কুমিল্লার বরুড়ায় এ বছর প্রাকৃতিক পরিবেশ অনেকাংশে অনুকুলে থাকায় আর পোকা মাকড়ের উপদ্রব কম থাকায় আখ চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন চাষীরা। আর এ আখ স্থানীয় হাট বাজারে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন মৌসুমী আখ ব্যবসায়ীরা। ফলে আখের ভাল ফলনে চাষী ও ব্যবসায়ী উভয়ই খুশি। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে এ বছর এ উপজেলায় ১৫০ হেক্টর জমিতে আখের আবাদ হয়েছে। তন্মধ্যে ১৪২ হেক্টর জমিতে বিএসআরআই ৪৭ জাত (স্থানীয়ভাবে ২০৮ জাত পরিচিত) আখের আবাদ হয়েছে ১৪২ হেক্টর জমিতে। আর বাদবাকী ৮ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে রং বিলাস জাতের আখ। সরেজমিনে গিয়ে উপজেলার পৌরসভা, শিলমুড়ি উঃ ইউনিয়ন, শিলমুড়ি দঃ ইউনিয়ন, আগানগর ইউনিয়ন এবং ভবানীপুর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে কৃষকেরা তাদের জমিতে উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের পরিপক্ক আখ স্থানীয় এবং জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছেন। এ
সময় আখ চাষীদের সাথে আলাপকালে বরুড়া পৌর শহরের কামেড্ডা গ্রামের প্রান্তিক আখ চাষী মো. আবুল কাসেম জানান, তিনি গত প্রায় দুই দশক যাবৎ আখ চাষ করে আসছেন। এ বছর তিনি তার লিজ নেওয়া ২৪ শতক জমিতে বিএসআরআই ৪৭ জাতের আখ চাষ করেছেন। এতে তার উৎপাদন বাবদ ব্যয় হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। তিনি তার উৎপাদিত এ আখ বিক্রি করেছেন প্রায় ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। এতে তিনি লাভবান হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার টাকা। আখ চাষী মো. খায়ের আলী জানান, তিনি ৩ দশক যাবৎ আখ চাষ করে আসছেন। এ বছর তিনি তার লিজকৃত ৩২ শতক জমিতে বিএসআরআই ৪৭ জাতের আখ চাষ
করেছেন। এতে তার উৎপাদন বাবদ ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। আর এসব আখ বিক্রি করেছেন ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এতে তিনি লাভবান হয়েছেন
প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। শিলমুড়ি (দঃ) ইউনিয়নের আকুসার গ্রামের কৃষক মো. নুরু মিয়া জানান, তিনি গত ১০ বছর যাবত আখ চাষ করে আসছেন। এ বছর তিনি তার ৮০ শতক জমিতে বিএসআরআই ৪৭ জাতের আখ চাষ করেছেন। এতে তার উৎপাদন বাবদ ব্যয় হয়েছে প্রায় ২ লাখ টাকা। আর উৎপাদিত এসব আখ তিনি বিক্রি করেছেন প্রায় ৪ লাখ টাকা। এতে তিনি প্রায় ২ লাখ টাকা লাভবান হয়েছেন। এছাড়া তারা আরও জানান, ধান চাষের চেয়ে অধিক লাভবান হয় আখ জাতীয় ফসল চাষ করে আসছেন। আর গত বছর বন্যার কারণে তারা আখ চাষ করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলেন। এর আগের বছর আখের ভাল ফলন পাওয়ার পরে ও প্রাকৃতিক ঝড়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় তেমন লাভের মুখ দেখেননি।
এ বছর প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকুলে থাকায় আর পোকা মাকড়ের উপদ্রব কম থাকায় আখের ফলন ভাল হয়েছে। যার ফলে তাদের উৎপাদিত এসব আখ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে তারা লাভবান হচ্ছেন। এতে তারা মহা খুশি। তবে আখ চাষে স্থানীয় ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে ঋণ পাওয়া গেলে আচাষে তারা অধিকতর উপকৃত হতেন। অন্য আখ চাষীরা ও একই অভিমত ব্যক্ত করেন। অপরদিকে উপজেলার বরুড়া সদর বাজার, আমড়াতলী বাজার, সুলতানপুর বাজারসহ বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা গেছে এ উপজেলার কৃষকদের উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের আখ মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন। এ সময় ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপকালে আখ ব্যবসায়ী আবদুর খালেক জানান, প্রকারভেদে প্রতিটি
আখ বিক্রি করে তিনি ২০ থেকে ৩০ টাকা লাভবান হচ্ছেন। আখ ব্যবসায়ী মো. মোস্তফা জানান, তিনি চলতি মৌসুমে কৃষকদের কাছ থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকার আখ ক্রয় করেছেন। এ আখ বাজারে বিক্রি করে এতে তিনি প্রায় দেড় লাখ টাকা লাভবান হওয়ার আশা ব্যক্ত করছেন। এছাড়া তারা আর ও জানান, অন্যান্য
বছরের তুলনায় এ বছরের আখ অনেক পুষ্ট এবং আকারে অনেক লম্বা হয়েছে। বাজারে আখ বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। এতে তারা খুশি। অন্য আখ ব্যবসায়ীরা ও একই মত ব্যক্ত করেন।
জানতে চাইলে, উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, আখ একটি অর্থকরী ফসল। এখানকার কৃষকরা বিএসআরআই ৪৭ জাতের আখ চাষে তাদের বেশী আগ্রহ। এটি সুমিষ্ট এবং রসালো। সহজে এ জাতীয় আখ চিবিয়ে খাওয়া যায়। বাজারে ও এর ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে। চলতি মৌসুমে এখানকার কৃষকেরা আখ চাষ করে ভাল ফলন পেয়েছেন। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত আখ বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। অন্যদিকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ও আখ বিক্রিতে লাভবান হচ্ছেন। এছাড়া তার দপ্তর থেকে
কৃষকদেরকে আখ চাষে প্রশিক্ষণসহ নানা পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে বলে তিনি জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
কুমিল্লার বরুড়ায় এ বছর প্রাকৃতিক পরিবেশ অনেকাংশে অনুকুলে থাকায় আর পোকা মাকড়ের উপদ্রব কম থাকায় আখ চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন চাষীরা। আর এ আখ স্থানীয় হাট বাজারে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন মৌসুমী আখ ব্যবসায়ীরা। ফলে আখের ভাল ফলনে চাষী ও ব্যবসায়ী উভয়ই খুশি। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে এ বছর এ উপজেলায় ১৫০ হেক্টর জমিতে আখের আবাদ হয়েছে। তন্মধ্যে ১৪২ হেক্টর জমিতে বিএসআরআই ৪৭ জাত (স্থানীয়ভাবে ২০৮ জাত পরিচিত) আখের আবাদ হয়েছে ১৪২ হেক্টর জমিতে। আর বাদবাকী ৮ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে রং বিলাস জাতের আখ। সরেজমিনে গিয়ে উপজেলার পৌরসভা, শিলমুড়ি উঃ ইউনিয়ন, শিলমুড়ি দঃ ইউনিয়ন, আগানগর ইউনিয়ন এবং ভবানীপুর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে কৃষকেরা তাদের জমিতে উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের পরিপক্ক আখ স্থানীয় এবং জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছেন। এ
সময় আখ চাষীদের সাথে আলাপকালে বরুড়া পৌর শহরের কামেড্ডা গ্রামের প্রান্তিক আখ চাষী মো. আবুল কাসেম জানান, তিনি গত প্রায় দুই দশক যাবৎ আখ চাষ করে আসছেন। এ বছর তিনি তার লিজ নেওয়া ২৪ শতক জমিতে বিএসআরআই ৪৭ জাতের আখ চাষ করেছেন। এতে তার উৎপাদন বাবদ ব্যয় হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। তিনি তার উৎপাদিত এ আখ বিক্রি করেছেন প্রায় ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। এতে তিনি লাভবান হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার টাকা। আখ চাষী মো. খায়ের আলী জানান, তিনি ৩ দশক যাবৎ আখ চাষ করে আসছেন। এ বছর তিনি তার লিজকৃত ৩২ শতক জমিতে বিএসআরআই ৪৭ জাতের আখ চাষ
করেছেন। এতে তার উৎপাদন বাবদ ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। আর এসব আখ বিক্রি করেছেন ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এতে তিনি লাভবান হয়েছেন
প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। শিলমুড়ি (দঃ) ইউনিয়নের আকুসার গ্রামের কৃষক মো. নুরু মিয়া জানান, তিনি গত ১০ বছর যাবত আখ চাষ করে আসছেন। এ বছর তিনি তার ৮০ শতক জমিতে বিএসআরআই ৪৭ জাতের আখ চাষ করেছেন। এতে তার উৎপাদন বাবদ ব্যয় হয়েছে প্রায় ২ লাখ টাকা। আর উৎপাদিত এসব আখ তিনি বিক্রি করেছেন প্রায় ৪ লাখ টাকা। এতে তিনি প্রায় ২ লাখ টাকা লাভবান হয়েছেন। এছাড়া তারা আরও জানান, ধান চাষের চেয়ে অধিক লাভবান হয় আখ জাতীয় ফসল চাষ করে আসছেন। আর গত বছর বন্যার কারণে তারা আখ চাষ করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলেন। এর আগের বছর আখের ভাল ফলন পাওয়ার পরে ও প্রাকৃতিক ঝড়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় তেমন লাভের মুখ দেখেননি।
এ বছর প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকুলে থাকায় আর পোকা মাকড়ের উপদ্রব কম থাকায় আখের ফলন ভাল হয়েছে। যার ফলে তাদের উৎপাদিত এসব আখ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে তারা লাভবান হচ্ছেন। এতে তারা মহা খুশি। তবে আখ চাষে স্থানীয় ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে ঋণ পাওয়া গেলে আচাষে তারা অধিকতর উপকৃত হতেন। অন্য আখ চাষীরা ও একই অভিমত ব্যক্ত করেন। অপরদিকে উপজেলার বরুড়া সদর বাজার, আমড়াতলী বাজার, সুলতানপুর বাজারসহ বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা গেছে এ উপজেলার কৃষকদের উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের আখ মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন। এ সময় ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপকালে আখ ব্যবসায়ী আবদুর খালেক জানান, প্রকারভেদে প্রতিটি
আখ বিক্রি করে তিনি ২০ থেকে ৩০ টাকা লাভবান হচ্ছেন। আখ ব্যবসায়ী মো. মোস্তফা জানান, তিনি চলতি মৌসুমে কৃষকদের কাছ থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকার আখ ক্রয় করেছেন। এ আখ বাজারে বিক্রি করে এতে তিনি প্রায় দেড় লাখ টাকা লাভবান হওয়ার আশা ব্যক্ত করছেন। এছাড়া তারা আর ও জানান, অন্যান্য
বছরের তুলনায় এ বছরের আখ অনেক পুষ্ট এবং আকারে অনেক লম্বা হয়েছে। বাজারে আখ বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। এতে তারা খুশি। অন্য আখ ব্যবসায়ীরা ও একই মত ব্যক্ত করেন।
জানতে চাইলে, উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, আখ একটি অর্থকরী ফসল। এখানকার কৃষকরা বিএসআরআই ৪৭ জাতের আখ চাষে তাদের বেশী আগ্রহ। এটি সুমিষ্ট এবং রসালো। সহজে এ জাতীয় আখ চিবিয়ে খাওয়া যায়। বাজারে ও এর ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে। চলতি মৌসুমে এখানকার কৃষকেরা আখ চাষ করে ভাল ফলন পেয়েছেন। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত আখ বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। অন্যদিকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ও আখ বিক্রিতে লাভবান হচ্ছেন। এছাড়া তার দপ্তর থেকে
কৃষকদেরকে আখ চাষে প্রশিক্ষণসহ নানা পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে বলে তিনি জানিয়েছেন।