মহাদেবপুর (নওগাঁ) : মহাদেবপুরের নাটশাল মাঠে দলবদ্ধ নাচে ছন্দ তোলেন আদিবাসী নারীরা -সংবাদ
নওগাঁর মহাদেবপুরে আদিবাসীদের ৩০তম ঐতিহ্যবাহী কারাম উৎসব হয়ে গেলো। গতকাল সোমবার বিকালে উপজেলার নাটশাল মাঠে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ জেলা কমিটি এর আয়োজন করে। আশপাশের জেলা থেকে আসা আদিবাসীদের ২৫টি দল উৎসবে যোগ দিয়ে তাদের নিজেদের ভাষা-সংস্কৃতি আর ঐতিহ্য তুলে ধরে। সেখানে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান বক্তা ছিলেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিমল চন্দ্র রাজোয়ার। উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি গণেশ মার্ডী।
আদিবাসীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব কারাম পূজা। বংশপরমপরায় আদিসাবীরা পূর্ণিমা তিথিতে কারাম পুজা পালন করে। পূজা-অর্চনা আর নাচ-গানের মধ্য দিয়ে যুগ যুগ ধরে প্রতি বছর উত্তরের সমতল ভূমি নওগাঁর আদিবাসীরা এই কারাম উৎসব পালন করে আসছে।
কারাম পূজাকে ডাল পূজাও বলা হয়। আদিবাসীদের বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠির মানুষের কাছে কারাম একটি পবিত্র গাছ। এই গাছকে মঙ্গলের প্রতীকও বলে মনে করা হয়। কারাম ডাল মাটিতে পুঁতে বিভিন্ন আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী নাচ-গান ও কিচ্ছা বলার মধ্য দিয়ে এই পূজা করা হয়। আর এ দিনটির জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষায় থাকেন তারা। এ পুজার মাধ্যমে সংসারে স্বচ্ছলতা ও রোগবালাই থেকে মুক্ত থাকার প্রত্যাশা করেন তারা।
উপজেলার নাটশাল মাঠে নওগাঁসহ পাশর্^বর্তী জয়পুরহাট ও নাটোর জেলা থেকে মোট ২৫টি দল উৎসবে অংশ নেয়। এসময় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন উৎসবে যোগ দিয়ে শিশু, কিশোর-কিশোরীসহ নানা বয়সী মানুষ দলবদ্ধ ছন্দময় নাচের মাধ্যমে তাদের নিজেদের ভাষা সংস্কৃতি তুলে ধরে। পুরো এলাকা আদিবাসীসহ সকল সম্প্রদায়ের মানুষের হয়ে উঠে মিলন মেলা। এলাকার কারাম উৎসব উপলক্ষে আদিবাসী পল্লীগুলো মুখরিত হয়ে থাকে।
জেলার পত্নীতলা থেকে আসা অঞ্জলী খানকো বলেন, কারাম আমাদের জাতীয় উৎসব। বংশ পরমপরায় পালন করে আসছি। এ পূজার মাধ্যমে সংসারের উন্নতি, স্বামী-সন্তান ও পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকতে পারবো ঈশ^রের কাছে এই চাওয়া।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী লাকী তিরকি জানায়, ঈশ্বরের কাছে চাওয়া পড়াশুনা ভাল করাসহ যেন জীবনে উন্নতি করতে পারি। এছাড়া বাবা-মা’র সেবা করা, দেশবাসীর সেবা করতে পারি। এ উৎসবে দল বেঁধে নাচতে পেরে অনেক খুশি।
জেলা জাতীয় আদিবাসী পরিষদ সভাপতি আমিন কুজুর বলেন, ১৯৯৬ সাল থেকে জাতীয়ভাবে এ উৎসব পালন করা হচ্ছে। দলবদ্ধ ছন্দময় নাচের মাধ্যমে তাদের নিজেদের ভাষা সংস্কৃতি তুলে ধরে। আমাদের ৯টি দাবি আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করার দাবী জানায়।
অনুষ্ঠানে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ জেলা কমিটির সভাপতি আমিন কুজুর এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফুজ্জামান।
মহাদেবপুর (নওগাঁ) : মহাদেবপুরের নাটশাল মাঠে দলবদ্ধ নাচে ছন্দ তোলেন আদিবাসী নারীরা -সংবাদ
মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নওগাঁর মহাদেবপুরে আদিবাসীদের ৩০তম ঐতিহ্যবাহী কারাম উৎসব হয়ে গেলো। গতকাল সোমবার বিকালে উপজেলার নাটশাল মাঠে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ জেলা কমিটি এর আয়োজন করে। আশপাশের জেলা থেকে আসা আদিবাসীদের ২৫টি দল উৎসবে যোগ দিয়ে তাদের নিজেদের ভাষা-সংস্কৃতি আর ঐতিহ্য তুলে ধরে। সেখানে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান বক্তা ছিলেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিমল চন্দ্র রাজোয়ার। উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি গণেশ মার্ডী।
আদিবাসীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব কারাম পূজা। বংশপরমপরায় আদিসাবীরা পূর্ণিমা তিথিতে কারাম পুজা পালন করে। পূজা-অর্চনা আর নাচ-গানের মধ্য দিয়ে যুগ যুগ ধরে প্রতি বছর উত্তরের সমতল ভূমি নওগাঁর আদিবাসীরা এই কারাম উৎসব পালন করে আসছে।
কারাম পূজাকে ডাল পূজাও বলা হয়। আদিবাসীদের বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠির মানুষের কাছে কারাম একটি পবিত্র গাছ। এই গাছকে মঙ্গলের প্রতীকও বলে মনে করা হয়। কারাম ডাল মাটিতে পুঁতে বিভিন্ন আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী নাচ-গান ও কিচ্ছা বলার মধ্য দিয়ে এই পূজা করা হয়। আর এ দিনটির জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষায় থাকেন তারা। এ পুজার মাধ্যমে সংসারে স্বচ্ছলতা ও রোগবালাই থেকে মুক্ত থাকার প্রত্যাশা করেন তারা।
উপজেলার নাটশাল মাঠে নওগাঁসহ পাশর্^বর্তী জয়পুরহাট ও নাটোর জেলা থেকে মোট ২৫টি দল উৎসবে অংশ নেয়। এসময় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন উৎসবে যোগ দিয়ে শিশু, কিশোর-কিশোরীসহ নানা বয়সী মানুষ দলবদ্ধ ছন্দময় নাচের মাধ্যমে তাদের নিজেদের ভাষা সংস্কৃতি তুলে ধরে। পুরো এলাকা আদিবাসীসহ সকল সম্প্রদায়ের মানুষের হয়ে উঠে মিলন মেলা। এলাকার কারাম উৎসব উপলক্ষে আদিবাসী পল্লীগুলো মুখরিত হয়ে থাকে।
জেলার পত্নীতলা থেকে আসা অঞ্জলী খানকো বলেন, কারাম আমাদের জাতীয় উৎসব। বংশ পরমপরায় পালন করে আসছি। এ পূজার মাধ্যমে সংসারের উন্নতি, স্বামী-সন্তান ও পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকতে পারবো ঈশ^রের কাছে এই চাওয়া।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী লাকী তিরকি জানায়, ঈশ্বরের কাছে চাওয়া পড়াশুনা ভাল করাসহ যেন জীবনে উন্নতি করতে পারি। এছাড়া বাবা-মা’র সেবা করা, দেশবাসীর সেবা করতে পারি। এ উৎসবে দল বেঁধে নাচতে পেরে অনেক খুশি।
জেলা জাতীয় আদিবাসী পরিষদ সভাপতি আমিন কুজুর বলেন, ১৯৯৬ সাল থেকে জাতীয়ভাবে এ উৎসব পালন করা হচ্ছে। দলবদ্ধ ছন্দময় নাচের মাধ্যমে তাদের নিজেদের ভাষা সংস্কৃতি তুলে ধরে। আমাদের ৯টি দাবি আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করার দাবী জানায়।
অনুষ্ঠানে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ জেলা কমিটির সভাপতি আমিন কুজুর এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফুজ্জামান।