ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসার এম,জি ফারুক হোসেন চৌধুরী প্রায় দিনই অফিসে অনুপস্থিত থাকায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির ও হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। তিনি সপ্তাহে প্রায় দুই দিন অফিস কার্যালয়ে অনুপস্থিত থাকায় সরকারী আর্থিক নথিপত্র, বিল-ভাউচার এবং বেতন-ভাতার কাগজ পত্রে নিয়মিত স্বাক্ষর না হওয়ায় সীমাহীন হয়রানীর শিকার হচ্চেন সেবা নিতে আসা সরকারী, আধা সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অবসরে যাওয়া শিক্ষক শিক্ষিকা ও কর্মচারীরা। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে, তিনি ঘুষ ছাড়া কোন বিলে স্বাক্ষর করেন না। সে কারণে সেবা গ্রহীতাদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অবিলম্বে হিসাব রক্ষণ অফিসের অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তারা।
অফিস সূত্রে জানা গেছে, ডিমলা উপজেলায় এসএএস সুপারেনটেনডেন্ট পদটি বর্তমানে শূন্য। এই পদে থাকা কর্মকর্তা মো.আব্দুর রহমান গত কয়েক মাস ধরে রাজশাহীতে একটি উচ্চতর প্রশিক্ষণে আছেন। ফলে পুরো অফিসের দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসার এম. জি. ফারুক আহমেদ চৌধুরী।
অভিযোগ আছে, তিনি প্রতি বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার পর অফিস থেকে চলে যান এবং রোববার অফিসে থাকেন না। সোমবারও তিনি দুপুরের পর অফিসে আসেন। এর ফলে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত এ হিসাব রক্ষণ অফিসে কোনো কর্মকর্তা থাকেনা।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সকল সরকারি দপ্তর খোলা রেখে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাধ্যবাতামুলক থাকার কথা থাকলেও ডিমলার হিসাবরক্ষণ অফিসে সরকারী এই নিয়ম মানা হচ্ছে না।
ভুক্তভোগীরা জানান, প্রায় দিন হিসাব রক্ষণ অফিস সকাল ১০টা, ১১টা, এমনকি দুপুর ১২টার পরও খোলা হয়ে থাকে। এতে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা সেবাগ্রহীতাদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়।
সেবা নিতে আসা অনেক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন, কর্মকর্তাকে না পেয়ে তাদের বারবার ফিরে যেতে হয়। একই সঙ্গে, ঘুষ ছাড়া কোনো বিল-ভাউচার অনুমোদন করা হয় না বলেও তাঁরা অভিযোগ করেছেন।
ভুক্তভোগী ইদ্রিস আলী বলেন, অফিসে কর্মকর্তাকে পাওয়া যায় না। কাজ করতে গেলে নিয়মিত টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে ফাইল আটকে রাখা হয়।
ভুক্তভোগী ফজলুল হক বলেন, সরকারি অফিসে ঘুষ এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। ঘুষ না দিলে নদীপত্রে স্বাক্ষর তো দূরের কথা হাত দেয়া হয় না।
স্থানীয় কর্মচারীরা জানিয়েছেন, উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিস সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক। এখান থেকেই বিভিন্ন দপ্তরের বেতন-ভাতা, বিল-ভাউচারসহ সব আর্থিক কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। অথচ কর্মকর্তার অনিয়মিত উপস্থিতি ও দুর্নীতির কারণে এসব গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে ডিমলা উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা এম. জি. ফারুক আহমেদ চৌধুরী বলেছেন, আমি নিয়মিত অফিসে উপস্থিত থাকি। ব্যক্তিগত কারণে কোনো দিন দেরি হলে তা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। যারা অভিযোগ করছেন, তারা হয়তো ব্যক্তিগত স্বার্থে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
সচেতন মহলের দাবী, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার অনুপস্থিতি এবং ঘুষের অভিযোগের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি দেয়া হোক। তারা আরো বলেন যে, উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা এমজি ফারুক হোসেন চৌধুরীর ঘুষ বাণিজ্য বন্ধ সহ ও অফিসে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারেরও হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরানুজ্জামান বলেন, অফিসে কর্মকর্তার অনিয়মিত উপস্থিতির বিষয়ে অভিযোগ পেলে তা খতিয়ে দেখা হবে। সেবাগ্রহীতাদের ভোগান্তি দূর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রংপুর বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক (ডিসিএ) মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ডিমলা উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে কর্মকর্তার অনিয়মিত উপস্থিতি ও দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসার এম,জি ফারুক হোসেন চৌধুরী প্রায় দিনই অফিসে অনুপস্থিত থাকায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির ও হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। তিনি সপ্তাহে প্রায় দুই দিন অফিস কার্যালয়ে অনুপস্থিত থাকায় সরকারী আর্থিক নথিপত্র, বিল-ভাউচার এবং বেতন-ভাতার কাগজ পত্রে নিয়মিত স্বাক্ষর না হওয়ায় সীমাহীন হয়রানীর শিকার হচ্চেন সেবা নিতে আসা সরকারী, আধা সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অবসরে যাওয়া শিক্ষক শিক্ষিকা ও কর্মচারীরা। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে, তিনি ঘুষ ছাড়া কোন বিলে স্বাক্ষর করেন না। সে কারণে সেবা গ্রহীতাদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অবিলম্বে হিসাব রক্ষণ অফিসের অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তারা।
অফিস সূত্রে জানা গেছে, ডিমলা উপজেলায় এসএএস সুপারেনটেনডেন্ট পদটি বর্তমানে শূন্য। এই পদে থাকা কর্মকর্তা মো.আব্দুর রহমান গত কয়েক মাস ধরে রাজশাহীতে একটি উচ্চতর প্রশিক্ষণে আছেন। ফলে পুরো অফিসের দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসার এম. জি. ফারুক আহমেদ চৌধুরী।
অভিযোগ আছে, তিনি প্রতি বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার পর অফিস থেকে চলে যান এবং রোববার অফিসে থাকেন না। সোমবারও তিনি দুপুরের পর অফিসে আসেন। এর ফলে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত এ হিসাব রক্ষণ অফিসে কোনো কর্মকর্তা থাকেনা।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সকল সরকারি দপ্তর খোলা রেখে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাধ্যবাতামুলক থাকার কথা থাকলেও ডিমলার হিসাবরক্ষণ অফিসে সরকারী এই নিয়ম মানা হচ্ছে না।
ভুক্তভোগীরা জানান, প্রায় দিন হিসাব রক্ষণ অফিস সকাল ১০টা, ১১টা, এমনকি দুপুর ১২টার পরও খোলা হয়ে থাকে। এতে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা সেবাগ্রহীতাদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়।
সেবা নিতে আসা অনেক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন, কর্মকর্তাকে না পেয়ে তাদের বারবার ফিরে যেতে হয়। একই সঙ্গে, ঘুষ ছাড়া কোনো বিল-ভাউচার অনুমোদন করা হয় না বলেও তাঁরা অভিযোগ করেছেন।
ভুক্তভোগী ইদ্রিস আলী বলেন, অফিসে কর্মকর্তাকে পাওয়া যায় না। কাজ করতে গেলে নিয়মিত টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে ফাইল আটকে রাখা হয়।
ভুক্তভোগী ফজলুল হক বলেন, সরকারি অফিসে ঘুষ এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। ঘুষ না দিলে নদীপত্রে স্বাক্ষর তো দূরের কথা হাত দেয়া হয় না।
স্থানীয় কর্মচারীরা জানিয়েছেন, উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিস সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক। এখান থেকেই বিভিন্ন দপ্তরের বেতন-ভাতা, বিল-ভাউচারসহ সব আর্থিক কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। অথচ কর্মকর্তার অনিয়মিত উপস্থিতি ও দুর্নীতির কারণে এসব গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে ডিমলা উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা এম. জি. ফারুক আহমেদ চৌধুরী বলেছেন, আমি নিয়মিত অফিসে উপস্থিত থাকি। ব্যক্তিগত কারণে কোনো দিন দেরি হলে তা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। যারা অভিযোগ করছেন, তারা হয়তো ব্যক্তিগত স্বার্থে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
সচেতন মহলের দাবী, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার অনুপস্থিতি এবং ঘুষের অভিযোগের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি দেয়া হোক। তারা আরো বলেন যে, উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা এমজি ফারুক হোসেন চৌধুরীর ঘুষ বাণিজ্য বন্ধ সহ ও অফিসে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারেরও হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরানুজ্জামান বলেন, অফিসে কর্মকর্তার অনিয়মিত উপস্থিতির বিষয়ে অভিযোগ পেলে তা খতিয়ে দেখা হবে। সেবাগ্রহীতাদের ভোগান্তি দূর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রংপুর বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক (ডিসিএ) মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ডিমলা উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে কর্মকর্তার অনিয়মিত উপস্থিতি ও দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।