জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলায় বহুল আলোচিত শতদল বহুমুখী সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে শতশত গ্রাহক বিক্ষোভ করেছেন।

গতকাল রোববার সকাল থেকে মাদারগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে বিভিন্ন সমবায় সমিতির প্রতারিত গ্রাহকরা এই বিক্ষোভে অংশ নিয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায়।

ওই দিন বিকাল ৪ টার দিকে শতদল বহুমুখী সমবায় সমিতির চেয়ারম্যান বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্যে আমানত ফেরতের আশ্বাস দেওয়ার পরে উত্তাল মাদারগঞ্জের পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে।

মাদারগঞ্জ উপজেলায় ২৩টি সমবায় সমিতির ৩৫ হাজার বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা তাদের কষ্টার্জিত ঘাম ঝোড়ানো জমাকৃত ৭ কোটি টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন এবং দ্রুত বিষয়টি সমাধানের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

শতদল সমবায় সমিতির গ্রাহকদের অভিযোগ, শতদল বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে তাদের টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি করছেন এবং এখন পর্যন্ত কোনো সুস্পষ্ট সমাধাণ দিতে পারেননি। এতে গ্রাহকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।

বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে, শতদল বহুমুখী সমবায় সমিতির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তিনি বিক্ষুব্ধ গ্রাহকদের শান্ত করার চেষ্টা করেন এবং দ্রুত তাদের পাওনা টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন।

শতদল সমবায় সমিতির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি যে আপনাদের কষ্টার্জিত একটি টাকাও খোয়া যাবে না। কিছু জটিলতার কারণে টাকা পরিশোধে বিলম্ব হচ্ছে, তবে খুব দ্রুতই সকল পাওনা পরিশোধ করা হবে। তিনি গ্রাহকদের ধৈর্য ধারণ করার অনুরোধ জানান এবং বলেন যে তিনি নিজেই এই সমস্যার সমাধানে কাজ করছেন।

শতদলের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বক্তব্যে আশ্বাস দেয়। পর বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা তাদের বিক্ষোভ কর্মসূচি স্থগিত করেন। তবে তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা ফেরত না দেওয়া হয়, তাহলে তারা বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবেন।

মাদারগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, তারা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং গ্রাহকদের পাওনা টাকা দ্রুত পরিশোধের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করবেন।

মাদারগঞ্জ উপজেলা সমবায় কার্যালয় থেকে নিবন্ধন নিয়ে মাদারগঞ্জ উপজেলায় দুই শতাধিক সমবায় সমিতি গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে আল-আকাবা বহুমুখী সমবায় সমিতি, শতদল বহুমুখী সমবায় সমিতি, স্বদেশ বহুমুখী সমবায় সমিতি, নবদ্বীপ বহুমুখী সমবায় সমিতি, জনতা শ্রমজীবী সমবায় সমিতি অন্যতম। এসব প্রতিষ্ঠানে ২৩ সমবায় সমিতির ৩৫ হাজার বিভিন্ন পেশার গ্রাহকের ৭ হাজার কোটি টাকার আমানত জমা রাখেন।