ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ৫ জনের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ২ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩ জন। এ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ১৬১ জন মারা গেছেন।
ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৫ জনের, আক্রান্ত আরও
৬২২ জন
ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া এডিস মশাবাহিত দুই রোগের উপসর্গ প্রায় এক
আর নতুন আক্রান্ত ৬২২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯ হাজার ৮১৪ জন। আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৩১ জন, চট্টগ্রাম ৯৮ জন, ঢাকা বিভাগে ১০৪ জন, খুলনা বিভাগে ১৪ জন, ময়মনসিংহ ১৯ জন, রাজশাহী ৫১ জন, রংপুর বিভাগে ৬ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০৮ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ৪৬ জন, সোহ্রাওয়ার্দীতে ৫৮ জন, মহাখালী ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে ১১৫ জন ভর্তি আছে। এভাবে রাজধানীর ১৮টি হাসপাতালে এখনও ৫৪৪ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন। এছাড়া, সারাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এখনও ১ হাজার ৯৬৫ জন ভর্তি আছে।
যেভাবে বুঝবেন ডেঙ্গু নাকি চিকুনগুনিয়া হয়েছে
বাংলাদেশে বেশ কিছুদিন ধরে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের প্রকোপ বেড়েছে। এডিস মশাবাহিত এই দুই রোগের উপসর্গ প্রায় একই রকম।
এ কারণে অনেক রোগীরই প্রাথমিকভাবে ডেঙ্গুর টেস্ট করানো হয়, কিন্তু এর ফল নেগেটিভ আসে। পরে আবারও টেস্ট করিয়ে চিকুনগুনিয়া রোগ শনাক্ত হয়েছে এমন কথা জানিয়েছেন অনেকেই।
একই মশাবাহিত এই দুই রোগের উপসর্গ এক হলেও বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের মূল পার্থক্য উভয়ের উপসর্গেই উঠে আসে। চিকুনগুনিয়ার অন্যতম উপসর্গ তীব্র ব্যথা। ডেঙ্গুতে র্যাশ হলেও শরীরের চামড়া কালো হয়ে যায় না।
চিকুনগুনিয়ার উপসর্গ
চিকুনগুনিয়াতে ডেঙ্গুর মতো সব উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা দেয় না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এর অন্যতম উপসর্গ তীব্র ব্যথা। এছাড়া, চিকুনগুনিয়াতে আক্রান্ত রোগীর প্রথমেই জ্বর হয়। কিন্তু দুই-তিন দিন পরে জ্বরের তীব্রতা খুব একটা বেশি থাকে না। পরে থেমে থেমে আবার রোগী জ্বরে আক্রান্ত হন। সেটা কখনো কখনো ১০২-১০৪ ডিগ্রিও হয়।
শরীরের প্রতি জয়েন্টে তীব্র ব্যথা থাকে। প্রায় সব সারলেও এই ব্যথা রয়ে যায়। তীব্র ব্যথায় রোগী হাঁটাচলা করতে পারে না, বসলে উঠতে পারে না এমন পরিস্থিতিও
তৈরি হয়। এক নজরে চিকুনগুনিয়ার উপসর্গগুলো- ১. চিকুনগুনিয়া রোগের অন্যতম উপসর্গ জ্বরের পরে রোগীর পুরো শরীরের গিরায় গিরায় ব্যথা হয়। ২. হাত-পা ফুলে যায়। ৩. শরীরে র্যাশ তেমন একটা হয় না বললেই চলে। ৪. তীব্র মাথা ব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা হয়। ৫. এই রোগে রক্তের প্লাটিলেট কমে যাওয়া বা রক্তক্ষরণ হয় না। ৬. রোগী শক সিনড্রোমে চলে যাওয়া অথবা এই রোগে মৃত্যুঝুঁকি একদমই নেই। ৭. অনেক সময় চিকুনগুনিয়া রোগে আক্রান্ত রোগীর স্কিন বা চামড়ায়ও প্রভাব পড়ে। অনেকের গায়ের রং কালো হয়ে যায়, চামড়া উঠে। ৮. এই রোগে মৃত্যুঝুঁকি না থাকলেও দীর্ঘমেয়াদে ভুগতে হয় আক্রান্ত রোগীকে। ৯. চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির লিভার, হার্ট বা কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। ৩. খাবারে অনীহা এই রোগের রোগীদেরও রয়েছে।
# ডেঙ্গুর উপসর্গ:
ডেঙ্গুজ্বরে এখন তীব্র তাপমাত্রা থাকে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী অনেক সময় শক সিনড্রোমে চলে যায়। এর উপসর্গগুলো হলো- ১. জ্বরের চার-পাঁচদিন পরে শরীরে লাল র?্যাশ হয়। র?্যাশটা বেশিই হয়। ২. রক্তের প্লাটিলেট কমে যায়। ফলে রক্তক্ষরণ হয়। ৩. একজন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি থাকে। ৪. ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর শরীরে ব্যথাও থাকে, তবে ততটা তীব্র নয়। ৫. অনেক সময় ‘এক্সপান্ডেড ডেঙ্গু’ যেমন এই জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির লিভার, হার্ট, কিডনিসহ শরীরের নানা অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ফলে সেই অনুযায়ী রোগীকে চিকিৎসা দিতে হয়। ৬. ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা খেতে পারেন না, বমি করেন।
উপসর্গ থেকে ধারণা পাওয়া গেলেও দু’টি রোগের ক্ষেত্রেই ল্যাবরেটরি পরীক্ষার মাধ্যমেই চিকিৎসক নিশ্চিত হতে পারেন যে রোগী ঠিক কী রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
বাংলাদেশে প্রথম ২০০৮ সালে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়। এরপরে ২০১৭ সালে ব্যাপক হারে এই জ্বরে মানুষ আক্রান্ত হয়। এ বছর আবার এই রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানান মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা।
ডেঙ্গু রোগটি প্রথম ১৯৬০ সালের দিকে শনাক্ত হয় এই অঞ্চলে। পরে ২০০০ সালে আবার মহামারী আকারে ডেঙ্গু দেখা দেয়। এরপর থেকে দেশে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্যাটার্নের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় মানুষ।
# যেভাবে রোগ দু’টি যথাযথ নিরূপণ হবে
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে টেস্ট করালে ডেঙ্গু শনাক্ত করা যায়। তবে এর বেশি সময় পার হলে তা আর শনাক্ত হয় না। কিন্তু জ্বরে আক্রান্তের পাঁচ দিন থেকে এক সপ্তাহ পরে চিকুনগুনিয়ার টেস্ট করতে হয়। তবে এই সময়ের আগে টেস্ট করলে চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয় না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এছাড়াও চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হওয়ার আরেকটি নির্দিষ্ট টেস্ট বা পরীক্ষা আরটি- পিসিআর। চিকিৎসকরা জানান, এই পরীক্ষার মাধ্যমে ভাইরাসের আরএনএ শনাক্ত করা হয়। ৫-৭ দিনের মধ্যে এই টেস্ট বেশি কার্যকর।
আর চিকুনগুনিয়া জ্বরে আক্রান্ত রোগীর দেহে ভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি শনাক্ত করা হয় সেরোলজি টেস্টের মাধ্যমে। এই টেস্টও ৫-৭ দিনের মধ্যে করতে হয়।
# চিকিৎসা কী দেয়া হয়
ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগীকে একই ধরনের চিকিৎসা সাধারণত দেয়া হয়। জ্বরের জন্য সাধারণত প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ এবং ব্যথার জন্য পেইনকিলার দেয়া হয়ে থাকে। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে।
ডেঙ্গু রোগীর রক্তে প্লাটিলেট ও হিমোগ্লোবিন কমে গেলে, রক্তক্ষরণ হয়। ফলে রোগীকে অনেক সময় রক্তও দিতে হয়। তবে চিকুনগুনিয়াতে এসব সমস্যা হয় না বলে শুধু ব্যথা কমানোর পেইনকিলার দেয়া হয়।
আবার অনেক সময় চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগীকে থেরাপিও দিতে হয় বলে জানান মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এ বি এম আব্দুল্লাহ।
দুই রোগের রোগীদেরই প্রচুর পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার ও ফল খেতে পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের প্রচুর পরিমাণে পানি, ডাবের পানি, শরবত, জুস, গ্লুকোজ, স্যুপ, দুধ খেতে হয়। অনেক সময় বমির কারণে খাবার খেতে না পারলে তখন স্যালাইনও দেয়া হয়। আর চিকুনগুনিয়ার রোগীকে তরল খাবারের পাশাপাশি বিশেষ করে ফল বেশি খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ৫ জনের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ২ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩ জন। এ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ১৬১ জন মারা গেছেন।
ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৫ জনের, আক্রান্ত আরও
৬২২ জন
ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া এডিস মশাবাহিত দুই রোগের উপসর্গ প্রায় এক
আর নতুন আক্রান্ত ৬২২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯ হাজার ৮১৪ জন। আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৩১ জন, চট্টগ্রাম ৯৮ জন, ঢাকা বিভাগে ১০৪ জন, খুলনা বিভাগে ১৪ জন, ময়মনসিংহ ১৯ জন, রাজশাহী ৫১ জন, রংপুর বিভাগে ৬ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০৮ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ৪৬ জন, সোহ্রাওয়ার্দীতে ৫৮ জন, মহাখালী ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে ১১৫ জন ভর্তি আছে। এভাবে রাজধানীর ১৮টি হাসপাতালে এখনও ৫৪৪ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন। এছাড়া, সারাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এখনও ১ হাজার ৯৬৫ জন ভর্তি আছে।
যেভাবে বুঝবেন ডেঙ্গু নাকি চিকুনগুনিয়া হয়েছে
বাংলাদেশে বেশ কিছুদিন ধরে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের প্রকোপ বেড়েছে। এডিস মশাবাহিত এই দুই রোগের উপসর্গ প্রায় একই রকম।
এ কারণে অনেক রোগীরই প্রাথমিকভাবে ডেঙ্গুর টেস্ট করানো হয়, কিন্তু এর ফল নেগেটিভ আসে। পরে আবারও টেস্ট করিয়ে চিকুনগুনিয়া রোগ শনাক্ত হয়েছে এমন কথা জানিয়েছেন অনেকেই।
একই মশাবাহিত এই দুই রোগের উপসর্গ এক হলেও বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের মূল পার্থক্য উভয়ের উপসর্গেই উঠে আসে। চিকুনগুনিয়ার অন্যতম উপসর্গ তীব্র ব্যথা। ডেঙ্গুতে র্যাশ হলেও শরীরের চামড়া কালো হয়ে যায় না।
চিকুনগুনিয়ার উপসর্গ
চিকুনগুনিয়াতে ডেঙ্গুর মতো সব উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা দেয় না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এর অন্যতম উপসর্গ তীব্র ব্যথা। এছাড়া, চিকুনগুনিয়াতে আক্রান্ত রোগীর প্রথমেই জ্বর হয়। কিন্তু দুই-তিন দিন পরে জ্বরের তীব্রতা খুব একটা বেশি থাকে না। পরে থেমে থেমে আবার রোগী জ্বরে আক্রান্ত হন। সেটা কখনো কখনো ১০২-১০৪ ডিগ্রিও হয়।
শরীরের প্রতি জয়েন্টে তীব্র ব্যথা থাকে। প্রায় সব সারলেও এই ব্যথা রয়ে যায়। তীব্র ব্যথায় রোগী হাঁটাচলা করতে পারে না, বসলে উঠতে পারে না এমন পরিস্থিতিও
তৈরি হয়। এক নজরে চিকুনগুনিয়ার উপসর্গগুলো- ১. চিকুনগুনিয়া রোগের অন্যতম উপসর্গ জ্বরের পরে রোগীর পুরো শরীরের গিরায় গিরায় ব্যথা হয়। ২. হাত-পা ফুলে যায়। ৩. শরীরে র্যাশ তেমন একটা হয় না বললেই চলে। ৪. তীব্র মাথা ব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা হয়। ৫. এই রোগে রক্তের প্লাটিলেট কমে যাওয়া বা রক্তক্ষরণ হয় না। ৬. রোগী শক সিনড্রোমে চলে যাওয়া অথবা এই রোগে মৃত্যুঝুঁকি একদমই নেই। ৭. অনেক সময় চিকুনগুনিয়া রোগে আক্রান্ত রোগীর স্কিন বা চামড়ায়ও প্রভাব পড়ে। অনেকের গায়ের রং কালো হয়ে যায়, চামড়া উঠে। ৮. এই রোগে মৃত্যুঝুঁকি না থাকলেও দীর্ঘমেয়াদে ভুগতে হয় আক্রান্ত রোগীকে। ৯. চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির লিভার, হার্ট বা কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। ৩. খাবারে অনীহা এই রোগের রোগীদেরও রয়েছে।
# ডেঙ্গুর উপসর্গ:
ডেঙ্গুজ্বরে এখন তীব্র তাপমাত্রা থাকে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী অনেক সময় শক সিনড্রোমে চলে যায়। এর উপসর্গগুলো হলো- ১. জ্বরের চার-পাঁচদিন পরে শরীরে লাল র?্যাশ হয়। র?্যাশটা বেশিই হয়। ২. রক্তের প্লাটিলেট কমে যায়। ফলে রক্তক্ষরণ হয়। ৩. একজন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি থাকে। ৪. ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর শরীরে ব্যথাও থাকে, তবে ততটা তীব্র নয়। ৫. অনেক সময় ‘এক্সপান্ডেড ডেঙ্গু’ যেমন এই জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির লিভার, হার্ট, কিডনিসহ শরীরের নানা অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ফলে সেই অনুযায়ী রোগীকে চিকিৎসা দিতে হয়। ৬. ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা খেতে পারেন না, বমি করেন।
উপসর্গ থেকে ধারণা পাওয়া গেলেও দু’টি রোগের ক্ষেত্রেই ল্যাবরেটরি পরীক্ষার মাধ্যমেই চিকিৎসক নিশ্চিত হতে পারেন যে রোগী ঠিক কী রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
বাংলাদেশে প্রথম ২০০৮ সালে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়। এরপরে ২০১৭ সালে ব্যাপক হারে এই জ্বরে মানুষ আক্রান্ত হয়। এ বছর আবার এই রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানান মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা।
ডেঙ্গু রোগটি প্রথম ১৯৬০ সালের দিকে শনাক্ত হয় এই অঞ্চলে। পরে ২০০০ সালে আবার মহামারী আকারে ডেঙ্গু দেখা দেয়। এরপর থেকে দেশে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্যাটার্নের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় মানুষ।
# যেভাবে রোগ দু’টি যথাযথ নিরূপণ হবে
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে টেস্ট করালে ডেঙ্গু শনাক্ত করা যায়। তবে এর বেশি সময় পার হলে তা আর শনাক্ত হয় না। কিন্তু জ্বরে আক্রান্তের পাঁচ দিন থেকে এক সপ্তাহ পরে চিকুনগুনিয়ার টেস্ট করতে হয়। তবে এই সময়ের আগে টেস্ট করলে চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয় না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এছাড়াও চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হওয়ার আরেকটি নির্দিষ্ট টেস্ট বা পরীক্ষা আরটি- পিসিআর। চিকিৎসকরা জানান, এই পরীক্ষার মাধ্যমে ভাইরাসের আরএনএ শনাক্ত করা হয়। ৫-৭ দিনের মধ্যে এই টেস্ট বেশি কার্যকর।
আর চিকুনগুনিয়া জ্বরে আক্রান্ত রোগীর দেহে ভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি শনাক্ত করা হয় সেরোলজি টেস্টের মাধ্যমে। এই টেস্টও ৫-৭ দিনের মধ্যে করতে হয়।
# চিকিৎসা কী দেয়া হয়
ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগীকে একই ধরনের চিকিৎসা সাধারণত দেয়া হয়। জ্বরের জন্য সাধারণত প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ এবং ব্যথার জন্য পেইনকিলার দেয়া হয়ে থাকে। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে।
ডেঙ্গু রোগীর রক্তে প্লাটিলেট ও হিমোগ্লোবিন কমে গেলে, রক্তক্ষরণ হয়। ফলে রোগীকে অনেক সময় রক্তও দিতে হয়। তবে চিকুনগুনিয়াতে এসব সমস্যা হয় না বলে শুধু ব্যথা কমানোর পেইনকিলার দেয়া হয়।
আবার অনেক সময় চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগীকে থেরাপিও দিতে হয় বলে জানান মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এ বি এম আব্দুল্লাহ।
দুই রোগের রোগীদেরই প্রচুর পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার ও ফল খেতে পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের প্রচুর পরিমাণে পানি, ডাবের পানি, শরবত, জুস, গ্লুকোজ, স্যুপ, দুধ খেতে হয়। অনেক সময় বমির কারণে খাবার খেতে না পারলে তখন স্যালাইনও দেয়া হয়। আর চিকুনগুনিয়ার রোগীকে তরল খাবারের পাশাপাশি বিশেষ করে ফল বেশি খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।