‘সম্প্রীতি যাত্রা’র সংবাদ সম্মেলন
পুরান ঢাকার একটি পূজামণ্ডপে দুর্গা প্রতিমায় তুলির শেষ আচড় বসাচ্ছে শিল্পী -সংবাদ
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে দেশের ২৯টি জেলাকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫টিকে উচ্চ এবং ২৪টি জেলাকে মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে ‘সম্প্রীতি যাত্রা’ নামের একটি সামাজিক প্ল্যাটফর্ম। পাশাপাশি তারা বিভিন্ন মন্দির, মাজার, ধর্মীয় স্থাপনা ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা রক্ষায় শিগগিরই দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার স্থানীয় নাগরিক ও সামাজিক সংগঠন, মাইনরিটি সংগঠন, সুফি ও মাজারভিত্তিক সংগঠন, বাউল ও ফকির সম্প্রদায়, আদিবাসী সংগঠন, নারী সংগঠন, সাংস্কৃতিক সংগঠন, পেশাজীবী সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রগতিশীল ব্যক্তিদের নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা জানান তারা। সাম্প্রদায়িক উসকানি ও বিভ্রান্তি রোধে তারা একটি ফ্যাক্টচেকিং দলও গঠন করবেন বলে জানিয়েছেন।
শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সম্প্রীতি যাত্রার ‘মসজিদ, মন্দির, মাজার, আখড়া ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় সম্প্রীতি যাত্রার ডাক এবং আসন্ন দুর্গাপূজায় ঝুঁকি পর্যালোচনা ও করণীয়’ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব কথা জানায় সংগঠনটি।
দুর্গাপূজায় উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা জেলাগুলো হলো- ঢাকা, রংপুর, যশোর, চাঁদপুর ও নোয়াখালী। মানচিত্র অনুযায়ী, মাঝারি ঝুঁকিতে থাকা জেলাগুলো হলো- গাজীপুর, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, পাবনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, কুষ্টিয়া, সুনামগঞ্জ, বরিশাল, পটুয়াখালী ও নেত্রকোণা। দেশের অন্য জেলাগুলোকে নিম্ন ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করে সম্প্রীতি যাত্রা।
২০১৪-২০২৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও মানবাধিকার প্রতিবেদনে প্রকাশিত পূজা ও অন্যান্য সময়ে পূজামণ্ডপ, শোভাযাত্রার রুট বা সংখ্যালঘু বাড়িঘরে হামলার ঘটনা বিশ্লেষণ করে তারা এই ঝুঁকির মানচিত্র তৈরি করেছে বলে জানিয়েছেন ‘সম্প্রীতির যাত্রা’র নেতারা।
আয়োজকরা জানান- বিভিন্ন লেখক, সাহিত্যিক, কবি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের উদ্যোগে সম্প্রীতি যাত্রা প্ল্যাটফর্ম গঠিত হয়েছে। শিগগিরই দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় এই প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে কমিটি গঠন করা হবে। যারা বিভিন্ন মন্দির, মাজার, ধর্মীয় স্থাপনা ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করবেন।
সাংস্কৃতিক কর্মী বিথী ঘোষের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন লেখক ও গবেষক মীর হুযাইফা আল মামদূহ। তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘বৈষম্যহীনতার আকাক্সক্ষা নিয়ে ২০২৪ সালের গণআন্দোলনের পরও এ প্রবণতার কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেনি বরং গুজব, উসকানি ও সহিংসতার পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে মন্দির-মণ্ডপে ভাঙচুর, মাজার ও দরগাহে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট, আখড়া ও বাউল-কাওয়ালি আসরে হামলা, এমনকি মসজিদে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার জেরে বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ ও গোলযোগ সংঘটিত হয়েছে যা কেবল বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।’
গত বছরের আগস্ট থেকে এ বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ছয় মাসেই ৮০টি মাজার/দরগাহে হামলা হয়েছে উল্লেখ করে মামদূহ বলেন, ‘সংখ্যাটি এখন কয়েকগুণ বাড়তে পারে অর্থাৎ কেবল মন্দির-মণ্ডপে আক্রমণ দেখলে মোট চিত্রের বড় অংশ ধরা পড়ে না; বাস্তবে হিন্দু, সুফি, বাউল এবং আদিবাসী বিভিন্ন প্রান্তিক গোষ্ঠী একযোগে ঝুঁকির মুখে আছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নির্বাচনকে ঘিরে বাড়তি ঝুঁকি। অতীতের অভিজ্ঞতা বলছে ভোটের আগে ও পরে সংখ্যালঘু আবাসিক এলাকা, ব্যবসায়িক কেন্দ্র, উপাসনালয় এবং দরবার সহজেই টার্গেটে পরিণত হয়।’
সংবাদ সম্মেলন থেকে কয়েকটি পদক্ষেপের কথা জানায় সম্প্রীতি যাত্রা। এর মধ্যে রয়েছে স্থানীয় সম্প্রীতি কমিটি গঠন, মনিটরিং ও নথিভুক্তি, গুজব প্রতিরোধে তথ্যপ্রবাহ, দ্রুত সহায়তা কাঠামো এবং প্রতিবেদন ও নীতি-প্রস্তাব।
আয়োজকরা জানান, সম্প্রীতি যাত্রা কেবল তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সংগঠিত কর্মসূচি নয় বরং সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের জন্য কাঠামোগত সংস্কারের একটি দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলন। জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় এই প্লাটফর্মের কার্যক্রম শুরু হয়।
মন্দির, মাজার, আখড়া ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বাড়তি পুলিশ ও দ্রুত রেসপন্স টিম মোতায়েন, গুজব প্রতিরোধ কাঠামো তৈরি, অভিযোগ গ্রহণে স্বচ্ছতা, প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরি সহায়তা প্রদানেরও আহ্বান জানায় সম্প্রীতি যাত্রা।
সংবাদ সস্মলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক মাহা মির্জা বলেন, ‘যে ঘটনাগুলোর কথা আমরা বলছি, এই ঘটনাগুলো ইতোমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। কিন্তু আমরা সরকারের পক্ষ থেকে জোরালো পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। আমরা মনে করি, সরকার যদি চায়, তাহলেই মব থামানো সম্ভব। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, অন্তর্বর্তী সরকার এই অপরাধগুলোর ব্যাপারে পুরোপুরি চোখ বন্ধ করে আছে।’
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে দেশের সংখ্যালঘুরা ভয়ের মধ্যে আছে উল্লেখ করে মাহা মির্জা আরও বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মূল স্পিরিটের একটা জায়গা ছিল সহমর্মিতার বাংলাদেশ। মূল স্পিরিটের একটা জায়গা ছিল সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষ মিলেমিশে থাকবে। খুব সিম্পল একটা ব্যাপার। কিন্তু আমরা এই মুহূর্তে যে বাংলাদেশকে দেখছি, সেটা খুবই ভীতিকর এবং সরকারের আচরণে আমরা আসলে ক্ষুব্ধ।’
উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাংগঠনিক সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমলে হওয়া কোনো সাম্প্রদায়িক নিপীড়নের তদন্ত বা বিচার এখনও হয়নি। বর্তমান সরকারও সেই নীতি থেকে বের হয়নি। ফ্যাসিস্ট সরকারের নীতিতে চলছে। ফলে মাজারে হামলা বেড়েছে। সামাজিক প্রতিরোধ ছাড়া এ থেকে মুক্তি নেই।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- চিন্তক ও শিল্পী অরূপ রাহী, লেখক ফেরদৌস আরা রুমী, লেখক বাকি বিল্লাহ, সাংবাদিক রহমান মুফিজ, ছাত্রনেতা মেঘমল্লার বসু ও নাজিফা জান্নাত প্রমুখ।
‘সম্প্রীতি যাত্রা’র সংবাদ সম্মেলন
পুরান ঢাকার একটি পূজামণ্ডপে দুর্গা প্রতিমায় তুলির শেষ আচড় বসাচ্ছে শিল্পী -সংবাদ
শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে দেশের ২৯টি জেলাকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫টিকে উচ্চ এবং ২৪টি জেলাকে মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে ‘সম্প্রীতি যাত্রা’ নামের একটি সামাজিক প্ল্যাটফর্ম। পাশাপাশি তারা বিভিন্ন মন্দির, মাজার, ধর্মীয় স্থাপনা ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা রক্ষায় শিগগিরই দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার স্থানীয় নাগরিক ও সামাজিক সংগঠন, মাইনরিটি সংগঠন, সুফি ও মাজারভিত্তিক সংগঠন, বাউল ও ফকির সম্প্রদায়, আদিবাসী সংগঠন, নারী সংগঠন, সাংস্কৃতিক সংগঠন, পেশাজীবী সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রগতিশীল ব্যক্তিদের নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা জানান তারা। সাম্প্রদায়িক উসকানি ও বিভ্রান্তি রোধে তারা একটি ফ্যাক্টচেকিং দলও গঠন করবেন বলে জানিয়েছেন।
শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সম্প্রীতি যাত্রার ‘মসজিদ, মন্দির, মাজার, আখড়া ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় সম্প্রীতি যাত্রার ডাক এবং আসন্ন দুর্গাপূজায় ঝুঁকি পর্যালোচনা ও করণীয়’ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব কথা জানায় সংগঠনটি।
দুর্গাপূজায় উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা জেলাগুলো হলো- ঢাকা, রংপুর, যশোর, চাঁদপুর ও নোয়াখালী। মানচিত্র অনুযায়ী, মাঝারি ঝুঁকিতে থাকা জেলাগুলো হলো- গাজীপুর, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, পাবনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, কুষ্টিয়া, সুনামগঞ্জ, বরিশাল, পটুয়াখালী ও নেত্রকোণা। দেশের অন্য জেলাগুলোকে নিম্ন ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করে সম্প্রীতি যাত্রা।
২০১৪-২০২৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও মানবাধিকার প্রতিবেদনে প্রকাশিত পূজা ও অন্যান্য সময়ে পূজামণ্ডপ, শোভাযাত্রার রুট বা সংখ্যালঘু বাড়িঘরে হামলার ঘটনা বিশ্লেষণ করে তারা এই ঝুঁকির মানচিত্র তৈরি করেছে বলে জানিয়েছেন ‘সম্প্রীতির যাত্রা’র নেতারা।
আয়োজকরা জানান- বিভিন্ন লেখক, সাহিত্যিক, কবি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের উদ্যোগে সম্প্রীতি যাত্রা প্ল্যাটফর্ম গঠিত হয়েছে। শিগগিরই দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় এই প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে কমিটি গঠন করা হবে। যারা বিভিন্ন মন্দির, মাজার, ধর্মীয় স্থাপনা ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করবেন।
সাংস্কৃতিক কর্মী বিথী ঘোষের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন লেখক ও গবেষক মীর হুযাইফা আল মামদূহ। তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘বৈষম্যহীনতার আকাক্সক্ষা নিয়ে ২০২৪ সালের গণআন্দোলনের পরও এ প্রবণতার কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেনি বরং গুজব, উসকানি ও সহিংসতার পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে মন্দির-মণ্ডপে ভাঙচুর, মাজার ও দরগাহে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট, আখড়া ও বাউল-কাওয়ালি আসরে হামলা, এমনকি মসজিদে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার জেরে বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ ও গোলযোগ সংঘটিত হয়েছে যা কেবল বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।’
গত বছরের আগস্ট থেকে এ বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ছয় মাসেই ৮০টি মাজার/দরগাহে হামলা হয়েছে উল্লেখ করে মামদূহ বলেন, ‘সংখ্যাটি এখন কয়েকগুণ বাড়তে পারে অর্থাৎ কেবল মন্দির-মণ্ডপে আক্রমণ দেখলে মোট চিত্রের বড় অংশ ধরা পড়ে না; বাস্তবে হিন্দু, সুফি, বাউল এবং আদিবাসী বিভিন্ন প্রান্তিক গোষ্ঠী একযোগে ঝুঁকির মুখে আছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নির্বাচনকে ঘিরে বাড়তি ঝুঁকি। অতীতের অভিজ্ঞতা বলছে ভোটের আগে ও পরে সংখ্যালঘু আবাসিক এলাকা, ব্যবসায়িক কেন্দ্র, উপাসনালয় এবং দরবার সহজেই টার্গেটে পরিণত হয়।’
সংবাদ সম্মেলন থেকে কয়েকটি পদক্ষেপের কথা জানায় সম্প্রীতি যাত্রা। এর মধ্যে রয়েছে স্থানীয় সম্প্রীতি কমিটি গঠন, মনিটরিং ও নথিভুক্তি, গুজব প্রতিরোধে তথ্যপ্রবাহ, দ্রুত সহায়তা কাঠামো এবং প্রতিবেদন ও নীতি-প্রস্তাব।
আয়োজকরা জানান, সম্প্রীতি যাত্রা কেবল তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সংগঠিত কর্মসূচি নয় বরং সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের জন্য কাঠামোগত সংস্কারের একটি দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলন। জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় এই প্লাটফর্মের কার্যক্রম শুরু হয়।
মন্দির, মাজার, আখড়া ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বাড়তি পুলিশ ও দ্রুত রেসপন্স টিম মোতায়েন, গুজব প্রতিরোধ কাঠামো তৈরি, অভিযোগ গ্রহণে স্বচ্ছতা, প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরি সহায়তা প্রদানেরও আহ্বান জানায় সম্প্রীতি যাত্রা।
সংবাদ সস্মলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক মাহা মির্জা বলেন, ‘যে ঘটনাগুলোর কথা আমরা বলছি, এই ঘটনাগুলো ইতোমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। কিন্তু আমরা সরকারের পক্ষ থেকে জোরালো পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। আমরা মনে করি, সরকার যদি চায়, তাহলেই মব থামানো সম্ভব। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, অন্তর্বর্তী সরকার এই অপরাধগুলোর ব্যাপারে পুরোপুরি চোখ বন্ধ করে আছে।’
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে দেশের সংখ্যালঘুরা ভয়ের মধ্যে আছে উল্লেখ করে মাহা মির্জা আরও বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মূল স্পিরিটের একটা জায়গা ছিল সহমর্মিতার বাংলাদেশ। মূল স্পিরিটের একটা জায়গা ছিল সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষ মিলেমিশে থাকবে। খুব সিম্পল একটা ব্যাপার। কিন্তু আমরা এই মুহূর্তে যে বাংলাদেশকে দেখছি, সেটা খুবই ভীতিকর এবং সরকারের আচরণে আমরা আসলে ক্ষুব্ধ।’
উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাংগঠনিক সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমলে হওয়া কোনো সাম্প্রদায়িক নিপীড়নের তদন্ত বা বিচার এখনও হয়নি। বর্তমান সরকারও সেই নীতি থেকে বের হয়নি। ফ্যাসিস্ট সরকারের নীতিতে চলছে। ফলে মাজারে হামলা বেড়েছে। সামাজিক প্রতিরোধ ছাড়া এ থেকে মুক্তি নেই।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- চিন্তক ও শিল্পী অরূপ রাহী, লেখক ফেরদৌস আরা রুমী, লেখক বাকি বিল্লাহ, সাংবাদিক রহমান মুফিজ, ছাত্রনেতা মেঘমল্লার বসু ও নাজিফা জান্নাত প্রমুখ।