রংপুরে প্রাণি সম্পদ সম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের উপস্থিতিতে বিভাগের ভার্চুয়াল প্রেজেন্টেশনে শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি প্রদর্শন করার ঘটনায় তোলপাড় চলছে। এসময় তড়িঘড়ি করে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন অনুষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রানি সম্পদ বিভাগের রংপুর বিভাগীয় কর্মকর্তা গোলাম রব্বানী। গত রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যপারে ক্ষুব্ধ উপদেষ্টা বলেছেন, ‘এটা গ্রহণযোগ্য নয়, ফ্যাসিবাদের অনেক কিছু আমরা লক্ষ করছি।’

প্রত্যাক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার দুপুরে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা রংপুর আরডিআরএসের রোকেয়া মিলনায়তনে পশুপালন ও দুগ্ধ উন্নয়ন প্রকল্পের রংপুর বিভাগের অগ্রগতি পর্যালোচনা কর্মশালার আয়োজন করে প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তদর। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন প্রাণি ও মৎস সম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। কর্মশালার শুরুর আনুষ্ঠাকিতার পর প্রকল্পের রংপুর বিভাগের অগ্রগতি পর্যালোচনা নিয়ে একটি ভার্চুয়াল প্রেজেনটেশন উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক রংপুর বিভাগীয় প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা গোলাম রব্বানী। প্রেজেনটেশনে দেখা যায় মনিটরে স্ক্রীপ্টের ওপরে শোভা পাচ্ছে হচ্ছে শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি এবং তাদের বানী। এনিয়ে হৈচৈ শুরু হলেও তিনি প্রেজেনটেশন চালিয়ে যান। এঘটনায় রোকেয়া মিলনায়তনে উপস্থিত উপদেষ্টাসহ কর্মকর্তারা হতভম্ব হয়ে পড়েন। তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এসময় তড়িঘড়ি করে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন অনুষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রাণি সম্পদ বিভাগের রংপুর বিভাগীয় কর্মকর্তা গোলাম রব্বানী

পরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন প্রাণি সম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। প্রেজেন্টেশনে কিভাবে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার ছবির দেখানো হলো এমন প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা ফরিদা বলেন, ‘ এটা ইচ্ছাকৃত হলে এটা আসলে অবমাননাকর। এটা যথেষ্ট অবমাননাকর। এই অন্তবর্তীকালিন সময়ে এতগুলো মানুষের রক্তের পর ওদের (শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনা) ছবি কোনমতেই গ্রহণযোগ্য নয়।

তিনি আরও বলেন, ‘এগুলো হচ্ছে। আরও বহুরকম ঘটনা ঘটছে। ফ্যাসিবাদ আমরা মনে করি না যেন জাস্ট চলে গেছে। ফ্যাসিবাদের অনেক রকম রুপ থাকে। তার কিছু কিছু হয়তো প্রতিফলন আমরা দেখতে পাচ্ছি। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।

তিনি বলেন, ‘ আমাকে তিনি (প্রকল্প পরিচালক) জানিয়েছেন যে এটা তার ভুলক্রমে হয়ে গেছে। তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। কাজেই আমি বলবো-সেটা ভুলক্রমেই হয়েছে বলেই জেনেছি। উনি ক্ষমা চেয়েছেন। আমি তার ক্ষমাটাকে সবার কাছে উপস্থাপন করলাম। ব্যাপারটা আমাকে আর একটু ভালো করে জানতে হবে। আমি অবশ্যই এ ব্যপারে ব্যবস্থা নেবো।

প্রাণি সম্পদ উপদেষ্টা বলেন, মৎস ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব হলো প্রাণির সকল রোগকে নিয়ন্ত্রণ করা। মানুষকে মাংস. দুধ ডিম দিতে গেলে এগুলোকে আমাদের নিরাপদ করেই মানুষকে দিতে হবে। প্রাণিকে রোগমুক্তকরতে হবে।

তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে সেজন্য আমরা ভ্যাকসিন উৎপাদনের টার্গেট নিয়েছি। সেটা আমরা করবো। কারণ ভ্যাকসিন আমদানি করার কারনে দাম বেড়ে যায়। প্রাইভেট সেক্টরে খামারিদের অনেক অসুবিধা হয়। আমার যেন সবগুলি প্রাণিকে ভাকসিনের আওতায় আনতে পারি। তাই আমরা ভ্যাকসিন উৎপাদনের কার্যক্রম শুরু করবো ‘অনুষ্ঠানে প্রানি সম্পদ বিভাগের রংপুর বিভাগের ৮ জেলা উপজেলার প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তাসহ উর্ধতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।