ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা কানাইডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সায়েদুর রহমানের বিদায় যেন এক আবেগঘন দৃশ্য যেখানে শিক্ষকতার প্রতি সাধারন মানুষের শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা মিলেমিশে তৈরি করেছে এক রাজকীয় আয়োজন।
শিক্ষকতা জীবনের দীর্ঘ ৩০ বছর পূর্ণ করে বিদায়ের মুহূর্তে তিনি শুধু একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ছিলেন না, ছিলেন প্রজন্মের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার প্রতীক। ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে রাজকীয় বিদায় এলাকায় এই প্রথম। প্রিয় শিক্ষককে বিদায় জানাতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে জড়ো হয়েছিল প্রাক্তন, বর্তমান শিক্ষার্থী, সহকর্মী, অভিভাবকেরা।
প্রিয় শিক্ষককে ঘিরে এক আবেগময় পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল এই দিন। গতকাল রোববার চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা কানাইডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিদায় আয়োজন করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। একজন শিক্ষক যখন অবসরে যান, তখন তিনি শুধু চাকরি থেকে বিদায় নেন না; বিদায় নেন দীর্ঘ সময় ধরে গড়ে তোলা অসংখ্য স্মৃতি, প্রজন্মের ভালোবাসা আর শ্রদ্ধার জায়গা থেকে।
দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের কানাইডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক সায়েদুর রহমান সাইদের অবসর যেন হয়ে উঠেছে শিক্ষাঙ্গণের এক স্বর্ণালী অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হাসান তনু প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সংবর্ধনা দিয়েছেন।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, এ রকম রাজকীয় বিদায় শুধু একটি বিদ্যালয়ের ইতিহাস নয়, এ অঞ্চলের শিক্ষাঙ্গণের জন্যও এক গৌরবময় দিন। আজকের এই আবেগঘন বিদায় প্রমাণ করে, একজন প্রকৃত শিক্ষক কতটা ভালোবাসা ও সম্মানের স্থান দখল করতে পারেন মানুষের হৃদয়ে।
প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদাউস বলেন, সেই ১৯৯৫ সাল থেকে পথ চলা একসঙ্গে। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠানকালীন থেকেই আমার সঙ্গে ছিলেন। আজ চলে যাচ্ছে প্রিয় সহকর্মী। শুধু সহকর্মী নয়, ছিলেন পথচলার সাথি, ছিলেন পরামর্শদাতা। তাই এ বিদায় বেদনার হলেও সবার দোয়া থাকুক তার সঙ্গে। প্রিয় মানুষটির সুস্থতা কামনা করছি।
বিদায়ী শিক্ষক সায়েদুর রহমান বলেন, প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে রয়েছি এখানে। সেই বাংলাঘর থেকে শুরু। আজ চলে যাচ্ছি প্রিয় জায়গা ছেড়ে। এ রকম বিদায় আমাকে আবেগ আপ্লুত করেছে, অভিভূত করেছে। সবার ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা পেয়েই আজকের এই দিন সম্ভব হয়েছে। আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বিদ্যালয়ের সভাপতি অ্যাডভোকেট শামীমুর রহমান সবুজ বলেন, আমি এই বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। আজ প্রিয় স্যারকে রাজকীয়ভাবে বিদায় দিতে পেরে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি।
একজন শিক্ষককে এভাবে বিদায় দেওয়া আসলে প্রমাণ করে, শিক্ষা ও শিক্ষকের প্রতি মানুষের মমত্ববোধ এখনো টিকে আছে। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদাউস, উপজেলা বিএনপির যুগ্ন সাধারন সম্পাদক মন্টু মিয়া, বিদ্যালয়ের সভাপতি অ্যাডভোকেট শামীমুর রহমান সবুজ, সহকারী প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম, বিএনপি নেতা সামসুল আলম, আব্দুস সালাম, কৃষকদল নেতা তোতাম, সাবেক মেম্বার ফরজ আলী, আব্দুর রব পটল, মজিবর বিশ্বাস, সাইদুর রহমান, নুর ইসলাম, সানোয়ার হোসেন, আবুল কালাম, জয়নাল আবেদিন, জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি মোস্তফা কামাল। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন শিক্ষক আবু বক্কর।
অনুষ্ঠান শেষে বিদায়ী শিক্ষককে ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে নিজ গ্রাম ছাতিয়ানতলায় পৌঁছে দিয়ে আসেন বিদ্যালয়ের সভাপতি ও সহকর্মীরা। এ সময় গ্রামজুড়ে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। শিক্ষার্থীদের চোখের পানি আর মানুষের আবেগ মিলে যেন এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত তৈরি হয়েছিল বিদায় লগ্নে।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা কানাইডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সায়েদুর রহমানের বিদায় যেন এক আবেগঘন দৃশ্য যেখানে শিক্ষকতার প্রতি সাধারন মানুষের শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা মিলেমিশে তৈরি করেছে এক রাজকীয় আয়োজন।
শিক্ষকতা জীবনের দীর্ঘ ৩০ বছর পূর্ণ করে বিদায়ের মুহূর্তে তিনি শুধু একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ছিলেন না, ছিলেন প্রজন্মের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার প্রতীক। ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে রাজকীয় বিদায় এলাকায় এই প্রথম। প্রিয় শিক্ষককে বিদায় জানাতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে জড়ো হয়েছিল প্রাক্তন, বর্তমান শিক্ষার্থী, সহকর্মী, অভিভাবকেরা।
প্রিয় শিক্ষককে ঘিরে এক আবেগময় পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল এই দিন। গতকাল রোববার চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা কানাইডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিদায় আয়োজন করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। একজন শিক্ষক যখন অবসরে যান, তখন তিনি শুধু চাকরি থেকে বিদায় নেন না; বিদায় নেন দীর্ঘ সময় ধরে গড়ে তোলা অসংখ্য স্মৃতি, প্রজন্মের ভালোবাসা আর শ্রদ্ধার জায়গা থেকে।
দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের কানাইডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক সায়েদুর রহমান সাইদের অবসর যেন হয়ে উঠেছে শিক্ষাঙ্গণের এক স্বর্ণালী অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হাসান তনু প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সংবর্ধনা দিয়েছেন।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, এ রকম রাজকীয় বিদায় শুধু একটি বিদ্যালয়ের ইতিহাস নয়, এ অঞ্চলের শিক্ষাঙ্গণের জন্যও এক গৌরবময় দিন। আজকের এই আবেগঘন বিদায় প্রমাণ করে, একজন প্রকৃত শিক্ষক কতটা ভালোবাসা ও সম্মানের স্থান দখল করতে পারেন মানুষের হৃদয়ে।
প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদাউস বলেন, সেই ১৯৯৫ সাল থেকে পথ চলা একসঙ্গে। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠানকালীন থেকেই আমার সঙ্গে ছিলেন। আজ চলে যাচ্ছে প্রিয় সহকর্মী। শুধু সহকর্মী নয়, ছিলেন পথচলার সাথি, ছিলেন পরামর্শদাতা। তাই এ বিদায় বেদনার হলেও সবার দোয়া থাকুক তার সঙ্গে। প্রিয় মানুষটির সুস্থতা কামনা করছি।
বিদায়ী শিক্ষক সায়েদুর রহমান বলেন, প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে রয়েছি এখানে। সেই বাংলাঘর থেকে শুরু। আজ চলে যাচ্ছি প্রিয় জায়গা ছেড়ে। এ রকম বিদায় আমাকে আবেগ আপ্লুত করেছে, অভিভূত করেছে। সবার ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা পেয়েই আজকের এই দিন সম্ভব হয়েছে। আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বিদ্যালয়ের সভাপতি অ্যাডভোকেট শামীমুর রহমান সবুজ বলেন, আমি এই বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। আজ প্রিয় স্যারকে রাজকীয়ভাবে বিদায় দিতে পেরে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি।
একজন শিক্ষককে এভাবে বিদায় দেওয়া আসলে প্রমাণ করে, শিক্ষা ও শিক্ষকের প্রতি মানুষের মমত্ববোধ এখনো টিকে আছে। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদাউস, উপজেলা বিএনপির যুগ্ন সাধারন সম্পাদক মন্টু মিয়া, বিদ্যালয়ের সভাপতি অ্যাডভোকেট শামীমুর রহমান সবুজ, সহকারী প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম, বিএনপি নেতা সামসুল আলম, আব্দুস সালাম, কৃষকদল নেতা তোতাম, সাবেক মেম্বার ফরজ আলী, আব্দুর রব পটল, মজিবর বিশ্বাস, সাইদুর রহমান, নুর ইসলাম, সানোয়ার হোসেন, আবুল কালাম, জয়নাল আবেদিন, জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি মোস্তফা কামাল। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন শিক্ষক আবু বক্কর।
অনুষ্ঠান শেষে বিদায়ী শিক্ষককে ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে নিজ গ্রাম ছাতিয়ানতলায় পৌঁছে দিয়ে আসেন বিদ্যালয়ের সভাপতি ও সহকর্মীরা। এ সময় গ্রামজুড়ে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। শিক্ষার্থীদের চোখের পানি আর মানুষের আবেগ মিলে যেন এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত তৈরি হয়েছিল বিদায় লগ্নে।