alt

পাখিপ্রেমীদের মমতায় ইট-পাথরের নগরই এখন চড়ুইয়ের গ্রাম

৪শ’-৫শ’ পাখি দিয়ে শুরু, ঠাকুরগাঁওয়ের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এখন প্রায় ৫-৬ হাজার চড়ুইয়ের বাস

জুনাইদ কবির, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : রোববার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সন্ধ্যায় আপন নিবাসে চড়ুইয়ের কিচিরমিচির, নগরে অনন্য স্বস্তি। ছবিটি ঠাকুরগাঁও পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে তোলা -সংবাদ

গ্রাম বাংলার কুঁড়ে ঘরই একসময় চড়ুই পাখির রাজ্য ছিল। ঘরের কড়িকাঠে থাকত তাদের ছোট্ট বাসা। ঝুপ করে একটা পাখি উড়ে যেত নীড় থেকে উঠোনে, আবার ফিরে আসত ঠোঁটে করে খড়-কুটো নিয়ে। এখন সে কুঁড়ে ঘর নেই, শহর ছুঁয়েছে পিচ ঢালা পথ আর কংক্রিটের দেয়াল। তবুও হার মানেনি চড়ুই। আধুনিকতার প্রবাহে নতুন করে গড়ে নিয়েছে আপন ঠিকানা। এবার শহরের ভেতরেই।

দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের অন্যতম প্রাণ কেন্দ্র পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকা এ যেন এখন চড়ুইদের গহিন গ্রাম। কৃষ্ণচূড়া, বকুল, আম আর দেবদারু গাছে গড়ে উঠেছে হাজার হাজার চড়ুই পাখির বাসা। বিকেল হলেই ডালে ডালে ভিড় করে তারা। চঞ্চলতা আর কিচিরমিচির শব্দে মুখর হয়ে ওঠে গোটা এলাকা।

গোধূলি লগনে পাখিদের ফিরে আসা শুরু হয়। পথচারীরা থেমে দাঁড়ান, কেউ মোবাইলে ভিডিও করেন, কেউ কেবল নীরবে তাকিয়ে থাকেন। ছোট্ট গাছগুলো যেন আশ্রয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে তাদের কাছে। পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের মোড়ের পাশে ছোট্ট একটি আমগাছে হাত বাড়ালেই ছুঁয়ে দেওয়া যায় পাখির দলকে। কিন্তু নিয়ম আছে- ধরা নিষেধ। ভুল করে কেউ ধরলেও শুনতে হয় গালমন্দ। কারণ, দুই দশক ধরে এখানেই গড়ে উঠেছে তাদের বসতি। ফল ব্যবসায়ী সবুজ মিয়া রোজের মতো বসে থাকেন সুরুচি রেস্টুরেন্টের সামনে। বলেন, ‘সন্ধ্যার দিকে যখন পাখিগুলো ফিরে আসে, তখন মনটাই ভালো হয়ে যায়। গাছে গাছে যেন একটা উৎসব শুরু হয়।’

শুধু সবুজ মিয়া নন, আশপাশের দোকানি থেকে শুরু করে পথচারী, সবাই যেন নিজ নিজ জায়গা থেকে পাহারাদারের ভূমিকায়। কেউ যেন পাখিদের বিরক্ত না করে, এ নিয়ে সব সময় সতর্ক থাকে। শুরুটা ছিল ৪০০-৫০০ পাখি দিয়ে, এখন সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫-৬ হাজারে।

নারগুন উচ্চ বিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান শিক্ষক মো: আব্দুল জলিল বলেন, ‘আগে গ্রামে কুঁড়ে ঘরে দেখা যেত চড়ুই পাখি, এখন তো সে কুঁড়ে ঘরই নেই। এখানে এসে পাখিগুলো দেখে খুব ভালো লাগছে।’

ঠাকুরগাঁও সদও উপজেলা নির্বাহী অফিসার খাইরুল ইসলাম বলেন, চড়ুইপাখি দলবদ্ধভাবে থাকতে পছন্দ করে। শহরের এই গাছগুলোতে তাদের বসতি হওয়া সত্যিই প্রশংসনীয়। এদের সংরক্ষণ করা আমাদের দায়িত্ব।

ছবি

জুলাই আন্দোলনে চট্টগ্রামে গুলিবিদ্ধ হই, ঢাকায় মামলার কিছু জানি না: সংবাদ সম্মেলনে সাইফুদ্দীন

ছবি

খুলনার ছয় আসনে ভোটার ও কেন্দ্র বেড়েছে, কমেছে বুথের সংখ্যা

ছবি

শুধু আইন দিয়ে শিশু সহিংসতা ও শোষণ রোধ করা সম্ভব নয়: আলোচনা সভায় বক্তারা

ছবি

অবৈধ বালু ভাগাভাগি, জামায়াত ও বিএনপি নেতাদের লিখিত সমঝোতা চুক্তি

ছবি

কবরে নামানোর আগমুহূর্তে জেগে উঠলো শিশু!

ছবি

ডেঙ্গু: একদিনে সর্বোচ্চ ৬৮৫ জন হাসপাতালে ভর্তি, মৃত্যু ৩

ছবি

ঐকমত্য কমিশনে ‘নারী’ সিদ্ধান্তে পরিবর্তন দাবি অধিকারকর্মীদের

ছবি

অবাধে বালু উত্তোলন: ভাঙনের ঝুঁকিতে সুন্দরবন ও উপকূলীয় বাঁধ

ছবি

সুন্দরবনের ডিমের চরে নিখোঁজ কিশোর পর্যটকের মরদেহ ৩০ ঘন্টা পর উদ্ধার

ছবি

উলিপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর ভেঙে জায়গা দখলের পায়তারা

ছবি

চান্দিনায় খাল খনন ও রিটার্নিং ওয়াল প্রকল্পের লাখ লাখ টাকা লুট

ছবি

ডিমলায় অনুমোদনহীন ঝুঁকিপূর্ণ পেট্রোল পাম্পের ছড়াছড়ি

ছবি

গারো-কোচ নারীদের হাতে তৈরি বাঁশের শৌখিন পণ্য যাচ্ছে বিভিন্ন জেলায়

ছবি

মহেশপুর সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠক

ছবি

কৃতী ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ

ছবি

বনভূমি উদ্ধার করে বৃক্ষরোপণ

ছবি

বেতাগীতে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের কার্যক্রমে দায়সারাভাব!

ছবি

পীর বলুহ দেওয়ানের মেলা থেকে ৫ মাদকসেবী ও জুয়াড়ি আটক

ছবি

বেগমগঞ্জে বিলুপ্ত প্রায় ৪২৫ কচ্ছপ উদ্ধার

ছবি

ঝালকাঠিতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আমড়া চাষ

ছবি

কুমিল্লায় চাকুরির প্রলোভনে নেয়া ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করতে হত্যা করা হয় আমিনুলকে

ছবি

পূর্বধলায় ট্রেনে কাটা পড়ে বৃদ্ধের মৃত্যু

ছবি

সুন্দরবনে ভ্রমণে এসে সাগরে কিশোর নিখোঁজ

ছবি

দেশকে সোনার খনিতে রূপান্তর সম্ভব : বাণিজ্য উপদেষ্টা

ছবি

১২০ টাকায় কনস্টেবলে চাকরি পেলেন ১৭ তরুণ-তরুণীর

ছবি

চার বিভাগে ভারী বৃষ্টি হতে পারে

ছবি

ডেঙ্গু: আক্রান্ত ৩৭ হাজার ছাড়িয়েছে

ছবি

মুলাদিতে জমি নিয়ে বিরোধে এক কৃষককে হত্যা, আহত দু’জন

ছবি

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: বার্ন ইনস্টিটিউট থেকে ছাড়পত্র পেল আরও এক শিক্ষার্থী

ছবি

চার দফা দাবিতে ময়মনসিংহে সরকারি কলেজের বেসরকারি কর্মচারীদের মানববন্ধন

ছবি

‘আমার নাম ভাঙিয়ে মামলা–বাণিজ্য চলছে’: সাইফুদ্দীনের অভিযোগ

ছবি

প্রধান বিচারপতি ব্রাজিলে, আলোচনায় দু’দেশের বিচার ব্যবস্থা

ছবি

সৈয়দপুরে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা

ছবি

সাংবাদিক শফিকুর রহমানের জানাজা সম্পন্ন

ছবি

অটোচালক হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন

ছবি

নোয়াখালীতে সাম্যবাদী আন্দোলনের মানববন্ধন

tab

news » bangladesh

পাখিপ্রেমীদের মমতায় ইট-পাথরের নগরই এখন চড়ুইয়ের গ্রাম

৪শ’-৫শ’ পাখি দিয়ে শুরু, ঠাকুরগাঁওয়ের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এখন প্রায় ৫-৬ হাজার চড়ুইয়ের বাস

জুনাইদ কবির, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

সন্ধ্যায় আপন নিবাসে চড়ুইয়ের কিচিরমিচির, নগরে অনন্য স্বস্তি। ছবিটি ঠাকুরগাঁও পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে তোলা -সংবাদ

রোববার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গ্রাম বাংলার কুঁড়ে ঘরই একসময় চড়ুই পাখির রাজ্য ছিল। ঘরের কড়িকাঠে থাকত তাদের ছোট্ট বাসা। ঝুপ করে একটা পাখি উড়ে যেত নীড় থেকে উঠোনে, আবার ফিরে আসত ঠোঁটে করে খড়-কুটো নিয়ে। এখন সে কুঁড়ে ঘর নেই, শহর ছুঁয়েছে পিচ ঢালা পথ আর কংক্রিটের দেয়াল। তবুও হার মানেনি চড়ুই। আধুনিকতার প্রবাহে নতুন করে গড়ে নিয়েছে আপন ঠিকানা। এবার শহরের ভেতরেই।

দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের অন্যতম প্রাণ কেন্দ্র পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকা এ যেন এখন চড়ুইদের গহিন গ্রাম। কৃষ্ণচূড়া, বকুল, আম আর দেবদারু গাছে গড়ে উঠেছে হাজার হাজার চড়ুই পাখির বাসা। বিকেল হলেই ডালে ডালে ভিড় করে তারা। চঞ্চলতা আর কিচিরমিচির শব্দে মুখর হয়ে ওঠে গোটা এলাকা।

গোধূলি লগনে পাখিদের ফিরে আসা শুরু হয়। পথচারীরা থেমে দাঁড়ান, কেউ মোবাইলে ভিডিও করেন, কেউ কেবল নীরবে তাকিয়ে থাকেন। ছোট্ট গাছগুলো যেন আশ্রয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে তাদের কাছে। পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের মোড়ের পাশে ছোট্ট একটি আমগাছে হাত বাড়ালেই ছুঁয়ে দেওয়া যায় পাখির দলকে। কিন্তু নিয়ম আছে- ধরা নিষেধ। ভুল করে কেউ ধরলেও শুনতে হয় গালমন্দ। কারণ, দুই দশক ধরে এখানেই গড়ে উঠেছে তাদের বসতি। ফল ব্যবসায়ী সবুজ মিয়া রোজের মতো বসে থাকেন সুরুচি রেস্টুরেন্টের সামনে। বলেন, ‘সন্ধ্যার দিকে যখন পাখিগুলো ফিরে আসে, তখন মনটাই ভালো হয়ে যায়। গাছে গাছে যেন একটা উৎসব শুরু হয়।’

শুধু সবুজ মিয়া নন, আশপাশের দোকানি থেকে শুরু করে পথচারী, সবাই যেন নিজ নিজ জায়গা থেকে পাহারাদারের ভূমিকায়। কেউ যেন পাখিদের বিরক্ত না করে, এ নিয়ে সব সময় সতর্ক থাকে। শুরুটা ছিল ৪০০-৫০০ পাখি দিয়ে, এখন সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫-৬ হাজারে।

নারগুন উচ্চ বিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান শিক্ষক মো: আব্দুল জলিল বলেন, ‘আগে গ্রামে কুঁড়ে ঘরে দেখা যেত চড়ুই পাখি, এখন তো সে কুঁড়ে ঘরই নেই। এখানে এসে পাখিগুলো দেখে খুব ভালো লাগছে।’

ঠাকুরগাঁও সদও উপজেলা নির্বাহী অফিসার খাইরুল ইসলাম বলেন, চড়ুইপাখি দলবদ্ধভাবে থাকতে পছন্দ করে। শহরের এই গাছগুলোতে তাদের বসতি হওয়া সত্যিই প্রশংসনীয়। এদের সংরক্ষণ করা আমাদের দায়িত্ব।

back to top