দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) : চলাচলের অনুপযোগী খানাখন্দে ভরা চুয়াডাঙ্গা-দর্শনা সড়ক -সংবাদ
চুয়াডাঙ্গা জেলার সব চেয়ে জনবহুল গুরুত্বপূর্ণ সড়ক চুয়াডাঙ্গা-দর্শনা সড়কটির বিভিন্ন পয়েন্টে বেহাল দশা। ফলে যানবাহন চালকদের ভোগান্তির শেষ নেই। এলাকাবাসীর দাবি দুর্ঘটনা এড়াতে দ্রুত সংস্কার। যে কোন মুর্হূতে হতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার সবচেয়ে জনবহুল গুরুত্বপূর্ণ সড়ক চুয়াডাঙ্গা-দর্শন সড়কটি। জেলা শহরের সাথে সড়ক পথে দ্রুত যোগাযোগের মাধ্যম হলো এই সড়কটি। এই সড়ক ধরে প্রতিদিন ছোট বড় কয়েক হাজার যান বহন চলাচল করছে। বেশ কয়েকবার এ সড়কটি মেরামত করা হলেও বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আবার সড়কে সৃষ্টি হয় খানাখন্দে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার বিহীন পড়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে সড়কের বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে এসব গর্তে পানি জমে যানবাহন চলাচল এক প্রকার অসম্ভব হয়ে পড়ে। এর ফলে বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি ও যাত্রী ভোগান্তি। চুয়াডাঙ্গা শহরের নতুন জেলখানা থেকে ফকিরপাড়া এবং দর্শনা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থেকে রেলগেট পর্যন্ত সড়কের অবস্থা এখন ভয়াবহ। খানাখন্দ আর জমে থাকা পানিতে প্রতিদিনই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এই সড়ক দিয়ে ছোট-বড় যানবাহন চলাচল করলেও প্রতিদিনই কোনো না কোনো দুর্ঘটনা ঘটছে।
দর্শনা এলাকার বাসিন্দা বাকু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি সংস্কারের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বর্ষা মৌসুমে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত দুই বছর আগে ছোট ছোট গর্ত ছিল। এখন সেই গর্তই ভয়াল রূপ ধারণ করেছে। মাঝে মাঝেই ছোট ছোট পণ্যবাহী গাড়ি গুলো আটকে যাচ্ছে এই গর্তে।
এই সড়ক ধরে দর্শনা স্থলবন্দর, স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কৃষি বাজার এবং শিল্প-কারখানার সাথে সংযোগ স্থাপনের অন্যতম প্রধান পথ। এই সড়কাটিই আমাদের একমাত্র ভরসা। প্রতিদিন স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী, রোগী, কৃষক, শ্রমিক সবাই এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। কিন্তু এর অবস্থা এতই খারাপ যে, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। দ্রুত টেকসই সংস্কার প্রয়োজন।
এই সড়কে বাস চালক নুর ইসলামও মনি মিয়া বলেন, এই সড়কের দামুড়হুদার ফকির পাড়া থেকে উজিরপুর, লোকনাথপুরের ফায়ার সার্ভিস থেকে দর্শনা পর্যন্ত বেহাল দশা। এই সব স্থানে অসাবধান হলে গাড়ি বিগড়ে যায়। প্রতিদিন গাড়ি নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করি। উঁচু-নিচু জায়গায় ওঠা-নামার সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা সবসময় থাকে। যাত্রীরাও আতঙ্কে থাকেন। বড় গাড়ি নিয়ে এই সড়কে চলাচল করা প্রায় অসম্ভব। একটু অসাবধান হলেই গাড়ি উল্টে যাওয়ার ভয় থাকে। ফলে জান মালে ক্ষতি হতে পারে। সারা দেশের সাথে সরাসরি সড়ক পথে যোগাযোগ রয়েছে।
ভ্যানচালক তরিকুল ইসলাম বলেন, রাস্তার গর্তে বারবার চাকা আটকে যায়। যাত্রী নিয়ে চলাচল করা খুবই কষ্টকর। অনেক সময় উল্টে দুর্ঘটনায় পড়তে হয়। ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রতিদিন গর্তে পড়ে গাড়ির টায়ার, ব্যাটারি নষ্ট হচ্ছে। একদিকে যাত্রী কম পাচ্ছি, অন্যদিকে মেরামতে খরচ বাড়ছে। সংসার চালানোই মুশকিল হয়ে গেছে।
ইজিবাইক চালক নুরু, করিম, হাফিজসহ অনেকে বলেন, রাস্তার জৌলুস হারিয়ে বিভিন্ন পয়েন্টে বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটিতে গাড়ি চালাতে গেলে ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। এ সড়ক দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের পাসপোর্টধারী যাত্রী ও জনসাধারণের চলাচল করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিনিয়ত এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী পথচারীরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে মানুষ চলাচল করে থাকে। এ ছাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ ও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় ভ্যান-রিকশা, অটোরিকশার মাধ্যমে চলাচল করাও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন হাজারো মানুষকে সীমাহীন ভোগান্তি নিয়ে এই সড়কে জনসাধারণের চলাচল করছে।
চুয়াডাঙ্গার নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এই সড়ক ছোট ছোট গর্তে ভরে আছে। এখন সেই গর্তই ভয়াল রূপ নিয়েছে।
প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছে, সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে। সরকারের কাছে আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে সংস্কার কাজ শুরু করতে হবে, না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
চুয়াডাঙ্গা সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মুহাম্মদ মনজুরুল করিম বলে, ভাঙা সড়কের জন্য মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে, এখনো অনুমোদন পাওয়া যায়নি। তবে কিছু এলাকায় রিপেয়ারিং কাজ চলছে। এই সড়কের ছোটখাটো সমস্যা দ্রুত সমাধাণ করা হবে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট এলাকাবাসীর দাবি, চুয়াডাঙ্গা শহর ও দর্শনার মধ্যে যোগাযোগের অন্যতম প্রধান সড়কটি এভাবে অচলাবস্থার মুখে পড়ায় সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে। প্রতিদিন হাজারো মানুষ এই পথে যাতায়াত করেন। স্থানীয়রা বলছেন, দ্রুত জনবহুল সড়কটি মেরামত শুরু না হলে দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়বে এবং জনজীবন চলাচলের জন্যআরও দুর্বিসহ হয়ে পড়বে।
দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) : চলাচলের অনুপযোগী খানাখন্দে ভরা চুয়াডাঙ্গা-দর্শনা সড়ক -সংবাদ
রোববার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
চুয়াডাঙ্গা জেলার সব চেয়ে জনবহুল গুরুত্বপূর্ণ সড়ক চুয়াডাঙ্গা-দর্শনা সড়কটির বিভিন্ন পয়েন্টে বেহাল দশা। ফলে যানবাহন চালকদের ভোগান্তির শেষ নেই। এলাকাবাসীর দাবি দুর্ঘটনা এড়াতে দ্রুত সংস্কার। যে কোন মুর্হূতে হতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার সবচেয়ে জনবহুল গুরুত্বপূর্ণ সড়ক চুয়াডাঙ্গা-দর্শন সড়কটি। জেলা শহরের সাথে সড়ক পথে দ্রুত যোগাযোগের মাধ্যম হলো এই সড়কটি। এই সড়ক ধরে প্রতিদিন ছোট বড় কয়েক হাজার যান বহন চলাচল করছে। বেশ কয়েকবার এ সড়কটি মেরামত করা হলেও বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আবার সড়কে সৃষ্টি হয় খানাখন্দে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার বিহীন পড়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে সড়কের বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে এসব গর্তে পানি জমে যানবাহন চলাচল এক প্রকার অসম্ভব হয়ে পড়ে। এর ফলে বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি ও যাত্রী ভোগান্তি। চুয়াডাঙ্গা শহরের নতুন জেলখানা থেকে ফকিরপাড়া এবং দর্শনা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থেকে রেলগেট পর্যন্ত সড়কের অবস্থা এখন ভয়াবহ। খানাখন্দ আর জমে থাকা পানিতে প্রতিদিনই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এই সড়ক দিয়ে ছোট-বড় যানবাহন চলাচল করলেও প্রতিদিনই কোনো না কোনো দুর্ঘটনা ঘটছে।
দর্শনা এলাকার বাসিন্দা বাকু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি সংস্কারের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বর্ষা মৌসুমে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত দুই বছর আগে ছোট ছোট গর্ত ছিল। এখন সেই গর্তই ভয়াল রূপ ধারণ করেছে। মাঝে মাঝেই ছোট ছোট পণ্যবাহী গাড়ি গুলো আটকে যাচ্ছে এই গর্তে।
এই সড়ক ধরে দর্শনা স্থলবন্দর, স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কৃষি বাজার এবং শিল্প-কারখানার সাথে সংযোগ স্থাপনের অন্যতম প্রধান পথ। এই সড়কাটিই আমাদের একমাত্র ভরসা। প্রতিদিন স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী, রোগী, কৃষক, শ্রমিক সবাই এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। কিন্তু এর অবস্থা এতই খারাপ যে, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। দ্রুত টেকসই সংস্কার প্রয়োজন।
এই সড়কে বাস চালক নুর ইসলামও মনি মিয়া বলেন, এই সড়কের দামুড়হুদার ফকির পাড়া থেকে উজিরপুর, লোকনাথপুরের ফায়ার সার্ভিস থেকে দর্শনা পর্যন্ত বেহাল দশা। এই সব স্থানে অসাবধান হলে গাড়ি বিগড়ে যায়। প্রতিদিন গাড়ি নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করি। উঁচু-নিচু জায়গায় ওঠা-নামার সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা সবসময় থাকে। যাত্রীরাও আতঙ্কে থাকেন। বড় গাড়ি নিয়ে এই সড়কে চলাচল করা প্রায় অসম্ভব। একটু অসাবধান হলেই গাড়ি উল্টে যাওয়ার ভয় থাকে। ফলে জান মালে ক্ষতি হতে পারে। সারা দেশের সাথে সরাসরি সড়ক পথে যোগাযোগ রয়েছে।
ভ্যানচালক তরিকুল ইসলাম বলেন, রাস্তার গর্তে বারবার চাকা আটকে যায়। যাত্রী নিয়ে চলাচল করা খুবই কষ্টকর। অনেক সময় উল্টে দুর্ঘটনায় পড়তে হয়। ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রতিদিন গর্তে পড়ে গাড়ির টায়ার, ব্যাটারি নষ্ট হচ্ছে। একদিকে যাত্রী কম পাচ্ছি, অন্যদিকে মেরামতে খরচ বাড়ছে। সংসার চালানোই মুশকিল হয়ে গেছে।
ইজিবাইক চালক নুরু, করিম, হাফিজসহ অনেকে বলেন, রাস্তার জৌলুস হারিয়ে বিভিন্ন পয়েন্টে বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটিতে গাড়ি চালাতে গেলে ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। এ সড়ক দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের পাসপোর্টধারী যাত্রী ও জনসাধারণের চলাচল করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিনিয়ত এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী পথচারীরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে মানুষ চলাচল করে থাকে। এ ছাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ ও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় ভ্যান-রিকশা, অটোরিকশার মাধ্যমে চলাচল করাও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন হাজারো মানুষকে সীমাহীন ভোগান্তি নিয়ে এই সড়কে জনসাধারণের চলাচল করছে।
চুয়াডাঙ্গার নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এই সড়ক ছোট ছোট গর্তে ভরে আছে। এখন সেই গর্তই ভয়াল রূপ নিয়েছে।
প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছে, সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে। সরকারের কাছে আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে সংস্কার কাজ শুরু করতে হবে, না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
চুয়াডাঙ্গা সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মুহাম্মদ মনজুরুল করিম বলে, ভাঙা সড়কের জন্য মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে, এখনো অনুমোদন পাওয়া যায়নি। তবে কিছু এলাকায় রিপেয়ারিং কাজ চলছে। এই সড়কের ছোটখাটো সমস্যা দ্রুত সমাধাণ করা হবে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট এলাকাবাসীর দাবি, চুয়াডাঙ্গা শহর ও দর্শনার মধ্যে যোগাযোগের অন্যতম প্রধান সড়কটি এভাবে অচলাবস্থার মুখে পড়ায় সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে। প্রতিদিন হাজারো মানুষ এই পথে যাতায়াত করেন। স্থানীয়রা বলছেন, দ্রুত জনবহুল সড়কটি মেরামত শুরু না হলে দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়বে এবং জনজীবন চলাচলের জন্যআরও দুর্বিসহ হয়ে পড়বে।