alt

news » bangladesh

শ্রীমঙ্গল থেকে হারিয়ে যাচ্ছে সৌরা ভাষা ও সংস্কৃতি

সংগ্রাম দত্ত, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) : শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) : উপজেলার রাজঘাট ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা সৌরাপল্লীতে সৌরা পরিবারের সদস্যরা -সংবাদ

বাংলাদেশে বর্তমানে সৌরা জনগোষ্ঠীর ৭০টি পরিবার রয়েছে। এর মধ্যে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাজগাট ইউনিয়নের সৌরা পল্লীতে মাত্র বাইশটি পরিবার। সীমান্তঘেঁষা এ গ্রামের মানুষরা মূলত চা-বাগানের শ্রমিক। দারিদ্র্য, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় বঞ্চনা এবং সামাজিক অবহেলার কারণে তারা টিকে আছেন প্রান্তিক অবস্থায়।

পরিবারের ভেতরে বাংলা, ওড়িয়া ও সাদরি ভাষার ব্যবহার অনেক বেশি। ফলে সৌরা ভাষার স্থান সংকুচিত হয়ে এসেছে। এখন কেবল কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তি এ ভাষায় সাবলীলভাবে কথা বলতে পারেন। প্রবীণদের মৃত্যু হলেই এই ভাষা বিলীন হয়ে যাবে। নতুন প্রজন্ম নিজেদের মাতৃভাষা শেখার প্রতি আগ্রহী নয়। ফলে আন্তঃপ্রজন্মে ভাষা হস্তান্তর বন্ধ হয়ে গেছে।

ভাষার শেকড় ও পরিচয়

সৌরা ভাষা (ঝড়ৎধ বা ঝধাধৎধ) অস্ট্রো-এশিয়াটিক ভাষাপরিবারের মুন্ডা শাখার অন্তর্গত। ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীনতম ভাষাগুলোর একটি এটি। বর্তমানে ভারতের ওড়িশা, অন্ধ্র প্রদেশ, তামিলনাড়ু ও বিহারে এই ভাষাভাষীদের বসতি রয়েছে। বাংলাদেশের শ্রীমঙ্গলের সৌরারা একই ভাষাভাষী হলেও তাদের অবস্থান তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি দুর্বল। ভাষাটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো মৌখিক ঐতিহ্য। লোককথা, গান, ধর্মীয় আচার ও সামাজিক অনুষ্ঠান ছিল এর বাহক। একটি শব্দেই অনেক সময় পূর্ণ বাক্যের অর্থ প্রকাশ করা যায় এটি এর পলিসিন্থেটিক প্রকৃতির উদাহরণ। তবে মৌখিক ঐতিহ্যের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় লিখিত সংরক্ষণের অভাবে ভাষাটি দ্রুত হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে।

সোরাং সোমপেং লিপি

সৌরা ভাষার জন্য একটি স্বতন্ত্র বর্ণমালা রয়েছে সোরাং সোমপেং। ১৯৩৬ সালে মাঙ্গেই গোমাঙ্গো নামের এক সৌরা নেতা দাবি করেন, আধ্যাত্মিক প্রেরণায় তিনি এ লিপি উদ্ভাবন করেন। এতে প্রায় ৩৪-৩৬টি চিহ্ন আছে, যার মধ্যে স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণ ও সংখ্যা অন্তর্ভুক্ত।

লিপিটি দেখতে কোণাকৃতির এবং বাম থেকে ডানে লেখা হয়। ২০১২ সালে এটি ইউনিকোডে অন্তর্ভুক্ত হয়, ফলে ডিজিটাল মাধ্যমে এর ব্যবহারও সম্ভব হয়েছে। ভারতে এই লিপিতে পাঠ্যপুস্তক তৈরি করা হয়েছে, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে, কিন্তু বাংলাদেশে এখনো কোনো প্রয়োগ ঘটেনি।

সাংস্কৃতিক সংকট

ভাষার মতোই সৌরাদের সংস্কৃতিও ভাঙনের মুখে। একসময় আকাশের তারা দেখে বিয়ে নির্ধারণ করা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক রীতি। বিয়ের এ আচারের নাম ছিল সুংকরা। এ ছাড়া ধর্মীয় আচার, উৎসব, লোককাহিনি ও গান তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ ছিল। কিন্তু আধুনিক জীবনযাত্রা ও সামাজিক চাপের কারণে এসব অনুশীলন হারিয়ে যাচ্ছে।

আইনি কাঠামো বনাম বাস্তবতা

বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার সনদে স্বাক্ষর করেছে, যেখানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিশুদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট আইন (২০১০) নৃগোষ্ঠীর ভাষা সংরক্ষণ ও লিখিত রূপ প্রচলনের ওপর জোর দিয়েছে।

কিন্তু বাস্তবে সৌরা ভাষা নিয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এখন পর্যন্ত কয়েকটি নৃগোষ্ঠীর জন্য সীমিত সংখ্যক বই প্রকাশিত হলেও সৌরা তার মধ্যে নেই। শিক্ষায় অন্তর্ভুক্তি, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কিংবা পাঠ্যক্রমে কোনো পরিকল্পনা দেখা যায়নি। সরকারি-বেসরকারি উভয় পর্যায়ে উদ্যোগের অভাব রয়েছে।

ভারতের উদাহরণ-

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সৌরা ভাষা নিয়ে কাজ হয়েছে। অন্ধ্র প্রদেশে প্রাথমিক স্তরে সৌরা ভাষায় পাঠ্যপুস্তক তৈরি করা হয়েছে। সোরাং সোমপেং লিপিকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গান, গল্প, ধর্মীয় আচার সবকিছুকে ভাষার ভেতর পুনর্জীবিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফলে সেখানকার সৌরা জনগোষ্ঠী তুলনামূলকভাবে নিজেদের ভাষা টিকিয়ে রাখার সুযোগ পাচ্ছে। বাংলাদেশে একই সম্প্রদায় থাকলেও তারা এসব সুযোগ থেকে বঞ্চিত।

ভাষা হারানোর ঝুঁকি

ভাষা বিলুপ্ত মানে কেবল শব্দ বা বাক্য হারানো নয়; এর সঙ্গে হারিয়ে যায় একটি জনগোষ্ঠীর শতাব্দী ধরে সঞ্চিত অভিজ্ঞতা, জ্ঞান, ইতিহাস ও জীবনদর্শন। ভাষার ভেতর লুকিয়ে থাকে তাদের আধ্যাত্মিক বিশ্বাস, সামাজিক মূল্যবোধ ও সাংস্কৃতিক পরিচয়। সৌরা ভাষা হারিয়ে গেলে বাংলাদেশ তার বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি অংশ হারাবে।

সিরাতুন্নবী উপলক্ষে আলোচনা সভা

ধোবাউড়ায় সোনালী ব্যাংকে গ্রাহকের লাখ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা ঝাড়–দার

ছবি

জামালপুরে গণপিটুনিতে চোর নিহত

ছবি

অবৈধ সংযোগ কর্তন করতে গিয়ে বৈধ সংযোগও বন্ধ

ছবি

মুন্সীগঞ্জে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ৩

ছবি

কুবির দ্বিতীয় সমাবর্তন ৭ ডিসেম্বর

ছবি

নারায়ণগঞ্জে রেডিমিক্স সিমেন্ট কারখানায় যুবক পিটিয়ে হত্যা

ছবি

বগুড়ায় ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মাদ্রাসার পরিচালক গ্রেপ্তার

ছবি

কলাপাড়ায় গৃহবধূকে ডাকাতি শেষে গণধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৩

ছবি

ভেঙে যাওয়া সুইস গেইট নির্মাণের খবরে স্বস্তি ফিরেছে এলাকায়

ছবি

চলন বিলে শামুকে জীবিকা নির্বাহ হাজারো মানুষের

ছবি

ধামরাইয়ে সাদ হত্যায় ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

ছবি

গাইবান্ধায় আউশের ফলনে খুশি কৃষক

ছবি

বোয়ালমারীতে পাগলা ঘোড়ার আক্রমনে আহত ১০

ছবি

খানা খন্দে ভরা চুয়াডাঙ্গা-দর্শনা সড়ক

ছবি

দুর্গাপুরের হাট-বাজার পলিথিনে সয়লাব

ছবি

চাঁদপুরে যৌথ বাহিনীর অভিযান মাদকসহ আটক ১১

ছবি

রাউজানে সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের মহড়া, আটক ১

ছবি

ডলফিন রক্ষায় সুন্দরবন অভয়ারণ্যে লাল ফ্ল্যাগ, মাছ ধরায় বিধি নিষেধ

ছবি

বাসর রাতে স্বামীর গোপনাঙ্গ কেটে দিল নববধূ

ছবি

জলদস্যুর আস্তানায় মিলল অস্ত্র-গুলি

ছবি

কুষ্টিয়ার লালন আখড়াবাড়িতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার

ছবি

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে যারা জুটমিলগুলো ধ্বংস করেছে তাদের বিচার করা হবে -ড. মঈন খান

ছবি

চিরিরবন্দরে সাপের কামড়ে মৃত্যু ১

ছবি

জয়পুরহাটে ৩৩ বছরেও জমি দখল না পেয়ে ভুক্তভোগীর মানববন্ধন

ছবি

বগুড়ায় ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা, আটক ৫

ছবি

বাঞ্ছারামপুরে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

ছবি

লালপুরে অপরিকল্পিত নদী খননে গ্রামীণ সড়ক, ঘরবাড়ি নদীগর্ভে

ছবি

বসতভিটা উচ্ছেদের প্রতিবাদে মানববন্ধন

ছবি

দাবদাহে বিপর্যস্ত শ্রীমঙ্গল

ছবি

হিলি-ঘোড়াঘাট মহাসড়কের কাজ ৩ বছরেও শেষ হয়নি

ছবি

পূর্বপুরুষদের ইতিহাস বহন করছে জালশুকা গ্রামের একটি বাড়ি

ছবি

কুড়িগ্রামে চার পায়ের বক দেখতে মানুষের ভিড়

ছবি

কালো আখ আবাদ করে দ্বিগুণ লাভ গুনছেন নরসিংদীর চাষিরা

ছবি

খুলনায় মৎস্য ঘেরে বারোমাসি তরমুজে বাড়তি আয়

ছবি

বগুড়ায় পেট্রল পাম্প কর্মকর্তার গলাকাটা লাশ উদ্ধার

tab

news » bangladesh

শ্রীমঙ্গল থেকে হারিয়ে যাচ্ছে সৌরা ভাষা ও সংস্কৃতি

সংগ্রাম দত্ত, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার)

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) : উপজেলার রাজঘাট ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা সৌরাপল্লীতে সৌরা পরিবারের সদস্যরা -সংবাদ

শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশে বর্তমানে সৌরা জনগোষ্ঠীর ৭০টি পরিবার রয়েছে। এর মধ্যে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাজগাট ইউনিয়নের সৌরা পল্লীতে মাত্র বাইশটি পরিবার। সীমান্তঘেঁষা এ গ্রামের মানুষরা মূলত চা-বাগানের শ্রমিক। দারিদ্র্য, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় বঞ্চনা এবং সামাজিক অবহেলার কারণে তারা টিকে আছেন প্রান্তিক অবস্থায়।

পরিবারের ভেতরে বাংলা, ওড়িয়া ও সাদরি ভাষার ব্যবহার অনেক বেশি। ফলে সৌরা ভাষার স্থান সংকুচিত হয়ে এসেছে। এখন কেবল কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তি এ ভাষায় সাবলীলভাবে কথা বলতে পারেন। প্রবীণদের মৃত্যু হলেই এই ভাষা বিলীন হয়ে যাবে। নতুন প্রজন্ম নিজেদের মাতৃভাষা শেখার প্রতি আগ্রহী নয়। ফলে আন্তঃপ্রজন্মে ভাষা হস্তান্তর বন্ধ হয়ে গেছে।

ভাষার শেকড় ও পরিচয়

সৌরা ভাষা (ঝড়ৎধ বা ঝধাধৎধ) অস্ট্রো-এশিয়াটিক ভাষাপরিবারের মুন্ডা শাখার অন্তর্গত। ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীনতম ভাষাগুলোর একটি এটি। বর্তমানে ভারতের ওড়িশা, অন্ধ্র প্রদেশ, তামিলনাড়ু ও বিহারে এই ভাষাভাষীদের বসতি রয়েছে। বাংলাদেশের শ্রীমঙ্গলের সৌরারা একই ভাষাভাষী হলেও তাদের অবস্থান তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি দুর্বল। ভাষাটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো মৌখিক ঐতিহ্য। লোককথা, গান, ধর্মীয় আচার ও সামাজিক অনুষ্ঠান ছিল এর বাহক। একটি শব্দেই অনেক সময় পূর্ণ বাক্যের অর্থ প্রকাশ করা যায় এটি এর পলিসিন্থেটিক প্রকৃতির উদাহরণ। তবে মৌখিক ঐতিহ্যের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় লিখিত সংরক্ষণের অভাবে ভাষাটি দ্রুত হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে।

সোরাং সোমপেং লিপি

সৌরা ভাষার জন্য একটি স্বতন্ত্র বর্ণমালা রয়েছে সোরাং সোমপেং। ১৯৩৬ সালে মাঙ্গেই গোমাঙ্গো নামের এক সৌরা নেতা দাবি করেন, আধ্যাত্মিক প্রেরণায় তিনি এ লিপি উদ্ভাবন করেন। এতে প্রায় ৩৪-৩৬টি চিহ্ন আছে, যার মধ্যে স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণ ও সংখ্যা অন্তর্ভুক্ত।

লিপিটি দেখতে কোণাকৃতির এবং বাম থেকে ডানে লেখা হয়। ২০১২ সালে এটি ইউনিকোডে অন্তর্ভুক্ত হয়, ফলে ডিজিটাল মাধ্যমে এর ব্যবহারও সম্ভব হয়েছে। ভারতে এই লিপিতে পাঠ্যপুস্তক তৈরি করা হয়েছে, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে, কিন্তু বাংলাদেশে এখনো কোনো প্রয়োগ ঘটেনি।

সাংস্কৃতিক সংকট

ভাষার মতোই সৌরাদের সংস্কৃতিও ভাঙনের মুখে। একসময় আকাশের তারা দেখে বিয়ে নির্ধারণ করা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক রীতি। বিয়ের এ আচারের নাম ছিল সুংকরা। এ ছাড়া ধর্মীয় আচার, উৎসব, লোককাহিনি ও গান তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ ছিল। কিন্তু আধুনিক জীবনযাত্রা ও সামাজিক চাপের কারণে এসব অনুশীলন হারিয়ে যাচ্ছে।

আইনি কাঠামো বনাম বাস্তবতা

বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার সনদে স্বাক্ষর করেছে, যেখানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিশুদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট আইন (২০১০) নৃগোষ্ঠীর ভাষা সংরক্ষণ ও লিখিত রূপ প্রচলনের ওপর জোর দিয়েছে।

কিন্তু বাস্তবে সৌরা ভাষা নিয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এখন পর্যন্ত কয়েকটি নৃগোষ্ঠীর জন্য সীমিত সংখ্যক বই প্রকাশিত হলেও সৌরা তার মধ্যে নেই। শিক্ষায় অন্তর্ভুক্তি, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কিংবা পাঠ্যক্রমে কোনো পরিকল্পনা দেখা যায়নি। সরকারি-বেসরকারি উভয় পর্যায়ে উদ্যোগের অভাব রয়েছে।

ভারতের উদাহরণ-

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সৌরা ভাষা নিয়ে কাজ হয়েছে। অন্ধ্র প্রদেশে প্রাথমিক স্তরে সৌরা ভাষায় পাঠ্যপুস্তক তৈরি করা হয়েছে। সোরাং সোমপেং লিপিকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গান, গল্প, ধর্মীয় আচার সবকিছুকে ভাষার ভেতর পুনর্জীবিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফলে সেখানকার সৌরা জনগোষ্ঠী তুলনামূলকভাবে নিজেদের ভাষা টিকিয়ে রাখার সুযোগ পাচ্ছে। বাংলাদেশে একই সম্প্রদায় থাকলেও তারা এসব সুযোগ থেকে বঞ্চিত।

ভাষা হারানোর ঝুঁকি

ভাষা বিলুপ্ত মানে কেবল শব্দ বা বাক্য হারানো নয়; এর সঙ্গে হারিয়ে যায় একটি জনগোষ্ঠীর শতাব্দী ধরে সঞ্চিত অভিজ্ঞতা, জ্ঞান, ইতিহাস ও জীবনদর্শন। ভাষার ভেতর লুকিয়ে থাকে তাদের আধ্যাত্মিক বিশ্বাস, সামাজিক মূল্যবোধ ও সাংস্কৃতিক পরিচয়। সৌরা ভাষা হারিয়ে গেলে বাংলাদেশ তার বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি অংশ হারাবে।

back to top