নোয়াগাঁও গ্রামে হেলদি চয়েজ ফুড এন্ড বেভারেজ প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির শিল্প প্রতিষ্ঠান -সংবাদ
বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, যেখানে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য, চা-বাগান আর পাহাড়ি টিলা মিলে এক অনন্য দৃশ্যের সৃষ্টি করেছে, সেখানে অবস্থিত শ্রীমঙ্গল। শুধু পর্যটক ও চা-প্রেমীদের জন্য নয়, বরং অর্থনীতি ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এটিও এখন এক সম্ভাবনাময় কেন্দ্র। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উপর অবস্থিত শ্রীমঙ্গল কৌশলগতভাবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার।
শ্রীমঙ্গল শুধু একটি উপজেলা নয়, বরং দেশের অন্যতম অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এখানে প্রায় পঞ্চাশটির মতো চা-শিল্প প্রতিষ্ঠান জাতীয় অর্থনীতির চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করছে। পাশাপাশি অসংখ্য হোটেল, রিসোর্ট ও পর্যটনকেন্দ্র দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য এই অঞ্চলকে অনন্য করে তুলেছে।
শ্রীমঙ্গলের গ্রামগুলোও শিল্প, বাণিজ্য ও পর্যটনের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, রাধানগর গ্রামে আন্তর্জাতিক মানের হোটেল ও রিসোর্ট গড়ে উঠেছে, আর সাতগাঁও থেকে মৌলভীবাজারের জগন্নাথপুর পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দুই পাশে বিস্তৃত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর কারণে কর্মসংস্থান ও আঞ্চলিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হচ্ছে।
এই ধারাবাহিকতায় নোয়াগাঁও গ্রাম আজ দ্রুত শিল্পায়নের পথ ধরে এগোচ্ছে এবং এটি শ্রীমঙ্গলের একটি সম্ভাবনাময় ইকোনমিক ভিলেজ হিসেবে পরিচিত হচ্ছে।
শ্রীমঙ্গল শহরের মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নোয়াগাঁও কেবল একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রাম নয়; এটি রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ।
ব্রিটিশ আমলে নোয়াগাঁও রাজনৈতিক চেতনা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সুপরিচিত ছিল। স্বাধীনতা আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন যতীন্দ্রমোহন দত্ত চৌধুরী, যিনি ১৯৪৭ সালের পর প্রথম ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার নির্বাচিত হয়ে গ্রামের অবকাঠামোগত উন্নয়নে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখেন। তাঁর সন্তান ধীরেন্দ্র দত্ত চৌধুরী ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর স্থানীয় মেম্বার হিসেবে নেতৃত্ব দেন। অপর সন্তান বিশিষ্ট সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ রাসেন্দ্র দত্ত চৌধুরী ১৯৮৩ সালে শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে গ্রামের রাস্তা, সেতু ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেন।
পরবর্তী প্রজন্মের নেতারা ধারাবাহিকভাবে অবকাঠামো, রাস্তা, ব্রিজ এবং জনকল্যাণমূলক স্থাপনার উন্নয়নে অবদান রেখেছেন। এই নেতৃত্বের ঐতিহ্যই নোয়াগাঁওকে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাওয়ার ভিত্তি দিয়েছে।
ন্যাজারিন মিশন- স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করছে। হেলদি চয়েজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কোম্পানি-খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে অবদান রাখছে। প্রাণ-আরএফএল মাছের হ্যাচারি- মৎস্যচাষে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। কারিতাস, বাংলাদেশ বনশিল্প কর্পোরেশন, ইস্পানি টি কোম্পানি-এ অঞ্চলের অর্থনীতিকে আরও সক্রিয় রাখছে। এই উদ্যোগগুলো শ্রমজীবী ও দরিদ্র পরিবারগুলোকে নতুন আয়ের সুযোগ দিচ্ছে, জীবনমান উন্নত করছে এবং সামাজিক পরিবর্তনের ভিত্তি গড়ে তুলছে।
নোয়াগাঁওর ভৌগোলিক অবস্থান ও অবকাঠামোগত সুবিধা এটিকে শিল্প, বাণিজ্য ও পর্যটনের জন্য এক সম্ভাবনাময় কেন্দ্র হিসেবে তৈরি করেছে।
শ্রীমঙ্গল শহর ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নিকটবর্তী, ফলে পণ্য পরিবহন সহজ ও দ্রুত।
চট্টগ্রামের নৌবন্দর, সিলেট ও ঢাকার বিমানবন্দর, মৌলভীবাজার জেলার শেরপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ এর নৌবন্দর, শ্রীমঙ্গলের রেল ও সড়ক যোগাযোগ সহজ, যা নোয়াগাঁওকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য কৌশলগত কেন্দ্রে রূপান্তর করছে।
শ্রীমঙ্গল চা অঞ্চলের পাশে হওয়ায় চা প্রক্রিয়াজাতকরণ, প্যাকেজিং ও বাজারজাতকরণের নতুন সুযোগ। লাউয়াছড়া বন, মাধবকু- জলপ্রপাত, বাইক্কা বিল, জাগছড়া চা-বাগান নিকটবর্তী। স্থানীয় শিক্ষিত তরুণরা ফ্রিল্যান্সিং, ক্ষুদ্র উদ্যোগ ও কৃষি-প্রযুক্তিতে সম্পৃক্ত। ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ সুবিধা ই-কমার্স ও ডিজিটাল ব্যবসার জন্য সহায়ক।
এই সুবিধাগুলো বড় ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা জন্য এক স্বপ্নের বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করছে।
নোয়াগাঁওর উন্নয়ন কেবল অর্থনীতি নয়, সামাজিক ক্ষেত্রেও সুস্পষ্ট- শ্রমজীবী মানুষের আয়ের বৃদ্ধি। শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে যুব সমাজের দক্ষতা উন্নয়ন। পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ। পর্যটনকেন্দ্রিক ব্যবসার প্রসার, যা স্থানীয় অর্থনীতি ও সাংস্কৃতিক জীবনে প্রাণসঞ্চার করছে।
নোয়াগাঁওকে পূর্ণাঙ্গ ইকোনমিক ভিলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। পরিকল্পিত উন্নয়ন, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এটি হতে পারে শ্রীমঙ্গলের শিল্প, পর্যটন ও বাণিজ্যের কেন্দ্র।
নোয়াগাঁও মানেই সম্ভাবনার প্রতীক যেখানে ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক সম্পদ ও আধুনিক শিল্পায়ন একসাথে গড়ে তুলছে সমৃদ্ধ আগামী। বড় উদ্যোক্তা ও শিল্পপতিরা এখানে হোটেল, রিসোর্ট, চা-প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানিমুখী শিল্প গড়ে তুলতে অতি সহজে আকৃষ্ট হতে পারেন।
নোয়াগাঁও গ্রামে হেলদি চয়েজ ফুড এন্ড বেভারেজ প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির শিল্প প্রতিষ্ঠান -সংবাদ
মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, যেখানে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য, চা-বাগান আর পাহাড়ি টিলা মিলে এক অনন্য দৃশ্যের সৃষ্টি করেছে, সেখানে অবস্থিত শ্রীমঙ্গল। শুধু পর্যটক ও চা-প্রেমীদের জন্য নয়, বরং অর্থনীতি ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এটিও এখন এক সম্ভাবনাময় কেন্দ্র। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উপর অবস্থিত শ্রীমঙ্গল কৌশলগতভাবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার।
শ্রীমঙ্গল শুধু একটি উপজেলা নয়, বরং দেশের অন্যতম অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এখানে প্রায় পঞ্চাশটির মতো চা-শিল্প প্রতিষ্ঠান জাতীয় অর্থনীতির চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করছে। পাশাপাশি অসংখ্য হোটেল, রিসোর্ট ও পর্যটনকেন্দ্র দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য এই অঞ্চলকে অনন্য করে তুলেছে।
শ্রীমঙ্গলের গ্রামগুলোও শিল্প, বাণিজ্য ও পর্যটনের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, রাধানগর গ্রামে আন্তর্জাতিক মানের হোটেল ও রিসোর্ট গড়ে উঠেছে, আর সাতগাঁও থেকে মৌলভীবাজারের জগন্নাথপুর পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দুই পাশে বিস্তৃত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর কারণে কর্মসংস্থান ও আঞ্চলিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হচ্ছে।
এই ধারাবাহিকতায় নোয়াগাঁও গ্রাম আজ দ্রুত শিল্পায়নের পথ ধরে এগোচ্ছে এবং এটি শ্রীমঙ্গলের একটি সম্ভাবনাময় ইকোনমিক ভিলেজ হিসেবে পরিচিত হচ্ছে।
শ্রীমঙ্গল শহরের মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নোয়াগাঁও কেবল একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রাম নয়; এটি রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ।
ব্রিটিশ আমলে নোয়াগাঁও রাজনৈতিক চেতনা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সুপরিচিত ছিল। স্বাধীনতা আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন যতীন্দ্রমোহন দত্ত চৌধুরী, যিনি ১৯৪৭ সালের পর প্রথম ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার নির্বাচিত হয়ে গ্রামের অবকাঠামোগত উন্নয়নে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখেন। তাঁর সন্তান ধীরেন্দ্র দত্ত চৌধুরী ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর স্থানীয় মেম্বার হিসেবে নেতৃত্ব দেন। অপর সন্তান বিশিষ্ট সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ রাসেন্দ্র দত্ত চৌধুরী ১৯৮৩ সালে শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে গ্রামের রাস্তা, সেতু ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেন।
পরবর্তী প্রজন্মের নেতারা ধারাবাহিকভাবে অবকাঠামো, রাস্তা, ব্রিজ এবং জনকল্যাণমূলক স্থাপনার উন্নয়নে অবদান রেখেছেন। এই নেতৃত্বের ঐতিহ্যই নোয়াগাঁওকে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাওয়ার ভিত্তি দিয়েছে।
ন্যাজারিন মিশন- স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করছে। হেলদি চয়েজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কোম্পানি-খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে অবদান রাখছে। প্রাণ-আরএফএল মাছের হ্যাচারি- মৎস্যচাষে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। কারিতাস, বাংলাদেশ বনশিল্প কর্পোরেশন, ইস্পানি টি কোম্পানি-এ অঞ্চলের অর্থনীতিকে আরও সক্রিয় রাখছে। এই উদ্যোগগুলো শ্রমজীবী ও দরিদ্র পরিবারগুলোকে নতুন আয়ের সুযোগ দিচ্ছে, জীবনমান উন্নত করছে এবং সামাজিক পরিবর্তনের ভিত্তি গড়ে তুলছে।
নোয়াগাঁওর ভৌগোলিক অবস্থান ও অবকাঠামোগত সুবিধা এটিকে শিল্প, বাণিজ্য ও পর্যটনের জন্য এক সম্ভাবনাময় কেন্দ্র হিসেবে তৈরি করেছে।
শ্রীমঙ্গল শহর ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নিকটবর্তী, ফলে পণ্য পরিবহন সহজ ও দ্রুত।
চট্টগ্রামের নৌবন্দর, সিলেট ও ঢাকার বিমানবন্দর, মৌলভীবাজার জেলার শেরপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ এর নৌবন্দর, শ্রীমঙ্গলের রেল ও সড়ক যোগাযোগ সহজ, যা নোয়াগাঁওকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য কৌশলগত কেন্দ্রে রূপান্তর করছে।
শ্রীমঙ্গল চা অঞ্চলের পাশে হওয়ায় চা প্রক্রিয়াজাতকরণ, প্যাকেজিং ও বাজারজাতকরণের নতুন সুযোগ। লাউয়াছড়া বন, মাধবকু- জলপ্রপাত, বাইক্কা বিল, জাগছড়া চা-বাগান নিকটবর্তী। স্থানীয় শিক্ষিত তরুণরা ফ্রিল্যান্সিং, ক্ষুদ্র উদ্যোগ ও কৃষি-প্রযুক্তিতে সম্পৃক্ত। ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ সুবিধা ই-কমার্স ও ডিজিটাল ব্যবসার জন্য সহায়ক।
এই সুবিধাগুলো বড় ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা জন্য এক স্বপ্নের বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করছে।
নোয়াগাঁওর উন্নয়ন কেবল অর্থনীতি নয়, সামাজিক ক্ষেত্রেও সুস্পষ্ট- শ্রমজীবী মানুষের আয়ের বৃদ্ধি। শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে যুব সমাজের দক্ষতা উন্নয়ন। পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ। পর্যটনকেন্দ্রিক ব্যবসার প্রসার, যা স্থানীয় অর্থনীতি ও সাংস্কৃতিক জীবনে প্রাণসঞ্চার করছে।
নোয়াগাঁওকে পূর্ণাঙ্গ ইকোনমিক ভিলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। পরিকল্পিত উন্নয়ন, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এটি হতে পারে শ্রীমঙ্গলের শিল্প, পর্যটন ও বাণিজ্যের কেন্দ্র।
নোয়াগাঁও মানেই সম্ভাবনার প্রতীক যেখানে ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক সম্পদ ও আধুনিক শিল্পায়ন একসাথে গড়ে তুলছে সমৃদ্ধ আগামী। বড় উদ্যোক্তা ও শিল্পপতিরা এখানে হোটেল, রিসোর্ট, চা-প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানিমুখী শিল্প গড়ে তুলতে অতি সহজে আকৃষ্ট হতে পারেন।