অযত্ন অবহেলায় ঐতিহ্য হারাচ্ছে কেশবপুরের ৯’শ বছরের প্রাচীন নিদর্শন মীর্জানগর হাম্মামখানার (গোসলখানা)। হাম্মামখানাটি গাড়ো কমলা রঙের হলেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে এর গায়ে সেওলা জমে বর্তমান কালো সবুজ বর্ণ ধারণ করে ঐতিহ্য হারাচ্ছে। একজন কেয়ারটেকার হাম্মামখানাটি দেখভাল করলেও ভালো সড়কের অভাবে পর্যটকরা এ নিদর্শন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
কেশবপুর ত্রিমোহিনী সড়কের ৭ কিলোমিটার পশ্চিমে কপোতাক্ষ ও বুড়িভদ্রা নদীর সংযোগস্থলে মীর্জানগর গ্রামে হাম্মামখানাটি অবস্থিত।
১৬৪৯ খ্রিস্টাব্দে বাংলার সুবেদার শাহ গুজার শ্যালকপুত্র মীর্জা সফসি খান যশোরের ফৌজদার নিযুক্ত হন। তিনি কপোতাক্ষ নদ ও বুড়িভদ্রা নদীর সংযোগস্থলে বসবাস করতেন। তার নাম অনুসারে এলাকাটির নাম হয় মীর্জানগর বলে জনশ্রুতি রয়েছে। ত্রিমোহিনী বাজারের পাশে মীর্জানগরের নবাব বাড়ির ধ্বংস্তুপ এখন একটি ডিবি সদৃশ। সেখানের উঁচু ডিবি, চুন,শুরকি, ইট এখনও নবাব বাড়ির স্মৃতি ধরে রেখেছে।
সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে নুরুল্লা খা এখানকার ফৌজদার নিযুক্ত হন। তিনি বুড়িভদ্রা নদীর দক্ষিণ পাড়ে পূর্ব পশ্চিমে দীর্ঘ একটি কিল্লাবাড়ি স্থাপন করে সেখানে বসবাস করতেন।
সুবিস্তৃত পরিখা খনন করে আট-দশ ফুট উঁচু প্রাচীর বেষ্টিত করে এটাকে মতিঝিল নামকরণ করা হয়। এর একাংশে বতকখানা, জোনানাসহ হাম্মামখানা ও দূর্গের পূর্বে সদর তোরণ নির্মাণ করেছিলেন। কামান দ্বারা দূর্গটি সুরক্ষিত ছিল। মীর্জানগরের কামানের একটি অংশ যশোর মনিহার মোড়ে রক্ষিত রয়েছে।
বর্তমান মীর্জানগরে হাম্মামখানা বাদে আর কোনো কিছুরই অস্তিত্ব নেই। পূর্ব পশ্চিমে লম্বা চার কক্ষ বিশিষ্ট এবং একটি কূপ সমেত হাম্মামখানাটি মোগল স্থপত্য শৈলীর অনুকরণে নির্মিত হয়। স্থাপনাটি চার গম্বুজ বিশিষ্ট। এর পশ্চিম দিকে পরপর দুটি কক্ষ।
পূর্বদিকের কক্ষ দুটি উঁচু চৌবাচ্চা হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এর জানালাগুলো এমন উঁচু করে তৈরি করা হয়েছে যাতে এর ভেতর অবস্থানকালে বাইরে থেকে শরীরের নিন্মাংশ দেখা না যায়। পূর্বপাশের্^ দেয়াল বেষ্টনীর ভেতর রয়েছে ৯ ফুট ব্যাসের ইটের নির্মিত সুগভীর কূপ। সে কূপ হতে পানি টেনে তুলে ছাদের দুটি চৌবাচ্চায় জমা করে রৌদ্রে গরম হওয়ার পর দেয়াল অভ্যন্তরের পোড়ামাটির নলের মাধ্যমে কক্ষে পানি সরবরাহ করা হতো। স্থাপনাটির দক্ষিণ পাশের একটি চৌবাচ্চা এবং একটি আন্ডারগ্রাউন্ড কক্ষযুক্ত সুড়ঙ্গ রয়েছে। যা তোষাখানা ছিল বলে অনুমিত হয়। ১৯৯৬ সালে সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এটিকে পূরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে এবং পুণঃসংস্কার করে। পূরাকীর্তিটি দেখভালের জন্যে একজন কেয়ারটেকার রয়েছেন। এরপর আর দীর্ঘদিনেও এর সংস্কার না হওয়ায় জরাজীর্ণ হয়ে সেওলায় এর অস্তিত্ব নষ্ট হচ্ছে।
এখানে যেতে যশোর থেকে কেশবপুর ত্রিমোহিনী সড়ক দিয়ে সাতবাড়িয়া বাজার থেকে মীর্জানগর মোড়ে পেীছালে পশ্চিমে একটি ইটের সোলিং সড়ক রয়েছে। এসড়ক দিয়ে দক্ষিণ দিকে গেলে একটি সরু ইটের সোলিং দিয়ে সামনে গেলেই হাম্মামখানাটি দেখতে পাওয়া যায়।
তারা জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
অযত্ন অবহেলায় ঐতিহ্য হারাচ্ছে কেশবপুরের ৯’শ বছরের প্রাচীন নিদর্শন মীর্জানগর হাম্মামখানার (গোসলখানা)। হাম্মামখানাটি গাড়ো কমলা রঙের হলেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে এর গায়ে সেওলা জমে বর্তমান কালো সবুজ বর্ণ ধারণ করে ঐতিহ্য হারাচ্ছে। একজন কেয়ারটেকার হাম্মামখানাটি দেখভাল করলেও ভালো সড়কের অভাবে পর্যটকরা এ নিদর্শন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
কেশবপুর ত্রিমোহিনী সড়কের ৭ কিলোমিটার পশ্চিমে কপোতাক্ষ ও বুড়িভদ্রা নদীর সংযোগস্থলে মীর্জানগর গ্রামে হাম্মামখানাটি অবস্থিত।
১৬৪৯ খ্রিস্টাব্দে বাংলার সুবেদার শাহ গুজার শ্যালকপুত্র মীর্জা সফসি খান যশোরের ফৌজদার নিযুক্ত হন। তিনি কপোতাক্ষ নদ ও বুড়িভদ্রা নদীর সংযোগস্থলে বসবাস করতেন। তার নাম অনুসারে এলাকাটির নাম হয় মীর্জানগর বলে জনশ্রুতি রয়েছে। ত্রিমোহিনী বাজারের পাশে মীর্জানগরের নবাব বাড়ির ধ্বংস্তুপ এখন একটি ডিবি সদৃশ। সেখানের উঁচু ডিবি, চুন,শুরকি, ইট এখনও নবাব বাড়ির স্মৃতি ধরে রেখেছে।
সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে নুরুল্লা খা এখানকার ফৌজদার নিযুক্ত হন। তিনি বুড়িভদ্রা নদীর দক্ষিণ পাড়ে পূর্ব পশ্চিমে দীর্ঘ একটি কিল্লাবাড়ি স্থাপন করে সেখানে বসবাস করতেন।
সুবিস্তৃত পরিখা খনন করে আট-দশ ফুট উঁচু প্রাচীর বেষ্টিত করে এটাকে মতিঝিল নামকরণ করা হয়। এর একাংশে বতকখানা, জোনানাসহ হাম্মামখানা ও দূর্গের পূর্বে সদর তোরণ নির্মাণ করেছিলেন। কামান দ্বারা দূর্গটি সুরক্ষিত ছিল। মীর্জানগরের কামানের একটি অংশ যশোর মনিহার মোড়ে রক্ষিত রয়েছে।
বর্তমান মীর্জানগরে হাম্মামখানা বাদে আর কোনো কিছুরই অস্তিত্ব নেই। পূর্ব পশ্চিমে লম্বা চার কক্ষ বিশিষ্ট এবং একটি কূপ সমেত হাম্মামখানাটি মোগল স্থপত্য শৈলীর অনুকরণে নির্মিত হয়। স্থাপনাটি চার গম্বুজ বিশিষ্ট। এর পশ্চিম দিকে পরপর দুটি কক্ষ।
পূর্বদিকের কক্ষ দুটি উঁচু চৌবাচ্চা হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এর জানালাগুলো এমন উঁচু করে তৈরি করা হয়েছে যাতে এর ভেতর অবস্থানকালে বাইরে থেকে শরীরের নিন্মাংশ দেখা না যায়। পূর্বপাশের্^ দেয়াল বেষ্টনীর ভেতর রয়েছে ৯ ফুট ব্যাসের ইটের নির্মিত সুগভীর কূপ। সে কূপ হতে পানি টেনে তুলে ছাদের দুটি চৌবাচ্চায় জমা করে রৌদ্রে গরম হওয়ার পর দেয়াল অভ্যন্তরের পোড়ামাটির নলের মাধ্যমে কক্ষে পানি সরবরাহ করা হতো। স্থাপনাটির দক্ষিণ পাশের একটি চৌবাচ্চা এবং একটি আন্ডারগ্রাউন্ড কক্ষযুক্ত সুড়ঙ্গ রয়েছে। যা তোষাখানা ছিল বলে অনুমিত হয়। ১৯৯৬ সালে সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এটিকে পূরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে এবং পুণঃসংস্কার করে। পূরাকীর্তিটি দেখভালের জন্যে একজন কেয়ারটেকার রয়েছেন। এরপর আর দীর্ঘদিনেও এর সংস্কার না হওয়ায় জরাজীর্ণ হয়ে সেওলায় এর অস্তিত্ব নষ্ট হচ্ছে।
এখানে যেতে যশোর থেকে কেশবপুর ত্রিমোহিনী সড়ক দিয়ে সাতবাড়িয়া বাজার থেকে মীর্জানগর মোড়ে পেীছালে পশ্চিমে একটি ইটের সোলিং সড়ক রয়েছে। এসড়ক দিয়ে দক্ষিণ দিকে গেলে একটি সরু ইটের সোলিং দিয়ে সামনে গেলেই হাম্মামখানাটি দেখতে পাওয়া যায়।
তারা জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।