শুক্রবার, রাজবাড়ীতে নুরাল পাগলার লাশ কবর থেকে তুলে প্রকাশ্যে পোড়ায় একদল উত্তেজিত জনতা -সংবাদ
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার নুরুল হক ওরফে ‘নুরাল পাগল’ নামে এক ব্যক্তির লাশ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় একদল লোক।
গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নিজ বাড়িতে দরবার শরিফ গড়ে তোলেন নুরুল হক। আশির দশকের শেষ দিকে তিনি নিজেকে ইমাম মাহেদী দাবি করলে জনরোষ তৈরি হয়। পরে ১৯৯৩ সালের ২৩ মার্চ মুচলেকা দিয়ে তিনি এলাকা ছাড়েন। কয়েকদিন পর তিনি আবার দরবারে ফিরে কার্যক্রম শুরু করেন।
‘নুরাল পাগলের’ বাড়িতেও ভাঙচুর ও আগুন
পুলিশের পিকআপসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুর
রাজবাড়ীর ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি
গত ২৩ আগস্ট ভোরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় তার মৃত্যু হয়। ওইদিন রাতে এলাকাবাসীর অংশগ্রহণে প্রথম জানাজা ও ভক্তদের অংশগ্রহণে দ্বিতীয় জানাজা শেষে রাতে সাড়ে ১০টার দিকে মাটি থেকে ১২ ফুট উঁচুতে বিশেষ কায়দায় দাফন করা হয়। যে বেদির ওপর দাফন করা হয় সেখানে কাবার আদলে রং করা হয়।
এরপর ‘শরিয়ত পরিপন্থী’ দাবি করে করে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের’ অভিযোগে ইমাম-আকিদা রক্ষা কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি গোয়ালন্দ উপজেলা মডেল মসজিদসহ রাজবাড়ী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে স্থানীয় প্রশাসনসহ জেলা প্রশাসনের কাছে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধান চাওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অ্যাড. নুরুল ইসলাম বলেন, যেভাবে নুরুল হককে কবর দেয়া হয়েছে। এটা ইসলাম পরিপন্থী। দ্রুত সময়ের মধ্যে ‘ধর্মীয় রীতি’ মেনে কবর দেয়ার ‘অনুরোধ করেন’ তিনি। ইমাম আকিদা রক্ষা কমিটি শুক্রবার, (০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫) জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে।
শুক্রবার দুপুরে গোয়ালন্দ আনসার ক্লাবে ‘তৌহিদী জনতার’ বিক্ষোভ শেষে উত্তেজিত লোকরা ‘নুরাল পাগলের’ বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন লাগিয়ে দেয়।
বিকেল ৪টার দিকে উত্তেজিত লোকরা কবর থেকে নুরুল হকের লাশ তুলে গোয়ালন্দ পদ্মার মোড় নামের স্থানে মহাসড়কের ওপর তার মরদেহ কফিনসহ আগুন ধরিয়ে দেয়।
এ সময় পুলিশের দুইটি ডাবল কেবিন পিকআপসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ির ভাঙচুর করা হয়।
খবর পেয়ে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলামসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শরীফ আল রাজীব এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রাজশাহীতে আজিজ ভা-ারীর ‘খানকা শরিফে’ হামলা-ভাঙচুর রাজশাহীর পবা উপজেলায় আজিজ ভা-ারীর ‘খানকা শরিফে’ও হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে একদল লোক। শুক্রবার জুমার নামাজের পর উপজেলার বড়গাছি ইউনিয়নের পানিশাইল চন্দ্রপুকুর গ্রামের একদল লোক এ হামলা চালায় বলে জানান পবা থানার ওসি মুনিরুল ইসলাম।
পুলিশের উপস্থিতিতেই হামলা হয়েছে বলে দাবি করেন খানকা শরিফের পীর আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থার পূর্ব সতর্কতার পরেও হামলা এড়াতে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’ জুমার নামাজের পর গ্রামবাসীকে ‘উসকে দিয়ে’ খানকা শরিফে হামলা চালিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ আজিজুল ইসলামের।
তিনি জানান, প্রত্যেক বছর ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে খানকা শরিফের পক্ষ থেকে তিন দিনের দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। শুক্রবার আয়োজনের প্রথম দিন ছিল।
ঘটনার সময় পুলিশ উপস্থিত থাকলেও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলেও অভিযোগ আজিজুল ইসলামের। তিনি বলেন, ‘পুলিশের অনুমতি নিয়ে আজকে (শুক্রবার) অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। ওসিসহ পুলিশের উপস্থিতিতেই খানকা শরিফে হামলা করা হয়েছে। অথচ পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’
ওসি মুনিরুল ইসলাম বলেন, “৩শ’-৪শ’ মানুষ একসঙ্গে সেখানে হামলা করেছে। আর আমরা ছিলাম মাত্র পাঁচজন। সেখানে আমাদের কী করার ছিল। দেশের পরিস্থিতি তো জানেন।’ তবে এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান ওসি।
শুক্রবার, রাজবাড়ীতে নুরাল পাগলার লাশ কবর থেকে তুলে প্রকাশ্যে পোড়ায় একদল উত্তেজিত জনতা -সংবাদ
শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার নুরুল হক ওরফে ‘নুরাল পাগল’ নামে এক ব্যক্তির লাশ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় একদল লোক।
গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নিজ বাড়িতে দরবার শরিফ গড়ে তোলেন নুরুল হক। আশির দশকের শেষ দিকে তিনি নিজেকে ইমাম মাহেদী দাবি করলে জনরোষ তৈরি হয়। পরে ১৯৯৩ সালের ২৩ মার্চ মুচলেকা দিয়ে তিনি এলাকা ছাড়েন। কয়েকদিন পর তিনি আবার দরবারে ফিরে কার্যক্রম শুরু করেন।
‘নুরাল পাগলের’ বাড়িতেও ভাঙচুর ও আগুন
পুলিশের পিকআপসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুর
রাজবাড়ীর ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি
গত ২৩ আগস্ট ভোরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় তার মৃত্যু হয়। ওইদিন রাতে এলাকাবাসীর অংশগ্রহণে প্রথম জানাজা ও ভক্তদের অংশগ্রহণে দ্বিতীয় জানাজা শেষে রাতে সাড়ে ১০টার দিকে মাটি থেকে ১২ ফুট উঁচুতে বিশেষ কায়দায় দাফন করা হয়। যে বেদির ওপর দাফন করা হয় সেখানে কাবার আদলে রং করা হয়।
এরপর ‘শরিয়ত পরিপন্থী’ দাবি করে করে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের’ অভিযোগে ইমাম-আকিদা রক্ষা কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি গোয়ালন্দ উপজেলা মডেল মসজিদসহ রাজবাড়ী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে স্থানীয় প্রশাসনসহ জেলা প্রশাসনের কাছে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধান চাওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অ্যাড. নুরুল ইসলাম বলেন, যেভাবে নুরুল হককে কবর দেয়া হয়েছে। এটা ইসলাম পরিপন্থী। দ্রুত সময়ের মধ্যে ‘ধর্মীয় রীতি’ মেনে কবর দেয়ার ‘অনুরোধ করেন’ তিনি। ইমাম আকিদা রক্ষা কমিটি শুক্রবার, (০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫) জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে।
শুক্রবার দুপুরে গোয়ালন্দ আনসার ক্লাবে ‘তৌহিদী জনতার’ বিক্ষোভ শেষে উত্তেজিত লোকরা ‘নুরাল পাগলের’ বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন লাগিয়ে দেয়।
বিকেল ৪টার দিকে উত্তেজিত লোকরা কবর থেকে নুরুল হকের লাশ তুলে গোয়ালন্দ পদ্মার মোড় নামের স্থানে মহাসড়কের ওপর তার মরদেহ কফিনসহ আগুন ধরিয়ে দেয়।
এ সময় পুলিশের দুইটি ডাবল কেবিন পিকআপসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ির ভাঙচুর করা হয়।
খবর পেয়ে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলামসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শরীফ আল রাজীব এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রাজশাহীতে আজিজ ভা-ারীর ‘খানকা শরিফে’ হামলা-ভাঙচুর রাজশাহীর পবা উপজেলায় আজিজ ভা-ারীর ‘খানকা শরিফে’ও হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে একদল লোক। শুক্রবার জুমার নামাজের পর উপজেলার বড়গাছি ইউনিয়নের পানিশাইল চন্দ্রপুকুর গ্রামের একদল লোক এ হামলা চালায় বলে জানান পবা থানার ওসি মুনিরুল ইসলাম।
পুলিশের উপস্থিতিতেই হামলা হয়েছে বলে দাবি করেন খানকা শরিফের পীর আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থার পূর্ব সতর্কতার পরেও হামলা এড়াতে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’ জুমার নামাজের পর গ্রামবাসীকে ‘উসকে দিয়ে’ খানকা শরিফে হামলা চালিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ আজিজুল ইসলামের।
তিনি জানান, প্রত্যেক বছর ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে খানকা শরিফের পক্ষ থেকে তিন দিনের দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। শুক্রবার আয়োজনের প্রথম দিন ছিল।
ঘটনার সময় পুলিশ উপস্থিত থাকলেও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলেও অভিযোগ আজিজুল ইসলামের। তিনি বলেন, ‘পুলিশের অনুমতি নিয়ে আজকে (শুক্রবার) অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। ওসিসহ পুলিশের উপস্থিতিতেই খানকা শরিফে হামলা করা হয়েছে। অথচ পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’
ওসি মুনিরুল ইসলাম বলেন, “৩শ’-৪শ’ মানুষ একসঙ্গে সেখানে হামলা করেছে। আর আমরা ছিলাম মাত্র পাঁচজন। সেখানে আমাদের কী করার ছিল। দেশের পরিস্থিতি তো জানেন।’ তবে এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান ওসি।