ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
দুই বছর মেয়াদে প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়ার সরকারি প্রকল্প (ভিজিডি) বর্তমানে যা ভিডাব্লিউবি নামে পরিচালিত। এর সুবিধাভোগীদের সঞ্চয়ের ৮ লাখ টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আ’লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে।
গত ২০২৩-২০২৪ সালে সুবিধা পাওয়া ৫২৫ জন দরিদ্র নারীর কার্ডের (বই) মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় কার্ড জব্দ করে ইউপি সচিব। যার সঞ্চয়ের টাকা চেয়ারম্যান নিজ জিম্মায় নিলেও ফেরত দেয়নি টাকা। গত ৯ মাস ধরে ইউনিয়ন পরিষদে বারবার ধর্ণা দিলেও চেয়ারম্যান না থাকায় এ নিয়ে মেম্বাররা ও সচিবও কোন সুরাহা দিতে পারছেন না। ফলে মেয়াদ শেষ হওয়ায় চাল পাওয়াও বন্ধ হয়েছে। সেই সাথে সঞ্চয়কৃত টাকা ফেরত না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে ৫ শতাধিক পরিবার।
জানা যায়, ওই ইউনিয়নের প্রায় ৫২৫ জন হতদরিদ্র নারী সরকারি সহায়তা হিসেবে ভিজিডি সুবিধা পায়। তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রতি মাস ২শ’ থেকে ২৫০ টাকা সঞ্চয় বাবদ আদায় করা হয়। এভাবে কারো ১ হাজার ৬ শ’, কারো ১ হাজার ৮ শ’ টাকা করে জমা হয়েছে। সঞ্চয়ের এই টাকা প্রত্যেকের নামে মোবাইল ব্যাংক একাউন্ট খুলে সেখানে জমা করার কথা। কিন্তু তা না করে চেয়ারম্যান নিজের পকেটে রেখেছেন। এমনকি ইউনিয়ন পরিষদের একাউন্টেও জমা রাখা হয়নি। বরং কৌশলে প্রায় ৮ লাখ টাকা লোপাট করেছেন চেয়ারম্যান। গত ফেব্রুয়ারী মাসে ২ বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় কার্ডগুলো (বই) সবার কাছ থেকে তুলে নিলেও সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দেয়নি চেয়ারম্যান। আর মাঝে চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করেন প্যানেল চেয়ারম্যান। তার কাছেও প্রায় ২ লাখ আছে।
ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের তালেবের স্ত্রী আয়শা, জুবায়দুলের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা ও আলমের স্ত্রী শিউলি বলেন, আমরা হতদরিদ্র বলেই তো সরকারী সুবিধা নিতে ভিজিডির কার্ড করেছি। প্রতিমাসে সঞ্চয়ের জন্য চেয়ারম্যান ২২০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয় নিয়েছে। কিন্তু নিয়মিত তা কার্ডে লেখে নাই। আর এখন কার্ডের মেয়াদ শেষে চাল পাওয়াও বন্ধ হয়েছে এবং সঞ্চয়ের টাকাও ফেরত পাচ্ছিনা। দীর্ঘ ৮ মাস ধরে পরিষদে বার বার ধর্না দিয়েও কোন সুরাহা পাচ্ছিনা। কারণ চেয়ারম্যানের দেখা পাওয়া যায়নি। আর সচিব সেই দোহাই দিয়ে বিষয়টি ঝুলিয়ে রেখেছেন।
এ ব্যাপারে প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল মুয়ীদ আলাল বলেন, আমার কাছে মাত্র এক মাসের সঞ্চয়ের টাকা রক্ষিত আছে। সেই টাকা আমি ফেরত দেয়ার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু সুবিধাভোগীদের কার্ডগুলো চেয়ারম্যান নিজের কাছে রাখার কারণে কার কত সঞ্চয় আমার কাছে আছে তা নিরুপন করতে পারছিনা বলেই দেয়া সম্ভব হয়নি।
সৈয়দপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নুরুন্নাহার শাহজাদী বলেন, কার্ডধারীদের মূলতঃ মোবাইল ব্যাকিংয়ে একাউন্ট খুলে সেখানে সঞ্চয় করার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা একাউন্ট খোলেনি আর এই সুযোগে যদি চেয়ারম্যান তাদের সঞ্চয়ের টাকা হাতে হাতে নিয়ে থাকে তাহলে তার দায় চেয়ারম্যানেরই। তবে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা আইনগতভাবে যথাযথ ব্যবস্থা নেবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর-ই-আলম সিদ্দিকী জানান, সঞ্চয়ের টাকা কোনভাবেই চেয়ারম্যান বা মেম্বার অথবা ইউপি সচিব নিজের কাছে রাখতে পারেন না। হয় প্রত্যেক কার্ডধারীর নিজস্ব ব্যাংক একাউন্টে জমা করতে হবে নয়তো। তবে অভিযোগ পাওয়া গেলে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
দুই বছর মেয়াদে প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়ার সরকারি প্রকল্প (ভিজিডি) বর্তমানে যা ভিডাব্লিউবি নামে পরিচালিত। এর সুবিধাভোগীদের সঞ্চয়ের ৮ লাখ টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আ’লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে।
গত ২০২৩-২০২৪ সালে সুবিধা পাওয়া ৫২৫ জন দরিদ্র নারীর কার্ডের (বই) মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় কার্ড জব্দ করে ইউপি সচিব। যার সঞ্চয়ের টাকা চেয়ারম্যান নিজ জিম্মায় নিলেও ফেরত দেয়নি টাকা। গত ৯ মাস ধরে ইউনিয়ন পরিষদে বারবার ধর্ণা দিলেও চেয়ারম্যান না থাকায় এ নিয়ে মেম্বাররা ও সচিবও কোন সুরাহা দিতে পারছেন না। ফলে মেয়াদ শেষ হওয়ায় চাল পাওয়াও বন্ধ হয়েছে। সেই সাথে সঞ্চয়কৃত টাকা ফেরত না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে ৫ শতাধিক পরিবার।
জানা যায়, ওই ইউনিয়নের প্রায় ৫২৫ জন হতদরিদ্র নারী সরকারি সহায়তা হিসেবে ভিজিডি সুবিধা পায়। তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রতি মাস ২শ’ থেকে ২৫০ টাকা সঞ্চয় বাবদ আদায় করা হয়। এভাবে কারো ১ হাজার ৬ শ’, কারো ১ হাজার ৮ শ’ টাকা করে জমা হয়েছে। সঞ্চয়ের এই টাকা প্রত্যেকের নামে মোবাইল ব্যাংক একাউন্ট খুলে সেখানে জমা করার কথা। কিন্তু তা না করে চেয়ারম্যান নিজের পকেটে রেখেছেন। এমনকি ইউনিয়ন পরিষদের একাউন্টেও জমা রাখা হয়নি। বরং কৌশলে প্রায় ৮ লাখ টাকা লোপাট করেছেন চেয়ারম্যান। গত ফেব্রুয়ারী মাসে ২ বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় কার্ডগুলো (বই) সবার কাছ থেকে তুলে নিলেও সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দেয়নি চেয়ারম্যান। আর মাঝে চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করেন প্যানেল চেয়ারম্যান। তার কাছেও প্রায় ২ লাখ আছে।
ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের তালেবের স্ত্রী আয়শা, জুবায়দুলের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা ও আলমের স্ত্রী শিউলি বলেন, আমরা হতদরিদ্র বলেই তো সরকারী সুবিধা নিতে ভিজিডির কার্ড করেছি। প্রতিমাসে সঞ্চয়ের জন্য চেয়ারম্যান ২২০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয় নিয়েছে। কিন্তু নিয়মিত তা কার্ডে লেখে নাই। আর এখন কার্ডের মেয়াদ শেষে চাল পাওয়াও বন্ধ হয়েছে এবং সঞ্চয়ের টাকাও ফেরত পাচ্ছিনা। দীর্ঘ ৮ মাস ধরে পরিষদে বার বার ধর্না দিয়েও কোন সুরাহা পাচ্ছিনা। কারণ চেয়ারম্যানের দেখা পাওয়া যায়নি। আর সচিব সেই দোহাই দিয়ে বিষয়টি ঝুলিয়ে রেখেছেন।
এ ব্যাপারে প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল মুয়ীদ আলাল বলেন, আমার কাছে মাত্র এক মাসের সঞ্চয়ের টাকা রক্ষিত আছে। সেই টাকা আমি ফেরত দেয়ার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু সুবিধাভোগীদের কার্ডগুলো চেয়ারম্যান নিজের কাছে রাখার কারণে কার কত সঞ্চয় আমার কাছে আছে তা নিরুপন করতে পারছিনা বলেই দেয়া সম্ভব হয়নি।
সৈয়দপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নুরুন্নাহার শাহজাদী বলেন, কার্ডধারীদের মূলতঃ মোবাইল ব্যাকিংয়ে একাউন্ট খুলে সেখানে সঞ্চয় করার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা একাউন্ট খোলেনি আর এই সুযোগে যদি চেয়ারম্যান তাদের সঞ্চয়ের টাকা হাতে হাতে নিয়ে থাকে তাহলে তার দায় চেয়ারম্যানেরই। তবে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা আইনগতভাবে যথাযথ ব্যবস্থা নেবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর-ই-আলম সিদ্দিকী জানান, সঞ্চয়ের টাকা কোনভাবেই চেয়ারম্যান বা মেম্বার অথবা ইউপি সচিব নিজের কাছে রাখতে পারেন না। হয় প্রত্যেক কার্ডধারীর নিজস্ব ব্যাংক একাউন্টে জমা করতে হবে নয়তো। তবে অভিযোগ পাওয়া গেলে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেয়া হবে।