কেশবপুর (যশোর) : মাছ চাষের জন্য ঘেরে ভূগর্ভস্থ থেকে পানি তুলছেন ঘের মালিকরা -সংবাদ
ভবদহ নীতিমালা উপেক্ষা করে যশোরের কেশবপুরে শত শত ঘের মালিক মাছ চাষের জন্যে বৈদ্যুতিক সেচ পাম্প দিয়ে অবৈধভাবে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে ঘের ভরাট কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। অপারদিকে, খননের অভাবে এ উপজেলার পানি নিষ্কাশনের প্রধান নদ-নদী পলীতে ভরাট হয়ে গেছে। এঅবস্থায় ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন বন্ধে প্রশাসন পদক্ষেপ না নিলে আগামী বর্ষা মৌসুমে জনগণকে গেল বারের ন্যায় ভয়াবহ বন্যা মোকাবিলা করতে হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, ২০০০ সালের দিকে স্থানীয় প্রভাবশালীরা বিল ও সরকারি খাল জবর দখল করে মাছের ঘের করেন।
এসময় ঘের মালিকরা সেতু, কালর্ভাটের মুখ ভরাটসহ অপরিকল্পিতভাবে রাস্তাকে ঘেরের বেঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে মাছের ঘের করেন। গত বারের বন্যায় যেসমস্ত ঘের বন্যায় তলিয়ে গিয়েছিল তা রক্ষায় সড়কের ঢালের ওপর ২/৩ ফুট উঁচু করে ঘেররক্ষা বাধ নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে বর্ষা মৌসুমে এসব সড়ক নালায় পরিণত হয়ে জলাবদ্ধ হয়ে পড়বে। এতে একদিকে যেমন জনগণের চলাচলে বিঘœ ঘটবে, অন্যদিকে জলাবদ্ধতায় নষ্ট হবে সড়ক।
এছাড়া বিল এলাকার ঘের মালিকরা মাছ চাষের জন্যে মৌসুমের শুরুতেই ঘেরে ভূগর্ভস্থ পানি তুলে ঘের ভরাট করছেন। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় গত ১০ বছর ধরে বিল সংলগ্ন এলাকার কৃষকরা বছরের একমাত্র ফসল বোরো আবাদ করতে পারছেন না। ঘেরের কারণে বাগডাঙ্গা, মনোহরনগর, কালিচরণপুরসহ ১৫টি গ্রামে কৃত্রিম জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে জনগণকে প্রায় ৮ মাস ধরে পানিবন্দী জীবন যাপণ করতে হয়।
সরেজমিনে লহ্মীনাথকাটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ভবদহ নীতিমালা উপেক্ষা করে ঘের মালিক লুৎফর রহমান বৈদ্যুতিক সেচ পাম্প দিয়ে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। অপর ঘের মালিক কালাম সড়কের ঢাল ২/৩ ফুট উঁচু করে ঘেররক্ষা বাধ নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব ঘেরের নেই কোনো মৎস্য অফিসের লাইসেন্স।
এ ব্যাপারে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুদীপ কুমার বিশ^াস বলেন, কেশবপুরে ৪ হাজার ৬৫৮টি মাছের ঘের রয়েছে। এসব ঘেরে চাষযোগ্য জমি রয়েছে সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর। বোরো আবাদের লক্ষ্যে ঘের মালিকরা ঘেরের পানি নিষ্কাশন করে। আবার বোরো ধান কাটার সাথে সাথেই অবৈধভাবে ঘেরে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে ঘের ভরাট করে। তিনি অভিযোগ করেন, ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে মাছ চাষের কোনো সুযোগ নেই। ঘের মালিকরা ৫৯টি সরকারি খালের ৩৯৪ হেক্টর জমি দখল করে রেখেছেন। তারা জবর দখলে রাখা এসব খালে মাছ চাষ করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সরকার কৃষি কাজের জন্যে শুধু বিদ্যুৎ সংযোগসহ ভতুর্কি দিচ্ছেন। যারা অবৈধভাবে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া জরুরী।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোকসানা খাতুন বলেন, ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন বন্ধে গত শুক্র ও শনিবার প্রতিটি ইউনিয়নে মাইকিং করা অব্যাহত রয়েছে। ঘের মালিকদের ভবদহ নীতিমালা মেনে মৎস্য অফিসের লাইসেন্স নিয়ে ঘের করতে বলা হয়েছে। ভবদহ নীতিমালা অনুসরন না করায় গত ১৬ মে মোবালই কোর্ট পরিচালনা করে তিনজন ঘের মালিক ও ম্যানেজারকে ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। যারা এ নির্দেশনা অমান্য করবে জনস্বার্থে তাদের বিরুদ্ধে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
কেশবপুর (যশোর) : মাছ চাষের জন্য ঘেরে ভূগর্ভস্থ থেকে পানি তুলছেন ঘের মালিকরা -সংবাদ
শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
ভবদহ নীতিমালা উপেক্ষা করে যশোরের কেশবপুরে শত শত ঘের মালিক মাছ চাষের জন্যে বৈদ্যুতিক সেচ পাম্প দিয়ে অবৈধভাবে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে ঘের ভরাট কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। অপারদিকে, খননের অভাবে এ উপজেলার পানি নিষ্কাশনের প্রধান নদ-নদী পলীতে ভরাট হয়ে গেছে। এঅবস্থায় ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন বন্ধে প্রশাসন পদক্ষেপ না নিলে আগামী বর্ষা মৌসুমে জনগণকে গেল বারের ন্যায় ভয়াবহ বন্যা মোকাবিলা করতে হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, ২০০০ সালের দিকে স্থানীয় প্রভাবশালীরা বিল ও সরকারি খাল জবর দখল করে মাছের ঘের করেন।
এসময় ঘের মালিকরা সেতু, কালর্ভাটের মুখ ভরাটসহ অপরিকল্পিতভাবে রাস্তাকে ঘেরের বেঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে মাছের ঘের করেন। গত বারের বন্যায় যেসমস্ত ঘের বন্যায় তলিয়ে গিয়েছিল তা রক্ষায় সড়কের ঢালের ওপর ২/৩ ফুট উঁচু করে ঘেররক্ষা বাধ নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে বর্ষা মৌসুমে এসব সড়ক নালায় পরিণত হয়ে জলাবদ্ধ হয়ে পড়বে। এতে একদিকে যেমন জনগণের চলাচলে বিঘœ ঘটবে, অন্যদিকে জলাবদ্ধতায় নষ্ট হবে সড়ক।
এছাড়া বিল এলাকার ঘের মালিকরা মাছ চাষের জন্যে মৌসুমের শুরুতেই ঘেরে ভূগর্ভস্থ পানি তুলে ঘের ভরাট করছেন। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় গত ১০ বছর ধরে বিল সংলগ্ন এলাকার কৃষকরা বছরের একমাত্র ফসল বোরো আবাদ করতে পারছেন না। ঘেরের কারণে বাগডাঙ্গা, মনোহরনগর, কালিচরণপুরসহ ১৫টি গ্রামে কৃত্রিম জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে জনগণকে প্রায় ৮ মাস ধরে পানিবন্দী জীবন যাপণ করতে হয়।
সরেজমিনে লহ্মীনাথকাটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ভবদহ নীতিমালা উপেক্ষা করে ঘের মালিক লুৎফর রহমান বৈদ্যুতিক সেচ পাম্প দিয়ে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। অপর ঘের মালিক কালাম সড়কের ঢাল ২/৩ ফুট উঁচু করে ঘেররক্ষা বাধ নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব ঘেরের নেই কোনো মৎস্য অফিসের লাইসেন্স।
এ ব্যাপারে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুদীপ কুমার বিশ^াস বলেন, কেশবপুরে ৪ হাজার ৬৫৮টি মাছের ঘের রয়েছে। এসব ঘেরে চাষযোগ্য জমি রয়েছে সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর। বোরো আবাদের লক্ষ্যে ঘের মালিকরা ঘেরের পানি নিষ্কাশন করে। আবার বোরো ধান কাটার সাথে সাথেই অবৈধভাবে ঘেরে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে ঘের ভরাট করে। তিনি অভিযোগ করেন, ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে মাছ চাষের কোনো সুযোগ নেই। ঘের মালিকরা ৫৯টি সরকারি খালের ৩৯৪ হেক্টর জমি দখল করে রেখেছেন। তারা জবর দখলে রাখা এসব খালে মাছ চাষ করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সরকার কৃষি কাজের জন্যে শুধু বিদ্যুৎ সংযোগসহ ভতুর্কি দিচ্ছেন। যারা অবৈধভাবে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া জরুরী।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোকসানা খাতুন বলেন, ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন বন্ধে গত শুক্র ও শনিবার প্রতিটি ইউনিয়নে মাইকিং করা অব্যাহত রয়েছে। ঘের মালিকদের ভবদহ নীতিমালা মেনে মৎস্য অফিসের লাইসেন্স নিয়ে ঘের করতে বলা হয়েছে। ভবদহ নীতিমালা অনুসরন না করায় গত ১৬ মে মোবালই কোর্ট পরিচালনা করে তিনজন ঘের মালিক ও ম্যানেজারকে ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। যারা এ নির্দেশনা অমান্য করবে জনস্বার্থে তাদের বিরুদ্ধে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।