নিজের এলাকায় কাজ কর্ম কম। দিন মজুরের কাজ করে সংসার চালানো কঠিন। নিয়মিত জুটে না কাজ। কখনও কখনও দূরে যেতে হয় কাজ সন্ধানে। মাইনেটাও আশানুরূপ নয়। যাতায়াত খরচ ও চা-পানের পর যা থাকে তা দিয়ে পরিবারের রুটি রুজি পুরোটা হয় না। কয়েকদিন কাজ বন্ধ থাকলে ঋণ করতে হয়। ঝড় বৃষ্টি অসুখ বিসুখ হলে বসে থাকতে হয়। সিদ্ধান্ত নিলেন, যখন কাজ থাকবে না, তখন বিকল্প কিছু করবেন। এ ধারণা থেকে তার এক পরিচিত জনের সাথে পরামর্শ নিয়ে শিখে আলু দিয়ে চিপস তৈরি। মোটামুটি শিখে স্থানীয়ভাবে। কিছু দিন বিক্রি করে ছুটে আসে ময়মনসিংহে। এ শহর থেকে আশপাশে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করে আলুর চিপস। মিনি পলিতে ১০ টাকা দামে বিক্রি করে। খেতে মুখ রোচক থাকায় ছোট বড় সবার কাছেই স্বাদ ও সাধ্যের। প্রতিদিন ভালোই বিক্রি করে চলছে তার জীবিকা। বলছিলাম উত্তর বঙ্গের জয়পুর হাট থেকে মধুপুরে আলুর চিপস বিক্রি করতে আসা আব্দুল মান্নান এর কথা।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌর শহরের পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে আলুর চিপস বিক্রি করছে। পাশেই চাড়ালজানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দুই বিদ্যালয়ের শিশু কিশোররা কিনে খাচ্ছে তার চিপস। প্রতি প্যাকেটের দাম নিচ্ছে দশ টাকা। কালো শ্যাম রঙের এ মানুষটার গলায় গামছা বেঁধে নিয়েছে চিপসের ঝুঁড়ি। পলিব্যাগ মুড়ানো মচমচে চিপস দেখতে সাদা হলুদাভ। সুন্দর সজ্জিত চিপসগুলো দেখতে অনেকের কাছে লোভনীয়। দাঁড়িয়ে থাকা চিপসওয়ালার থেকে শিশুরা কিনতে আসা শুরু করে। দশ টাকা হাতে হাতে নিয়ে যাচ্ছে চিপস। এ সময় চিপস বিক্রেতা আব্দুল মান্নান (৩০) এর সাথে কথা বলে জানা যায়, তার চিপস বিক্রির গল্প। বলেন তার জীবন জীবিকার সন্ধানে প্রতিদিনের চিপস বিক্রির নানা দিক।
মধুপুর শহরের চাড়ালজানি এলাকায় কথা হয় চিপস বিক্রেতা আব্দুল মান্নানের সাথে। তার বয়স ৩০ বছর। জয়পুর হাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার পেটাটো গ্রামে তার বাড়ি। তিনি জানান, তাদের এলাকায় প্রচুর পরিমানে আলুর চাষ হয়। দাম কম থাকায় তিনি পটেটো চিপস বানান। বাজা থেকে আলু কিনে বাড়ি নিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে কুচি কুচি করে কেটে নেয়। রোদ শুকিয়ে করে মচমচে। একদম পাতলা মিহি করে। পরে ভাজি করে। হয় মচমচে সুস্বাদু।
তিনি জানান, তার এক পরিচিত লোকের সাথে জয়পুর হাট থেকে ময়মনসিংহে চলে আসে আলুর চিপস বিক্রি করতে। ৫ মাস যাবত চলছে তার এ বিক্রি। প্রতিদিন ১৫শ থেকে দুই হাজার টাকা বিক্রি করতে পারে। প্রতিদিন সে ময়মনসিংহ থেকে মধুপুর শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাসার বাড়ির অলিগলিতে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করে থাকে।
বিক্রি করে যা পায় তা দিয়ে চলে তার সংসারের খরচ।
তিনি আরো বলেন, ৪০ কেজি কাঁচা আলু কিনে প্রক্রিয়া করলে সাড়ে ৯ কেজি আসে। তাতে ভালোই লাভ হয়। তবে মধুপুরে এ চিপসের চাহিদা ভালো আর বিক্রি পোষাতে পারে। এ মাসের পর তিনি মধুপুর শহরে ছোট খাটো থাকার জায়গা ভাড়া নিয়ে এ শহরে থেকেই আলুর চিপস বিক্রি করবে বলে জানালেন।
কয়েক শিশু কিশোর জানালেন, এ চিপস কিনে তারা খায়। তাদের কাছে ভালো লাগে। লেবু মিয়া জানালেন, এটা পাতলা মচমচে। তবে রঙবিহীন খেতেও স্বাদ লাগে।
আব্দুল মান্নানের জীবন জীবিকা চলছে আলুর চিপস বিক্রি করে। কষ্ট হলেও নেই তার কোন আপসোস, নেই কোন অনুসূচনা। সারা দিন ক্লান্তি ভুলে বিক্রি করে তার নিজের তৈরি আলুর চিপস।
ছবি- মধুপুর(টাঙ্গাইল): মধুপুর শহরের নিজের তৈরি আলুর চিপস বিক্রি করছে আব্দুল মান্নান। ছবিটি চাড়ালজানি এলাকা তেকেে তোলা।
শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজের এলাকায় কাজ কর্ম কম। দিন মজুরের কাজ করে সংসার চালানো কঠিন। নিয়মিত জুটে না কাজ। কখনও কখনও দূরে যেতে হয় কাজ সন্ধানে। মাইনেটাও আশানুরূপ নয়। যাতায়াত খরচ ও চা-পানের পর যা থাকে তা দিয়ে পরিবারের রুটি রুজি পুরোটা হয় না। কয়েকদিন কাজ বন্ধ থাকলে ঋণ করতে হয়। ঝড় বৃষ্টি অসুখ বিসুখ হলে বসে থাকতে হয়। সিদ্ধান্ত নিলেন, যখন কাজ থাকবে না, তখন বিকল্প কিছু করবেন। এ ধারণা থেকে তার এক পরিচিত জনের সাথে পরামর্শ নিয়ে শিখে আলু দিয়ে চিপস তৈরি। মোটামুটি শিখে স্থানীয়ভাবে। কিছু দিন বিক্রি করে ছুটে আসে ময়মনসিংহে। এ শহর থেকে আশপাশে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করে আলুর চিপস। মিনি পলিতে ১০ টাকা দামে বিক্রি করে। খেতে মুখ রোচক থাকায় ছোট বড় সবার কাছেই স্বাদ ও সাধ্যের। প্রতিদিন ভালোই বিক্রি করে চলছে তার জীবিকা। বলছিলাম উত্তর বঙ্গের জয়পুর হাট থেকে মধুপুরে আলুর চিপস বিক্রি করতে আসা আব্দুল মান্নান এর কথা।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌর শহরের পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে আলুর চিপস বিক্রি করছে। পাশেই চাড়ালজানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দুই বিদ্যালয়ের শিশু কিশোররা কিনে খাচ্ছে তার চিপস। প্রতি প্যাকেটের দাম নিচ্ছে দশ টাকা। কালো শ্যাম রঙের এ মানুষটার গলায় গামছা বেঁধে নিয়েছে চিপসের ঝুঁড়ি। পলিব্যাগ মুড়ানো মচমচে চিপস দেখতে সাদা হলুদাভ। সুন্দর সজ্জিত চিপসগুলো দেখতে অনেকের কাছে লোভনীয়। দাঁড়িয়ে থাকা চিপসওয়ালার থেকে শিশুরা কিনতে আসা শুরু করে। দশ টাকা হাতে হাতে নিয়ে যাচ্ছে চিপস। এ সময় চিপস বিক্রেতা আব্দুল মান্নান (৩০) এর সাথে কথা বলে জানা যায়, তার চিপস বিক্রির গল্প। বলেন তার জীবন জীবিকার সন্ধানে প্রতিদিনের চিপস বিক্রির নানা দিক।
মধুপুর শহরের চাড়ালজানি এলাকায় কথা হয় চিপস বিক্রেতা আব্দুল মান্নানের সাথে। তার বয়স ৩০ বছর। জয়পুর হাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার পেটাটো গ্রামে তার বাড়ি। তিনি জানান, তাদের এলাকায় প্রচুর পরিমানে আলুর চাষ হয়। দাম কম থাকায় তিনি পটেটো চিপস বানান। বাজা থেকে আলু কিনে বাড়ি নিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে কুচি কুচি করে কেটে নেয়। রোদ শুকিয়ে করে মচমচে। একদম পাতলা মিহি করে। পরে ভাজি করে। হয় মচমচে সুস্বাদু।
তিনি জানান, তার এক পরিচিত লোকের সাথে জয়পুর হাট থেকে ময়মনসিংহে চলে আসে আলুর চিপস বিক্রি করতে। ৫ মাস যাবত চলছে তার এ বিক্রি। প্রতিদিন ১৫শ থেকে দুই হাজার টাকা বিক্রি করতে পারে। প্রতিদিন সে ময়মনসিংহ থেকে মধুপুর শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাসার বাড়ির অলিগলিতে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করে থাকে।
বিক্রি করে যা পায় তা দিয়ে চলে তার সংসারের খরচ।
তিনি আরো বলেন, ৪০ কেজি কাঁচা আলু কিনে প্রক্রিয়া করলে সাড়ে ৯ কেজি আসে। তাতে ভালোই লাভ হয়। তবে মধুপুরে এ চিপসের চাহিদা ভালো আর বিক্রি পোষাতে পারে। এ মাসের পর তিনি মধুপুর শহরে ছোট খাটো থাকার জায়গা ভাড়া নিয়ে এ শহরে থেকেই আলুর চিপস বিক্রি করবে বলে জানালেন।
কয়েক শিশু কিশোর জানালেন, এ চিপস কিনে তারা খায়। তাদের কাছে ভালো লাগে। লেবু মিয়া জানালেন, এটা পাতলা মচমচে। তবে রঙবিহীন খেতেও স্বাদ লাগে।
আব্দুল মান্নানের জীবন জীবিকা চলছে আলুর চিপস বিক্রি করে। কষ্ট হলেও নেই তার কোন আপসোস, নেই কোন অনুসূচনা। সারা দিন ক্লান্তি ভুলে বিক্রি করে তার নিজের তৈরি আলুর চিপস।
ছবি- মধুপুর(টাঙ্গাইল): মধুপুর শহরের নিজের তৈরি আলুর চিপস বিক্রি করছে আব্দুল মান্নান। ছবিটি চাড়ালজানি এলাকা তেকেে তোলা।