শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) : হিন্দুদের শ্মশান, মুসলিমদের কবরস্থান এবং খ্রিস্টানদের সমাধিস্থল সবই পাশাপাশি -সংবাদ
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখলা চা বাগানকে অনেকে চেনেন শুধু চা উৎপাদনের জন্য। কিন্তু এই বাগান বুকে লুকিয়ে রেখেছে মানবিকতার এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত যেখানে মৃত্যুর পরও মিলিত হয় তিন ধর্মের মানুষ। হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্মশান, মুসলিমদের কবরস্থান এবং খ্রিস্টানদের সমাধিস্থল সবই পাশাপাশি, একসাথে।
১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বাগানে বর্তমানে প্রায় ১৮ হাজার মানুষ বসবাস করেন। তখনকার বাগানের মুরব্বিরা ভাবলেন, জীবনে যেমন একসাথে, মৃত্যুতেও যেন থেকে যায় সেই ঐক্যের বার্তা। তাই প্রায় পাঁচ একর জমি বরাদ্দ করা হয় তিন সম্প্রদায়ের শেষকৃত্যের জন্য। এরপর থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে এখানে চলছে দাফন, দাহ ও সমাহিতির প্রক্রিয়া কোনো বিরোধ ছাড়াই, সম্পূর্ণ সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে। স্থানীয়দের কথায় প্রতিফলিত হয় এই সম্প্রীতির চিত্র।
পাত্রখলা সার্বজনীন মন্দিরের পুরোহিত রাজেশ প্রসাদ শর্মা বলেন, আমরা জীবনে যেমন পাশাপাশি আছি, মৃত্যুর পরও একসাথে থাকব বলে বিশ্বাস করি।
পাত্রখলা জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল আজিজের মন্তব্য প্রতিটি ধর্মের মানুষ এখানে তাদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী দাফন বা সৎকার সম্পন্ন করে। আমরা পারস্পরিক শ্রদ্ধায় একত্রিত থাকি।
অন্যদিকে পাত্রখলা চা বাগান গির্জার সদস্য উজ্জল বিশ্বাস বলেন, এখানে দাফন, দাহ ও সমাহিতি মানুষের মানবিকতার শিক্ষা বহন করছে। শুধু শেষকৃত্যই নয়, ঈদ, দুর্গাপূজা কিংবা বড়দিন সব উৎসবও উদযাপিত হয় একই সৌহার্দ্যের আবহে। এ যেন এক আঙিনায় বহমান সম্প্রীতির উৎসব।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর এ প্রসঙ্গে বলেন, পাত্রখলার এই সমাধিস্থল তিন ধর্মের মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের উজ্জ্বল উদাহরণ। উপজেলা প্রশাসন এর উন্নয়নে সহযোগিতা করবে।
পাত্রখলার এই বিশেষ সমাধিস্থল প্রমাণ করে ধর্ম আলাদা হতে পারে, কিন্তু মানবিকতা, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা থাকলে বিভেদ গড়ে ওঠে না। এটি শুধু স্থানীয়দের জন্য নয়, সারাদেশের জন্যই এক অনুকরণীয় উদাহরণ।
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) : হিন্দুদের শ্মশান, মুসলিমদের কবরস্থান এবং খ্রিস্টানদের সমাধিস্থল সবই পাশাপাশি -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখলা চা বাগানকে অনেকে চেনেন শুধু চা উৎপাদনের জন্য। কিন্তু এই বাগান বুকে লুকিয়ে রেখেছে মানবিকতার এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত যেখানে মৃত্যুর পরও মিলিত হয় তিন ধর্মের মানুষ। হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্মশান, মুসলিমদের কবরস্থান এবং খ্রিস্টানদের সমাধিস্থল সবই পাশাপাশি, একসাথে।
১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বাগানে বর্তমানে প্রায় ১৮ হাজার মানুষ বসবাস করেন। তখনকার বাগানের মুরব্বিরা ভাবলেন, জীবনে যেমন একসাথে, মৃত্যুতেও যেন থেকে যায় সেই ঐক্যের বার্তা। তাই প্রায় পাঁচ একর জমি বরাদ্দ করা হয় তিন সম্প্রদায়ের শেষকৃত্যের জন্য। এরপর থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে এখানে চলছে দাফন, দাহ ও সমাহিতির প্রক্রিয়া কোনো বিরোধ ছাড়াই, সম্পূর্ণ সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে। স্থানীয়দের কথায় প্রতিফলিত হয় এই সম্প্রীতির চিত্র।
পাত্রখলা সার্বজনীন মন্দিরের পুরোহিত রাজেশ প্রসাদ শর্মা বলেন, আমরা জীবনে যেমন পাশাপাশি আছি, মৃত্যুর পরও একসাথে থাকব বলে বিশ্বাস করি।
পাত্রখলা জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল আজিজের মন্তব্য প্রতিটি ধর্মের মানুষ এখানে তাদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী দাফন বা সৎকার সম্পন্ন করে। আমরা পারস্পরিক শ্রদ্ধায় একত্রিত থাকি।
অন্যদিকে পাত্রখলা চা বাগান গির্জার সদস্য উজ্জল বিশ্বাস বলেন, এখানে দাফন, দাহ ও সমাহিতি মানুষের মানবিকতার শিক্ষা বহন করছে। শুধু শেষকৃত্যই নয়, ঈদ, দুর্গাপূজা কিংবা বড়দিন সব উৎসবও উদযাপিত হয় একই সৌহার্দ্যের আবহে। এ যেন এক আঙিনায় বহমান সম্প্রীতির উৎসব।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর এ প্রসঙ্গে বলেন, পাত্রখলার এই সমাধিস্থল তিন ধর্মের মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের উজ্জ্বল উদাহরণ। উপজেলা প্রশাসন এর উন্নয়নে সহযোগিতা করবে।
পাত্রখলার এই বিশেষ সমাধিস্থল প্রমাণ করে ধর্ম আলাদা হতে পারে, কিন্তু মানবিকতা, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা থাকলে বিভেদ গড়ে ওঠে না। এটি শুধু স্থানীয়দের জন্য নয়, সারাদেশের জন্যই এক অনুকরণীয় উদাহরণ।