আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) : পাইকারি বাজারে স্তূপ করে রাখা হয় আলু। চাষি আর আড়তদাররা অপেক্ষায় আছেন পাইকারদের -সংবাদ
কৃষি বিভাগের হিসেবে জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে এবার ৭শ হেক্টর বেশি জমিতে বেড়েছে আলু চাষের পরিধি। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় ৬ হাজার ৬শ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর আলুর ফলনও হয়েছে বাম্পার। পাইকারি হাট বাজারে বেড়েছে সরবরাহ। তবে ক্রেতার অভাবে আলুর বাজারে ঘটেছে দর পতন। অন্যদিকে হিমাগারে সিন্ডিকেটের কারণে আলুর সংরক্ষণে স্লিপ পাচ্ছেন না চাষিরা। পচনশীল ফসল হওয়াই বাড়িতে না রেখে বাজারে নিয়ে এসেও উপযুক্ত দাম পাচ্ছেন না চাষিরা এতে করে বাজারজাত করতে হারাচ্ছে আগ্রহ। গত কয়েক সপ্তাহজুড়ে আক্কেলপুর খুচরা বাজারে পাকড়ি (লাল) আলুর দাম কেজি প্রতি ১৫ টাকায় নিচে নেমে এসেছে। পাইকারি হাটে আলু আরও কমে প্রতি মণ ৪শ টাকায় নেমে এসেছে। অন্যদিকে, ডায়মন্ড জাতের হল্যান্ড আলু ও গ্রানুলা সাদা জাতের আলুর বিক্রি হচ্ছে প্রতিমন ৩শ টাকায়। কৃষদের দাবি, ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে আলুর বীজে অধিক মূল্য লাভ করায় কৃষকরা বেশি দামে কিনেছিলেন বীজ আলু। বীজ আলু ১০০ টাকায় কিনে তা উৎপাদন করে প্রতিকেজি আলু ১০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে লাভ তো দূরের কথা উৎপাদন খরচ উঠা হিমসিম হয়ে পড়েছে আলু চাষিদের। পরিবেশ ও মাটির কারণে উত্তরের অন্যান্য জেলার চেয়ে জয়পুরহাট জেলায় আলুর ফলন বেশি হয়।
সরেজমিনে আক্কেলপুর কলেজ বাজার, তিলকপুর, গোপীনাথপুর, জামালগঞ্জ এবং রায়কালী ইউনিয়নের পাইকারী আলুর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব জায়গায় আলুর স্তুপ। নেই ব্যাপারীদের হাঁক-ডাক। চাষি আর আড়তদাররা মাথায় হাত দিয়ে অপেক্ষায় আছেন পাইকারদের হাঁক-ডাকের। উপজেলার আওয়ালগাড়ী গ্রামের আলু চাষি জাইদুল ইসলাম বলেন, গত বছর আলুর বাজার ভালো ছিল। তাই এবার আলু চাষির সংখ্যা ও জমির পরিমাণ বেড়ে যায়। ১ বিঘা জমিতে আলু চাষ করতে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সেখানে আলু বিক্রি হচ্ছে বিঘা প্রতি ১৫থেকে ১৬ হাজার টাকায়।
আলুর বাজার প্রতি মন ১২শ থেকে ১৩শ টাকা থাকলে কিছুটা লাভ হতো। জালালপুর গ্রামের আলু চাষি মো. শাহজাহান আলী বলেন, ১০০ টাকা কেজিতে বীজ আলু কিনে আজ বাজারে এসে ক্রেতারা আলুর দাম করছে মাত্র ১০ টাকা কেজি। এতে উৎপাদনের খরচ উঠবে না। এবার আলু চাষে লাভের চেয়ে খরচের ভাগই বেশি। বদলগাছী উপজেলার ঝালঘড়িয়া গ্রামের আলু চাষি পাপ্পু মন্ডল আক্ষেপ করে বলেন, এই দামে আলু বিক্রি করলে বউ-ছলও (স্ত্রী-সন্তান) থাকবে না। বাজারে আলু নিয়ে আসলে ২শ থেকে ৩শ টাকা প্রতি মনে বিক্রি করতে হচ্ছে। এই বিষয়ে জানতে চাইলে আক্কেলপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. ইমরান হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় লক্ষমাত্রার চেয়ে ৭শ হেক্টর জমিতে বেশি আলু চাষ হয়েছে। ফলনও হয়েছে বাম্পার। উৎপাদন বেশি হওযায় বাজারে আলুর দাম কমেছে। জয়পুরহাট জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মেহেদী হাসান বলেন, আলু একটি পঁচনশীল ফসল।
সরাকরিভাবে আলু স্টোরেজ রাখার ব্যবস্থা নেয়। আক্কেলপুরে ৩টি বেসরকারি হিমাগার রয়েছে। স্থানীয় সব কৃষক একযোগে আলুর চাষ না করে, বিকল্প সরিষা চাষ করলে কিছুটা লাভবান হতেন। অথবা রপ্তানিযোগ্য উন্নত জাতের আলুর চাষও করতে পারেন উপজেলার কৃষকরা।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) : পাইকারি বাজারে স্তূপ করে রাখা হয় আলু। চাষি আর আড়তদাররা অপেক্ষায় আছেন পাইকারদের -সংবাদ
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
কৃষি বিভাগের হিসেবে জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে এবার ৭শ হেক্টর বেশি জমিতে বেড়েছে আলু চাষের পরিধি। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় ৬ হাজার ৬শ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর আলুর ফলনও হয়েছে বাম্পার। পাইকারি হাট বাজারে বেড়েছে সরবরাহ। তবে ক্রেতার অভাবে আলুর বাজারে ঘটেছে দর পতন। অন্যদিকে হিমাগারে সিন্ডিকেটের কারণে আলুর সংরক্ষণে স্লিপ পাচ্ছেন না চাষিরা। পচনশীল ফসল হওয়াই বাড়িতে না রেখে বাজারে নিয়ে এসেও উপযুক্ত দাম পাচ্ছেন না চাষিরা এতে করে বাজারজাত করতে হারাচ্ছে আগ্রহ। গত কয়েক সপ্তাহজুড়ে আক্কেলপুর খুচরা বাজারে পাকড়ি (লাল) আলুর দাম কেজি প্রতি ১৫ টাকায় নিচে নেমে এসেছে। পাইকারি হাটে আলু আরও কমে প্রতি মণ ৪শ টাকায় নেমে এসেছে। অন্যদিকে, ডায়মন্ড জাতের হল্যান্ড আলু ও গ্রানুলা সাদা জাতের আলুর বিক্রি হচ্ছে প্রতিমন ৩শ টাকায়। কৃষদের দাবি, ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে আলুর বীজে অধিক মূল্য লাভ করায় কৃষকরা বেশি দামে কিনেছিলেন বীজ আলু। বীজ আলু ১০০ টাকায় কিনে তা উৎপাদন করে প্রতিকেজি আলু ১০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে লাভ তো দূরের কথা উৎপাদন খরচ উঠা হিমসিম হয়ে পড়েছে আলু চাষিদের। পরিবেশ ও মাটির কারণে উত্তরের অন্যান্য জেলার চেয়ে জয়পুরহাট জেলায় আলুর ফলন বেশি হয়।
সরেজমিনে আক্কেলপুর কলেজ বাজার, তিলকপুর, গোপীনাথপুর, জামালগঞ্জ এবং রায়কালী ইউনিয়নের পাইকারী আলুর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব জায়গায় আলুর স্তুপ। নেই ব্যাপারীদের হাঁক-ডাক। চাষি আর আড়তদাররা মাথায় হাত দিয়ে অপেক্ষায় আছেন পাইকারদের হাঁক-ডাকের। উপজেলার আওয়ালগাড়ী গ্রামের আলু চাষি জাইদুল ইসলাম বলেন, গত বছর আলুর বাজার ভালো ছিল। তাই এবার আলু চাষির সংখ্যা ও জমির পরিমাণ বেড়ে যায়। ১ বিঘা জমিতে আলু চাষ করতে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সেখানে আলু বিক্রি হচ্ছে বিঘা প্রতি ১৫থেকে ১৬ হাজার টাকায়।
আলুর বাজার প্রতি মন ১২শ থেকে ১৩শ টাকা থাকলে কিছুটা লাভ হতো। জালালপুর গ্রামের আলু চাষি মো. শাহজাহান আলী বলেন, ১০০ টাকা কেজিতে বীজ আলু কিনে আজ বাজারে এসে ক্রেতারা আলুর দাম করছে মাত্র ১০ টাকা কেজি। এতে উৎপাদনের খরচ উঠবে না। এবার আলু চাষে লাভের চেয়ে খরচের ভাগই বেশি। বদলগাছী উপজেলার ঝালঘড়িয়া গ্রামের আলু চাষি পাপ্পু মন্ডল আক্ষেপ করে বলেন, এই দামে আলু বিক্রি করলে বউ-ছলও (স্ত্রী-সন্তান) থাকবে না। বাজারে আলু নিয়ে আসলে ২শ থেকে ৩শ টাকা প্রতি মনে বিক্রি করতে হচ্ছে। এই বিষয়ে জানতে চাইলে আক্কেলপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. ইমরান হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় লক্ষমাত্রার চেয়ে ৭শ হেক্টর জমিতে বেশি আলু চাষ হয়েছে। ফলনও হয়েছে বাম্পার। উৎপাদন বেশি হওযায় বাজারে আলুর দাম কমেছে। জয়পুরহাট জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মেহেদী হাসান বলেন, আলু একটি পঁচনশীল ফসল।
সরাকরিভাবে আলু স্টোরেজ রাখার ব্যবস্থা নেয়। আক্কেলপুরে ৩টি বেসরকারি হিমাগার রয়েছে। স্থানীয় সব কৃষক একযোগে আলুর চাষ না করে, বিকল্প সরিষা চাষ করলে কিছুটা লাভবান হতেন। অথবা রপ্তানিযোগ্য উন্নত জাতের আলুর চাষও করতে পারেন উপজেলার কৃষকরা।