খয়ের গাছের উপরের ছাল তুলে ফেলা হয়। তারপর গাছটি কুচিকুচি করে কেটে মাটির পাতিলে করে আগুনে ফুটিয়ে করে রস বাহির করে নেওয়া হয়। এরপর বড় ড্রামে করে রস জাল করে গাঢ় করতে হয়। বড় মাটির পাতিলে ঢেলে রাখলে তা জমে যায়। যাকে বলা হয়,লালী খয়ের বা কাঁচা খয়ের বলা হয়ে থাকে। এই লালী খয়ের একমাত্র চারঘাটের হাটে কেনাবেচা হয়ে থাকে। যা বাংলাদেশের আর কোথাও কেনাবেচা হয় না। স্থানীয় খয়ের ব্যবসায়ীরা এই লালী খয়ের ক্রয় করে পুণরায় আগুনে জ্বাল করে ঘন করা হয়। তারপর, একটু ঠাণ্ডা হলে মেশিনের সাহায্যে চাপ দিলে বাহির হয়, চার কোণা আকৃতি খয়ের। গুটি করে কেটে নিয়ে ঘরের মধ্যে ঠাণ্ডা স্থানে শুকাতে হয়। কারণ, রোদে শুকালে খয়েরের দানা ও রং নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় রয়েছে। অনেক সময়ে খয়েরের গুটি শুকাতে ২ থেকে ৩ মাস সময় লেগে যায়। তারপর,পানের ভেতরে দেওয়া গুটি খয়ের প্রক্রিয়া করন শুধুমাত্র চারঘাট এলাকায় হয়ে থাকে। যার কারণে খয়ের ব্যবসায়ীদের তিনগুন পুজি (টাকার) প্রয়োজন হয়। গুটি শুকানোর পর স্থানীয় ব্যবসায়ীরা খয়ের গুটিগুলো ঢাকা, খুলনা যশোর রংপুর সৈয়দপুর জামালপুর শেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে থাকেন। তবে স্থানীয় অনেক ব্যবসায়ীরা আড়তদারদের নিকট হতে খয়েরের টাকা ঠিক সময় না পাওয়ার কারণে ব্যবসায় ভাটা পড়ে যায়। আবার অনেক ব্যবসায়ী দেশের বিভিন্ন স্থানে খয়ের টাকা বাকি পড়ে যাওয়ায় মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকে। চারঘাট সদরের খয়ের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর সঙ্গে আলাপ করলে তারা দুঃখ করে বলেন, আমার বাবার আমল থেকে প্রায় ৪০-৫০ বছর থেকে আমরা এই খয়ের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। আগের মতো এখন আর খয়ের ব্যবসায় তেমন একটা লাভ নেই। বর্তমানে চারঘাটের এই ঐতিহ্যবাহী খয়ের ব্যবসায় চরম মন্দাভাব চলছে। এই ব্যবসায় অনেক সময় ব্যবসায়ীক কারণে বিভিন্ন মোকামে টাকা পড়ে থাকে। এ কারণে খয়ের ব্যবসায় তিনগুণ টাকার প্রয়োজন হয়। সেজন্য স্থানীয় খয়ের ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ হয়ে আছে। বর্তমানে চারঘাটে ভালোমানে কাঁচা লালী খয়ের ৩৬ থেকে ৩৮ হাজার টাকা মণ বিক্রি হয়ে থাকে। আর শুকনা গুটি খয়ের ১৫শত টাকা হতে ১৬শত টাকা কেজি করে ঢাকায় ব্যবসায়ীদের নিকটে বিক্রি করা হয়। বর্তমানে চারঘাট এলাকা খয়ের গাছের অভাব দেখা দেওয়ায় আমরা লালী খয়ের নাটোর জেলার আব্দুলপুর, গোপালপুর, লোকমানপুর হতে আমরা লালী কিনে এনে গুটি খয়ের তৈরি করে থাকি। আর কিছু লালী খয়ের আমাদের নিজ এলাকায় উৎপাদন হয়ে থাকে।

চারঘাটের বিশিষ্ট খয়ের ব্যবসায়ী এনামুল হক বলেন,আমার বাবার আমল হতে খয়ের ব্যবসা করে আসছি। আমার ব্যবসায় ক্ষতি হলেও বাবার রেখে যাওয়া ব্যবসাটির ঐতিয্যে ধরে রেখেছি। চারঘাটে লালী এবং গুটি খয়ের তৈরি করা ব্যবসায়ীর সংখ্যা সবমিলে ১০ হতে ১২ জন এই পেশার সঙ্গে জড়িত হয়ে আছে। আগে বিভিন্ন এলাকায় অনেক খয়ের গাছ জন্ম হতো কিন্তু এখন এই খয়ের গাছ পাওয়া যায় না বললেই চলে। এখন বিভিন্ন এলাকা থেকে চারঘাটের শনিবার ও বুধবার সপ্তাহে ২ দিন হাটে এই খয়ের গাছ কেনাবেচা হয়ে থাকে। খয়ের ব্যবসায় যেমন এখন আগের তুলনায় লাভ কমে গেছে,তেমনি এখন খয়ের গাছ না পওয়ায়। এই খয়ের গাছও কিনতে হচ্ছে দ্বিগুন দামে। দেশের ভেতর একমাত্র চারঘাটের খয়েরগুলি ভেজাল ছাড়া উৎপাদন হয়ে থাকে। বাকি দেশের বিভিন্ন স্থানে যে খয়ের পাওয়া যায় সেগুলি কেমিক্যালযুক্ত দিয়ে তৈরি করা খয়ের। চারঘাট পৌর সদরের গোপালপুর এলাকার মৃত আজমুল হকের বড় মেয়ে আবিদা সুলতানা বাবার খয়ের ব্যবসার ঐতিহ্য ধরে রাখাতে পড়াশুনার পাশাপাশি সে এবং তার মা খয়ের ব্যবসা করছেন। চারঘাটের খয়ের ব্যবসায়ীরা এখানকার ঐতিহ্যবাহী এই খয়ের শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়ে আসছেন।

back to top