নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) : আবহাওয়ার প্রতিকূলতায় শুকাতে না পারায় ঘরে তুলতে পারছে না কৃষকের ধান -সংবাদ
নাগেশ্বরীতে প্রকৃতির বৈরি আচরণের শিকার কৃষক হয়েছেন। বৃষ্টি, ভেজা মাঠ, উঠোনে পড়ে আছে কেটে আনা ধান। অগ্রিম কাটা-মাড়াই করা ধানগুলোও আবহাওয়ার প্রতিকুলতায় শুকাতে না পারায় ঘরে তোলা যাচ্ছে না। ক্ষেতেই ঝরে যাচ্ছে অবশিষ্ট পাকা ধান। উদ্বিগ্ন কৃষক।
টানা খরার পর গত ১২ মে গভীর রাতে আচমকাই শুরু ঝড়-বজ্র-বৃষ্টি। এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিন রাত ও দিনে কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এর আগে কৃষক কিছু জমির ধান কেটে বাড়িতে আনলেও সেগুলোর মাড়াই ও শুকনার কাজ ঠিকমত করতে পারছেন না। বৃষ্টির পানিতে প্রায় সর্বক্ষণ ভেজা থাকছে মাটি। ভেজা ও নরম মাটিতে ধান শুকাতে দিলেই তা আরও ভিজে যাচ্ছে। এরপর বৃষ্টি বিড়ম্বনায় বারবার উঠাতে হচ্ছে। এর মধ্যে বাকি জমির ধান পেকে গেছে। সেগুলো খেতে রাখলে সমস্যা। ঝড়-বাতাসে শীষ থেকে ঝড়ে যাচ্ছে ধান। আবার কেটে বাড়ি নিয়ে আসলেও সঠিক সময়ে মাড়াই, পরিষ্কার ও শুকাতে না পারায় উঠোনেই ধান থেকে গজাচ্ছে গাছ। উভয় সংকটে পড়েছেন তারা।
কৃষক পৌরসভার বানিয়াপাড়ার এলাকার অনেক কৃষকই বলেন, এবারে অন্য বারের তুলনায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। আশা করেছিলাম উৎপাদন খরচ বাদে কিছুটা সাশ্রয় হবে আমাদের।
বাজারে আশানুরূপ দাম পেলে মৌসুম ঘিরে নেয়া ঋণ পরিশোধ করে আমরা পরিবার নিয়ে ভালভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারব। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ায় তা আর সম্ভব হচ্ছে না বোধহয়। এখন যে অবস্থা তাতে করে নির্বেঘ্নে ফসল ঘরে তোলা নিয়ে সংশয়ে আছি। এ সুযোগে বাজারে কমে গেছে ধানের দাম। প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৮শ থেকে সাড়ে ৮শ টাকা দরে। এর চেয়ে উৎপাদন খরচ বেশি পড়েছে আমাদের। ফলে ফের হয়ত আমরা ঋণের বৃত্তে আটকা পড়ব।
কুড়িগ্রাম রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র নরকার জানান, এটি মৌসুমী বৃষ্টিপাত। চলবে আগামী ২০ মে পর্যন্ত। তবে একটি ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। সেক্ষেত্রে বৃষ্টিপাত আরও কয়েকদিন বাড়বে।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, উপজেলায় এবারে ২৩ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্জিত হয়েছে ২৩ হাজার ৪৫৫ হেক্টর- যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৫ হেক্টর বেশি। ফলন হয়েছে ভালো। তবে শেষে মুহূর্তে ফসল ঘরে উঠার সময় প্রকৃতির বৈরিতায় দেখা দিয়েছে বিড়ম্বনা।
উপজেলা সিনিয়র কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার হোসেন জানান, এ সময় সাধারণ বৃষ্টিতে ধানের তেমন কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। তবে শিলাবৃষ্টি হলেই সমস্যা। তাই ৮০ ভাগ ধান পেকে গেলেই তা কাটার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে কৃষককে।
নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) : আবহাওয়ার প্রতিকূলতায় শুকাতে না পারায় ঘরে তুলতে পারছে না কৃষকের ধান -সংবাদ
শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
নাগেশ্বরীতে প্রকৃতির বৈরি আচরণের শিকার কৃষক হয়েছেন। বৃষ্টি, ভেজা মাঠ, উঠোনে পড়ে আছে কেটে আনা ধান। অগ্রিম কাটা-মাড়াই করা ধানগুলোও আবহাওয়ার প্রতিকুলতায় শুকাতে না পারায় ঘরে তোলা যাচ্ছে না। ক্ষেতেই ঝরে যাচ্ছে অবশিষ্ট পাকা ধান। উদ্বিগ্ন কৃষক।
টানা খরার পর গত ১২ মে গভীর রাতে আচমকাই শুরু ঝড়-বজ্র-বৃষ্টি। এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিন রাত ও দিনে কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এর আগে কৃষক কিছু জমির ধান কেটে বাড়িতে আনলেও সেগুলোর মাড়াই ও শুকনার কাজ ঠিকমত করতে পারছেন না। বৃষ্টির পানিতে প্রায় সর্বক্ষণ ভেজা থাকছে মাটি। ভেজা ও নরম মাটিতে ধান শুকাতে দিলেই তা আরও ভিজে যাচ্ছে। এরপর বৃষ্টি বিড়ম্বনায় বারবার উঠাতে হচ্ছে। এর মধ্যে বাকি জমির ধান পেকে গেছে। সেগুলো খেতে রাখলে সমস্যা। ঝড়-বাতাসে শীষ থেকে ঝড়ে যাচ্ছে ধান। আবার কেটে বাড়ি নিয়ে আসলেও সঠিক সময়ে মাড়াই, পরিষ্কার ও শুকাতে না পারায় উঠোনেই ধান থেকে গজাচ্ছে গাছ। উভয় সংকটে পড়েছেন তারা।
কৃষক পৌরসভার বানিয়াপাড়ার এলাকার অনেক কৃষকই বলেন, এবারে অন্য বারের তুলনায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। আশা করেছিলাম উৎপাদন খরচ বাদে কিছুটা সাশ্রয় হবে আমাদের।
বাজারে আশানুরূপ দাম পেলে মৌসুম ঘিরে নেয়া ঋণ পরিশোধ করে আমরা পরিবার নিয়ে ভালভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারব। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ায় তা আর সম্ভব হচ্ছে না বোধহয়। এখন যে অবস্থা তাতে করে নির্বেঘ্নে ফসল ঘরে তোলা নিয়ে সংশয়ে আছি। এ সুযোগে বাজারে কমে গেছে ধানের দাম। প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৮শ থেকে সাড়ে ৮শ টাকা দরে। এর চেয়ে উৎপাদন খরচ বেশি পড়েছে আমাদের। ফলে ফের হয়ত আমরা ঋণের বৃত্তে আটকা পড়ব।
কুড়িগ্রাম রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র নরকার জানান, এটি মৌসুমী বৃষ্টিপাত। চলবে আগামী ২০ মে পর্যন্ত। তবে একটি ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। সেক্ষেত্রে বৃষ্টিপাত আরও কয়েকদিন বাড়বে।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, উপজেলায় এবারে ২৩ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্জিত হয়েছে ২৩ হাজার ৪৫৫ হেক্টর- যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৫ হেক্টর বেশি। ফলন হয়েছে ভালো। তবে শেষে মুহূর্তে ফসল ঘরে উঠার সময় প্রকৃতির বৈরিতায় দেখা দিয়েছে বিড়ম্বনা।
উপজেলা সিনিয়র কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার হোসেন জানান, এ সময় সাধারণ বৃষ্টিতে ধানের তেমন কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। তবে শিলাবৃষ্টি হলেই সমস্যা। তাই ৮০ ভাগ ধান পেকে গেলেই তা কাটার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে কৃষককে।