alt

রাজশাহীর অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী : রোববার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

রাজশাহীতে সংকটে পড়েছে পপ্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা। জেলার এক-তৃতীয়াংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়েই নেই প্রধান শিক্ষক। দীর্ঘসময় ধরে ভারপপ্রপ্ত শিক্ষকদের দিয়ে এসব বিদ্যালয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। এ কারণে বিদ্যালয় পরিচালনায় দেখা দিয়েছে প্রশাসনিক জটিলতা।

জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা এক হাজার ৫৭টি। এর মধ্যে ৩৮৯টি বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক। ভুক্তভোগীরা বলছেন, মামলা, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে পপ্রাসনিক জটিলতা, নিয়োগ পরীক্ষায় দেরি, পদোন্নতিতে ধীরগতিসহ আরও কিছু কারণে এ সংকট ক্রমান্বয়ে দীর্ঘ হচ্ছে

ভেঙে পড়েছে প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে শিক্ষার্থীদের আচার-আচরণে পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব। ব্যাহত হচ্ছে মানসম্মত পাঠদান। প্রধান শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীর বিপরীতে কমেছে শিক্ষকের সংখ্যা। সবমিলিয়ে সংকুচিত হচ্ছে শিশু শিক্ষার্থীদের যথাযথ মেধার বিকাশ।

রাজশাহী জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা এক হাজার ৫৭টি। এর মধ্যে ৩৮৯টি বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক। ভুক্তভোগীরা বলছেন, মামলা, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে পপ্রাসনিক জটিলতা, নিয়োগ পরীক্ষায় দেরি, পদোন্নতিতে ধীরগতিসহ আরও কিছু কারণে এ সংকট ক্রমান্বয়ে দীর্ঘ হচ্ছে। প্রধান শিক্ষকরা বিদ্যালয়ের শ্রেণি পাঠদান পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধান, শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ ও মডেল শিক্ষক হিসাবেও কাজ করেন। তাই এ সংকট নিরসনে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী সিটি করপোরেশনসহ (রাসিক) জেলার ৯টি উপজেলাতেই রয়েছে প্রধান শিক্ষকের সংকট। এর মধ্যে ৬১টি পদ নিয়ে মামলা থাকায় প্রধান শিক্ষক নিয়োগ আটকে আছে। বাকি ৩২৮টি বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ ও পদোন্নতি কার্যক্রম বন্ধ। এসব বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত ও চলতি দায়িত্বে প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের প্রশাসনিক ক্ষমতা সীমিত থাকায় শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। জেলার বাগমারা উপজেলায় প্রধান শিক্ষক সংকট সবচেয়ে বেশি। এ উপজেলার ৯৭টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। গোদাগাড়ী উপজেলার ৭১ বিদ্যালয়, তানোরে ৬২, চারঘাটের ৩৮, পুঠিয়ার ২৭, বাঘার ২২, পবার ২১, দুর্গাপুরের ২১, মোহনপুরে ২০ এবং রাসিকের বোয়ালিয়া থানার ১০টি বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন থেকে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে।

বাগমারা উপজেলার বারুইপাড়া-১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোকুল চন্দ্র বলেন, একটি আদর্শ এবং নীতি-নৈতিকতা বোধসম্পন্ন জাতি গঠনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক শিক্ষা। তবে দীর্ঘসময় প্রধান শিক্ষক না থাকার কারণে সুষ্ঠু স্বাভাবিক পাঠদানে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে শিক্ষার প্রথম ধাপটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক না থাকার কারণে প্রশাসনিক জটিলতাও দেখা দিয়েছে।

পবা উপজেলার ভালাম ভবানীপুর সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নফুরা খাতুন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক নেই। সহকারী শিক্ষক হলেও আমাকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এর ফলে শিক্ষক সংকট দেখা দিয়েছে। খুব কষ্ট করে ক্লাস ম্যানেজ করতে হচ্ছে। আমাদের ক্ষমতা সীমিত। তাই অনেক জটিলতার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। অনেক বিষয়েই সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। ফলে বিদ্যালয়ের পরিবেশ,শৃঙ্খলা, শিক্ষার্থীদের আচরণ-সবকিছুতেই নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

প্রধান শিক্ষক সংকট নিয়ে ক্ষোভ পপ্রাশ করছেন অভিভাবকরাও। গোদাগাড়ী উপজেলার মাছমারা এলাকার বাসিন্দা আজমল হক বলেন, আমার ছেলে মাছমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। আমি স্বল্প শিক্ষিত মানুষ। আমার প্রত্যাশা, ছেলে উচ্চশিক্ষিত হয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখবে। কিন্তু স্কুলে প্রধান শিক্ষক নেই। ফলে পড়াশোনাও নেই। এ অবস্থায় আমরা অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন।

রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক এবং গোদাগাড়ী উপজেলার ডোমকুলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষক হলেন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকরা সহকারী শিক্ষক। এ কারণে প্রশাসনিক জটিলতা দেখা দেয়। চেইন অব কমান্ড নষ্ট হয়। ২০১০ সালের পর প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। ২০১৮ সালে কিছু সহকারী শিক্ষককে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তাদের অনেকেই অবসরে গেছেন। ফলে সংকট না কমে আরও বেড়েছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে পূর্ণকালীন প্রধান শিক্ষক থাকা অপরিহার্য। তা না হলে শিক্ষার গুণগত মান ধরে রাখা অসম্ভব।

রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষকের সংকট দেশব্যাপী। রাজশাহীতে প্রধান শিক্ষকের সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। নানা সংকটের মধ্যেও আমরা শিক্ষা কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার চেষ্টা করছি। আমাদের শিক্ষকরা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।

ছবি

ডিমলায় অনুমোদনহীন ঝুঁকিপূর্ণ পেট্রোল পাম্পের ছড়াছড়ি

ছবি

গারো-কোচ নারীদের হাতে তৈরি বাঁশের শৌখিন পণ্য যাচ্ছে বিভিন্ন জেলায়

ছবি

মহেশপুর সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠক

ছবি

কৃতী ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ

ছবি

বনভূমি উদ্ধার করে বৃক্ষরোপণ

ছবি

বেতাগীতে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের কার্যক্রমে দায়সারাভাব!

ছবি

পীর বলুহ দেওয়ানের মেলা থেকে ৫ মাদকসেবী ও জুয়াড়ি আটক

ছবি

বেগমগঞ্জে বিলুপ্ত প্রায় ৪২৫ কচ্ছপ উদ্ধার

ছবি

ঝালকাঠিতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আমড়া চাষ

ছবি

কুমিল্লায় চাকুরির প্রলোভনে নেয়া ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করতে হত্যা করা হয় আমিনুলকে

ছবি

পূর্বধলায় ট্রেনে কাটা পড়ে বৃদ্ধের মৃত্যু

ছবি

সুন্দরবনে ভ্রমণে এসে সাগরে কিশোর নিখোঁজ

ছবি

দেশকে সোনার খনিতে রূপান্তর সম্ভব : বাণিজ্য উপদেষ্টা

ছবি

১২০ টাকায় কনস্টেবলে চাকরি পেলেন ১৭ তরুণ-তরুণীর

ছবি

চার বিভাগে ভারী বৃষ্টি হতে পারে

ছবি

ডেঙ্গু: আক্রান্ত ৩৭ হাজার ছাড়িয়েছে

ছবি

মুলাদিতে জমি নিয়ে বিরোধে এক কৃষককে হত্যা, আহত দু’জন

ছবি

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: বার্ন ইনস্টিটিউট থেকে ছাড়পত্র পেল আরও এক শিক্ষার্থী

ছবি

চার দফা দাবিতে ময়মনসিংহে সরকারি কলেজের বেসরকারি কর্মচারীদের মানববন্ধন

ছবি

‘আমার নাম ভাঙিয়ে মামলা–বাণিজ্য চলছে’: সাইফুদ্দীনের অভিযোগ

ছবি

প্রধান বিচারপতি ব্রাজিলে, আলোচনায় দু’দেশের বিচার ব্যবস্থা

ছবি

সৈয়দপুরে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা

ছবি

সাংবাদিক শফিকুর রহমানের জানাজা সম্পন্ন

ছবি

অটোচালক হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন

ছবি

নোয়াখালীতে সাম্যবাদী আন্দোলনের মানববন্ধন

ছবি

বাগাতিপাড়ার গুণী শিক্ষক স্বপ্না রানী ও আয়েশা আক্তার

ছবি

জিল বাংলায় আখ চাষীদের বিক্ষোভ

ছবি

বেতাগীতে সুপারি বাম্পার ফলন দাম বিগত বছরের তুলনায় কম

ছবি

হিলিতে গ্রামীণ সড়কে নিম্নমানের কাজ, উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং

ছবি

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সিসি ক্যামেরা অচল, বাড়ছে ছিনতাই ডাকাতি

ছবি

ফরিদপুর-৪ আসনর বিন্যাসের প্রতিবাদ ভাঙ্গায় সড়ক-রেলপথ অবরোধ ২১ জেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

ছবি

মোহনগঞ্জে জমজমাট সাজের দোকান

ছবি

লালমোহন পৌর এলাকায় ৫টি পানির পাম্প অচল, ২টি চলে কোনমতে

ছবি

গত অর্থবছরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে ৪৭০ কোটি টাকার মাছ রপ্তানি

ছবি

কাশিয়ানীতে যুবকের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

কুশিয়ারায় নৌকাবাইচে নবীগঞ্জের মরম আলীর নৌকা চ্যাম্পিয়ন

tab

news » bangladesh

রাজশাহীর অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

রোববার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রাজশাহীতে সংকটে পড়েছে পপ্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা। জেলার এক-তৃতীয়াংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়েই নেই প্রধান শিক্ষক। দীর্ঘসময় ধরে ভারপপ্রপ্ত শিক্ষকদের দিয়ে এসব বিদ্যালয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। এ কারণে বিদ্যালয় পরিচালনায় দেখা দিয়েছে প্রশাসনিক জটিলতা।

জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা এক হাজার ৫৭টি। এর মধ্যে ৩৮৯টি বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক। ভুক্তভোগীরা বলছেন, মামলা, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে পপ্রাসনিক জটিলতা, নিয়োগ পরীক্ষায় দেরি, পদোন্নতিতে ধীরগতিসহ আরও কিছু কারণে এ সংকট ক্রমান্বয়ে দীর্ঘ হচ্ছে

ভেঙে পড়েছে প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে শিক্ষার্থীদের আচার-আচরণে পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব। ব্যাহত হচ্ছে মানসম্মত পাঠদান। প্রধান শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীর বিপরীতে কমেছে শিক্ষকের সংখ্যা। সবমিলিয়ে সংকুচিত হচ্ছে শিশু শিক্ষার্থীদের যথাযথ মেধার বিকাশ।

রাজশাহী জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা এক হাজার ৫৭টি। এর মধ্যে ৩৮৯টি বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক। ভুক্তভোগীরা বলছেন, মামলা, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে পপ্রাসনিক জটিলতা, নিয়োগ পরীক্ষায় দেরি, পদোন্নতিতে ধীরগতিসহ আরও কিছু কারণে এ সংকট ক্রমান্বয়ে দীর্ঘ হচ্ছে। প্রধান শিক্ষকরা বিদ্যালয়ের শ্রেণি পাঠদান পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধান, শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ ও মডেল শিক্ষক হিসাবেও কাজ করেন। তাই এ সংকট নিরসনে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী সিটি করপোরেশনসহ (রাসিক) জেলার ৯টি উপজেলাতেই রয়েছে প্রধান শিক্ষকের সংকট। এর মধ্যে ৬১টি পদ নিয়ে মামলা থাকায় প্রধান শিক্ষক নিয়োগ আটকে আছে। বাকি ৩২৮টি বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ ও পদোন্নতি কার্যক্রম বন্ধ। এসব বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত ও চলতি দায়িত্বে প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের প্রশাসনিক ক্ষমতা সীমিত থাকায় শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। জেলার বাগমারা উপজেলায় প্রধান শিক্ষক সংকট সবচেয়ে বেশি। এ উপজেলার ৯৭টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। গোদাগাড়ী উপজেলার ৭১ বিদ্যালয়, তানোরে ৬২, চারঘাটের ৩৮, পুঠিয়ার ২৭, বাঘার ২২, পবার ২১, দুর্গাপুরের ২১, মোহনপুরে ২০ এবং রাসিকের বোয়ালিয়া থানার ১০টি বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন থেকে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে।

বাগমারা উপজেলার বারুইপাড়া-১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোকুল চন্দ্র বলেন, একটি আদর্শ এবং নীতি-নৈতিকতা বোধসম্পন্ন জাতি গঠনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক শিক্ষা। তবে দীর্ঘসময় প্রধান শিক্ষক না থাকার কারণে সুষ্ঠু স্বাভাবিক পাঠদানে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে শিক্ষার প্রথম ধাপটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক না থাকার কারণে প্রশাসনিক জটিলতাও দেখা দিয়েছে।

পবা উপজেলার ভালাম ভবানীপুর সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নফুরা খাতুন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক নেই। সহকারী শিক্ষক হলেও আমাকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এর ফলে শিক্ষক সংকট দেখা দিয়েছে। খুব কষ্ট করে ক্লাস ম্যানেজ করতে হচ্ছে। আমাদের ক্ষমতা সীমিত। তাই অনেক জটিলতার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। অনেক বিষয়েই সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। ফলে বিদ্যালয়ের পরিবেশ,শৃঙ্খলা, শিক্ষার্থীদের আচরণ-সবকিছুতেই নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

প্রধান শিক্ষক সংকট নিয়ে ক্ষোভ পপ্রাশ করছেন অভিভাবকরাও। গোদাগাড়ী উপজেলার মাছমারা এলাকার বাসিন্দা আজমল হক বলেন, আমার ছেলে মাছমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। আমি স্বল্প শিক্ষিত মানুষ। আমার প্রত্যাশা, ছেলে উচ্চশিক্ষিত হয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখবে। কিন্তু স্কুলে প্রধান শিক্ষক নেই। ফলে পড়াশোনাও নেই। এ অবস্থায় আমরা অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন।

রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক এবং গোদাগাড়ী উপজেলার ডোমকুলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষক হলেন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকরা সহকারী শিক্ষক। এ কারণে প্রশাসনিক জটিলতা দেখা দেয়। চেইন অব কমান্ড নষ্ট হয়। ২০১০ সালের পর প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। ২০১৮ সালে কিছু সহকারী শিক্ষককে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তাদের অনেকেই অবসরে গেছেন। ফলে সংকট না কমে আরও বেড়েছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে পূর্ণকালীন প্রধান শিক্ষক থাকা অপরিহার্য। তা না হলে শিক্ষার গুণগত মান ধরে রাখা অসম্ভব।

রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষকের সংকট দেশব্যাপী। রাজশাহীতে প্রধান শিক্ষকের সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। নানা সংকটের মধ্যেও আমরা শিক্ষা কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার চেষ্টা করছি। আমাদের শিক্ষকরা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।

back to top