ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
আর মাত্র ৮দিন পর শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। পূজাকে আরও উৎসবমুখর করতে নরসিংদীর পূজা মন্ডপগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। দেবী দুর্গাকে সাজাতে রাত-দিন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন জেলার প্রতিমা কারিগররা। শত কষ্টের মধ্যেও মা দুর্গাকে সাজাতে পেরে কিছুটা প্রশান্তি পাচ্ছেন এসব কারিগররা। কথিত আছে মা জাতি হলো জগত জননী। যিনি নিরবে বিশ্ব জগতের সকল মানব সন্তানের সকল কিছু নিরবে উপলব্ধি করতে পারে। তাই বিশ্ব সংসারে তিনি মা দেবী দুর্গা বলে আখ্যায়িত হয়েছেন। পঞ্জিকা মতে হিন্দু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ দুর্গা উৎসব আগামী ২৮সেপ্টেম্বর ষষ্ঠী তিথিতে দেবী দুর্গার বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হবে ৫ দিনব্যাপী এ ধর্মীয় উৎসবে নরসিংদীর পূজা মন্ডপগুলোতে চলছে দুর্গা উৎসবের ব্যাপক প্রস্তুতি। এ বছর দেবীদুর্গা পালকী চড়ে আগমন এবং ঘোড়া গমনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে। আর এই দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। প্রতিমা শিল্পীর তুলির আঁচড়ে যেন প্রাণ সঞ্চারিত হচ্ছে মা দুর্গার। প্রতিমা কারিগরদের যেন দম ফেলার সময় নেই। এবার নরসিংদী জেলা সর্বমোট ৩৬১ টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গাপূজা। এদিকে বেশ কয়েকটি পূজা মণ্ডপ ঘুরে এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে পুরোদমে প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে। দিন রাত প্রতিমা শিল্পীরা কাজ করছেন। খড় আর কাঁচামাটি ও রংয়ের কাজ শেষে এখন নানা সাজসজ্জ্বায় দেবী দুর্গা, সরস্বতী,লক্ষ্মী, কার্ত্তিক ও গণেশসহ সকল দেবতাদের বর্ণিল করে তোলার কাজ চলছে। দুর্গাপূজাকে সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরাপদভাবে সম্পন্নের লক্ষে জেলা প্রশাসন,পুলিশ প্রশাসন ও পূজা কমিটির পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে সব ধরনের ব্যবস্থা। ইতোমধ্যে পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করেছেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার।
নরসিংদীতে প্রায় ২০টি প্রতিমা শিল্পালয় গড়ে উঠেছে। এরমধ্যে নরসিংদী শহরে ছয়টি, সদর উপজেলার পাঁচদোনায় চারটি, শিবপুরের যোশরে তিনটি, শাষপুরে একটি, পলাশে দুটি, রায়পুরায় দুটি ও মনোহরদীতে দুটি প্রতিমা শিল্পালয় রয়েছে। এতে প্রায় দেড় শতাধিক লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। পাশাপাশি ভারত থেকেও মৃৎশিল্পীরা চুক্তিতে এসব প্রতিমা শিল্পালয়ে কাজ করছেন।
পাঁচদোনা বাজারের শ্রী শ্রী বাবা লোকনাথ প্রতিমা শিল্পালয়ের মালিক বলরাম পাল বলেন, এ বছর আমার তৈরি প্রতিমা ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, ফেনী, হবিগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জে যাচ্ছে। এসব প্রতিমা তৈরি করতে স্থানীয় কারিগরা। তবে গত কয়েক বছরে প্রতিমা তৈরির প্রধান উপকরণ রং থেকে শুরু করে মাটি, খড় ও বাঁশ-সব কিছুরই দাম বেড়েছে। বেড়েছে শ্রমিকদের মজুরিও। কিন্তু প্রতিমার দাম তেমন বাড়েনি। প্রতিমা শিল্পালয়গুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিমা তৈরির বেশির ভাগ কাজ শেষ। মৃৎশিল্পীরা এখন দেবী দুর্গাকে দৃষ্টিনন্দন করে তুলতে রং-তুলির আঁচড় দিতে পুরোদমে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মৃৎশিল্পী সুজিত পাল বলেন, আমাদের কাজটা মৌসুমকেন্দ্রিক।তিন মাসের জন্য চুক্তিতে কাজ করছি।
শিবপুর উপজেলা যোশরে প্রতিমা শিল্পী রনি পাল, লিটন পালসহ অন্যান্যরা জানান, এ বছর প্রতিমা তৈরির খরচ বেড়েছে, কিন্তু মজুরি বাড়েনি। ধর্মীয় বিশ্বাস থেকেই তারা প্রতিমা তৈরি করছেন, তবে আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারছেন না। এছাড়া, অতিবৃষ্টির কারণে প্রতিমা তৈরিতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে বলেও জানান তারা। আকার ভেদে প্রতি সেট প্রতিমা তৈরিতে এখানকার শিল্পীরা ১৮ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত পারিশ্রমিক পান। একটি পূজাম-পের প্রতিমা তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করতে গড়ে ১৮ দিন সময় লাগে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার ওসি আমাদের খোঁজ খবর নিয়েছে। কোন সমস্যা হলে ওনাদের জানাতে বলেছ।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ মনোহরদী উপজেলা শাখার সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মান্না দাস চৌধুরী উজ্জল বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা ২০২৫ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন উপলক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলার বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা,ধর্মীয় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সকল পূজা ম-পে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকগণ এর সাথে প্রস্ততিমূলক সভা করেন, ওসি মহোদয় সার্বিক আইন শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নরসিংদী জেলা শাখার সভাপতি মাখন দাস বলেন, এবারও সার্বজনীন এ উৎসব ধর্মীয় সম্প্রীতির মধ্য দিয়ে উদযাপিত হবে।এবছর নরসিংদী জেলায় ৩৬১ টি পূজা মন্ডবে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে নরসিংদী সদর উপজেলায় ১০৪, পলাশে ৪৩, শিবপুরে ৭২,বেলাবে ২৫,মনোহরদীতে ৫৩ এবং রায়পুরায় ৬৪টি।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আর মাত্র ৮দিন পর শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। পূজাকে আরও উৎসবমুখর করতে নরসিংদীর পূজা মন্ডপগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। দেবী দুর্গাকে সাজাতে রাত-দিন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন জেলার প্রতিমা কারিগররা। শত কষ্টের মধ্যেও মা দুর্গাকে সাজাতে পেরে কিছুটা প্রশান্তি পাচ্ছেন এসব কারিগররা। কথিত আছে মা জাতি হলো জগত জননী। যিনি নিরবে বিশ্ব জগতের সকল মানব সন্তানের সকল কিছু নিরবে উপলব্ধি করতে পারে। তাই বিশ্ব সংসারে তিনি মা দেবী দুর্গা বলে আখ্যায়িত হয়েছেন। পঞ্জিকা মতে হিন্দু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ দুর্গা উৎসব আগামী ২৮সেপ্টেম্বর ষষ্ঠী তিথিতে দেবী দুর্গার বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হবে ৫ দিনব্যাপী এ ধর্মীয় উৎসবে নরসিংদীর পূজা মন্ডপগুলোতে চলছে দুর্গা উৎসবের ব্যাপক প্রস্তুতি। এ বছর দেবীদুর্গা পালকী চড়ে আগমন এবং ঘোড়া গমনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে। আর এই দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। প্রতিমা শিল্পীর তুলির আঁচড়ে যেন প্রাণ সঞ্চারিত হচ্ছে মা দুর্গার। প্রতিমা কারিগরদের যেন দম ফেলার সময় নেই। এবার নরসিংদী জেলা সর্বমোট ৩৬১ টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গাপূজা। এদিকে বেশ কয়েকটি পূজা মণ্ডপ ঘুরে এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে পুরোদমে প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে। দিন রাত প্রতিমা শিল্পীরা কাজ করছেন। খড় আর কাঁচামাটি ও রংয়ের কাজ শেষে এখন নানা সাজসজ্জ্বায় দেবী দুর্গা, সরস্বতী,লক্ষ্মী, কার্ত্তিক ও গণেশসহ সকল দেবতাদের বর্ণিল করে তোলার কাজ চলছে। দুর্গাপূজাকে সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরাপদভাবে সম্পন্নের লক্ষে জেলা প্রশাসন,পুলিশ প্রশাসন ও পূজা কমিটির পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে সব ধরনের ব্যবস্থা। ইতোমধ্যে পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করেছেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার।
নরসিংদীতে প্রায় ২০টি প্রতিমা শিল্পালয় গড়ে উঠেছে। এরমধ্যে নরসিংদী শহরে ছয়টি, সদর উপজেলার পাঁচদোনায় চারটি, শিবপুরের যোশরে তিনটি, শাষপুরে একটি, পলাশে দুটি, রায়পুরায় দুটি ও মনোহরদীতে দুটি প্রতিমা শিল্পালয় রয়েছে। এতে প্রায় দেড় শতাধিক লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। পাশাপাশি ভারত থেকেও মৃৎশিল্পীরা চুক্তিতে এসব প্রতিমা শিল্পালয়ে কাজ করছেন।
পাঁচদোনা বাজারের শ্রী শ্রী বাবা লোকনাথ প্রতিমা শিল্পালয়ের মালিক বলরাম পাল বলেন, এ বছর আমার তৈরি প্রতিমা ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, ফেনী, হবিগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জে যাচ্ছে। এসব প্রতিমা তৈরি করতে স্থানীয় কারিগরা। তবে গত কয়েক বছরে প্রতিমা তৈরির প্রধান উপকরণ রং থেকে শুরু করে মাটি, খড় ও বাঁশ-সব কিছুরই দাম বেড়েছে। বেড়েছে শ্রমিকদের মজুরিও। কিন্তু প্রতিমার দাম তেমন বাড়েনি। প্রতিমা শিল্পালয়গুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিমা তৈরির বেশির ভাগ কাজ শেষ। মৃৎশিল্পীরা এখন দেবী দুর্গাকে দৃষ্টিনন্দন করে তুলতে রং-তুলির আঁচড় দিতে পুরোদমে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মৃৎশিল্পী সুজিত পাল বলেন, আমাদের কাজটা মৌসুমকেন্দ্রিক।তিন মাসের জন্য চুক্তিতে কাজ করছি।
শিবপুর উপজেলা যোশরে প্রতিমা শিল্পী রনি পাল, লিটন পালসহ অন্যান্যরা জানান, এ বছর প্রতিমা তৈরির খরচ বেড়েছে, কিন্তু মজুরি বাড়েনি। ধর্মীয় বিশ্বাস থেকেই তারা প্রতিমা তৈরি করছেন, তবে আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারছেন না। এছাড়া, অতিবৃষ্টির কারণে প্রতিমা তৈরিতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে বলেও জানান তারা। আকার ভেদে প্রতি সেট প্রতিমা তৈরিতে এখানকার শিল্পীরা ১৮ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত পারিশ্রমিক পান। একটি পূজাম-পের প্রতিমা তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করতে গড়ে ১৮ দিন সময় লাগে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার ওসি আমাদের খোঁজ খবর নিয়েছে। কোন সমস্যা হলে ওনাদের জানাতে বলেছ।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ মনোহরদী উপজেলা শাখার সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মান্না দাস চৌধুরী উজ্জল বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা ২০২৫ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন উপলক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলার বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা,ধর্মীয় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সকল পূজা ম-পে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকগণ এর সাথে প্রস্ততিমূলক সভা করেন, ওসি মহোদয় সার্বিক আইন শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নরসিংদী জেলা শাখার সভাপতি মাখন দাস বলেন, এবারও সার্বজনীন এ উৎসব ধর্মীয় সম্প্রীতির মধ্য দিয়ে উদযাপিত হবে।এবছর নরসিংদী জেলায় ৩৬১ টি পূজা মন্ডবে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে নরসিংদী সদর উপজেলায় ১০৪, পলাশে ৪৩, শিবপুরে ৭২,বেলাবে ২৫,মনোহরদীতে ৫৩ এবং রায়পুরায় ৬৪টি।