কুমিল্লা : আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের বরণ করে নেয় জেলা পুলিশ -সংবাদ
শতভাগ মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে কোনো ঘুষ, দালাল বা তদবির ছাড়াই কুমিল্লায় ট্রেইনি পুলিশ কনস্টেবল পদে ৪৭ জনের নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে।
গতকাল রোববার বিকালে কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সের শহীদ আরআই এবিএম আবদুল হালিম মিনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বরণ করে নেয় জেলা পুলিশ। এর আগে ফলাফল ঘোষণা করেন কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁন। নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে সবাই পুরুষ। মাত্র ১২০ টাকার ফি দিয়ে পূরণ হয়েছে এসব তরুনের স্বপ্ন। প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে নিয়োগপ্রাপ্তদের অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, মাত্র ১২০ টাকার ফি দিয়ে শতভাগ মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ঘুষ ছাড়া নিয়োগ দেওয়া সম্ভব, আমরা সেটিই প্রমাণ করেছি।
এখানে যারা নিয়োগ পেয়েছেন, তারা সবাই মেধাবী। আমি বিশ্বাস করি, তারা সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন। প্রত্যেক মানুষ যদি নিজ নিজ অবস্থান থেকে সৎভাবে দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে দেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁন এর সভাপতিত্বে নিয়োগপ্রাপ্তদের ফলাফল ঘোষণাকালে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) রাশেদুল হক চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু সাইদ মো. গাউছাল আজম ও চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকুর চাকমা, জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি মো. আব্দুল্লাহসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
‘সেবার ব্রতে চাকরি’- এই স্লোগানে কুমিল্লা জেলায় ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয় চলতি বছরের জুন মাসে। নগরীর পুলিশ লাইন্স মাঠে প্রথমে অনুষ্ঠিত হয় শারীরিক সক্ষমতা যাচাই। শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাইকরণ এবং সক্ষমতা পরীক্ষার পর নতুন ডিজিটাল পদ্ধতি ‘ফেস ডিটেকশন’ ব্যবহার করে লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। মোট আবেদন পড়ে ১ হাজার ৮৯১টি। শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন ৬৩৭ জন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ৪৮ জন। তাদের মধ্য থেকে মৌখিক, মনস্তাত্ত্বিক ও অন্যান্য ধাপ শেষে মেধাক্রম অনুযায়ী চূড়ান্তভাবে ৪৭ জনকে নির্বাচিত করে কুমিল্লা জেলা টিআরসি নিয়োগ বোর্ড। ফলাফল ঘোষণার পর দুর্নীতিমুক্ত এ প্রক্রিয়ায় অনেক প্রার্থী আবেগপ্রবণ হয়ে তাৎক্ষণিক অনুভূতি প্রকাশ করেন।
নতুন চাকরি পাওয়া ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সজিব বলেন, এখন বিশ্বাস হচ্ছে, যোগ্যতা থাকলে সরকারি চাকরি পাওয়া যায়। আমাদের গ্রামে সবাই অবাক হয়ে গেছে। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার এমরান হোসেন বলেন, কোনো টাকা লাগে নাই, কেউ চায়ও নাই। দালালের খপ্পরে পড়িও নাই। আমার বাবা একজন সিএনজি চালক। বাবা-মায়ের দোয়ায় আমার স্বপ্ন ছিল দেশের সেবা করা। আল্লাহ কবুল করেছেন। মনে হচ্ছে, বাংলাদেশ বদলাচ্ছে। নিয়োগ পাওয়া আল আমিন বলেন, বিশ্বাস করতে পারছিনা, আমার চাকরি হয়েছে। কারণ এলাকার মানুষ বলে টাকা ছাড়া নাকি চাকুরি হয়না। কিন্তু আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। বাবা বেঁচে থাকলে আজ অনেক খুশি হতেন।
এদিকে ছেলের ফলাফল জানার জন্য আগ্রহ নিয়ে পুলিশ লাইন্স মাঠে ছুটে আসেন নিয়োগপ্রাপ্ত এমরানের বাবা সিএনজি চালক মো. এরশাদ মিয়া। তিনি বলেন, ছেলের চাকরির জন্য বাড়ি বিক্রি করার কথা ভাবছিলাম। আল্লাহর রহমতে কিছুই লাগেনি। শুধু পরিশ্রম আর প্রার্থনাতেই সব হয়েছে। এজন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।
কুমিল্লা : আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের বরণ করে নেয় জেলা পুলিশ -সংবাদ
সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
শতভাগ মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে কোনো ঘুষ, দালাল বা তদবির ছাড়াই কুমিল্লায় ট্রেইনি পুলিশ কনস্টেবল পদে ৪৭ জনের নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে।
গতকাল রোববার বিকালে কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সের শহীদ আরআই এবিএম আবদুল হালিম মিনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বরণ করে নেয় জেলা পুলিশ। এর আগে ফলাফল ঘোষণা করেন কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁন। নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে সবাই পুরুষ। মাত্র ১২০ টাকার ফি দিয়ে পূরণ হয়েছে এসব তরুনের স্বপ্ন। প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে নিয়োগপ্রাপ্তদের অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, মাত্র ১২০ টাকার ফি দিয়ে শতভাগ মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ঘুষ ছাড়া নিয়োগ দেওয়া সম্ভব, আমরা সেটিই প্রমাণ করেছি।
এখানে যারা নিয়োগ পেয়েছেন, তারা সবাই মেধাবী। আমি বিশ্বাস করি, তারা সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন। প্রত্যেক মানুষ যদি নিজ নিজ অবস্থান থেকে সৎভাবে দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে দেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁন এর সভাপতিত্বে নিয়োগপ্রাপ্তদের ফলাফল ঘোষণাকালে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) রাশেদুল হক চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু সাইদ মো. গাউছাল আজম ও চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকুর চাকমা, জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি মো. আব্দুল্লাহসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
‘সেবার ব্রতে চাকরি’- এই স্লোগানে কুমিল্লা জেলায় ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয় চলতি বছরের জুন মাসে। নগরীর পুলিশ লাইন্স মাঠে প্রথমে অনুষ্ঠিত হয় শারীরিক সক্ষমতা যাচাই। শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাইকরণ এবং সক্ষমতা পরীক্ষার পর নতুন ডিজিটাল পদ্ধতি ‘ফেস ডিটেকশন’ ব্যবহার করে লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। মোট আবেদন পড়ে ১ হাজার ৮৯১টি। শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন ৬৩৭ জন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ৪৮ জন। তাদের মধ্য থেকে মৌখিক, মনস্তাত্ত্বিক ও অন্যান্য ধাপ শেষে মেধাক্রম অনুযায়ী চূড়ান্তভাবে ৪৭ জনকে নির্বাচিত করে কুমিল্লা জেলা টিআরসি নিয়োগ বোর্ড। ফলাফল ঘোষণার পর দুর্নীতিমুক্ত এ প্রক্রিয়ায় অনেক প্রার্থী আবেগপ্রবণ হয়ে তাৎক্ষণিক অনুভূতি প্রকাশ করেন।
নতুন চাকরি পাওয়া ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সজিব বলেন, এখন বিশ্বাস হচ্ছে, যোগ্যতা থাকলে সরকারি চাকরি পাওয়া যায়। আমাদের গ্রামে সবাই অবাক হয়ে গেছে। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার এমরান হোসেন বলেন, কোনো টাকা লাগে নাই, কেউ চায়ও নাই। দালালের খপ্পরে পড়িও নাই। আমার বাবা একজন সিএনজি চালক। বাবা-মায়ের দোয়ায় আমার স্বপ্ন ছিল দেশের সেবা করা। আল্লাহ কবুল করেছেন। মনে হচ্ছে, বাংলাদেশ বদলাচ্ছে। নিয়োগ পাওয়া আল আমিন বলেন, বিশ্বাস করতে পারছিনা, আমার চাকরি হয়েছে। কারণ এলাকার মানুষ বলে টাকা ছাড়া নাকি চাকুরি হয়না। কিন্তু আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। বাবা বেঁচে থাকলে আজ অনেক খুশি হতেন।
এদিকে ছেলের ফলাফল জানার জন্য আগ্রহ নিয়ে পুলিশ লাইন্স মাঠে ছুটে আসেন নিয়োগপ্রাপ্ত এমরানের বাবা সিএনজি চালক মো. এরশাদ মিয়া। তিনি বলেন, ছেলের চাকরির জন্য বাড়ি বিক্রি করার কথা ভাবছিলাম। আল্লাহর রহমতে কিছুই লাগেনি। শুধু পরিশ্রম আর প্রার্থনাতেই সব হয়েছে। এজন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।