alt

সারাদেশ

লংলা সিমেট্রি : সিলেটের চা-উপনিবেশের নীরব সাক্ষী

প্রতিনিধি, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) : রোববার, ১০ আগস্ট ২০২৫

সিলেট বিভাগের চা-বাগানসমৃদ্ধ অঞ্চলের ইতিহাসে লংলা সিমেট্রি একটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন। এই কবরস্থানটি ব্রিটিশ চা-উপনিবেশের সময়কালের স্মৃতি বহন করে, যেখানে ব্রিটিশ চা-উদ্যোক্তা ও তাদের পরিবারবর্গের সমাধি রয়েছে। এই সিমেট্রি শুধু একটি কবরস্থান নয়, এটি সিলেটের চা-শিল্পের ইতিহাসের নীরব সাক্ষী।

১৯ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ব্রিটিশরা সিলেট অঞ্চলে চা-চাষ শুরু করে। এই সময়ে অনেক ব্রিটিশ নাগরিক সিলেটে বসবাস শুরু করেন এবং চা-শিল্পের উন্নয়নে অবদান রাখেন। তাদের মৃত্যুর পর লংলা সিমেট্রিতে তাদের সমাধি স্থাপন করা হয়। এই সমাধিগুলো ব্রিটিশ স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন বহন করে এবং সিলেটের চা-শিল্পের ইতিহাসের অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।

মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলা শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত টিলাগাঁও ইউনিয়নের ডানকান ব্রাদার্সের লংলা চা বাগানের রাবার বাগান এলাকায় রয়েছে লংলা সিমেট্রি। এখানে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন দেশের চা শিল্পের বিকাশে মূল্যবান অবদান রাখা খৃস্টান সম্প্রদায়ের বিদেশি ট্রি প্লান্টার ও তাদের স্বজনরা।

১৮৫৪ সালে সিলেট জেলায় মালনীছড়া চা বাগান স্থাপনের মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে চা শিল্পের যাত্রা শুরু হয়। এর পর থেকে মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন জায়গায় ব্রিটিশরা বাণিজ্যিকভাবে চা চাষাবাদ শুরু করে। এ সময় ব্রিটেন থেকে নিয়ে আসা হয় অভিজ্ঞ টি প্ল্যানটারদের অনেকে তৎকালীন সময়ে বিভিন্ন কারণে মৃত্যুবরণ করেন। তাদের মধ্যে ২৮ জনকে সমাহিত করা হয় লংলা চা বাগানের এই সিমেট্রিতে।

বর্তমানে লংলা সিমেট্রি অবহেলিত অবস্থায় রয়েছে। সমাধিগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত ও অযতেœ পড়ে আছে। স্থানীয় প্রশাসন ও সংরক্ষণ সংস্থাগুলোর উদ্যোগে এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটির সংরক্ষণ জরুরি। এটি শুধু ইতিহাসের অংশ নয়, এটি পর্যটন আকর্ষণ হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

লংলা সিমেট্রি সিলেটের চা-শিল্পের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান হতে পারে, যেখানে তারা ব্রিটিশ চা-উপনিবেশের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবেন। এ ছাড়া এই সিমেট্রির সংরক্ষণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে স্থানীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

লংলা সিমেট্রি সিলেটের চা-শিল্পের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন। এর সংরক্ষণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা আমাদের ইতিহাসকে সংরক্ষণ করতে পারি এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি মূল্যবান ঐতিহ্য রেখে যেতে পারি। স্থানীয় প্রশাসন, সংরক্ষণ সংস্থা ও জনগণের সমন্বিত উদ্যোগে এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটির সংরক্ষণ নিশ্চিত করা সম্ভব।

ছবি

রাজশাহীতে এনসিপি নেতার বাড়িতে কাফনের কাপড়! হুমকিপত্রে লেখা ‘প্রস্তুত হ রাজাকার’

ছবি

ভিসা হলেও যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে ১৫ হাজার ডলার পর্যন্ত জামানত দিতে হবে

ছবি

‘বিডিওএসএন টক’-এ তারিক আদনান মুন : গণিত অলিম্পিয়াড থেকে এআই সিস্টেমস- এক অনুপ্রেরণার যাত্রা

ছবি

ইনফিনিক্সের আয়োজনে পাবজি মোবাইল ক্যাম্পাস ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ অনুষ্ঠিত

‘অবৈধ ট্রলবোট বন্ধ হলে সামুদ্রিক মাছের উৎপাদন বাড়বে’

ছবি

আদিবাসী দিবস পালিত

গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু

ছবি

কুয়াকাটায় ধরা পড়লো বিরল প্রজাতির ‘অ্যাঞ্জেলফিশ’

নিখোঁজের ২ দিন পর বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

দেবহাটায় অসময়ের তরমুজ চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের

ছবি

মোহনগঞ্জে হারিয়ে যাচ্ছে পালের নৌকা

জুলাই বিপ্লবে অবদান রাখায় সাংবাদিক প্রতীক ওমর সংবর্ধিত

চুয়াডাঙ্গা ৯ কেজি রুপা জব্দ

ছবি

‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে বিএনপি’

শাহজাদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১

ছবি

জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসক ও লোকবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা

সাংবাদিক তুহিন হত্যার বিচার দাবিতে পলাশে মানববন্ধন

ছবি

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়ক অবরোধ

তারাগঞ্জে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ২

বাগেরহাটে গলায় ফাঁস দিয়ে শিশুর মৃত্যু

ছবি

পাকুন্দিয়ার বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার

ছবি

আদমদীঘির শিয়ালশন-জিনইর সড়ক যান চলাচলের অযোগ্য

ছবি

স্বেচ্ছাশ্রমে আউরা খালের ব্রিজ মেরামত করল এলাকাবাসীর

ছবি

যাচ্ছিলেন বিয়ে পাকা করতে, তারাগজ্ঞে ‘মব সন্ত্রাসে’ মুচী সম্প্রদায়ের দু’জনকে পিটিয়ে হত্যা

বগুড়ায় সিএনজি-বাস সংঘর্ষে দুই ভাই নিহত

ছবি

কিস্তিতে পণ্য কিনে ক্রেতা গেলেন মারা, পরিবার পেল নগদ অর্থ সহায়তা

উলিপুর কমিউনিস্ট পার্টির সম্মেলন

ছবি

আত্রাইয়ে ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে দেড় হাজার বিঘার আমন জমি

ফুলবাড়ীতে ছেলেকে পানিতে ফেলে হত্যার চেষ্টা বাবার

ছবি

মাতামুহুরী সেতু সড়কের দুইপাশের খেজুর চারা রোপণ

রাজশাহীতে বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন

ছবি

দুই সপ্তাহেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ

নাসিরনগরে পানিতে ডুবে দুই শিশু মৃত্যু

ছবি

জোয়ার এলেই আতঙ্কে বেতাগীর কালিকাবাড়ি প্রাইমারি স্কুল শিক্ষার্থীরা

ছবি

গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যার প্রতিবাদে গঙ্গাচড়ায় মানববন্ধন

ছবি

কুমিল্লার সদর দক্ষিণে ওয়ার্কশপ মালিকের মরদেহ উদ্ধার

tab

সারাদেশ

লংলা সিমেট্রি : সিলেটের চা-উপনিবেশের নীরব সাক্ষী

প্রতিনিধি, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার)

রোববার, ১০ আগস্ট ২০২৫

সিলেট বিভাগের চা-বাগানসমৃদ্ধ অঞ্চলের ইতিহাসে লংলা সিমেট্রি একটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন। এই কবরস্থানটি ব্রিটিশ চা-উপনিবেশের সময়কালের স্মৃতি বহন করে, যেখানে ব্রিটিশ চা-উদ্যোক্তা ও তাদের পরিবারবর্গের সমাধি রয়েছে। এই সিমেট্রি শুধু একটি কবরস্থান নয়, এটি সিলেটের চা-শিল্পের ইতিহাসের নীরব সাক্ষী।

১৯ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ব্রিটিশরা সিলেট অঞ্চলে চা-চাষ শুরু করে। এই সময়ে অনেক ব্রিটিশ নাগরিক সিলেটে বসবাস শুরু করেন এবং চা-শিল্পের উন্নয়নে অবদান রাখেন। তাদের মৃত্যুর পর লংলা সিমেট্রিতে তাদের সমাধি স্থাপন করা হয়। এই সমাধিগুলো ব্রিটিশ স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন বহন করে এবং সিলেটের চা-শিল্পের ইতিহাসের অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।

মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলা শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত টিলাগাঁও ইউনিয়নের ডানকান ব্রাদার্সের লংলা চা বাগানের রাবার বাগান এলাকায় রয়েছে লংলা সিমেট্রি। এখানে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন দেশের চা শিল্পের বিকাশে মূল্যবান অবদান রাখা খৃস্টান সম্প্রদায়ের বিদেশি ট্রি প্লান্টার ও তাদের স্বজনরা।

১৮৫৪ সালে সিলেট জেলায় মালনীছড়া চা বাগান স্থাপনের মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে চা শিল্পের যাত্রা শুরু হয়। এর পর থেকে মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন জায়গায় ব্রিটিশরা বাণিজ্যিকভাবে চা চাষাবাদ শুরু করে। এ সময় ব্রিটেন থেকে নিয়ে আসা হয় অভিজ্ঞ টি প্ল্যানটারদের অনেকে তৎকালীন সময়ে বিভিন্ন কারণে মৃত্যুবরণ করেন। তাদের মধ্যে ২৮ জনকে সমাহিত করা হয় লংলা চা বাগানের এই সিমেট্রিতে।

বর্তমানে লংলা সিমেট্রি অবহেলিত অবস্থায় রয়েছে। সমাধিগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত ও অযতেœ পড়ে আছে। স্থানীয় প্রশাসন ও সংরক্ষণ সংস্থাগুলোর উদ্যোগে এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটির সংরক্ষণ জরুরি। এটি শুধু ইতিহাসের অংশ নয়, এটি পর্যটন আকর্ষণ হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

লংলা সিমেট্রি সিলেটের চা-শিল্পের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান হতে পারে, যেখানে তারা ব্রিটিশ চা-উপনিবেশের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবেন। এ ছাড়া এই সিমেট্রির সংরক্ষণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে স্থানীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

লংলা সিমেট্রি সিলেটের চা-শিল্পের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন। এর সংরক্ষণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা আমাদের ইতিহাসকে সংরক্ষণ করতে পারি এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি মূল্যবান ঐতিহ্য রেখে যেতে পারি। স্থানীয় প্রশাসন, সংরক্ষণ সংস্থা ও জনগণের সমন্বিত উদ্যোগে এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটির সংরক্ষণ নিশ্চিত করা সম্ভব।

back to top