মীরসরাই: শুধু একটি বেড আর একটি ট্রলি দিয়ে চলছে মা ও শিশু হাসপাতাল -সংবাদ
কাক্সিক্ষত সেবা মিলছে না চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলা ও পৌর সদরে স্থাপিত ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশু হাসপাতালটিতে। নির্মাণের ৫ বছরেও চালু হয়নি সব সুবিধা। নেই সঠিক ব্যবস্থাপনা। ভুক্তভোগী স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা তো দূরে থাক, ন্যূনতম ওষুধও নেই এখানে।
নেই ওষুধ, পরীক্ষাগার থাকলেও নেই যন্ত্রপাতি
প্রতিমাসে ৭০-৮০ জন শিশু জন্ম নিচ্ছে
অ্যানেস্থেসিয়াসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা থাকলে রোগীদের বেশি সেবা দেয়া সহজ হতো: চিকিৎসক
অথচ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন ভবনসহ আবাসিক ব্যবস্থা ও সব সুবিধা পাওয়ার প্রত্যাশায় হাসপাতালটি নির্মাণ হয়।
উপজেলার ৯নং মীরসরাই থেকে শুরু করে ১৬নং সাহেরখালী পর্যন্ত ৮ ইউনিয়ন ও মীরসরাই পৌরসভার অন্তত আড়াই লাখ জনগণের ভরসার কেন্দ্র এই মা ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্র। সরজমিনে হাসপাতালে দেখা যায়, দূর-দূরান্ত হতে অনেক শ্রমজীবী ও প্রান্তিক রোগীরা এখানে আসছে সেবা নিতে। অথচ নেই ওষুধ। পরীক্ষাগার থাকলেও নেই সরঞ্জাম। অপারেশন থিয়েটার আছে, নেই কোনো যন্ত্রপাতি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রসূতি মা প্রিয়াংকা দাশ (৪৪) জানান, স্বামী সুজন জলদাশ সমুদ্র থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। নুন আনতে পানতা ফুরোয় পরিবার বলেই এখানে এসেছি। যে কোনো সময় সন্তান আসতে পারে পৃথিবীতে কিন্তু এখানে নেই কোনো ওষুধ। ডাক্তার ছাড়া সবকিছু বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে দরিদ্র স্বামীকে।
জ¦রে আক্রান্ত রোগী নয়দুয়ারীয়া গ্রামের মেহেরুন্নেছা (২৪) বলেন, আমার স্বামী গার্মেন্টস কর্মী, সামর্থ্য নেই বলে এখানে ভর্তি হয়েছি। কিন্তু সব প্রকার ওষুধ কিনে আনতে হচ্ছে।
হাসপাতালের ল্যাব টেকনোলজিস্ট আশরাফুল আলম বলেন, আমি আছি কোনো যন্ত্রপাতি বা সরঞ্জাম নেই। তবুও দায়িত্বরত ডাক্তার তার নিজের পকেট থেকে ব্লাড গ্রুপিং-এর সরঞ্জাম কিনে দিয়েছেন। তাই রোগীদের প্রয়োজন পড়লে এইটুকু করে দেই।
হাসপাতালের দায়িত্বরত গাইনি চিকিৎসক ডা. নাসরিন সুলতানা জুলি বলেন, বর্তমানে এখানে প্রতিমাসে ৭০-৮০টি শিশু জন্ম নিচ্ছে। গত আগস্ট মাসে ৬১ জন, জুলাই মাসে ৭৮ জন মা এখানে সুস্থ ও সুন্দরভাবে কোনো প্রকার সিজারিয়ান ছাড়া সন্তান জন্ম দিয়েছে। এনেসথেসিয়াসহ ওটি এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিভিন্ন সরঞ্জাম এবং ওষুধ থাকলে রোগীদের আরও বেশি সেবা দেয়া সহজ হতো।
তিনি আরও বলেন, এখানে ২ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও আমি একাই সেবা দিচ্ছি। আবার পরিদর্শিকার ৪টি পদ আছে কিন্তু কার্যত এখন ২ জন। তার মধ্যেও একজন বর্তমানে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে। এতে স্বাস্থ্য সেবা কিছুটা ব্যহত হলেও আমরা চালিয়ে নিচ্ছি।
এই বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হাসান বলেন, এই হাসপাতালটি উপজেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাতৃসেবা কেন্দ্র হলেও দায় স্বীকার করছি যে, গত এক বছর ধরে আমরা রোগীদের কোনো প্রকার ওষুধও দিতে পারছি না। কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিতে পারছি না। তবে জেলায় মিটিং হলে ওষুধ, সরঞ্জাম ও সেবা প্রদানের জনবলসহ সব বিষয় উপস্থাপন করলেও ন্যাশনাল টেকনিক্যাল কমিটি থেকে গত এক বছর ধরে কোনো বরাদ্দ আসছে না বলে আমরা জেনেছি।
ডা. নাজমুল হাসান বলেন, আমরা জেলা পর্যায়ে আরও জোর চেষ্টা করছি সব সংকট নিরসনের।
মীরসরাই: শুধু একটি বেড আর একটি ট্রলি দিয়ে চলছে মা ও শিশু হাসপাতাল -সংবাদ
শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
কাক্সিক্ষত সেবা মিলছে না চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলা ও পৌর সদরে স্থাপিত ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশু হাসপাতালটিতে। নির্মাণের ৫ বছরেও চালু হয়নি সব সুবিধা। নেই সঠিক ব্যবস্থাপনা। ভুক্তভোগী স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা তো দূরে থাক, ন্যূনতম ওষুধও নেই এখানে।
নেই ওষুধ, পরীক্ষাগার থাকলেও নেই যন্ত্রপাতি
প্রতিমাসে ৭০-৮০ জন শিশু জন্ম নিচ্ছে
অ্যানেস্থেসিয়াসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা থাকলে রোগীদের বেশি সেবা দেয়া সহজ হতো: চিকিৎসক
অথচ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন ভবনসহ আবাসিক ব্যবস্থা ও সব সুবিধা পাওয়ার প্রত্যাশায় হাসপাতালটি নির্মাণ হয়।
উপজেলার ৯নং মীরসরাই থেকে শুরু করে ১৬নং সাহেরখালী পর্যন্ত ৮ ইউনিয়ন ও মীরসরাই পৌরসভার অন্তত আড়াই লাখ জনগণের ভরসার কেন্দ্র এই মা ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্র। সরজমিনে হাসপাতালে দেখা যায়, দূর-দূরান্ত হতে অনেক শ্রমজীবী ও প্রান্তিক রোগীরা এখানে আসছে সেবা নিতে। অথচ নেই ওষুধ। পরীক্ষাগার থাকলেও নেই সরঞ্জাম। অপারেশন থিয়েটার আছে, নেই কোনো যন্ত্রপাতি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রসূতি মা প্রিয়াংকা দাশ (৪৪) জানান, স্বামী সুজন জলদাশ সমুদ্র থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। নুন আনতে পানতা ফুরোয় পরিবার বলেই এখানে এসেছি। যে কোনো সময় সন্তান আসতে পারে পৃথিবীতে কিন্তু এখানে নেই কোনো ওষুধ। ডাক্তার ছাড়া সবকিছু বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে দরিদ্র স্বামীকে।
জ¦রে আক্রান্ত রোগী নয়দুয়ারীয়া গ্রামের মেহেরুন্নেছা (২৪) বলেন, আমার স্বামী গার্মেন্টস কর্মী, সামর্থ্য নেই বলে এখানে ভর্তি হয়েছি। কিন্তু সব প্রকার ওষুধ কিনে আনতে হচ্ছে।
হাসপাতালের ল্যাব টেকনোলজিস্ট আশরাফুল আলম বলেন, আমি আছি কোনো যন্ত্রপাতি বা সরঞ্জাম নেই। তবুও দায়িত্বরত ডাক্তার তার নিজের পকেট থেকে ব্লাড গ্রুপিং-এর সরঞ্জাম কিনে দিয়েছেন। তাই রোগীদের প্রয়োজন পড়লে এইটুকু করে দেই।
হাসপাতালের দায়িত্বরত গাইনি চিকিৎসক ডা. নাসরিন সুলতানা জুলি বলেন, বর্তমানে এখানে প্রতিমাসে ৭০-৮০টি শিশু জন্ম নিচ্ছে। গত আগস্ট মাসে ৬১ জন, জুলাই মাসে ৭৮ জন মা এখানে সুস্থ ও সুন্দরভাবে কোনো প্রকার সিজারিয়ান ছাড়া সন্তান জন্ম দিয়েছে। এনেসথেসিয়াসহ ওটি এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিভিন্ন সরঞ্জাম এবং ওষুধ থাকলে রোগীদের আরও বেশি সেবা দেয়া সহজ হতো।
তিনি আরও বলেন, এখানে ২ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও আমি একাই সেবা দিচ্ছি। আবার পরিদর্শিকার ৪টি পদ আছে কিন্তু কার্যত এখন ২ জন। তার মধ্যেও একজন বর্তমানে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে। এতে স্বাস্থ্য সেবা কিছুটা ব্যহত হলেও আমরা চালিয়ে নিচ্ছি।
এই বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হাসান বলেন, এই হাসপাতালটি উপজেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাতৃসেবা কেন্দ্র হলেও দায় স্বীকার করছি যে, গত এক বছর ধরে আমরা রোগীদের কোনো প্রকার ওষুধও দিতে পারছি না। কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিতে পারছি না। তবে জেলায় মিটিং হলে ওষুধ, সরঞ্জাম ও সেবা প্রদানের জনবলসহ সব বিষয় উপস্থাপন করলেও ন্যাশনাল টেকনিক্যাল কমিটি থেকে গত এক বছর ধরে কোনো বরাদ্দ আসছে না বলে আমরা জেনেছি।
ডা. নাজমুল হাসান বলেন, আমরা জেলা পর্যায়ে আরও জোর চেষ্টা করছি সব সংকট নিরসনের।