নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে তিস্তা নদীসহ ছোট ৪ টি নদী। এর মধ্যে নাউতার, বুড়িতিস্তা, কুমলাই ও ধুম নদী । এক সময়ের খরস্রোতা ছোট নদীগুলো প্রভাবশালীদের অবৈধ দখলের কারনে ক্রমান্বয়ে দিনের পর দিন নিশ্চিহ্ন হতে বসেছে। গত ৩ বছর পূর্বে আগের অবস্থায় ফেরাতে নাউতারা ও ধুম নদী খনন করা হয়েছিল কিন্তু সেটা কোন কাজেই আসেনি।
পুনঃখননের পরেও নদী দুটির পানি শুকিয়ে জেগে উঠে বালু চরে পরিনত হয়েছে । নদী দুটোর বুকে এখন ধান ও নানা জাতের ফসল চাষাবাদ করা হয়ে থাকে। এখন এ দুটোর বুক জুড়ে ধান ও বিভিন্ন রকমের ক্ষেতের সবুজ সমারোহ । চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না যে পূর্বের কানায় কানায় জলে ভরা টই টুম্বুর নদী এখন শুকিয়ে বালু চর ও ভুমি খেকোদের আবাদের জমিতে পরিনত হয়েছে । অপরদিকে নদীতে পানি না থাকার সুযোগে একটি বালু খেকো চক্র নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রির জমজমাট ব্যবসা করছে । নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বালু ব্যবসায়ী জানান, বিভিন্ন দলের লোকজন প্রভাব খাটিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে ব্যবসা করছে। তারা করতে পারলে আমরা করতে পারব না কেন। আইন সবার জন্য সমান। প্রশাসন তাদেরকে বন্ধ করুক, আমিও নদী থেকে আর বালু উত্তোলন করব না।
ব্যাপক হারে বালু উত্তোলনের কারনে নদীর গতিপথ বদলে যাওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্যে উপর প্রভাব পড়ছে । ব্যাহত হচ্ছে নদীমাত্রিক জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন।
নদী বিশেষজ্ঞরা বলছেন , নদীগুলোকে পুনর্জীবিত করতে হলে পরিকল্পিতভাবে নদী খনন করতে হবে। শুধু খনন করলেই হবে না। এগুলোকে রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকি করতে হবে। এবং প্রতি এক দুই বছর অন্তর পুনঃখননের মাধ্যমে গতিপথ সচল রাখতে হবে। গত ৩ বছর পূর্বে পুনঃখননের কাজ করা হলেও নামে মাত্র লোক দেখানো। কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে আগের মতোই রয়ে গেছে এ সব নাম সর্বস্ব নদী। তৎসময়ে খননকাজের নামে বরাদ্দ দেখিয়ে মোটা অংকের অর্থ আত্মসাৎ করা হয় । এর ফলে নদী খননের লক্ষ্য উদ্দেশ্য ভেস্তে গিয়ে গুড়ে বালুর মত অবস্থা হয়েছে ।
পাউবোর ডালিয়া কার্যালয় সূত্র মতে, দেশে ছোট নদ-নদী, খাল ও জলাশয় খনন করে পানি সংরক্ষণের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে একটি প্রকল্প হাতে নেয় তৎকালীন সরকার । সেই সময়ে ঐ প্রকল্পের অধীনে ১২ কোটি টাকা ব্যায়ের নাউতারা ও ধুম নদীর ৪০ কিলোমিটার খননের কাজ করে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ । খননের কাজ সম্পন্ন হয় গত ২০২২ সালে ।
স্থানীয় লোকজন জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নাউতারা ও ধুম নদী থেকে খনন করা বালু স্তুপ করে নদীর দু ধারেই রেখে দেয়ার কারনে সেগুলো বৃষ্টির পানির তোড়ে পুনরায় নদীগর্ভে গিয়ে ভরাট হয়ে যায়। ফলে খননের কাজ শেষ না হতেই নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে অকার্যকর হয়ে পড়ে । নদীগুলো নাব্যতা ফিরে পাওয়ার বদলে নব্যতা হারিয়ে চড়ে পরিনত হয় । সেই সুযোগে স্থানীয় প্রভাবশালীরা অবৈধ দখল নিয়ে সেখানে ধান চাষ সহ নানা রকমের ফসল আবাদ শুরু করেন ।
সরজমিনে দেখা যায়, নাউতারা ও ধুম নদী দটোই মাইলের পর মাইল বালু ও পলি মাটি জমে ভরাট হয়ে গেছে। দুই তীরের প্রভাবশালীরা দখল করে চাষাবাদ করছেন, আবার বিভিন্ন দলীয় পরিচয় ধারী প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও নদী থেকে বালু উত্তোলন করে ও মাটি কেটে বিক্রি করছেন নির্দ্বিধায়।
ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ধুম নদীতে বাঁধ দিয়ে কৃত্রিম চর সৃষ্টি করে ধান চাষ করা হয়েছে । সেখানে নদীর পার কেটে ট্রাক্টরে ভরে বিক্রি করছেন প্রভাবশালী বালু ব?্যবসায়ী চক্র।
পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড়সিংহেশ্বর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা আ. ছালাম বলেন, নদীতে যাদের জমি ভেঙে গেছে তারাই বাধ দিয়ে চাষাবাদ করছে তা নয় এলাকায় জোর যার নদীর জমি তার এমনটিও হয়েছে । নদীর একপাশে বাধ দিলে অন্যপাশে বালুর স্তর জমে চর জেগে ওঠে । অথচ উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, নদীর স্বাভাবিক গতিধারা বাধাগ্রস্ত করা দ-নীয় অপরাধ।
স্থানীয়রা বলছেন, উৎসমুখে অপরিকল্পিত বাঁধ দিয়ে কুমলাই নদীকে মেরে ফেলেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ।
একইভাবে বুড়িতিস্তা নদীও বাড়ি নিশ্চিহ্ন হতে বসেছে ।
নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা বলছেন , নদীগুলির যেটুকু অস্তিত্ব রয়েছে, তা এখন দখলদার ও বালু দস্যুদের কবলে রয়েছে । অপরিকল্পিত খনন আর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় নদীগুলো ধানের জমি আর বালু মহালে পরিণত হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মীর হাসান আল বান্না বলেন, বহুকাল ধরে এ দেশে নদীর পানিতেই চাষাবাদ হতো । এখন নদীগুলো পনিশূন্য হয়ে পড়ায় বিকল্প সেচব্যবস্থা করতে হয়েছে। এতে শুধু সেচ খরচই বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ । এ ছাড়া নদীতে পানি না থাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। সে জন্য ছোট নদীগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার বিকল্প নেই।
নদী রক্ষায় কাজ করা ‘রিভারাইন পিপল’ এর পরিচালক ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ বলেন, পাউবোর নদী খননের কার্যক্রম অপরিকল্পিত। সেটা বিজ্ঞানসম্মত হয়না। খননের সময়ে নদীর প্রকৃত প্রস্থ মেপে দেখার প্রয়োজন তাঁরা মনে করেননা। যদি নদী শুধু খনন করা হয় আর নদীর পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি করতে ব্যর্থ হন, তাহলে নদী রক্ষা করা কঠিন হবে।
অপরিকল্পিত খননের বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরি বলেন, মাটির ধরনের কারণে এ অঞ্চলের নদী খননের পর
সমস্যা হচ্ছে । নদীগুলোতে বালুর পরিমাণ বেশি। তাই খননের পরপরই আবার ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এমন নদীতে পানি প্রবাহ রাখা কঠিন। তবে নদী দখল ও বাঁধ দিয়ে ফসল চাষের সুযোগ নেই ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরানুজ্জামান জানান, গত ২১শে আগস্ট ডিমলা উপজেলার নাউতরা ও ধুম নদীর অবৈধ দখল ও দূষণ ও নব্যতার বিষয়ে পরিদর্শনের নিমিত্তে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের উপপরিচালক, (গবেষণা ও পরীক্ষণ) মো. আমিনুর রহমান ও সহকারী প্রধান, (জিও টেকনিক্যাল) মো. তৌহিদুল আজিজ, এবং সহকারী পরিচালক, (পরীক্ষণ ও সমন্বয়) তহিদুর রহমান, সমন্বয়ে গঠিত প্রতিনিধি দল পরিদর্শন করেন । তারা মূলত নদ-নদী গুলো অবৈধ দখল উচ্ছেদপূর্বক জরিপের মাধ্যমে সীমনানির্ধারণসহ পুনঃখনন করে নদী গুলো সচল করে আগের অবস্থানে ফেরাতে প্রয়োজনীয় কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যেই মালিকানাধীন বেশ কিছু জমি নদী গুলোর গর্ভে চলে গেছে নতুন করে আর যেন নদীতে না যায় সে ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বলেছি।
মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে তিস্তা নদীসহ ছোট ৪ টি নদী। এর মধ্যে নাউতার, বুড়িতিস্তা, কুমলাই ও ধুম নদী । এক সময়ের খরস্রোতা ছোট নদীগুলো প্রভাবশালীদের অবৈধ দখলের কারনে ক্রমান্বয়ে দিনের পর দিন নিশ্চিহ্ন হতে বসেছে। গত ৩ বছর পূর্বে আগের অবস্থায় ফেরাতে নাউতারা ও ধুম নদী খনন করা হয়েছিল কিন্তু সেটা কোন কাজেই আসেনি।
পুনঃখননের পরেও নদী দুটির পানি শুকিয়ে জেগে উঠে বালু চরে পরিনত হয়েছে । নদী দুটোর বুকে এখন ধান ও নানা জাতের ফসল চাষাবাদ করা হয়ে থাকে। এখন এ দুটোর বুক জুড়ে ধান ও বিভিন্ন রকমের ক্ষেতের সবুজ সমারোহ । চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না যে পূর্বের কানায় কানায় জলে ভরা টই টুম্বুর নদী এখন শুকিয়ে বালু চর ও ভুমি খেকোদের আবাদের জমিতে পরিনত হয়েছে । অপরদিকে নদীতে পানি না থাকার সুযোগে একটি বালু খেকো চক্র নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রির জমজমাট ব্যবসা করছে । নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বালু ব্যবসায়ী জানান, বিভিন্ন দলের লোকজন প্রভাব খাটিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে ব্যবসা করছে। তারা করতে পারলে আমরা করতে পারব না কেন। আইন সবার জন্য সমান। প্রশাসন তাদেরকে বন্ধ করুক, আমিও নদী থেকে আর বালু উত্তোলন করব না।
ব্যাপক হারে বালু উত্তোলনের কারনে নদীর গতিপথ বদলে যাওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্যে উপর প্রভাব পড়ছে । ব্যাহত হচ্ছে নদীমাত্রিক জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন।
নদী বিশেষজ্ঞরা বলছেন , নদীগুলোকে পুনর্জীবিত করতে হলে পরিকল্পিতভাবে নদী খনন করতে হবে। শুধু খনন করলেই হবে না। এগুলোকে রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকি করতে হবে। এবং প্রতি এক দুই বছর অন্তর পুনঃখননের মাধ্যমে গতিপথ সচল রাখতে হবে। গত ৩ বছর পূর্বে পুনঃখননের কাজ করা হলেও নামে মাত্র লোক দেখানো। কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে আগের মতোই রয়ে গেছে এ সব নাম সর্বস্ব নদী। তৎসময়ে খননকাজের নামে বরাদ্দ দেখিয়ে মোটা অংকের অর্থ আত্মসাৎ করা হয় । এর ফলে নদী খননের লক্ষ্য উদ্দেশ্য ভেস্তে গিয়ে গুড়ে বালুর মত অবস্থা হয়েছে ।
পাউবোর ডালিয়া কার্যালয় সূত্র মতে, দেশে ছোট নদ-নদী, খাল ও জলাশয় খনন করে পানি সংরক্ষণের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে একটি প্রকল্প হাতে নেয় তৎকালীন সরকার । সেই সময়ে ঐ প্রকল্পের অধীনে ১২ কোটি টাকা ব্যায়ের নাউতারা ও ধুম নদীর ৪০ কিলোমিটার খননের কাজ করে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ । খননের কাজ সম্পন্ন হয় গত ২০২২ সালে ।
স্থানীয় লোকজন জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নাউতারা ও ধুম নদী থেকে খনন করা বালু স্তুপ করে নদীর দু ধারেই রেখে দেয়ার কারনে সেগুলো বৃষ্টির পানির তোড়ে পুনরায় নদীগর্ভে গিয়ে ভরাট হয়ে যায়। ফলে খননের কাজ শেষ না হতেই নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে অকার্যকর হয়ে পড়ে । নদীগুলো নাব্যতা ফিরে পাওয়ার বদলে নব্যতা হারিয়ে চড়ে পরিনত হয় । সেই সুযোগে স্থানীয় প্রভাবশালীরা অবৈধ দখল নিয়ে সেখানে ধান চাষ সহ নানা রকমের ফসল আবাদ শুরু করেন ।
সরজমিনে দেখা যায়, নাউতারা ও ধুম নদী দটোই মাইলের পর মাইল বালু ও পলি মাটি জমে ভরাট হয়ে গেছে। দুই তীরের প্রভাবশালীরা দখল করে চাষাবাদ করছেন, আবার বিভিন্ন দলীয় পরিচয় ধারী প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও নদী থেকে বালু উত্তোলন করে ও মাটি কেটে বিক্রি করছেন নির্দ্বিধায়।
ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ধুম নদীতে বাঁধ দিয়ে কৃত্রিম চর সৃষ্টি করে ধান চাষ করা হয়েছে । সেখানে নদীর পার কেটে ট্রাক্টরে ভরে বিক্রি করছেন প্রভাবশালী বালু ব?্যবসায়ী চক্র।
পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড়সিংহেশ্বর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা আ. ছালাম বলেন, নদীতে যাদের জমি ভেঙে গেছে তারাই বাধ দিয়ে চাষাবাদ করছে তা নয় এলাকায় জোর যার নদীর জমি তার এমনটিও হয়েছে । নদীর একপাশে বাধ দিলে অন্যপাশে বালুর স্তর জমে চর জেগে ওঠে । অথচ উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, নদীর স্বাভাবিক গতিধারা বাধাগ্রস্ত করা দ-নীয় অপরাধ।
স্থানীয়রা বলছেন, উৎসমুখে অপরিকল্পিত বাঁধ দিয়ে কুমলাই নদীকে মেরে ফেলেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ।
একইভাবে বুড়িতিস্তা নদীও বাড়ি নিশ্চিহ্ন হতে বসেছে ।
নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা বলছেন , নদীগুলির যেটুকু অস্তিত্ব রয়েছে, তা এখন দখলদার ও বালু দস্যুদের কবলে রয়েছে । অপরিকল্পিত খনন আর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় নদীগুলো ধানের জমি আর বালু মহালে পরিণত হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মীর হাসান আল বান্না বলেন, বহুকাল ধরে এ দেশে নদীর পানিতেই চাষাবাদ হতো । এখন নদীগুলো পনিশূন্য হয়ে পড়ায় বিকল্প সেচব্যবস্থা করতে হয়েছে। এতে শুধু সেচ খরচই বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ । এ ছাড়া নদীতে পানি না থাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। সে জন্য ছোট নদীগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার বিকল্প নেই।
নদী রক্ষায় কাজ করা ‘রিভারাইন পিপল’ এর পরিচালক ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ বলেন, পাউবোর নদী খননের কার্যক্রম অপরিকল্পিত। সেটা বিজ্ঞানসম্মত হয়না। খননের সময়ে নদীর প্রকৃত প্রস্থ মেপে দেখার প্রয়োজন তাঁরা মনে করেননা। যদি নদী শুধু খনন করা হয় আর নদীর পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি করতে ব্যর্থ হন, তাহলে নদী রক্ষা করা কঠিন হবে।
অপরিকল্পিত খননের বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরি বলেন, মাটির ধরনের কারণে এ অঞ্চলের নদী খননের পর
সমস্যা হচ্ছে । নদীগুলোতে বালুর পরিমাণ বেশি। তাই খননের পরপরই আবার ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এমন নদীতে পানি প্রবাহ রাখা কঠিন। তবে নদী দখল ও বাঁধ দিয়ে ফসল চাষের সুযোগ নেই ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরানুজ্জামান জানান, গত ২১শে আগস্ট ডিমলা উপজেলার নাউতরা ও ধুম নদীর অবৈধ দখল ও দূষণ ও নব্যতার বিষয়ে পরিদর্শনের নিমিত্তে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের উপপরিচালক, (গবেষণা ও পরীক্ষণ) মো. আমিনুর রহমান ও সহকারী প্রধান, (জিও টেকনিক্যাল) মো. তৌহিদুল আজিজ, এবং সহকারী পরিচালক, (পরীক্ষণ ও সমন্বয়) তহিদুর রহমান, সমন্বয়ে গঠিত প্রতিনিধি দল পরিদর্শন করেন । তারা মূলত নদ-নদী গুলো অবৈধ দখল উচ্ছেদপূর্বক জরিপের মাধ্যমে সীমনানির্ধারণসহ পুনঃখনন করে নদী গুলো সচল করে আগের অবস্থানে ফেরাতে প্রয়োজনীয় কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যেই মালিকানাধীন বেশ কিছু জমি নদী গুলোর গর্ভে চলে গেছে নতুন করে আর যেন নদীতে না যায় সে ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বলেছি।