ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
রাজনীতিতে সম্প্রতি তাদের মধ্যে বৈরিতা দেখা যাচ্ছে, সেটা গত বছরের জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকেই। তবে রংপুরের পীরগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধ বালু তুলে বিক্রি করে অর্থের ভাগাভাগিতে তারা লিখিত চুক্তি করেছেন।
চুক্তি ভাইরাল হওয়ায় তোলপাড়
পীরগঞ্জে করতোয়া নদীর বালু তুলে বিক্রির টাকা আধাআধি ভাগের চুক্তি
উপজেলা জামায়াতের আমির বললেন ‘কঠোর ব্যবস্থা’ নেয়া হবে
উপজেলা বিএনপি সভাপতির দাবি কেউই বিএনপির নেতা নন
গত ১১ আগস্ট রাত ১০টায় জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপি এ দুই দলের নেতাদের মধ্যে লিখিত ওই সমঝোতা হয়েছে। লিখিত সেই সমঝোতা ভাইরাল হয়েছে। আর তাতেই তোলপাড় শুরু হয়েছে। ওই চুক্তিতে দুই দলের নেতারা বালু বিক্রির টাকা আধাআধি ভাগ করবেন।
অভিযোগ উঠেছে বিএনপি ও জামায়াতের স্থানীয় নেতারা পীরগঞ্জ উপজেলার করতোয়া নদীর ২৭টি স্পটে সমঝোতা করে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন।
এলাকাবাসী, বিএনপি ও জামায়াতের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার আমলে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন করতোয়া নদীর ওপর জয়ন্তীপুর ঘাটে ব্রিজের রাস্তায় বালু ভরাট কাজের জন্য বিপুল পরিমাণ বালুর প্রয়োজন। ওই বালু ভরাটের জন্য পীরগঞ্জের টুকুরিয়া ইউনিয়নের জয়ন্তীপুর ও তরফমৌজার স্থানীয় বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর নেতারা যৌথভাবে বালু সরবরাহ করার জন্য আলোচনা করে। আলোচনায় ঠিক হয় করতোয়া নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনে তারা একে অন্যেকে সহায়তা করবেন।
তারপরই গত ১১ আগস্ট রাত ১০টায় দু’দলের নেতারা বৈঠক করেন। সেখানেই তাদের লিখিত চুক্তি হয়। লিখিত অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর করেন দুই দলের স্থানীয় কয়েকজন নেতা। ওই সমঝোতার সমন্বয়কারী বাদশা মিয়া (মুহরী)।
ওই লিখিত সমঝোতা স্মারকে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে লিখিত স্বাক্ষর করেন সাবেক ইউনিয়ন সভাপতি মো. আবু তাহের, বর্তমান সহ-সভাপতি মো. সুলতান মাহমুদ ও ওয়ার্ড সভাপতি মো. আবু হাসান। আর বিএনপির পক্ষে স্বাক্ষর করেন মো. গোলাম রব্বানী, মো. ফজলুল করিম ও মো. আবু হানিফ মিয়া।
লিখিত চুক্তির পর বিএনপি ও জামায়াত নেতারা নিজেরাই ব্রিজটির পূর্ব পাশে ৮টি ড্রেজার সাইজের বালু উত্তোলন মেশিন বসিয়েছেন। সেই মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
বিএনপি ও জামায়াতের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন নেতা জানিয়েছেন এভাবে বালু উঠালে কোটি টাকার বালু উত্তোলন করা যাবে। বিএনপি ও জামায়াত তাদের স্থানীয় নেতাদের ওই ‘লুটপাটের’ সমঝোতার কপি সরবরাহ করেছে যাতে কোনো নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে।
পীরগঞ্জ ভূমি অফিসের একজন কর্মকর্তা জানান, সরকারের বালুমহাল ঘোষণা না থাকলেও নদীর চর এবং নদীর তলদেশ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। অবৈধ বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে ব্রিজের আশপাশের আবাদি জমি চরম হুমকিতে পড়বে বলে স্থানীয় লোকজনের আশঙ্কা।
লিখিত সমঝোতা চুক্তি ভাইরাল হওয়ার পর দল দুটির কর্মীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়েছে। লুটপাটের চুক্তি স্বাক্ষর করা দুই দলের নেতাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে রোববার,(১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) দুপুরে পীরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমির মিজানুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে বলেন বিষয়টি তিনি শুনেছেন। বিষয়টি ‘গুরত্বের’ সঙ্গে দেখে ‘কঠোর ব্যবস্থা’ নেয়া হবে বলে সংবাদকে জানান তিনি।
আর পীরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদুন্নবী চৌধুরী পলাশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন লুটপাটের চুক্তিতে স্বাক্ষর করা কেউই বিএনপির নেতা নন। তাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই বলেও দাবি তার।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
রোববার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
রাজনীতিতে সম্প্রতি তাদের মধ্যে বৈরিতা দেখা যাচ্ছে, সেটা গত বছরের জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকেই। তবে রংপুরের পীরগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধ বালু তুলে বিক্রি করে অর্থের ভাগাভাগিতে তারা লিখিত চুক্তি করেছেন।
চুক্তি ভাইরাল হওয়ায় তোলপাড়
পীরগঞ্জে করতোয়া নদীর বালু তুলে বিক্রির টাকা আধাআধি ভাগের চুক্তি
উপজেলা জামায়াতের আমির বললেন ‘কঠোর ব্যবস্থা’ নেয়া হবে
উপজেলা বিএনপি সভাপতির দাবি কেউই বিএনপির নেতা নন
গত ১১ আগস্ট রাত ১০টায় জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপি এ দুই দলের নেতাদের মধ্যে লিখিত ওই সমঝোতা হয়েছে। লিখিত সেই সমঝোতা ভাইরাল হয়েছে। আর তাতেই তোলপাড় শুরু হয়েছে। ওই চুক্তিতে দুই দলের নেতারা বালু বিক্রির টাকা আধাআধি ভাগ করবেন।
অভিযোগ উঠেছে বিএনপি ও জামায়াতের স্থানীয় নেতারা পীরগঞ্জ উপজেলার করতোয়া নদীর ২৭টি স্পটে সমঝোতা করে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন।
এলাকাবাসী, বিএনপি ও জামায়াতের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার আমলে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন করতোয়া নদীর ওপর জয়ন্তীপুর ঘাটে ব্রিজের রাস্তায় বালু ভরাট কাজের জন্য বিপুল পরিমাণ বালুর প্রয়োজন। ওই বালু ভরাটের জন্য পীরগঞ্জের টুকুরিয়া ইউনিয়নের জয়ন্তীপুর ও তরফমৌজার স্থানীয় বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর নেতারা যৌথভাবে বালু সরবরাহ করার জন্য আলোচনা করে। আলোচনায় ঠিক হয় করতোয়া নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনে তারা একে অন্যেকে সহায়তা করবেন।
তারপরই গত ১১ আগস্ট রাত ১০টায় দু’দলের নেতারা বৈঠক করেন। সেখানেই তাদের লিখিত চুক্তি হয়। লিখিত অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর করেন দুই দলের স্থানীয় কয়েকজন নেতা। ওই সমঝোতার সমন্বয়কারী বাদশা মিয়া (মুহরী)।
ওই লিখিত সমঝোতা স্মারকে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে লিখিত স্বাক্ষর করেন সাবেক ইউনিয়ন সভাপতি মো. আবু তাহের, বর্তমান সহ-সভাপতি মো. সুলতান মাহমুদ ও ওয়ার্ড সভাপতি মো. আবু হাসান। আর বিএনপির পক্ষে স্বাক্ষর করেন মো. গোলাম রব্বানী, মো. ফজলুল করিম ও মো. আবু হানিফ মিয়া।
লিখিত চুক্তির পর বিএনপি ও জামায়াত নেতারা নিজেরাই ব্রিজটির পূর্ব পাশে ৮টি ড্রেজার সাইজের বালু উত্তোলন মেশিন বসিয়েছেন। সেই মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
বিএনপি ও জামায়াতের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন নেতা জানিয়েছেন এভাবে বালু উঠালে কোটি টাকার বালু উত্তোলন করা যাবে। বিএনপি ও জামায়াত তাদের স্থানীয় নেতাদের ওই ‘লুটপাটের’ সমঝোতার কপি সরবরাহ করেছে যাতে কোনো নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে।
পীরগঞ্জ ভূমি অফিসের একজন কর্মকর্তা জানান, সরকারের বালুমহাল ঘোষণা না থাকলেও নদীর চর এবং নদীর তলদেশ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। অবৈধ বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে ব্রিজের আশপাশের আবাদি জমি চরম হুমকিতে পড়বে বলে স্থানীয় লোকজনের আশঙ্কা।
লিখিত সমঝোতা চুক্তি ভাইরাল হওয়ার পর দল দুটির কর্মীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়েছে। লুটপাটের চুক্তি স্বাক্ষর করা দুই দলের নেতাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে রোববার,(১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) দুপুরে পীরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমির মিজানুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে বলেন বিষয়টি তিনি শুনেছেন। বিষয়টি ‘গুরত্বের’ সঙ্গে দেখে ‘কঠোর ব্যবস্থা’ নেয়া হবে বলে সংবাদকে জানান তিনি।
আর পীরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদুন্নবী চৌধুরী পলাশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন লুটপাটের চুক্তিতে স্বাক্ষর করা কেউই বিএনপির নেতা নন। তাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই বলেও দাবি তার।