গাছ মানুষের পরম বন্ধু। গাছ পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। ছায়া, ফুল, ফল, ওষুধ, জ্বালানি সহ জীবনদায়ি অক্সিজেনের ভা-ার এক একটি গাছ। এসব গাছের মধ্যে একটি হলো তাল গাছ। প্রকৃতি, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা সহ বজ্রপাত নিরোধক হিসেবে তাল গাছ অনন্য। মোহনগঞ্জে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে তালগাছ। এমন এক সময় ছিল যখন গ্রামে গ্রামে অনেক তালগাছ দেখা যেত। গ্রামে বাড়ির পরিচিত হতো তাল গাইচ্ছা বাড়ি হিসেবে। কবির ভাষায়-ঐ দেখা যায় তালগাছ ঐ আমাদের গাঁ। তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে উঁকি মারে আকাশে। গায়ে কোন শাখা থাকে না। মাথায় বড় বড় পাতা সহ ডাউগ্যা থাকে। তালের কাঠ খুব শক্ত, এ থেকে নৌকা, ঘরের ধন্যা, রোয়া, চটি তৈরি করা হয়। উপকূলীয় অঞ্চলে পাতা দিয়ে ছাউনি, বেড়া দেয়া হয়। তালের পাতা দিয়ে তৈরি হয় পাখা। তালের পাতার পাখার বাতাস খুব আরাম। এর ফল হলো তাল। বিভিন্ন রকমের তাল হয়ে থাকে। প্রথমে সবুজ, পরিপুষ্ট ফল হয়ে কিছু কিছু তাল লাল রঙের পাওয়া যায়। কিছু তাল আছে সম্পুর্ন কালো। এগুলোকে কালিআঁশি তাল বলে। অনেক বাড়িতে পুকুর পাড়ে তাল থাকতো। পরিচিতি পেত তালদিঘি বা তাল পুকুর নামে। লোক শ্রুতি রয়েছে, ভাদ্রে তালের পিঠা,আশ্বিনে শশা মিঠা। ভাদ্রে তাল পাকে তালের রস খুব সুস্বাদু, তালের রস দিয়ে তৈরি করা হয় তালের বড়া,পাতাপিঠা সহ নানা ধরনের পিঠা। আবার তালের রসে নারিকেল গুড় মিশিয়ে তৈরি করা কিসসা। মুড়ি দিয়ে খেতে খুব মজা। তালের রস ছাড়িয়ে গুটিগুলো রেখে দেয়া হয়। এক দুই মাস পর এগুলো থেকে গ্যাজ শেকড় বের হয়। ভেতরে জন্মে সাদা রঙের ফুলসা। যা খেতে খুব মজাদার। তাছাড়া তালের রস জ্বাল দিয়ে তৈরি করা হয় তালের গুড় বা পাটালি গুড়। তৈরি হয় তালমিস্ত্রী যা সর্দি -কাশি নিরাময়ে খুব কার্যকর। তালপাতা দিয়ে তৈরি হয় বাঁশি। আমি মেলা থেকে তাল পাতার এক বাঁশি কিনে এনেছি। পাতা দিয়ে তৈরি হতো তালপাতার পুঁথি। তালের কা- পানিতে পঁচিয়ে এর ভেতর থেকে সেমাইয়ের মতো আঁশ তোলা হয়। সেসব আঁশ দিয়ে সুন্দর করে বুনে তালের টুপি, ঝুঁড়ি, সাজি ইত্যাদি বানানো যায়। প্রাচীনকালে কাগজ ছিল না। এ সময় কয়েকটা তালপাতা বেঁধে খাতা বানানো হতো। এখনো যাদুঘরে তালপাতার পুঁথি সংরক্ষিত আছে। তাই দেখা যায় তালগাছ আমাদের খুব উপকারী একটি গাছ। মোহনগঞ্জে বিভিন্ন সড়ক পাশে সরকারি উদ্যোগে রোপণকৃত কিছু তালগাছ দেখা যায়। এগুলোরও সঠিক পরিচর্যা নেই। ব্যক্তি, বেসরকারি সহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান তালের চারা রোপণে এগিয়ে আসতে পারেন। বর্তমানে বজ্রপাত বেড়ে গেছে। প্রতিবছর অনেক মানুষ বজ্রাঘাতে প্রাণ হারাচ্ছে। তালগাছ বজ্রপাত নিরোধক, প্রকৃতি, পরিবেশ বান্ধব। তাই প্রকৃতি,পরিবেশ বাঁচাতে অন্যান্য চারাগাছ রোপণের পাশাপাশি সকলকে তালের চারা রোপণ করতে হবে।
বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
গাছ মানুষের পরম বন্ধু। গাছ পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। ছায়া, ফুল, ফল, ওষুধ, জ্বালানি সহ জীবনদায়ি অক্সিজেনের ভা-ার এক একটি গাছ। এসব গাছের মধ্যে একটি হলো তাল গাছ। প্রকৃতি, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা সহ বজ্রপাত নিরোধক হিসেবে তাল গাছ অনন্য। মোহনগঞ্জে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে তালগাছ। এমন এক সময় ছিল যখন গ্রামে গ্রামে অনেক তালগাছ দেখা যেত। গ্রামে বাড়ির পরিচিত হতো তাল গাইচ্ছা বাড়ি হিসেবে। কবির ভাষায়-ঐ দেখা যায় তালগাছ ঐ আমাদের গাঁ। তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে উঁকি মারে আকাশে। গায়ে কোন শাখা থাকে না। মাথায় বড় বড় পাতা সহ ডাউগ্যা থাকে। তালের কাঠ খুব শক্ত, এ থেকে নৌকা, ঘরের ধন্যা, রোয়া, চটি তৈরি করা হয়। উপকূলীয় অঞ্চলে পাতা দিয়ে ছাউনি, বেড়া দেয়া হয়। তালের পাতা দিয়ে তৈরি হয় পাখা। তালের পাতার পাখার বাতাস খুব আরাম। এর ফল হলো তাল। বিভিন্ন রকমের তাল হয়ে থাকে। প্রথমে সবুজ, পরিপুষ্ট ফল হয়ে কিছু কিছু তাল লাল রঙের পাওয়া যায়। কিছু তাল আছে সম্পুর্ন কালো। এগুলোকে কালিআঁশি তাল বলে। অনেক বাড়িতে পুকুর পাড়ে তাল থাকতো। পরিচিতি পেত তালদিঘি বা তাল পুকুর নামে। লোক শ্রুতি রয়েছে, ভাদ্রে তালের পিঠা,আশ্বিনে শশা মিঠা। ভাদ্রে তাল পাকে তালের রস খুব সুস্বাদু, তালের রস দিয়ে তৈরি করা হয় তালের বড়া,পাতাপিঠা সহ নানা ধরনের পিঠা। আবার তালের রসে নারিকেল গুড় মিশিয়ে তৈরি করা কিসসা। মুড়ি দিয়ে খেতে খুব মজা। তালের রস ছাড়িয়ে গুটিগুলো রেখে দেয়া হয়। এক দুই মাস পর এগুলো থেকে গ্যাজ শেকড় বের হয়। ভেতরে জন্মে সাদা রঙের ফুলসা। যা খেতে খুব মজাদার। তাছাড়া তালের রস জ্বাল দিয়ে তৈরি করা হয় তালের গুড় বা পাটালি গুড়। তৈরি হয় তালমিস্ত্রী যা সর্দি -কাশি নিরাময়ে খুব কার্যকর। তালপাতা দিয়ে তৈরি হয় বাঁশি। আমি মেলা থেকে তাল পাতার এক বাঁশি কিনে এনেছি। পাতা দিয়ে তৈরি হতো তালপাতার পুঁথি। তালের কা- পানিতে পঁচিয়ে এর ভেতর থেকে সেমাইয়ের মতো আঁশ তোলা হয়। সেসব আঁশ দিয়ে সুন্দর করে বুনে তালের টুপি, ঝুঁড়ি, সাজি ইত্যাদি বানানো যায়। প্রাচীনকালে কাগজ ছিল না। এ সময় কয়েকটা তালপাতা বেঁধে খাতা বানানো হতো। এখনো যাদুঘরে তালপাতার পুঁথি সংরক্ষিত আছে। তাই দেখা যায় তালগাছ আমাদের খুব উপকারী একটি গাছ। মোহনগঞ্জে বিভিন্ন সড়ক পাশে সরকারি উদ্যোগে রোপণকৃত কিছু তালগাছ দেখা যায়। এগুলোরও সঠিক পরিচর্যা নেই। ব্যক্তি, বেসরকারি সহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান তালের চারা রোপণে এগিয়ে আসতে পারেন। বর্তমানে বজ্রপাত বেড়ে গেছে। প্রতিবছর অনেক মানুষ বজ্রাঘাতে প্রাণ হারাচ্ছে। তালগাছ বজ্রপাত নিরোধক, প্রকৃতি, পরিবেশ বান্ধব। তাই প্রকৃতি,পরিবেশ বাঁচাতে অন্যান্য চারাগাছ রোপণের পাশাপাশি সকলকে তালের চারা রোপণ করতে হবে।