মুন্সীগঞ্জ সদরের মেঘনায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। এতে বাধা দিলে গ্রামবাসীর ওপর হামলা ও গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে নৌডাকাত কিবরিয়া মিয়াজী ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, তারা মেঘনা নদীতীরের ফসলি জমিও কেটে নিচ্ছে।
গ্রামবাসীরা জানান, এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক, পুলিশ প্রশাসন ও যৌথবাহিনীর কাছে দু’দফা স্মারকলিপি দেওয়া হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
ড্রেজার দিয়ে বালু কাটার ফলে মেঘনার সংলগ্ন আধারা ও বাংলাবাজার ইউনিয়নে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় গত শুক্রবার স্থানীয় লোকজন আধারার কালীরচর এলাকায় ট্রলার নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুললে কিবরিয়া বাহিনী তাদের ওপর গুলি চালায়। এতে অন্তত ৬ জন গুলিবিদ্ধ হন, যাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। যুবদল নেতা শান্ত হত্যা মামলাসহ কিবরিয়া মিয়াজীর বিরুদ্ধে মুন্সীগঞ্জ সদর, গজারিয়া ও চাঁদপুর থানায় তিনটি হত্যা মামলাসহ মোট ১১টি মামলা রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি মুজিব সেনা ঐক্য পরিষদ লীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর নামের একটি সংগঠনের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে খুন, নৌপথে ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও অবৈধ বালু ব্যবসা চালিয়ে আসছেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর বিএনপি নেতাদের নগদ টাকার বিনিময়ে শেল্টার নেয়। এরপর একই বছরের ১ নভেম্বর মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ইলিয়াস শান্তকে মেঘনার কালীরচর এলাকায় হত্যা করা হয়। এ হত্যা মামলার প্রধান আসামি করা হয় ডাকাত সর্দার কিবরিয়া মিয়াজীকে।
অবৈধ বালু কাটা, চাঁদাবাজি ও নৌডাকাতিসহ মেঘনার দখল-আধিপত্য নিয়ে গত ৩০ জানুয়ারি সদর উপজেলার চরআব্দুল্লাহপুর ও চাঁদপুরের মোহনপুর সীমান্তের মেঘনায় দুই জলদস্যু কিবরিয়া ও কানা জহির গংয়ের গোলাগুলিতে নিহত হন দুই যুবক রিফাত (২৯) ও রাসেল (৩০)। গুলিবিদ্ধ হন আরও কয়েকজন। এ ধরনের ঘটনা মেঘনায় এখন প্রতিদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মেঘনার শীর্ষ জলদস্যু কিবরিয়া মিয়াজী মেঘনাপাড়ের মানুষের জমিজমি ড্রেজার বসিয়ে কেটে নেওয়ার অভিযোগে গত ১২ আগস্ট ও ২৯ জুলাই জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে দুই দফা স্মারকলিপি দেন ভুক্তভোগীরা।
মুন্সীগঞ্জ সদরের কালীরচর গ্রামবাসীর পক্ষে কাঞ্চন বেপারী জানান, কালীরচর গ্রামের খালেক মিয়াজীর ছেলে কিবরিয়া মিয়াজী বংশগত নৌডাকাত। প্রভাবশালী খালেক মিয়াজীর পর তার পাঁচ ছেলেই বাবার হাত ধরে নৌডাকাত হয়েছে। বর্তমানে কিবরিয়া মিয়াজী ও মিস্টার মিয়াজী এই দুই ভাই জীবিত। বাকি তিনভাইয়ের মধ্যে উজ্জ্বল মিয়াজীকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকায় জনতা কুপিয়ে হত্যা করে। সোহেল মিয়াজীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধরে নিয়ে যায়, যার হদিস গত ১০ বছরেরও বেশি সময়েও মেলেনি। আর সাইফুদ্দিন ডাকাত ক্যান্সারে মারা গেছে।
মেঘনা নদীঘেঁষা কালীরচর এলাকার মানুষের ফসলি জমি ড্রেজার দিয়ে কেটে নেওয়া হচ্ছে। কিবরিয়া মিয়াজীসহ মেঘনার অন্য শীর্ষ ডাকাতদের গ্রেপ্তার করলে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো প্রতিকার পেতেন।
এলাকাবাসীর দাবি, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ ও নেতাদের মাসোহারা দিয়ে মেঘনায় বালু লুট, চাঁদাবাজিসহ ডাকাতি চালাচ্ছে কিবরিয়া বাহিনী।
গত শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে মুন্সীগঞ্জ সদরের কালীরচর গ্রামসংলগ্ন মেঘনা নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনে বাঁধা দেওয়ায় নৌডাকাত গোলাম কিবরিয়া মিয়াজীর লোকজনের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষ হয়। ডাকাতবাহিনীর গুলিতে ৬ জন আহত হন।
আহতরা হলেন, আরিফ বেপারী (৩০), নুরে আলম (২৮), সাকিল (২৭) ও জামাল ঢালী (৪৬)। সবাইকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহত জামাল ঢালী বলেন, বিকেল ৫টার দিকে ড্রেজারের মাধ্যমে কালীরচর গ্রামঘেঁষে মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলন করছিল। এতে গ্রামের লোকজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাঁধা দিতে এগিয়ে যায়। এ সময় নৌডাকাত কিবরিয়া বাহিনীর সদস্যরা আমাদের ওপর হামলা চালায়।সদর উপজেলার মেঘনা তীরের চরআব্দুল্লাহ নৌফাঁড়ির ইনচার্জ মাহবুব আলম বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক নৌফাঁড়ি পুলিশের টিম ঘটনাস্থলে যায়। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাইফুল আলম বলেন, কিবরিয়া মিয়াজীর বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট আছে।
তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) মো. ফিরোজ কবির বলেন, অপরাধীর কোনো দল নেই। আমাদের কাছে তাদের পরিচয় সন্ত্রাসী। তাদের গ্রেপ্তারে আমরা জিরো টলারেন্স। নৌ পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, নদীতে সংঘটিত ঘটনাগুলোর মামলা নৌ পুলিশ তদন্ত করে থাকে। মেঘনা নদীর নিরাপত্তায় নৌ পুলিশ কাজ করছে। সীমানার বাইরে কাউকে মাটি বা বালু কাটতে দেওয়া হয় না।
মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
মুন্সীগঞ্জ সদরের মেঘনায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। এতে বাধা দিলে গ্রামবাসীর ওপর হামলা ও গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে নৌডাকাত কিবরিয়া মিয়াজী ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, তারা মেঘনা নদীতীরের ফসলি জমিও কেটে নিচ্ছে।
গ্রামবাসীরা জানান, এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক, পুলিশ প্রশাসন ও যৌথবাহিনীর কাছে দু’দফা স্মারকলিপি দেওয়া হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
ড্রেজার দিয়ে বালু কাটার ফলে মেঘনার সংলগ্ন আধারা ও বাংলাবাজার ইউনিয়নে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় গত শুক্রবার স্থানীয় লোকজন আধারার কালীরচর এলাকায় ট্রলার নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুললে কিবরিয়া বাহিনী তাদের ওপর গুলি চালায়। এতে অন্তত ৬ জন গুলিবিদ্ধ হন, যাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। যুবদল নেতা শান্ত হত্যা মামলাসহ কিবরিয়া মিয়াজীর বিরুদ্ধে মুন্সীগঞ্জ সদর, গজারিয়া ও চাঁদপুর থানায় তিনটি হত্যা মামলাসহ মোট ১১টি মামলা রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি মুজিব সেনা ঐক্য পরিষদ লীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর নামের একটি সংগঠনের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে খুন, নৌপথে ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও অবৈধ বালু ব্যবসা চালিয়ে আসছেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর বিএনপি নেতাদের নগদ টাকার বিনিময়ে শেল্টার নেয়। এরপর একই বছরের ১ নভেম্বর মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ইলিয়াস শান্তকে মেঘনার কালীরচর এলাকায় হত্যা করা হয়। এ হত্যা মামলার প্রধান আসামি করা হয় ডাকাত সর্দার কিবরিয়া মিয়াজীকে।
অবৈধ বালু কাটা, চাঁদাবাজি ও নৌডাকাতিসহ মেঘনার দখল-আধিপত্য নিয়ে গত ৩০ জানুয়ারি সদর উপজেলার চরআব্দুল্লাহপুর ও চাঁদপুরের মোহনপুর সীমান্তের মেঘনায় দুই জলদস্যু কিবরিয়া ও কানা জহির গংয়ের গোলাগুলিতে নিহত হন দুই যুবক রিফাত (২৯) ও রাসেল (৩০)। গুলিবিদ্ধ হন আরও কয়েকজন। এ ধরনের ঘটনা মেঘনায় এখন প্রতিদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মেঘনার শীর্ষ জলদস্যু কিবরিয়া মিয়াজী মেঘনাপাড়ের মানুষের জমিজমি ড্রেজার বসিয়ে কেটে নেওয়ার অভিযোগে গত ১২ আগস্ট ও ২৯ জুলাই জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে দুই দফা স্মারকলিপি দেন ভুক্তভোগীরা।
মুন্সীগঞ্জ সদরের কালীরচর গ্রামবাসীর পক্ষে কাঞ্চন বেপারী জানান, কালীরচর গ্রামের খালেক মিয়াজীর ছেলে কিবরিয়া মিয়াজী বংশগত নৌডাকাত। প্রভাবশালী খালেক মিয়াজীর পর তার পাঁচ ছেলেই বাবার হাত ধরে নৌডাকাত হয়েছে। বর্তমানে কিবরিয়া মিয়াজী ও মিস্টার মিয়াজী এই দুই ভাই জীবিত। বাকি তিনভাইয়ের মধ্যে উজ্জ্বল মিয়াজীকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকায় জনতা কুপিয়ে হত্যা করে। সোহেল মিয়াজীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধরে নিয়ে যায়, যার হদিস গত ১০ বছরেরও বেশি সময়েও মেলেনি। আর সাইফুদ্দিন ডাকাত ক্যান্সারে মারা গেছে।
মেঘনা নদীঘেঁষা কালীরচর এলাকার মানুষের ফসলি জমি ড্রেজার দিয়ে কেটে নেওয়া হচ্ছে। কিবরিয়া মিয়াজীসহ মেঘনার অন্য শীর্ষ ডাকাতদের গ্রেপ্তার করলে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো প্রতিকার পেতেন।
এলাকাবাসীর দাবি, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ ও নেতাদের মাসোহারা দিয়ে মেঘনায় বালু লুট, চাঁদাবাজিসহ ডাকাতি চালাচ্ছে কিবরিয়া বাহিনী।
গত শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে মুন্সীগঞ্জ সদরের কালীরচর গ্রামসংলগ্ন মেঘনা নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনে বাঁধা দেওয়ায় নৌডাকাত গোলাম কিবরিয়া মিয়াজীর লোকজনের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষ হয়। ডাকাতবাহিনীর গুলিতে ৬ জন আহত হন।
আহতরা হলেন, আরিফ বেপারী (৩০), নুরে আলম (২৮), সাকিল (২৭) ও জামাল ঢালী (৪৬)। সবাইকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহত জামাল ঢালী বলেন, বিকেল ৫টার দিকে ড্রেজারের মাধ্যমে কালীরচর গ্রামঘেঁষে মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলন করছিল। এতে গ্রামের লোকজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাঁধা দিতে এগিয়ে যায়। এ সময় নৌডাকাত কিবরিয়া বাহিনীর সদস্যরা আমাদের ওপর হামলা চালায়।সদর উপজেলার মেঘনা তীরের চরআব্দুল্লাহ নৌফাঁড়ির ইনচার্জ মাহবুব আলম বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক নৌফাঁড়ি পুলিশের টিম ঘটনাস্থলে যায়। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাইফুল আলম বলেন, কিবরিয়া মিয়াজীর বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট আছে।
তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) মো. ফিরোজ কবির বলেন, অপরাধীর কোনো দল নেই। আমাদের কাছে তাদের পরিচয় সন্ত্রাসী। তাদের গ্রেপ্তারে আমরা জিরো টলারেন্স। নৌ পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, নদীতে সংঘটিত ঘটনাগুলোর মামলা নৌ পুলিশ তদন্ত করে থাকে। মেঘনা নদীর নিরাপত্তায় নৌ পুলিশ কাজ করছে। সীমানার বাইরে কাউকে মাটি বা বালু কাটতে দেওয়া হয় না।