রংপুরের পীরগাছায় অ্যানথ্রাক্স/তরকা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গত দুই মাসে উপজেলায় শতাধিক মানুষ এই রোগের মতো উপসর্গে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের শরীরে জ্বর, লালচে ফোড়া, কালো ঘা ও ফুলে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে এই উপসর্গ নিয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের তালুক ইশাদ মাইটাল গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক (৬০) এবং পারুল ইউনিয়নের আনন্দী ধনীরাম গ্রামের গৃহবধূ কমলা বেগম (৫৮) অ্যানথ্রাক্সের/তরকা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন।
আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মিজানুর রহমান মিজান জানান, গত ২ আগস্ট বিকেলে তাদের বাড়ির একটি অসুস্থ গরু জবাই করা হয়। গরু কাটাকাটিতে রাজ্জাক সরাসরি অংশ নেন। পরদিন থেকেই তার জ্বর ও ফোড়া। রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মিজান বলেন, তার বাবা ছাড়াও পরিবারের আরও তিন সদস্য একই উপসর্গে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
অন্যদিকে, কমলা বেগম অসুস্থ একটি গরুর মাংস পরিষ্কার ও রান্না করেছিলেন। পরিবারের লোকজন জানান, মাংস ধরার পরপরই কমলার শরীরে ঘা দেখা দেয়। পরে গত ৬ সেপ্টেম্বর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। তার ছেলে দুলাল মিয়া বলেন, ‘আমাদের পরিবারের আরও দুজন চিকিৎসা নিয়েছেন। এখনও আতঙ্কে আছি।’
অ্যানথ্রাক্সের কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে কি না তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে ঘটনাস্থল থেকে অসুস্থ গরুর মাংসের নমুনা পরীক্ষা করে অ্যানথ্রাক্স/তরকা শনাক্ত করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) আক্রান্ত ব্যক্তিদের শরীর ও সংরক্ষিত মাংস থেকে নমুনা সংগ্রহ শুরু করেছে।
স্বজনরা জানিয়েছে, মৃতরা অসুস্থ গরু জবাই ও রান্নার কাজে জড়িত ছিলেন।
পীরগাছা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা একরামুল হক মন্ডল বলেন, তরকা নামে নতুন একটি রোগ আমরা শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। ওই রোগের লক্ষণ দেখে আক্রান্ত ১৬টি গরুর ২৫ নমুনা গ্রহণ করে ল্যাবে পাঠিয়েছিলাম। সেখান থেকে পাঁচটি গরুর পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক মুঈনা জাহানের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট গবেষক টিম বর্তমানে পীরগাছায় অবস্থান করছেন, তারা নমুনা হিসেবে গরু জবাই করার স্পটের মাটি ও মাছি নিচ্ছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবু ছাঈদ জানান, পারুল ইউনিয়নের দুটি গ্রামের ৯টি বাড়ির ফ্রিজে সংরক্ষিত মাংস পরীক্ষা করা হয়েছে। সেই মাংসে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়।
সিভিল সার্জন ডা. শাহীন সুলতানা বলেন, অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত পশুর কাঁচা মাংস নাড়াচাড়া করলে বা খেলে মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়। তবে একজন মানুষ থেকে অন্যজনের মধ্যে এই রোগ ছড়ায় না।
আইইডিসিআরের দল আক্রান্তদের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করছে। পরীক্ষা শেষে নিশ্চিত হওয়া যাবে মৃত্যুর ঘটনাগুলো সরাসরি অ্যানথ্রাক্সজনিত কি না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মো. রাসেল বলেন, অসুস্থ গরু জবাই ও মাংস বিক্রি আপাতত বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া সচেতনতামূলক কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে যাতে পীরগাছা থেকে অন্য কোথাও গরু পরিবহন না হয়।
বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
রংপুরের পীরগাছায় অ্যানথ্রাক্স/তরকা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গত দুই মাসে উপজেলায় শতাধিক মানুষ এই রোগের মতো উপসর্গে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের শরীরে জ্বর, লালচে ফোড়া, কালো ঘা ও ফুলে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে এই উপসর্গ নিয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের তালুক ইশাদ মাইটাল গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক (৬০) এবং পারুল ইউনিয়নের আনন্দী ধনীরাম গ্রামের গৃহবধূ কমলা বেগম (৫৮) অ্যানথ্রাক্সের/তরকা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন।
আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মিজানুর রহমান মিজান জানান, গত ২ আগস্ট বিকেলে তাদের বাড়ির একটি অসুস্থ গরু জবাই করা হয়। গরু কাটাকাটিতে রাজ্জাক সরাসরি অংশ নেন। পরদিন থেকেই তার জ্বর ও ফোড়া। রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মিজান বলেন, তার বাবা ছাড়াও পরিবারের আরও তিন সদস্য একই উপসর্গে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
অন্যদিকে, কমলা বেগম অসুস্থ একটি গরুর মাংস পরিষ্কার ও রান্না করেছিলেন। পরিবারের লোকজন জানান, মাংস ধরার পরপরই কমলার শরীরে ঘা দেখা দেয়। পরে গত ৬ সেপ্টেম্বর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। তার ছেলে দুলাল মিয়া বলেন, ‘আমাদের পরিবারের আরও দুজন চিকিৎসা নিয়েছেন। এখনও আতঙ্কে আছি।’
অ্যানথ্রাক্সের কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে কি না তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে ঘটনাস্থল থেকে অসুস্থ গরুর মাংসের নমুনা পরীক্ষা করে অ্যানথ্রাক্স/তরকা শনাক্ত করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) আক্রান্ত ব্যক্তিদের শরীর ও সংরক্ষিত মাংস থেকে নমুনা সংগ্রহ শুরু করেছে।
স্বজনরা জানিয়েছে, মৃতরা অসুস্থ গরু জবাই ও রান্নার কাজে জড়িত ছিলেন।
পীরগাছা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা একরামুল হক মন্ডল বলেন, তরকা নামে নতুন একটি রোগ আমরা শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। ওই রোগের লক্ষণ দেখে আক্রান্ত ১৬টি গরুর ২৫ নমুনা গ্রহণ করে ল্যাবে পাঠিয়েছিলাম। সেখান থেকে পাঁচটি গরুর পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক মুঈনা জাহানের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট গবেষক টিম বর্তমানে পীরগাছায় অবস্থান করছেন, তারা নমুনা হিসেবে গরু জবাই করার স্পটের মাটি ও মাছি নিচ্ছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবু ছাঈদ জানান, পারুল ইউনিয়নের দুটি গ্রামের ৯টি বাড়ির ফ্রিজে সংরক্ষিত মাংস পরীক্ষা করা হয়েছে। সেই মাংসে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়।
সিভিল সার্জন ডা. শাহীন সুলতানা বলেন, অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত পশুর কাঁচা মাংস নাড়াচাড়া করলে বা খেলে মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়। তবে একজন মানুষ থেকে অন্যজনের মধ্যে এই রোগ ছড়ায় না।
আইইডিসিআরের দল আক্রান্তদের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করছে। পরীক্ষা শেষে নিশ্চিত হওয়া যাবে মৃত্যুর ঘটনাগুলো সরাসরি অ্যানথ্রাক্সজনিত কি না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মো. রাসেল বলেন, অসুস্থ গরু জবাই ও মাংস বিক্রি আপাতত বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া সচেতনতামূলক কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে যাতে পীরগাছা থেকে অন্য কোথাও গরু পরিবহন না হয়।