ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো- বিবিএসের প্রতিবেদন অনুসারে দেখা যায়, প্রতি ৫ জন বেকারের একজন স্নাতক ডিগ্রিধারী কিংবা উচ্চমাধ্যমিক সনদধারী। বৃহস্পতিবার,(১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫) শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৪-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
যাদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নেই, তারা সবচেয়ে কম বেকার। তাদের সংখ্যা মাত্র সোয়া ১ শতাংশ
ঢাকা বিভাগে বেকারের সংখ্যা ৬ লাখ ৮৭ হাজার
শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৪-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশে যত বেকার আছে, তাদের মধ্যে সাড়ে ১৩ শতাংশ স্নাতক ডিগ্রিধারী। ৭ দশমিক ১৩ শতাংশ বেকার উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন। ২০২৪ সালের শুরুতে দেশে বেকার মানুষ কম থাকলেও বছর শেষে ধারাবাহিকভাবে এ সংখ্যা বেড়েছে। মূলত জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের প্রভাবে বছরের শেষ সময়ে বেড়েছে বেকারের সংখ্যা।
শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৪ অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি বেকার ঢাকা বিভাগে। এ বিভাগে ৬ লাখ ৮৭ হাজার বেকার আছে। এরপরের দুটি স্থানে আছে যথাক্রমে চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগ।
দেশের বিভাগওয়ারি হিসাবে ঢাকা বিভাগের পর চট্টগ্রাম বিভাগে ৫ লাখ ৮৪ হাজার, রাজশাহীতে ৩ লাখ ৫৭ হাজার, খুলনায় ৩ লাখ ৩১ হাজার, সিলেটে ২ লাখ ১৬ হাজার, রংপুরে ২ লাখ ৬ হাজার, বরিশালে ১ লাখ ৩৯ হাজার এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১ লাখ ৪ হাজার বেকার আছে।
সংজ্ঞাগত দিক থেকে বেকার কারা?
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সংজ্ঞা অনুযায়ী, সপ্তাহে এক ঘণ্টা কাজ করে মজুরি পেলে তাকে বেকার হিসেবে ধরা হবে না। এক মাস ধরে কাজপ্রত্যাশী এবং সর্বশেষ এক সপ্তাহে কেউ যদি এক ঘণ্টা মজুরির বিনিময়ে কাজ করার সুযোগ না পান, তাদের বেকার হিসেবে গণ্য করা হবে। এটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সংজ্ঞা। সেই হিসেবে বাংলাদেশের বেকারসংখ্যা ২৬ লাখ ২৪ হাজার। কিন্তু বাংলাদেশের বাস্তবতায় সপ্তাহে এক ঘণ্টা কাজ করে জীবনধারণ অসম্ভব।
দেশে পছন্দমতো কাজ না পাওয়া এমন ব্যক্তি আছেন প্রায় এক কোটি। তাদের ছদ্ম বেকার হিসেবে ধরা হয়।
স্নাতক ডিগ্রিধারীরাই বেশি বেকার
শিক্ষিতরাই বেশি বেকার। বিবিএসের জরিপ অনুসারে, দেশে যত বেকার আছে, তাদের মধ্যে সাড়ে ১৩ শতাংশ স্নাতক ডিগ্রিধারী। ৭ দশমিক ১৩ শতাংশ বেকার উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন। অর্থাৎ, প্রতি ৫ জন বেকারের ১ জন ব্যক্তি স্নাতক ডিগ্রিধারী কিংবা উচ্চমাধ্যমিক সনদধারী।
যাদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নেই, তারা সবচেয়ে কম বেকার। বেকারের মধ্যে মাত্র সোয়া ১ শতাংশ এমন ব্যক্তি আছেন।
আর ১৫-২৯ বছর বয়সী তরুণদের মধ্যে বেকারসংখ্যা প্রায় ২০ লাখ। দেশে যত বেকার আছে, এরমধ্যে ৭৬ শতাংশের বয়স ১৫-২৯ বছর। এছাড়া এ বয়সী তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি, ৮ শতাংশের বেশি।
বেকার তরুণদের (১৫-২৯ বছর বয়সী) প্রায় ২৯ শতাংশের মতো
স্নাতক ডিগ্রিধারী। এর মানে, স্নাতক ডিগ্রিধারীদের তিনজনে একজনের মতো বেকার।
আত্মীয় ও বন্ধুদের অনুরোধ করেছেন ৩৬% চাকরিপ্রত্যাশী
বিবিএসের জরিপে চাকরি খোঁজার ১০ ধরনের পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে। বিবিএসের জরিপ অনুসারে, চাকরির জন্য আত্মীয় ও বন্ধুদের অনুরোধ করেছেন প্রায় ৩৬ শতাংশ চাকরিপ্রত্যাশী। আর সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে চাকরি খুঁজেছেন প্রায় ২৬ শতাংশ প্রত্যাশী। এছাড়া, প্রায় ১২ শতাংশ চাকরিপ্রত্যাশী সরাসরি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে চাকরি চেয়েছেন।
# তিন ধরনের বেকারত্ব
মোটাদাগে বেকারত্ব তিন ধরনের। যেমন- সামঞ্জস্যহীনতাজনিত বেকারত্ব, বাণিজ্য চক্রজনিত ও কাঠামোগত বেকারত্ব। শ্রমবাজারের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ঘাটতি থাকলে সেটিকে সামঞ্জস্যহীন বেকারত্ব বলে। উত্তরবঙ্গ ও হাওর অঞ্চলে এমন বেকারত্ব দেখা যায়। আবার, শিল্পকারখানা ও সেবা খাতে যে ধরনের লোক প্রয়োজন, সেই ধরনের লোকের সরবরাহ কম থাকলে তা সামঞ্জস্যহীন বেকারত্ব। অর্থনীতিতে চাঙাভাব কিংবা মন্দাভাবের কারণেও অনেক সময় বেকারত্ব বাড়ে-কমে। যেমন- কোভিডের কারণে বেকারের সংখ্যা বেড়েছিল। এটি বাণিজ্য চক্রজনিত বেকারত্ব।
আবার প্রযুক্তির পরিবর্তনের কারণেও বেকারত্ব বাড়ে। এ ধরনের বেকারত্বকে কাঠামোগত বেকারত্ব বলে।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো- বিবিএসের প্রতিবেদন অনুসারে দেখা যায়, প্রতি ৫ জন বেকারের একজন স্নাতক ডিগ্রিধারী কিংবা উচ্চমাধ্যমিক সনদধারী। বৃহস্পতিবার,(১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫) শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৪-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
যাদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নেই, তারা সবচেয়ে কম বেকার। তাদের সংখ্যা মাত্র সোয়া ১ শতাংশ
ঢাকা বিভাগে বেকারের সংখ্যা ৬ লাখ ৮৭ হাজার
শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৪-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশে যত বেকার আছে, তাদের মধ্যে সাড়ে ১৩ শতাংশ স্নাতক ডিগ্রিধারী। ৭ দশমিক ১৩ শতাংশ বেকার উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন। ২০২৪ সালের শুরুতে দেশে বেকার মানুষ কম থাকলেও বছর শেষে ধারাবাহিকভাবে এ সংখ্যা বেড়েছে। মূলত জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের প্রভাবে বছরের শেষ সময়ে বেড়েছে বেকারের সংখ্যা।
শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৪ অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি বেকার ঢাকা বিভাগে। এ বিভাগে ৬ লাখ ৮৭ হাজার বেকার আছে। এরপরের দুটি স্থানে আছে যথাক্রমে চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগ।
দেশের বিভাগওয়ারি হিসাবে ঢাকা বিভাগের পর চট্টগ্রাম বিভাগে ৫ লাখ ৮৪ হাজার, রাজশাহীতে ৩ লাখ ৫৭ হাজার, খুলনায় ৩ লাখ ৩১ হাজার, সিলেটে ২ লাখ ১৬ হাজার, রংপুরে ২ লাখ ৬ হাজার, বরিশালে ১ লাখ ৩৯ হাজার এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১ লাখ ৪ হাজার বেকার আছে।
সংজ্ঞাগত দিক থেকে বেকার কারা?
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সংজ্ঞা অনুযায়ী, সপ্তাহে এক ঘণ্টা কাজ করে মজুরি পেলে তাকে বেকার হিসেবে ধরা হবে না। এক মাস ধরে কাজপ্রত্যাশী এবং সর্বশেষ এক সপ্তাহে কেউ যদি এক ঘণ্টা মজুরির বিনিময়ে কাজ করার সুযোগ না পান, তাদের বেকার হিসেবে গণ্য করা হবে। এটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সংজ্ঞা। সেই হিসেবে বাংলাদেশের বেকারসংখ্যা ২৬ লাখ ২৪ হাজার। কিন্তু বাংলাদেশের বাস্তবতায় সপ্তাহে এক ঘণ্টা কাজ করে জীবনধারণ অসম্ভব।
দেশে পছন্দমতো কাজ না পাওয়া এমন ব্যক্তি আছেন প্রায় এক কোটি। তাদের ছদ্ম বেকার হিসেবে ধরা হয়।
স্নাতক ডিগ্রিধারীরাই বেশি বেকার
শিক্ষিতরাই বেশি বেকার। বিবিএসের জরিপ অনুসারে, দেশে যত বেকার আছে, তাদের মধ্যে সাড়ে ১৩ শতাংশ স্নাতক ডিগ্রিধারী। ৭ দশমিক ১৩ শতাংশ বেকার উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন। অর্থাৎ, প্রতি ৫ জন বেকারের ১ জন ব্যক্তি স্নাতক ডিগ্রিধারী কিংবা উচ্চমাধ্যমিক সনদধারী।
যাদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নেই, তারা সবচেয়ে কম বেকার। বেকারের মধ্যে মাত্র সোয়া ১ শতাংশ এমন ব্যক্তি আছেন।
আর ১৫-২৯ বছর বয়সী তরুণদের মধ্যে বেকারসংখ্যা প্রায় ২০ লাখ। দেশে যত বেকার আছে, এরমধ্যে ৭৬ শতাংশের বয়স ১৫-২৯ বছর। এছাড়া এ বয়সী তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি, ৮ শতাংশের বেশি।
বেকার তরুণদের (১৫-২৯ বছর বয়সী) প্রায় ২৯ শতাংশের মতো
স্নাতক ডিগ্রিধারী। এর মানে, স্নাতক ডিগ্রিধারীদের তিনজনে একজনের মতো বেকার।
আত্মীয় ও বন্ধুদের অনুরোধ করেছেন ৩৬% চাকরিপ্রত্যাশী
বিবিএসের জরিপে চাকরি খোঁজার ১০ ধরনের পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে। বিবিএসের জরিপ অনুসারে, চাকরির জন্য আত্মীয় ও বন্ধুদের অনুরোধ করেছেন প্রায় ৩৬ শতাংশ চাকরিপ্রত্যাশী। আর সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে চাকরি খুঁজেছেন প্রায় ২৬ শতাংশ প্রত্যাশী। এছাড়া, প্রায় ১২ শতাংশ চাকরিপ্রত্যাশী সরাসরি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে চাকরি চেয়েছেন।
# তিন ধরনের বেকারত্ব
মোটাদাগে বেকারত্ব তিন ধরনের। যেমন- সামঞ্জস্যহীনতাজনিত বেকারত্ব, বাণিজ্য চক্রজনিত ও কাঠামোগত বেকারত্ব। শ্রমবাজারের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ঘাটতি থাকলে সেটিকে সামঞ্জস্যহীন বেকারত্ব বলে। উত্তরবঙ্গ ও হাওর অঞ্চলে এমন বেকারত্ব দেখা যায়। আবার, শিল্পকারখানা ও সেবা খাতে যে ধরনের লোক প্রয়োজন, সেই ধরনের লোকের সরবরাহ কম থাকলে তা সামঞ্জস্যহীন বেকারত্ব। অর্থনীতিতে চাঙাভাব কিংবা মন্দাভাবের কারণেও অনেক সময় বেকারত্ব বাড়ে-কমে। যেমন- কোভিডের কারণে বেকারের সংখ্যা বেড়েছিল। এটি বাণিজ্য চক্রজনিত বেকারত্ব।
আবার প্রযুক্তির পরিবর্তনের কারণেও বেকারত্ব বাড়ে। এ ধরনের বেকারত্বকে কাঠামোগত বেকারত্ব বলে।