alt

বেতাগীতে আমন রোপণে শ্রমিক সংকট

প্রতিনিধি, বেতাগী (বরগুনা) : বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বেতাগী (বরগুনা) : আমনের চারা রোপণ করছেন শ্রমিকরা -সংবাদ

স্বপন মোল্লা (৫৩) এবার আমন চাষ করছেন ৩ একর জমিতে। প্রবল বর্ষণে তাঁর আমনের বীজতলা বৃষ্টিতে তলিয়ে গিয়েছিল। নতুন করে আবার বীজতলা তৈরি করেছেন। চারাগুলোও বড় হয়েছে। কিন্তু চারা রোপণ নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। কারণ, শ্রমিক-সংকট। ফলে নিজেই ধানের চারা রোপণে নেমে পড়েছেন। স্বপন মোল্লার বাড়ি বরগুনার বেতাগী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ঢালীকান্দা গ্রামে। স্বপন মোল্লা বলেন, ‘আমন রোপণের মৌসুম পার হয়ে যাচ্ছে। এ বছর মজুরি গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি। মজুরও পাওয়া যাচ্ছে না। সারা বছর এই একটা ফসলের ওপর ভরসা করতে হয়। শ্রমিক যথা সময় বেশি টাকা দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না। বেতাগী পৌরসভাসহ ৭ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, কোনো কোনো জায়গায় ধান রোপণ চলছে। তবে চাহিদামতো শ্রমিক না পাওয়ায় কাজ চলছে ধীর গতিতে। আবার অনেক এলাকায় এখনো ধান রোপণ শুরু হয়নি। বেতাগী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানজিলা আহমেদ বলেন, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলায় আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে ১০ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমি। শ্রমিক-সংকটে রোপণ কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে।

উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের জলিসা গ্রামের কৃষক লিয়াকত আলী (৭২) বলেন, শ্রাবণের মাঝামাঝি থেকে ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত আমনের চারা রোপণ করা হয়। প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে প্রায় সব জমিতেই ধান লাগানো হয়ে যায়। কিন্তু এ বছর প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে বীজতলা ডুবে থাকায় চারা লাগাতে দেরি হয়েছে। এসময় পাশেই আরেকজন কৃষক ভবরঞ্জন ঢালী (৫৫) বলেন, মৌসুম শেষ হয়ে যাচ্ছে।

সবাই ধান রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এ জন্য শ্রমিকের চাহিদা ও মজুরি বেড়েছে। মোকামিয়া ইউনিয়নের কৃষক রতন হাওলাদার বলেন, বেতাগীর বিভিন্ন এলাকায় এবার লোকজন এসেছেন কম। শ্রমিকের তিন বেলা খাবারের দায়িত্ব থাকে জমির মালিকের। শ্রমিক-সংকটের কারণে মজুরিও অনেক বেশি। একজন শ্রমিককে দৈনিক ৮০০-১০০০ টাকা দিতে হয়। গত বছর একজন শ্রমিককে ৬০০-৮০০ টাকা দিতে হচ্ছে। এবার তা অনেক বেড়ে গেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, চাহিদার তুলনায় শ্রমিকও কম। স্থানীয় শ্রমিকদের মজুরি আরও বেশি।

বেতাগী সদর ইউনিয়নের বাসন্ডা গ্রামের কৃষক বাবুল বিশ্বাস বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে চারা লাগাতে দেরি হয়েছে আমাদের। এখন মজুরি বেশি। আবার সময়ও চলে যাচ্ছে। তাই মানুষ ঋণ করে হলেও দ্রুত ধান লাগানো শেষ করতে চাচ্ছেন। প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন হাটে যাচ্ছি। শ্রমিক নিতে পারছি না। যেসব জমিমালিকের টাকা আছে, তাঁরা বেশি দাম দিয়ে শ্রমিক নিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের মতো ছোট চাষিরা দাম কমার অপেক্ষায় আছেন। বিবিচিনি ইউনিয়নের পুটিয়াখালী গ্রামের কৃষক সুকুমার হাওলাদার (৭৫) বলেন, বীজধান, চাষ, শ্রমিক, সার সব খরচ মিলিয়ে প্রতি বিঘা জমিতে ৬-৭ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। সঠিক সময়ে ধান লাগাতে না পারলে ফলন কমে যায়। তখন তো শ্রমিককের মজুরি টাকা ও আমনধান রোপনের খরচ ওঠানোই দায় হয়ে যাবে।

ছবি

নির্বাচনী আসন ফিরে পেতে ডাকা হরতালে বাগেরহাট সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন

ছবি

ভূমি অফিসে হয়রানির অভিযোগে ক্ষুব্ধ সেবাপ্রত্যাশীরা

ছবি

সৈয়দপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সঞ্চয়ের ৮ লাখ টাকা লোপাটের অভিযোগ

ছবি

জাতীয়ভাবে পালিত হবে লালন তিরোধান দিবস

ছবি

পাটগ্রামে ট্রাকের চাপায় বাইক আরোহীর মৃত্যু

ছবি

সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ না থাকলে কোন সুফল আসবে না - প্রেস কাউন্সিল চেয়ারম্যান

ছবি

ফরিদপুরে রেলপথ অবরোধ, ট্রেন চলাচল বন্ধ

ছবি

ব্যাবসায়ী আলম হত্যার রহস্য উন্মোচন ছেলের হাতেই বাবা খুন

ছবি

পুত্রবধূদের সাথে ঝগড়ার জেরে শাশুড়ির রহস্যজনক মৃত্যু

ছবি

সাদ্রি: বাংলাদেশের চা-বাগানের অদৃশ্য সেতুবন্ধন

ছবি

জয়পুরহাটে মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষাবৃত্তির চেক বিতরণ

ছবি

চাটখিল পোস্ট অফিস কর্মচারীদের অবহেলায় দুর্ভোগে এলাকাবাসী

ছবি

কলাপাড়ায় কন্যা শিশুদের গাছের চারা বিতরণ

ছবি

দৌলতপুরে মাকে গলা কেটে হত্যা, ছেলে পলাতক

ছবি

মহেশপুর সীমান্তে ১৩ বাংলাদেশি আটক

ছবি

পলাশের জজ মিয়া নিজেই নির্মান করে দিলেন অবহেলিত গ্রামের রাস্তাটি

ছবি

গৌরনদীতে বিনামূল্যে পিপিআর রোগের টিকা

ছবি

ফসলের খেতে ইঁদুরের হানা, দুশ্চিন্তায় কৃষক

ছবি

চান্দিনায় অতিরিক্ত ওজনের ড্রাম্প ট্রাকে ভাঙছে আঞ্চলিক সড়ক-ব্রিজ-কালভার্ট

ছবি

দোয়ারাবাজারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নারীর মৃত্যু ও যুবকের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

‘প্রতি ৪ জনে ১ জন উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত’

ছবি

বেতাগিতে জামায়াত নেতার বাড়িতে তালা ভেঙে চুরি

ছবি

নরসিংদীতে তুচ্ছ ঘটনায় দুই সহোদরকে কুপিয়ে হত্যা

ছবি

নরসিংদীতে নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ক কর্মশালা

ছবি

গাইবান্ধার চরাঞ্চলে ওয়ানস্টপ নাগরিক সেবা কেন্দ্রের উদ্বোধন

ছবি

দৌলতপুরে চাঁদা না দেয়ায় ভাড়াটে খুনি দিয়ে হত্যা

ছবি

চকরিয়ায় ৩১ বছর পর তিনবছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার

ছবি

হালদা নদী থেকে কারেন্ট জাল জব্দ

ছবি

পাত্রখলার এক সমাধিক্ষেত্রই মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টানদের শেষ আশ্রয়

ছবি

মির্জাগঞ্জে বিষ প্রয়োগে লক্ষাধিক টাকার মাছ নিধন

ছবি

গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ পোশাক শ্রমিকদের

ছবি

বোয়ালখালী রেলওেয়ের উচ্ছেদ অভিযান

ছবি

ভেড়ামারায় পদ্মার ভাঙনে বিলীন ফসলি জমি ও শ্মশানঘাট

ছবি

দ্বিতীয় বিয়ের প্রতিবাদ করায় পিতার ছুরিকাঘাতে ছেলে খুন

ছবি

শিবগঞ্জে বিনামূল্যে মাসকলাই বীজ-রাসায়নিক সার বিতরণ

ছবি

সাপাহার জবই বিলে পরিবেশ সংরক্ষণ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার লক্ষ্যে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

tab

news » bangladesh

বেতাগীতে আমন রোপণে শ্রমিক সংকট

প্রতিনিধি, বেতাগী (বরগুনা)

বেতাগী (বরগুনা) : আমনের চারা রোপণ করছেন শ্রমিকরা -সংবাদ

বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

স্বপন মোল্লা (৫৩) এবার আমন চাষ করছেন ৩ একর জমিতে। প্রবল বর্ষণে তাঁর আমনের বীজতলা বৃষ্টিতে তলিয়ে গিয়েছিল। নতুন করে আবার বীজতলা তৈরি করেছেন। চারাগুলোও বড় হয়েছে। কিন্তু চারা রোপণ নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। কারণ, শ্রমিক-সংকট। ফলে নিজেই ধানের চারা রোপণে নেমে পড়েছেন। স্বপন মোল্লার বাড়ি বরগুনার বেতাগী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ঢালীকান্দা গ্রামে। স্বপন মোল্লা বলেন, ‘আমন রোপণের মৌসুম পার হয়ে যাচ্ছে। এ বছর মজুরি গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি। মজুরও পাওয়া যাচ্ছে না। সারা বছর এই একটা ফসলের ওপর ভরসা করতে হয়। শ্রমিক যথা সময় বেশি টাকা দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না। বেতাগী পৌরসভাসহ ৭ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, কোনো কোনো জায়গায় ধান রোপণ চলছে। তবে চাহিদামতো শ্রমিক না পাওয়ায় কাজ চলছে ধীর গতিতে। আবার অনেক এলাকায় এখনো ধান রোপণ শুরু হয়নি। বেতাগী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানজিলা আহমেদ বলেন, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলায় আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে ১০ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমি। শ্রমিক-সংকটে রোপণ কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে।

উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের জলিসা গ্রামের কৃষক লিয়াকত আলী (৭২) বলেন, শ্রাবণের মাঝামাঝি থেকে ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত আমনের চারা রোপণ করা হয়। প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে প্রায় সব জমিতেই ধান লাগানো হয়ে যায়। কিন্তু এ বছর প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে বীজতলা ডুবে থাকায় চারা লাগাতে দেরি হয়েছে। এসময় পাশেই আরেকজন কৃষক ভবরঞ্জন ঢালী (৫৫) বলেন, মৌসুম শেষ হয়ে যাচ্ছে।

সবাই ধান রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এ জন্য শ্রমিকের চাহিদা ও মজুরি বেড়েছে। মোকামিয়া ইউনিয়নের কৃষক রতন হাওলাদার বলেন, বেতাগীর বিভিন্ন এলাকায় এবার লোকজন এসেছেন কম। শ্রমিকের তিন বেলা খাবারের দায়িত্ব থাকে জমির মালিকের। শ্রমিক-সংকটের কারণে মজুরিও অনেক বেশি। একজন শ্রমিককে দৈনিক ৮০০-১০০০ টাকা দিতে হয়। গত বছর একজন শ্রমিককে ৬০০-৮০০ টাকা দিতে হচ্ছে। এবার তা অনেক বেড়ে গেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, চাহিদার তুলনায় শ্রমিকও কম। স্থানীয় শ্রমিকদের মজুরি আরও বেশি।

বেতাগী সদর ইউনিয়নের বাসন্ডা গ্রামের কৃষক বাবুল বিশ্বাস বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে চারা লাগাতে দেরি হয়েছে আমাদের। এখন মজুরি বেশি। আবার সময়ও চলে যাচ্ছে। তাই মানুষ ঋণ করে হলেও দ্রুত ধান লাগানো শেষ করতে চাচ্ছেন। প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন হাটে যাচ্ছি। শ্রমিক নিতে পারছি না। যেসব জমিমালিকের টাকা আছে, তাঁরা বেশি দাম দিয়ে শ্রমিক নিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের মতো ছোট চাষিরা দাম কমার অপেক্ষায় আছেন। বিবিচিনি ইউনিয়নের পুটিয়াখালী গ্রামের কৃষক সুকুমার হাওলাদার (৭৫) বলেন, বীজধান, চাষ, শ্রমিক, সার সব খরচ মিলিয়ে প্রতি বিঘা জমিতে ৬-৭ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। সঠিক সময়ে ধান লাগাতে না পারলে ফলন কমে যায়। তখন তো শ্রমিককের মজুরি টাকা ও আমনধান রোপনের খরচ ওঠানোই দায় হয়ে যাবে।

back to top