সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) : ঢাকা-চট্টগ্রাম ব্যস্ততম মহাসড়ক -সংবাদ
দেশের লাইফ লাইন খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড অংশে অপরাধ দমনে বসানো সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো বছরের অধিক সময় ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ফলে মহাসড়কে চুরি, ডাকাতি, অপহরণ, সড়ক দুর্ঘটনা, ইভটিজিং, নাশকতা, চাঁদাবাজিসহ সকল প্রকার অপ্রীতিকর কর্মকান্ড বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন ক্যামেরায় (সিসিটিভি) অপরাধিদের সনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে।
হাইওয়ে পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গত ২০২৩ সালে ১৫২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতি, চুরি, সড়ক দুর্ঘটনা, নাশকতা, চাঁদাবাজি, ইভটিজিং ও সকল প্রকার অপ্রীতিকর কর্মকাণ্ড রোধ করতে ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন ক্যামেরা (সিসিটিভি) বসানো হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রাম নগরীর সিটি গেইট থেকে ঢাকার সাইনবোর্ড পর্যন্ত প্রায় ২৬৫ কিলোমিটার সড়কে ৪৯০ স্থানে উন্নত প্রযুক্তির ১ হাজার ৪২৭টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। এই ক্যামেরাগুলো বসানোর পর মহাসড়কের অধিকাংশ এলাকা নজরদারীর আওতায় আসে।
সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ জানান, খুন, ছিনতাই, চুরি কিংবা ডাকাতির মতো ঘটনা ঘটলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রথমেই ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে থাকে। এসব ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অপরাধীদের দ্রুত শনাক্তের চেষ্টা চলে। শুধু অপরাধী শনাক্তই নয়, অপরাধ নিয়ন্ত্রণেও সিসি ক্যামেরার কার্যকারিতা রয়েছে। কিন্তু মহাসড়কের সীতাকুণ্ড অংশে দীর্ঘদিন ধরে অধিকাংশ সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙা বা অচল হয়ে আছে। এতে পুলিশ অপরাধী শনাক্তে সমস্যায় পড়ছে। পুলিশ বলছে, অপরাধীরা অনেক সময় অপরাধ সংঘটনের আগে ক্যামেরা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে, যাতে দ্রুত শনাক্ত না হয়। ফলে পর্যাপ্ত ও কার্যকর সিসি ক্যামেরা না থাকায় অপরাধীরা অপরাধ করার সুযোগ নেয়।
গতকাল শনিবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, সীতাকুণ্ড উপজেলার মুল ফটকে যে ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন ক্যামেরা (সিসিটিভি) বসানো হয়েছে সেটি দীর্ঘদিন ধরে ভেঙ্গে পড়ে আছে। ফলে স্পর্শকাতর ও অপরাধ প্রবন এই উপজেলায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি হ্রাস পাবে বলে মনে করেন সুশীল সমাজ। এছাড়া গত ৩১ জুলাই থেকে ১৮ আগস্ট পর্যন্ত বিশ দিনে সীতাকুণ্ড অংশে পাঁচটি দুর্ঘটনায় দশজন নিহত হয়েছে। গত ৭ মাসে মহাসড়কের এই অংশে অর্ধশতাধিক দুর্ঘটনায় ৪০ জনের প্রাণহানি ও শতাধিক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ। ক্যামেরাগুলো অকেজো হয়ে পড়ার কারনে এই দুর্ঘটনাগুলো কিভাবে হয়েছে, কি কারণে হয়েছে তা সনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সাধারন সম্পাদক জসিম উদ্দিন আজাদ বলেন, ২৪ এর পরাজিত শক্তি মহাসড়কে নাশকতার চেষ্টা করছে। নিষিদ্ধ সংগঠনের কার্যক্রম দেশের লাইফ লাইন খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাতে চালাতে না পারে সে জন্য সিসি ক্যামেরাগুলো সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কিন্তু ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাগুলো নষ্ট হওয়ায় পুলিশের পক্ষে অপরাধ দমন কঠিন হয়ে পড়ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ক্যামেরাগুলো দ্রুত সংষ্কার করার আহবান জানান তিনি।
বারআউলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল মোমিন জানান, সীতাকুণ্ড অংশে লাগানো ২১৭টির মধ্যে অধিকাংশ ক্যামেরা নষ্ট। দুষ্কৃতিকারীরা ক্যামরাগুলো নষ্ট করে ফেলেছে। এগুলো সচল করার জন্য কার্যক্রম চলছে।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুজিবুর রহমান বলেন, কার্যকর সিসি ক্যামেরা না থাকায় অপরাধীদের চিহ্নিত করতে বেগ পেতে হচ্ছে। অনেক সময় প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন সম্ভব হয়না। এ জন্য আগের চেয়ে অপরাধীরা অপরাধ করার সুযোগ বেশি পাচ্ছে।
সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) : ঢাকা-চট্টগ্রাম ব্যস্ততম মহাসড়ক -সংবাদ
রোববার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
দেশের লাইফ লাইন খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড অংশে অপরাধ দমনে বসানো সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো বছরের অধিক সময় ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ফলে মহাসড়কে চুরি, ডাকাতি, অপহরণ, সড়ক দুর্ঘটনা, ইভটিজিং, নাশকতা, চাঁদাবাজিসহ সকল প্রকার অপ্রীতিকর কর্মকান্ড বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন ক্যামেরায় (সিসিটিভি) অপরাধিদের সনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে।
হাইওয়ে পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গত ২০২৩ সালে ১৫২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতি, চুরি, সড়ক দুর্ঘটনা, নাশকতা, চাঁদাবাজি, ইভটিজিং ও সকল প্রকার অপ্রীতিকর কর্মকাণ্ড রোধ করতে ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন ক্যামেরা (সিসিটিভি) বসানো হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রাম নগরীর সিটি গেইট থেকে ঢাকার সাইনবোর্ড পর্যন্ত প্রায় ২৬৫ কিলোমিটার সড়কে ৪৯০ স্থানে উন্নত প্রযুক্তির ১ হাজার ৪২৭টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। এই ক্যামেরাগুলো বসানোর পর মহাসড়কের অধিকাংশ এলাকা নজরদারীর আওতায় আসে।
সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ জানান, খুন, ছিনতাই, চুরি কিংবা ডাকাতির মতো ঘটনা ঘটলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রথমেই ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে থাকে। এসব ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অপরাধীদের দ্রুত শনাক্তের চেষ্টা চলে। শুধু অপরাধী শনাক্তই নয়, অপরাধ নিয়ন্ত্রণেও সিসি ক্যামেরার কার্যকারিতা রয়েছে। কিন্তু মহাসড়কের সীতাকুণ্ড অংশে দীর্ঘদিন ধরে অধিকাংশ সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙা বা অচল হয়ে আছে। এতে পুলিশ অপরাধী শনাক্তে সমস্যায় পড়ছে। পুলিশ বলছে, অপরাধীরা অনেক সময় অপরাধ সংঘটনের আগে ক্যামেরা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে, যাতে দ্রুত শনাক্ত না হয়। ফলে পর্যাপ্ত ও কার্যকর সিসি ক্যামেরা না থাকায় অপরাধীরা অপরাধ করার সুযোগ নেয়।
গতকাল শনিবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, সীতাকুণ্ড উপজেলার মুল ফটকে যে ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন ক্যামেরা (সিসিটিভি) বসানো হয়েছে সেটি দীর্ঘদিন ধরে ভেঙ্গে পড়ে আছে। ফলে স্পর্শকাতর ও অপরাধ প্রবন এই উপজেলায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি হ্রাস পাবে বলে মনে করেন সুশীল সমাজ। এছাড়া গত ৩১ জুলাই থেকে ১৮ আগস্ট পর্যন্ত বিশ দিনে সীতাকুণ্ড অংশে পাঁচটি দুর্ঘটনায় দশজন নিহত হয়েছে। গত ৭ মাসে মহাসড়কের এই অংশে অর্ধশতাধিক দুর্ঘটনায় ৪০ জনের প্রাণহানি ও শতাধিক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ। ক্যামেরাগুলো অকেজো হয়ে পড়ার কারনে এই দুর্ঘটনাগুলো কিভাবে হয়েছে, কি কারণে হয়েছে তা সনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সাধারন সম্পাদক জসিম উদ্দিন আজাদ বলেন, ২৪ এর পরাজিত শক্তি মহাসড়কে নাশকতার চেষ্টা করছে। নিষিদ্ধ সংগঠনের কার্যক্রম দেশের লাইফ লাইন খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাতে চালাতে না পারে সে জন্য সিসি ক্যামেরাগুলো সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কিন্তু ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাগুলো নষ্ট হওয়ায় পুলিশের পক্ষে অপরাধ দমন কঠিন হয়ে পড়ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ক্যামেরাগুলো দ্রুত সংষ্কার করার আহবান জানান তিনি।
বারআউলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল মোমিন জানান, সীতাকুণ্ড অংশে লাগানো ২১৭টির মধ্যে অধিকাংশ ক্যামেরা নষ্ট। দুষ্কৃতিকারীরা ক্যামরাগুলো নষ্ট করে ফেলেছে। এগুলো সচল করার জন্য কার্যক্রম চলছে।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুজিবুর রহমান বলেন, কার্যকর সিসি ক্যামেরা না থাকায় অপরাধীদের চিহ্নিত করতে বেগ পেতে হচ্ছে। অনেক সময় প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন সম্ভব হয়না। এ জন্য আগের চেয়ে অপরাধীরা অপরাধ করার সুযোগ বেশি পাচ্ছে।