বাগেরহাট : মাছের ঘেরে পাড়ে চাষ হচ্ছে তরমুজ -সংবাদ
অসময়ে বাগেরহাটের ফকিরহাটে মাছের ঘেরের পাড়ে মাচায় রঙ্গিন তরমুজ চাষ করে অতিরিক্ত লাভবান ঘের মালিকরা। কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে ঘের মালিকরা লাগিয়েছে এ তরমুজ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে সারিসারি গাছে ঝুলছে হলুদ, সবুজ ও কালো বর্ণের তরমুজ। যা দৃষ্টি কেড়েছে কৃষক ও ভোক্তাদের। আর্থিকভাবে লাভজনক হওয়ায় এখন জমি মালিক ও কৃষকরা ঝুঁকছেন তরমুজ চাষে। ফকিরহাট উপজেলা কৃষি বিভাগের নিয়মিত পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানে গড়ে উঠেছে এ অমৌসুমী তরমুজ চাষ।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, ফকিরহাট উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে বর্তমানে ১০ হেক্টর জমিতে ৮০ জন কৃষক মাছের ঘেরে অমৌসুমী তরমুজ চাষ করছেন। কৃষকদের বীজ, সার, প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়েছে কৃষি বিভাগ। মাছের ঘেরের পাড়ের উপর গাছ রোপন ও ঘেরে পানির উপর মাচা হওয়ায় বাড়তি ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে না। আবার ঘেরের আইলের জমি উচু হওয়ায় অতিবৃষ্টি বা জলাবদ্ধতার সময় ফসলের কোন ক্ষতি হচ্ছে না। কৃষি বিভাগ জানায়, প্রচলিত ফসলের পাশাপাশি এই ভিন্নধর্মী উদ্যোগ কৃষকদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলবে। ঝুলন্ত তরমুজ চাষ এখন ফকিরহাটের কৃষিতে এক নতুন সম্ভাবনা।
উপজেলার নলধা-মৌভোগ ইউনিয়নের কৃষক নিতুল কুমার রায় বলেন, আমি প্রথমবার ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ করে ঘেরে তরমুজ চাষ করেছি। ফলন দারুণ হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছি। আশা করছি আরও দেড় লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারব। প্রতি কেজি তরমুজ গড়ে ৪৫/৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া তৃপ্তি নামের হলুদ তরমুজ কেজি প্রতি ৯০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে আরো বেশি দাম। একই এলাকার কৃষক নিরাপদ বৈরাগী জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে তরমুজ চাষ করেছেন। বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় আগামী মৌসুমে আরও বেশি জমিতে চাষের পরিকল্পনা করছেন। ঘেরের উপর চাষ করায় মাছের কথা বিবেচনা করে তরমুজে কোন প্রকার কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে না। তরমুজ চাষ পদ্ধতি নিরাপদ হওয়ায় ক্রেতাদের চাহিদাও বেশি। ফকিরহাট বাজারের ডাকবাংলো মোড়ে তরমুজ কিনতে আসা শিক্ষক মাহবুবুর রহমান বলেন, দুদিন আগে একটি তরমুজ কিনেছিলাম। বেশ মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় আজ আবার কিনতে এসেছি। উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে আশেপাশের জেলায় যাচ্ছে এসব তরমুজ। নলধা-মৌভোগ ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব দাস জানান, অফসিজন তরমুজ একটি লাভজনক ফসল। অনেক কৃষক প্রথমবার চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। বাজারে তরমুজের চাহিদা ও দাম দুটোই ভালো। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ফকিরহাটে তৃপ্তি, ফর্মেলো, বিগ ফ্যামিলি ও ছক্কা- এই চার জাতের তরমুজ চাষ হচ্ছে। এরমধ্যে নলধা-মৌভোগ ও লখপুর ইউনিয়নে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। কৃষকদের আগ্রহ দেখে মনে হচ্ছে আগামীতে আরও বেশি জমিতে তরমুজ চাষ হবে।
বাগেরহাট : মাছের ঘেরে পাড়ে চাষ হচ্ছে তরমুজ -সংবাদ
শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
অসময়ে বাগেরহাটের ফকিরহাটে মাছের ঘেরের পাড়ে মাচায় রঙ্গিন তরমুজ চাষ করে অতিরিক্ত লাভবান ঘের মালিকরা। কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে ঘের মালিকরা লাগিয়েছে এ তরমুজ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে সারিসারি গাছে ঝুলছে হলুদ, সবুজ ও কালো বর্ণের তরমুজ। যা দৃষ্টি কেড়েছে কৃষক ও ভোক্তাদের। আর্থিকভাবে লাভজনক হওয়ায় এখন জমি মালিক ও কৃষকরা ঝুঁকছেন তরমুজ চাষে। ফকিরহাট উপজেলা কৃষি বিভাগের নিয়মিত পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানে গড়ে উঠেছে এ অমৌসুমী তরমুজ চাষ।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, ফকিরহাট উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে বর্তমানে ১০ হেক্টর জমিতে ৮০ জন কৃষক মাছের ঘেরে অমৌসুমী তরমুজ চাষ করছেন। কৃষকদের বীজ, সার, প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়েছে কৃষি বিভাগ। মাছের ঘেরের পাড়ের উপর গাছ রোপন ও ঘেরে পানির উপর মাচা হওয়ায় বাড়তি ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে না। আবার ঘেরের আইলের জমি উচু হওয়ায় অতিবৃষ্টি বা জলাবদ্ধতার সময় ফসলের কোন ক্ষতি হচ্ছে না। কৃষি বিভাগ জানায়, প্রচলিত ফসলের পাশাপাশি এই ভিন্নধর্মী উদ্যোগ কৃষকদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলবে। ঝুলন্ত তরমুজ চাষ এখন ফকিরহাটের কৃষিতে এক নতুন সম্ভাবনা।
উপজেলার নলধা-মৌভোগ ইউনিয়নের কৃষক নিতুল কুমার রায় বলেন, আমি প্রথমবার ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ করে ঘেরে তরমুজ চাষ করেছি। ফলন দারুণ হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছি। আশা করছি আরও দেড় লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারব। প্রতি কেজি তরমুজ গড়ে ৪৫/৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া তৃপ্তি নামের হলুদ তরমুজ কেজি প্রতি ৯০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে আরো বেশি দাম। একই এলাকার কৃষক নিরাপদ বৈরাগী জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে তরমুজ চাষ করেছেন। বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় আগামী মৌসুমে আরও বেশি জমিতে চাষের পরিকল্পনা করছেন। ঘেরের উপর চাষ করায় মাছের কথা বিবেচনা করে তরমুজে কোন প্রকার কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে না। তরমুজ চাষ পদ্ধতি নিরাপদ হওয়ায় ক্রেতাদের চাহিদাও বেশি। ফকিরহাট বাজারের ডাকবাংলো মোড়ে তরমুজ কিনতে আসা শিক্ষক মাহবুবুর রহমান বলেন, দুদিন আগে একটি তরমুজ কিনেছিলাম। বেশ মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় আজ আবার কিনতে এসেছি। উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে আশেপাশের জেলায় যাচ্ছে এসব তরমুজ। নলধা-মৌভোগ ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব দাস জানান, অফসিজন তরমুজ একটি লাভজনক ফসল। অনেক কৃষক প্রথমবার চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। বাজারে তরমুজের চাহিদা ও দাম দুটোই ভালো। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ফকিরহাটে তৃপ্তি, ফর্মেলো, বিগ ফ্যামিলি ও ছক্কা- এই চার জাতের তরমুজ চাষ হচ্ছে। এরমধ্যে নলধা-মৌভোগ ও লখপুর ইউনিয়নে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। কৃষকদের আগ্রহ দেখে মনে হচ্ছে আগামীতে আরও বেশি জমিতে তরমুজ চাষ হবে।