খুলনায় লাশ উদ্ধারের পর সাংবাদিক ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলুর মৃত্যুরহস্য দানা বাঁধছে। গতকাল রোববার রাতে ঘটনার আগে রূপসা সেতুর ওপর এক নারীর সঙ্গে বুলুর বাগবিতণ্ডা হতে দেখেছেন লোকজন।
ছোট ভাই আনিসুজ্জামান দুলু বলেন, পারিবারিকসহ নানান ঘটনায় বুলু ভাই চাপের মধ্যে ছিলেন। প্রথম স্ত্রী তিন মাস নিখোঁজ, এক নারীর দ্বিতীয় বিবাহ দাবি ও এক কাজের মেয়ের বিয়ে করার জন্য চাপ প্রয়োগ নিয়ে মানসিক চাপে ছিলেন তিনি।
দুলু বলেন, এসব চাপ থাকলেও তার মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি। দুলু জানান, সোমবার,(০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫) ময়নাতদন্তের পর খুলনা প্রেসক্লাবে জানাজা শেষে লাশ গোয়ালখালী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলুর শ্যালিকা নুরুন্নাহার পারভিন জানান, ঘটনার দিন সোমবার সকালে তার বাসা থেকে বের হন ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলু। দুপুর থেকে তিনি বুলুর মোবাইলে ঢুকতে পারেননি।
রাতে লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে রূপসা সেতু এলাকায় গিয়ে লাশটি বুলুর বলেই শনাক্ত হয়।
সাংবাদিক ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলুর বন্ধু কামরুল হোসেন বলেন, ঘটনার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেছি। তাতে বুলুর মৃত্যু অস্বাভাবিক মনে হয়েছে।
কামরুল বলেন, এ বিষয়ে পুলিশের তদন্ত জরুরি মনে করছি।
নৌপুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুহিদুল হক বলেন, সুরতহাল রিপোর্টে সাংবাদিক ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলুর মুখ থেঁতলানো, দুই হাত ভাঙা ও গায়ে কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
মুহিদুল বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের পর প্রকৃত তথ্য বলা সম্ভব হবে।
গতকাল রোববার রাত সোয়া আটটার দিকে খুলনার খানজাহান আলী সেতুর (রূপসা সেতু) নিচ থেকে খুলনার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক বুলুর লাশ উদ্ধার হয়।
রূপসা নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবুল খায়ের বলেন, সঙ্গে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে তার পরিচয় জানা যায়। তার ডানহাত ও মুখম-লে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
আবুল খায়ের বলেন, সন্ধ্যায় স্থানীয় লোকজন সেতুর ২ নম্বর পিলারের বেজমেন্ট এলাকায় একটি মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেন। লবণচরা ফাঁড়ির সদস্যরা সেখানে গিয়ে নৌপুলিশকে খবর দেন। নৌপুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। মৃতের পরনে ছিল নীল রঙের গ্যাবার্ডিন প্যান্ট ও আকাশি রঙের টি-শার্ট।
খবর পেয়ে পিবিআই ও সিআইডির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেন। র?্যাব, কোস্টগার্ড ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও সেখানে যান।
খুলনা প্রেসক্লাবের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির আহ্বায়ক এনামুল হক জানান, ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলু (৬০) দৈনিক সংবাদ প্রতিদিনের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন। তিনি খুলনা প্রেসক্লাব ও খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের (কেইউজে) সদস্য ছিলেন।
এনামুল বলেন, ‘আমার ধারণা, এটি আত্মহত্যার চেয়ে হত্যাকা- হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।’
ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলুর ঘনিষ্ট সহকর্মীরা জানিয়েছেন, বুলু ‘শিববাড়ি মোড়ের বুলু ভাই’ হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। মোড়ের অদূরেই ছিল তার বাসা। যদিও কয়েক বছর আগে ওই বাড়িটি বিক্রি হলে তিনি আর সেখানে থাকতেন না। তবে দীর্ঘদিন থেকে ওই বাড়ি ভাগাভাগি নিয়ে তার কাছে আত্মীয়দের মধ্যে ‘ঝামেলার’ কথা জানা যায়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক অশান্তিতে ভুগছিলেন। অর্থকষ্টেও ছিলেন।
তার ঘনিষ্ট সহকর্মী সাংবাদিক শুভ্র শচীন জানান, ‘খুবই সাদামাটা জীবনযাপন করতেন। শান্ত, প্রগতিশীল ও মুক্তচিন্তার ছিলেন তিনি। ছিলেন বিনয়ী, নিরাহংকার, ও মিতব্যয়ী। প্রায় তিন দশকের বর্ণিল সাংবাদিকতা জীবনে তার সঙ্গে কখনও কারও মনকষাকষি হয়নি।’
তিনি ছিলেন নিঃসন্তান এবং সাংসারিক জীবনে অনেকটা অসুখী। প্রায় মাসচারেক আগে মানসিক সমস্যাগ্রস্ত তার স্ত্রী ‘নিখোঁজ’ বলে তার ফেইসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন। তবে গত কয়েক মাসে তাকে ঘিরে কিছু ‘অনৈতিক’ ঘটনাও সামনে আসে।
সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
খুলনায় লাশ উদ্ধারের পর সাংবাদিক ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলুর মৃত্যুরহস্য দানা বাঁধছে। গতকাল রোববার রাতে ঘটনার আগে রূপসা সেতুর ওপর এক নারীর সঙ্গে বুলুর বাগবিতণ্ডা হতে দেখেছেন লোকজন।
ছোট ভাই আনিসুজ্জামান দুলু বলেন, পারিবারিকসহ নানান ঘটনায় বুলু ভাই চাপের মধ্যে ছিলেন। প্রথম স্ত্রী তিন মাস নিখোঁজ, এক নারীর দ্বিতীয় বিবাহ দাবি ও এক কাজের মেয়ের বিয়ে করার জন্য চাপ প্রয়োগ নিয়ে মানসিক চাপে ছিলেন তিনি।
দুলু বলেন, এসব চাপ থাকলেও তার মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি। দুলু জানান, সোমবার,(০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫) ময়নাতদন্তের পর খুলনা প্রেসক্লাবে জানাজা শেষে লাশ গোয়ালখালী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলুর শ্যালিকা নুরুন্নাহার পারভিন জানান, ঘটনার দিন সোমবার সকালে তার বাসা থেকে বের হন ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলু। দুপুর থেকে তিনি বুলুর মোবাইলে ঢুকতে পারেননি।
রাতে লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে রূপসা সেতু এলাকায় গিয়ে লাশটি বুলুর বলেই শনাক্ত হয়।
সাংবাদিক ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলুর বন্ধু কামরুল হোসেন বলেন, ঘটনার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেছি। তাতে বুলুর মৃত্যু অস্বাভাবিক মনে হয়েছে।
কামরুল বলেন, এ বিষয়ে পুলিশের তদন্ত জরুরি মনে করছি।
নৌপুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুহিদুল হক বলেন, সুরতহাল রিপোর্টে সাংবাদিক ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলুর মুখ থেঁতলানো, দুই হাত ভাঙা ও গায়ে কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
মুহিদুল বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের পর প্রকৃত তথ্য বলা সম্ভব হবে।
গতকাল রোববার রাত সোয়া আটটার দিকে খুলনার খানজাহান আলী সেতুর (রূপসা সেতু) নিচ থেকে খুলনার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক বুলুর লাশ উদ্ধার হয়।
রূপসা নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবুল খায়ের বলেন, সঙ্গে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে তার পরিচয় জানা যায়। তার ডানহাত ও মুখম-লে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
আবুল খায়ের বলেন, সন্ধ্যায় স্থানীয় লোকজন সেতুর ২ নম্বর পিলারের বেজমেন্ট এলাকায় একটি মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেন। লবণচরা ফাঁড়ির সদস্যরা সেখানে গিয়ে নৌপুলিশকে খবর দেন। নৌপুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। মৃতের পরনে ছিল নীল রঙের গ্যাবার্ডিন প্যান্ট ও আকাশি রঙের টি-শার্ট।
খবর পেয়ে পিবিআই ও সিআইডির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেন। র?্যাব, কোস্টগার্ড ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও সেখানে যান।
খুলনা প্রেসক্লাবের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির আহ্বায়ক এনামুল হক জানান, ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলু (৬০) দৈনিক সংবাদ প্রতিদিনের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন। তিনি খুলনা প্রেসক্লাব ও খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের (কেইউজে) সদস্য ছিলেন।
এনামুল বলেন, ‘আমার ধারণা, এটি আত্মহত্যার চেয়ে হত্যাকা- হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।’
ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলুর ঘনিষ্ট সহকর্মীরা জানিয়েছেন, বুলু ‘শিববাড়ি মোড়ের বুলু ভাই’ হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। মোড়ের অদূরেই ছিল তার বাসা। যদিও কয়েক বছর আগে ওই বাড়িটি বিক্রি হলে তিনি আর সেখানে থাকতেন না। তবে দীর্ঘদিন থেকে ওই বাড়ি ভাগাভাগি নিয়ে তার কাছে আত্মীয়দের মধ্যে ‘ঝামেলার’ কথা জানা যায়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক অশান্তিতে ভুগছিলেন। অর্থকষ্টেও ছিলেন।
তার ঘনিষ্ট সহকর্মী সাংবাদিক শুভ্র শচীন জানান, ‘খুবই সাদামাটা জীবনযাপন করতেন। শান্ত, প্রগতিশীল ও মুক্তচিন্তার ছিলেন তিনি। ছিলেন বিনয়ী, নিরাহংকার, ও মিতব্যয়ী। প্রায় তিন দশকের বর্ণিল সাংবাদিকতা জীবনে তার সঙ্গে কখনও কারও মনকষাকষি হয়নি।’
তিনি ছিলেন নিঃসন্তান এবং সাংসারিক জীবনে অনেকটা অসুখী। প্রায় মাসচারেক আগে মানসিক সমস্যাগ্রস্ত তার স্ত্রী ‘নিখোঁজ’ বলে তার ফেইসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন। তবে গত কয়েক মাসে তাকে ঘিরে কিছু ‘অনৈতিক’ ঘটনাও সামনে আসে।