ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
গতকাল বৃহস্পতিবার ফেসবুকে রূপসা সেতু থেকে এক ব্যক্তির ঝাঁপ দেওয়ার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ বলছে, ওই ব্যক্তিই খুলনার সাংবাদিক ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলু। তিনি নিজেই খান জাহান আলী সেতুর (রূপসা সেতু) ওপর থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন বলে নৌ পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে। তবে কী কারণে তিনি এমন করেছেন, সেই রহস্য এখনো উদ্ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ।
খুলনা নৌ পুলিশের পুলিশ সুপার মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, রূপসা সেতুর যেখান থেকে সাংবাদিক ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলুর লাশ উদ্ধার হয়েছিল, সেতুর টোল প্লাজার ভিডিও ফুটেজে স্থানটির সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। ঘটনাটি গত রোববার বেলা ২টা ২০ মিনিটের দিকে ঘটেছে। ঘটনাস্থল মিলেছে, দিনও মিলেছে। সব মিলিয়ে ভিডিওতে যিনি ঝাঁপ দিয়েছেন, তিনিই ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলু বলে তারা মনে করছেন। ওই দিনে অন্য কোনো মরদেহও উদ্ধার হয়নি।
মঞ্জুর মোর্শেদ আরও বলেন, ফুটেজে দেখা গেছে, সাংবাদিক বুলু সেতুতে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করেন, এদিক-সেদিক হেঁটেছেন, নিচে তাকিয়েছেন। একসময় তিনি সেতুর ৪ নম্বর পিলারের দিক থেকে ঝাঁপ দেন। তার সঙ্গে অন্য কাউকে দেখা যায়নি।
মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, তবে কী কারণে তিনি এ পথ বেছে নিলেন, এখনো স্পষ্ট নয়। বিষয়টি তদন্তাধীন। তদন্ত এগোলে সব পরিষ্কার হবে।
গত রোববার সন্ধ্যার পর রূপসা সেতুর একটি পিলারের বেজমেন্ট থেকে সাংবাদিক ওয়াহেদ-উজ-জামানের বুলুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার ভাই আনিছুজ্জামান দুলু লবণচরা থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। তবে পরিবার ও স্বজনরা শুরু থেকেই ঘটনাটিকে হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করে আসছেন।
এদিকে তার মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে অধিকতর তদন্তের দাবি জানিয়েছেন খুলনার সাংবাদিকরা। গতকাল বৃহস্পতিবার খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়ন (কেইউজে) আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা বলেন, সাংবাদিক বুলু যদি আত্মহত্যা করেও থাকেন, তবে আত্মহত্যার কারণ, কারও চাপে তিনি বাধ্য হয়েছেন কি না, তদন্ত করে উদ্ঘাটন করতে হবে।
কর্মসূচিতে সাংবাদিকরা বলেন, এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। এর পেছনে কারণ থাকতে পারে। সাংবাদিক বুলুর লাশ উদ্ধারের পর একটি অপমৃত্যু মামলা হলেও তদন্ত চলছে ধীরগতিতে। সম্প্রতি খুলনার নদ-নদীতে বেওয়ারিশ লাশের সংখ্যা বেড়েছে। এসব লাশ শনাক্ত করা যাচ্ছে না, মৃত্যুর কারণও উদঘাটন করতে পারছে না পুলিশ।
খুলনা প্রেসক্লাবের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির আহ্বায়ক এনামুল হক জানান, ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলু (৬০) দৈনিক সংবাদ প্রতিদিনের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন। তিনি খুলনা প্রেসক্লাব ও খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের (কেইউজে) সদস্য ছিলেন।
বুলুর ঘনিষ্ট সহকর্মী সাংবাদিক শুভ্র শচীন জানিয়েছেন, খুলনা নগরের শিববাড়ি মোড় সংলগ্ন ইব্রাহিম মিয়া রোডে তাদের পৈতৃক বাড়ি থাকলেও সেটি চার বছর আগে বিক্রি করা হয়। এরপর সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। ১ সেপ্টেম্বর থেকে বাগমারা এলাকায় নতুন বাসায় ওঠার কথা ছিল তার।
খুবই সাদামাটা জীবন যাপন করতেন-শান্ত, প্রগতিশীল ও মুক্তচিন্তার ছিলেন তিনি। ছিলেন বিনয়ী, নিরাহংকার, ও মিতব্যয়ী। প্রায় তিন দশকের বর্নিল সাংবাদিকতা জীবনে তার সাথে কখনো কারও মনকষাকষি হয়নি। তিনি ছিলেন নিঃসন্তান এবং সাংসারিক জীবনে অনেকটা অসুখী।
অর্থকষ্টেও ছিলেন। প্রায় মাস চারেক আগে মানসিকভাবে অসুস্থ তার স্ত্রী নিখোঁজ বলে তার ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
গতকাল বৃহস্পতিবার ফেসবুকে রূপসা সেতু থেকে এক ব্যক্তির ঝাঁপ দেওয়ার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ বলছে, ওই ব্যক্তিই খুলনার সাংবাদিক ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলু। তিনি নিজেই খান জাহান আলী সেতুর (রূপসা সেতু) ওপর থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন বলে নৌ পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে। তবে কী কারণে তিনি এমন করেছেন, সেই রহস্য এখনো উদ্ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ।
খুলনা নৌ পুলিশের পুলিশ সুপার মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, রূপসা সেতুর যেখান থেকে সাংবাদিক ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলুর লাশ উদ্ধার হয়েছিল, সেতুর টোল প্লাজার ভিডিও ফুটেজে স্থানটির সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। ঘটনাটি গত রোববার বেলা ২টা ২০ মিনিটের দিকে ঘটেছে। ঘটনাস্থল মিলেছে, দিনও মিলেছে। সব মিলিয়ে ভিডিওতে যিনি ঝাঁপ দিয়েছেন, তিনিই ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলু বলে তারা মনে করছেন। ওই দিনে অন্য কোনো মরদেহও উদ্ধার হয়নি।
মঞ্জুর মোর্শেদ আরও বলেন, ফুটেজে দেখা গেছে, সাংবাদিক বুলু সেতুতে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করেন, এদিক-সেদিক হেঁটেছেন, নিচে তাকিয়েছেন। একসময় তিনি সেতুর ৪ নম্বর পিলারের দিক থেকে ঝাঁপ দেন। তার সঙ্গে অন্য কাউকে দেখা যায়নি।
মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, তবে কী কারণে তিনি এ পথ বেছে নিলেন, এখনো স্পষ্ট নয়। বিষয়টি তদন্তাধীন। তদন্ত এগোলে সব পরিষ্কার হবে।
গত রোববার সন্ধ্যার পর রূপসা সেতুর একটি পিলারের বেজমেন্ট থেকে সাংবাদিক ওয়াহেদ-উজ-জামানের বুলুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার ভাই আনিছুজ্জামান দুলু লবণচরা থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। তবে পরিবার ও স্বজনরা শুরু থেকেই ঘটনাটিকে হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করে আসছেন।
এদিকে তার মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে অধিকতর তদন্তের দাবি জানিয়েছেন খুলনার সাংবাদিকরা। গতকাল বৃহস্পতিবার খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়ন (কেইউজে) আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা বলেন, সাংবাদিক বুলু যদি আত্মহত্যা করেও থাকেন, তবে আত্মহত্যার কারণ, কারও চাপে তিনি বাধ্য হয়েছেন কি না, তদন্ত করে উদ্ঘাটন করতে হবে।
কর্মসূচিতে সাংবাদিকরা বলেন, এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। এর পেছনে কারণ থাকতে পারে। সাংবাদিক বুলুর লাশ উদ্ধারের পর একটি অপমৃত্যু মামলা হলেও তদন্ত চলছে ধীরগতিতে। সম্প্রতি খুলনার নদ-নদীতে বেওয়ারিশ লাশের সংখ্যা বেড়েছে। এসব লাশ শনাক্ত করা যাচ্ছে না, মৃত্যুর কারণও উদঘাটন করতে পারছে না পুলিশ।
খুলনা প্রেসক্লাবের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির আহ্বায়ক এনামুল হক জানান, ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলু (৬০) দৈনিক সংবাদ প্রতিদিনের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন। তিনি খুলনা প্রেসক্লাব ও খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের (কেইউজে) সদস্য ছিলেন।
বুলুর ঘনিষ্ট সহকর্মী সাংবাদিক শুভ্র শচীন জানিয়েছেন, খুলনা নগরের শিববাড়ি মোড় সংলগ্ন ইব্রাহিম মিয়া রোডে তাদের পৈতৃক বাড়ি থাকলেও সেটি চার বছর আগে বিক্রি করা হয়। এরপর সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। ১ সেপ্টেম্বর থেকে বাগমারা এলাকায় নতুন বাসায় ওঠার কথা ছিল তার।
খুবই সাদামাটা জীবন যাপন করতেন-শান্ত, প্রগতিশীল ও মুক্তচিন্তার ছিলেন তিনি। ছিলেন বিনয়ী, নিরাহংকার, ও মিতব্যয়ী। প্রায় তিন দশকের বর্নিল সাংবাদিকতা জীবনে তার সাথে কখনো কারও মনকষাকষি হয়নি। তিনি ছিলেন নিঃসন্তান এবং সাংসারিক জীবনে অনেকটা অসুখী।
অর্থকষ্টেও ছিলেন। প্রায় মাস চারেক আগে মানসিকভাবে অসুস্থ তার স্ত্রী নিখোঁজ বলে তার ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন।