alt

news » bangladesh

সালথায় থৈ থৈ পানির উপর সাদা শাপলার রূপে সেজেছে প্রকৃতি

প্রতিনিধি, সালথা (ফরিদপুর) : সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বিল-বাওড় কিংবা পুকুরের পানিতে ফুটে ওঠা সাদা শাপলা ফুলের সৌন্দর্যে মন কেড়েছে দর্শনার্থীদের। শাপলাফুল গুলোকে একটু স্পর্শ করার সাধ সত্যিই অতুলনীয়। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে সেই ইচ্ছে কিছুটা পূর্ণতা পায় তখন। শাপলার কোমলতা যেমন মন ছুঁয়ে যায়, তেমনি এর সরল সৌন্দর্যে লুকিয়ে থাকে গ্রামের নিঃশব্দ কাব্য।

এই খোয়াড় গ্রাম ঘেঁষে রাস্তার দক্ষিণ পাশে দোপের (জলাশয়) পানিতে সবুজ পাতার ওপর মাথা উঁচু করে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে সাদা শাপলা। আর এ সৌন্দর্য এক নজর দেখতে প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে অসংখ্য মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। এসময় কেউ করছেন ক্যামেরাবন্দী কেউবা সৌন্দর্য উপভোগ করছেন শাপলার।

সৌন্দর্যে ঘেরা মায়াভরা শাপলা ফুলের বর্ণনা করেছেন হেমায়েত ফকির ও বকুল মাতুব্বর।

হেমায়েত ফকির বলেন, মায়াময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর আমার শৈশব-কৈশরের বেড়ে উঠা গর্বের ছোট্ট একটি গ্রাম ‘খোঁয়াড় গ্রাম’। যে গ্রামটির সৌন্দর্য বর্ষাকালে আরো বহুগুণ বাড়িয়ে দেয় জাতীয় ফুল শাপলা। সাদা শাপলা যেমন বাংলাদেশের জনগণের প্রতীক। তেমনিভাবে শাপলার সাদা রং আমাদের গ্রামের সহজ-সরল মানুষের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে, তেমনি পাপড়িগুলোর মতোই সুন্দর এদের মন। গ্রামের উত্তর ও দক্ষিণ পাশের বর্ষার থইথই পানি আর সাথে সাদা শাপলা ফুল আমাদের গ্রামটিকে এক নৈসর্গিক সৌন্দর্য রুপে ধরা দেয়। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে এ সৌন্দর্য রক্ষাতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে গ্রামটি হতে পারে ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য তীর্থস্থান এবং গ্রামীণ জনপদের জীবন-জীবিকার অন্যতম প্রতিচ্ছবি।

দখিনা হওয়ায় এ গ্রামটিতে আকাশের তারারা যেন খসে পড়েছে জলের ওপর। বিপুল জলরাশির উপরিভাগে ফুটে থাকা অজস্র শাপলা শোভা পাচ্ছে। নয়নাভিরাম সৌন্দর্য। দেখলে মন ভরে যায়। গ্রাম-বাংলার অকৃত্রিম রূপ ছায়া মায়া সবই যেন ধারণ করে আছে এই শাপলার বুকে। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এই শাপলার মাঝে সৌন্দর্য খুঁজে পায়। বর্ষা এলে এ গ্রামে শুধু মাটি নয়, হৃদয়ও জেগে ওঠে। আর সেই জাগরণের নিঃশব্দ সাক্ষী হয়ে ওঠে শাপলা ফুল। সাদা, সবুজ আর গোলাপি রঙে সে জানান দেয় প্রকৃতির শুদ্ধ সৌন্দর্যের গল্প।’ - কথাগুলো বলছিলেন গ্রামটির আরেক চাকরিজীবী মাফিকুল ইসলাম।

গোবিন্দপুর গ্রামের বকুল মাতুব্বর বলেন, খোয়াড়, গোযালপাড়া, কুষ্টিয়া চক সহ উপজেলার বিভিন্ন বিল ও বাওড়ে ফুটে ওঠছে সাদা শাপলাফুল। বিকালের ভেসে আসা মৃদু বাতাস বেশ ভালোই লাগে, এছাড়াও রয়েছে দেশী প্রজাতির হরেক রকমের মাছের আনাগোনা। এটি আশেপাশের পরিবেশকে মনোমুগ্ধকর করে তুলেছে। এই বিল বাওড়ে শুকনোর সময় পেঁয়াজ আর পাটের চাষ করা হয়। আর এই ক্ষেতে প্রাকৃতিকভাবে প্রতি বছর গজায় শাপলা ফুলের গাছ। আর এ মনোমুগ্ধকর পরিবেশে শাপলা ফুলের হাসি দেখতে আশপাশের এলাকার তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়সের মানুষ প্রতিদিন সেখানে ভিড় জমায়।

স্থানীয় মোস্তফা কামাল নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘ভাদ্র-আশ্বিন মিলে শরৎ। শরৎ মানেই নদীর তীরে কাশফুল, গাছে গাছে শিউলি, বেলি, জুঁই, শেফালি আর বিলে-ঝিলে শাপলা ফুলের সমারোহ। তবে শুধু সৌন্দর্যই নয়, আমাদের জীবিকারও সুযোগ সৃষ্টি করেছে জাতীয় ফুল শাপলা। খোয়াড় গ্রামের শাপলা ফুল দেখতে নৌকা নিয়ে ভাসতে দেখা যায় অসংখ্য মানুষকে। আমরাও এ শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করি।

মামুনুর রশিদ নামের এক যুবক বলেন, এখন চারিদিকে সবুজ আর সবুজ। তার মাঝখানে চোখ জুড়ানো সাদা শাপলা ফুলের সমারোহ। পানির উপর ফুটে থাকা সাদা শাপলা ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য যে কাউকে মুগ্ধ করবে। চোখে না দেখলে নজরকাড়া সৌন্দর্যের উপলব্ধি করা যাবে না। নীরব, শান্ত এক দুপুরে শাপলা হয়ে উঠতে পারে আপনার মানসিক প্রশান্তির দিশারি।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, শাপলার ভাসমান ফুলের মধ্য দিয়ে ডিঙি নৌকা কিংবা তাল গাছের ডোঙা চালিয়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যান। যেতে যেতে অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন করেন। কেউ কেউ হাত বাড়িয়ে তুলে নেয় দু-একটি শাপলা ফুল। দুরন্ত কিশোর-কিশোরীরা আবার নিজেরাই ছোট নৌকা নিয়ে বের হয়ে পড়ে। নৌকার পাটাতন ভর্তি করে শাপলা নিয়ে বাড়ি ফেরে তারা।

তাদের দাবি, একসময় এখানকার মানুষ ও কিশোর-কিশোরীরা বিলঝিলে ও দোপে ডুব দিয়ে শালুক তুলে আনত। শাপলার শেকড়ের সঙ্গে যুক্ত শালুক সেদ্ধ করে খেয়ে জীবন বাঁচাতেন অনেকে। এখন গ্রামীণ অর্থনীতিও দ্রুত বদলাচ্ছে। মাটির নিচ থেকে শালুক তুলে খাওয়ার লোক তেমন চোখে পড়ে না। তবে অনেকেই শাপলা ফুল সবজি হিসেবে রান্না করে খাচ্ছেন।

সালথা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুদর্শন শিকদার বলেন, ‘এ উপজেলার খাল-বিল ও পুকুরে প্রতিবছরই বর্ষায় শাপলা ফুল ফোটে। এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ছুটে আসে। আমরাও মাঝেমধ্যে ছুটির দিনে এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে যাই। বাংলাদেশে সারা বছর শাপলা কম বেশি সব জায়গায়ই হয়। তবে বেশি হয় বর্ষা আর শরৎকালে। শাপলা গ্রামের মানুষ সবজি হিসেবে খেতে খুব পছন্দ করে। আর এ ফুলের বীজ ও গুঁড়ো দিয়ে খই বানানো হয়।

ছবি

যশোরে ৫ মাসে ৩৫ খুন ও ধর্ষণের শিকার ২২ জন

ছবি

চট্টগ্রাম ওয়াসা: লোকবল সংকটে ভোগান্তি, ১১১৯ পদের স্থলে মাত্র ৫০২ জন

ছবি

ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়ে-মুচড়ে গেল ট্রাক, চালক ও হেলপার নিহত

ছবি

বেতন-ভাতা দাবি: ৪ ঘণ্টা পর সড়ক ছাড়লেন শ্রমিকরা

ছবি

রেলইঞ্জিন সংকট দেখিয়ে জ্বালানি তেল আসছে না রংপুর অঞ্চলে

ছবি

কথা কাটাকাটির সময় হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু ১

ছবি

পুলিশের ভুয়া আইডি কার্ড দেখিয়ে ডাকাতি

ছবি

বেগমগঞ্জে শিয়ালের মাংস বিক্রি, ২ জন দণ্ডিত

ছবি

মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে গাছ ও সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ

ছবি

বিএনপির দুই গ্রুপের কর্মসূচি সুন্দরগঞ্জে ১৪৪ ধারা জারি

ছবি

রাণীনগরে নৌকা ডুবে জেলে মৃত্যু

ছবি

টেকনাফে ইয়াবাসহ তিন মাদক কারবারি গ্রেপ্তার

ছবি

সাতছড়ি উদ্যানে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের দাবি

ছবি

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগস্টে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন

ছবি

স্কুল ভবনের ছাদের পলেস্তরা খসে ছাত্র-শিক্ষক আহত

ছবি

গ্রামবাসীর উদ্যোগে বিদ্যালয় সংস্কার

ছবি

পেট্রাপোলে ১৫ কোটি টাকার পণ্য আটক

ছবি

মান্দা প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক কমিটি গঠন

ছবি

ডোমারে মাদকব্যবসায়ী মা ও ছেলে আটক

ছবি

ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গ্রেপ্তার

ছবি

পটিয়ায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে রিকশাচালক খুন

ছবি

বিসিকের ওএসডি হওয়া সেই কর্মকর্তা জামিনে এসে আবারো স্ত্রীকে হুমকি

ছবি

সিলেটের সাদাপাথর লুট: প্রকাশ্যে অনুসন্ধান শুরু করল দুদক

ছবি

রায়পুরে কিশোরী ধর্ষণ মামলার মূল আসামি গ্রেপ্তার

ছবি

আশাশুনিতে সড়কের পাশ থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

এক্সপ্রেসওয়েতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

ছবি

জয়পুরহাটে হত্যা মামলায় শিক্ষক বরখাস্ত

ছবি

ইতিহাসের সাক্ষী শ্রীমঙ্গলের বনগাঁও জমিদার বাড়ি

ছবি

অসময়ে তরমুজে সফল বটিয়াঘাটার কৃষক

ছবি

আগষ্টে চট্টগ্রাম বন্দর এনসিটিতে ৭৫ হাজার ৫৭৮ কনটেইনার বক্স হ্যান্ডলিং

ছবি

চুইঝাল আবাদে ঝুঁকছে লালমনিরহাটের মানুষ

ছবি

ফরিদপুরে বিনা টাকায় কনস্টেবল নিয়োগ

ছবি

মোহনগঞ্জে হারিয়ে যাচ্ছে পরিবেশ বান্ধব তাল গাছ

ছবি

ছিনতাই করা কার বিক্রয়ের সময় আটক ৫

ছবি

আদমদীঘিতে সরকারি চাল জব্দের পাঁচদিন পর মামলা

ছবি

সারিয়াকান্দিতে গ্রোয়েন বাঁধে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

tab

news » bangladesh

সালথায় থৈ থৈ পানির উপর সাদা শাপলার রূপে সেজেছে প্রকৃতি

প্রতিনিধি, সালথা (ফরিদপুর)

সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বিল-বাওড় কিংবা পুকুরের পানিতে ফুটে ওঠা সাদা শাপলা ফুলের সৌন্দর্যে মন কেড়েছে দর্শনার্থীদের। শাপলাফুল গুলোকে একটু স্পর্শ করার সাধ সত্যিই অতুলনীয়। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে সেই ইচ্ছে কিছুটা পূর্ণতা পায় তখন। শাপলার কোমলতা যেমন মন ছুঁয়ে যায়, তেমনি এর সরল সৌন্দর্যে লুকিয়ে থাকে গ্রামের নিঃশব্দ কাব্য।

এই খোয়াড় গ্রাম ঘেঁষে রাস্তার দক্ষিণ পাশে দোপের (জলাশয়) পানিতে সবুজ পাতার ওপর মাথা উঁচু করে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে সাদা শাপলা। আর এ সৌন্দর্য এক নজর দেখতে প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে অসংখ্য মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। এসময় কেউ করছেন ক্যামেরাবন্দী কেউবা সৌন্দর্য উপভোগ করছেন শাপলার।

সৌন্দর্যে ঘেরা মায়াভরা শাপলা ফুলের বর্ণনা করেছেন হেমায়েত ফকির ও বকুল মাতুব্বর।

হেমায়েত ফকির বলেন, মায়াময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর আমার শৈশব-কৈশরের বেড়ে উঠা গর্বের ছোট্ট একটি গ্রাম ‘খোঁয়াড় গ্রাম’। যে গ্রামটির সৌন্দর্য বর্ষাকালে আরো বহুগুণ বাড়িয়ে দেয় জাতীয় ফুল শাপলা। সাদা শাপলা যেমন বাংলাদেশের জনগণের প্রতীক। তেমনিভাবে শাপলার সাদা রং আমাদের গ্রামের সহজ-সরল মানুষের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে, তেমনি পাপড়িগুলোর মতোই সুন্দর এদের মন। গ্রামের উত্তর ও দক্ষিণ পাশের বর্ষার থইথই পানি আর সাথে সাদা শাপলা ফুল আমাদের গ্রামটিকে এক নৈসর্গিক সৌন্দর্য রুপে ধরা দেয়। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে এ সৌন্দর্য রক্ষাতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে গ্রামটি হতে পারে ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য তীর্থস্থান এবং গ্রামীণ জনপদের জীবন-জীবিকার অন্যতম প্রতিচ্ছবি।

দখিনা হওয়ায় এ গ্রামটিতে আকাশের তারারা যেন খসে পড়েছে জলের ওপর। বিপুল জলরাশির উপরিভাগে ফুটে থাকা অজস্র শাপলা শোভা পাচ্ছে। নয়নাভিরাম সৌন্দর্য। দেখলে মন ভরে যায়। গ্রাম-বাংলার অকৃত্রিম রূপ ছায়া মায়া সবই যেন ধারণ করে আছে এই শাপলার বুকে। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এই শাপলার মাঝে সৌন্দর্য খুঁজে পায়। বর্ষা এলে এ গ্রামে শুধু মাটি নয়, হৃদয়ও জেগে ওঠে। আর সেই জাগরণের নিঃশব্দ সাক্ষী হয়ে ওঠে শাপলা ফুল। সাদা, সবুজ আর গোলাপি রঙে সে জানান দেয় প্রকৃতির শুদ্ধ সৌন্দর্যের গল্প।’ - কথাগুলো বলছিলেন গ্রামটির আরেক চাকরিজীবী মাফিকুল ইসলাম।

গোবিন্দপুর গ্রামের বকুল মাতুব্বর বলেন, খোয়াড়, গোযালপাড়া, কুষ্টিয়া চক সহ উপজেলার বিভিন্ন বিল ও বাওড়ে ফুটে ওঠছে সাদা শাপলাফুল। বিকালের ভেসে আসা মৃদু বাতাস বেশ ভালোই লাগে, এছাড়াও রয়েছে দেশী প্রজাতির হরেক রকমের মাছের আনাগোনা। এটি আশেপাশের পরিবেশকে মনোমুগ্ধকর করে তুলেছে। এই বিল বাওড়ে শুকনোর সময় পেঁয়াজ আর পাটের চাষ করা হয়। আর এই ক্ষেতে প্রাকৃতিকভাবে প্রতি বছর গজায় শাপলা ফুলের গাছ। আর এ মনোমুগ্ধকর পরিবেশে শাপলা ফুলের হাসি দেখতে আশপাশের এলাকার তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়সের মানুষ প্রতিদিন সেখানে ভিড় জমায়।

স্থানীয় মোস্তফা কামাল নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘ভাদ্র-আশ্বিন মিলে শরৎ। শরৎ মানেই নদীর তীরে কাশফুল, গাছে গাছে শিউলি, বেলি, জুঁই, শেফালি আর বিলে-ঝিলে শাপলা ফুলের সমারোহ। তবে শুধু সৌন্দর্যই নয়, আমাদের জীবিকারও সুযোগ সৃষ্টি করেছে জাতীয় ফুল শাপলা। খোয়াড় গ্রামের শাপলা ফুল দেখতে নৌকা নিয়ে ভাসতে দেখা যায় অসংখ্য মানুষকে। আমরাও এ শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করি।

মামুনুর রশিদ নামের এক যুবক বলেন, এখন চারিদিকে সবুজ আর সবুজ। তার মাঝখানে চোখ জুড়ানো সাদা শাপলা ফুলের সমারোহ। পানির উপর ফুটে থাকা সাদা শাপলা ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য যে কাউকে মুগ্ধ করবে। চোখে না দেখলে নজরকাড়া সৌন্দর্যের উপলব্ধি করা যাবে না। নীরব, শান্ত এক দুপুরে শাপলা হয়ে উঠতে পারে আপনার মানসিক প্রশান্তির দিশারি।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, শাপলার ভাসমান ফুলের মধ্য দিয়ে ডিঙি নৌকা কিংবা তাল গাছের ডোঙা চালিয়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যান। যেতে যেতে অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন করেন। কেউ কেউ হাত বাড়িয়ে তুলে নেয় দু-একটি শাপলা ফুল। দুরন্ত কিশোর-কিশোরীরা আবার নিজেরাই ছোট নৌকা নিয়ে বের হয়ে পড়ে। নৌকার পাটাতন ভর্তি করে শাপলা নিয়ে বাড়ি ফেরে তারা।

তাদের দাবি, একসময় এখানকার মানুষ ও কিশোর-কিশোরীরা বিলঝিলে ও দোপে ডুব দিয়ে শালুক তুলে আনত। শাপলার শেকড়ের সঙ্গে যুক্ত শালুক সেদ্ধ করে খেয়ে জীবন বাঁচাতেন অনেকে। এখন গ্রামীণ অর্থনীতিও দ্রুত বদলাচ্ছে। মাটির নিচ থেকে শালুক তুলে খাওয়ার লোক তেমন চোখে পড়ে না। তবে অনেকেই শাপলা ফুল সবজি হিসেবে রান্না করে খাচ্ছেন।

সালথা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুদর্শন শিকদার বলেন, ‘এ উপজেলার খাল-বিল ও পুকুরে প্রতিবছরই বর্ষায় শাপলা ফুল ফোটে। এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ছুটে আসে। আমরাও মাঝেমধ্যে ছুটির দিনে এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে যাই। বাংলাদেশে সারা বছর শাপলা কম বেশি সব জায়গায়ই হয়। তবে বেশি হয় বর্ষা আর শরৎকালে। শাপলা গ্রামের মানুষ সবজি হিসেবে খেতে খুব পছন্দ করে। আর এ ফুলের বীজ ও গুঁড়ো দিয়ে খই বানানো হয়।

back to top