alt

সিলেটের তিন বৃহৎ প্রকল্পে স্থবিরতা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, সিলেট : শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

সিলেটের ৩টি মেগা প্রকল্পের কাজে স্থবিরতা দেখা দেখা দিয়েছে। এতে দুর্ভোগ বাড়ছে এই অঞ্চলের মানুষের। এই প্রকল্পগুলোর কাজ কবে শেষ হবে, এ ব্যাপারেও নিশ্চিত নয় কেউ। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সিলেটের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে নেয়া হয়েছিল ৩টি মেগা প্রকল্প। বিগত সরকারের আমলেই নানা জটিলতায় প্রকল্প ৩টির কাজে স্থবিরতা দেখা দেয়। নতুন সরকারের আমলেও এসব প্রকল্পের কাজে আশানুরুপ গতি পায়নি। এসব মেগা প্রকল্পগুলোতে দেখা দেয় ‘মেগা জট’। ৪ বছরে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজ হয়েছে মাত্র ২২ ভাগ। নকশার ত্রুটির অজুহাতে প্রায় ২ বছরের অধিক সময় ধরে বন্ধ রয়েছে প্রকল্পের কাজ। সিলেট-ঢাকা মহাসড়ককে ৬ লেনে উন্নীতকরণের আশ্বাস শুনতে শুনতে বিরক্ত সিলেটবাসী। মহাসড়কটির উন্নয়ন কাজ হয়েছে মাত্র ১৬ ভাগ। আর সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণের কাজ এখনও দৃশ্যমানই হয়নি। ফলে মেগা প্রকল্পগুলো নিয়ে রীতিমতো আশাহত সিলেটের মানুষ। ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর ওসমানী বিমানবন্দর সম্প্রসারণ মেগা প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। প্রায় ২২০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পের আওতায় দ্বিতল বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন, ৬টি বোর্ডিং ব্রিজ, কনভেয়ার বেল্টসহ ৩৬টি চেক ইন কাউন্টার, ২৪টি পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টার, ৬টি এস্কেলেটর, ৯টি লিফট, ৩টি লাগেজ কনভেয়ার বেল্ট, কার্গো ভবন, জেট ফুয়েল ডিপো ও কন্ট্রোল টাওয়ারসহ আনুষাঙ্গিক আরও কিছু অবকাঠামো নির্মাণের কথা ছিল। ২০২০ সালের ১ অক্টোবর উদ্বোধন হওয়া প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। কিন্তু ২২ শতাংশ কাজ হওয়ার পর নকশায় ত্রুটির কথা বলে বন্ধ রাখা হয় প্রকল্পের কাজ। প্রায় এক পঞ্চমাংশ কাজ শেষ হওয়ার পর নকশায় ত্রুটি ধরা পড়ার বিষয়টিকে রহস্যজনক বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

অনেকের দাবি, সময়ক্ষেপণ করে প্রকল্পের বরাদ্দ বাড়ানোর পাঁয়তারা ও সঠিক তদরকির অভাবে ওসমানী বিমানবন্দরের মেগা প্রকল্পটি আটকে আছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বিমানবন্দরের পুরো টার্মিনাল ভবনটিই ভুল নকশায় তৈরি করা হয়েছে। কোরিয়ান প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে করানো সেই ভুল নকশায় কাজ হলে ওসমানী বিমানবন্দরের সক্ষমতা কমবে। এই নকশায় আন্তর্জাতিক রুটে উড়োজাহাজ চলতে গেলে ভেঙে ফেলতে হবে টার্মিনাল ভবন। এছাড়া পুরনো নকশায় থাকা অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচল উপযোগী ছোট আকারের উড়োজাহাজের জন্য নির্মিতব্য বোর্ডিং ব্রিজের নকশা পরিবর্তন করে আন্তর্জাতিক রুটের উপযোগী করতে হবে। ভুল নকশায় কাজ আটকে থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেলস এজেন্ট অব বাংলাদেশ (আটাব) সিলেটের সাবেক সভাপতি আবদুল জব্বার জলিল বলেন, ‘কাজ শুরু করার আগেই নকশা যাচাই করা দরকার ছিল। তাহলে এ সমস্যা হতো না। এখন মাঝপথে ধরা পড়ায় অনেক লোকসান গুণতে হবে। সিলেটের প্রবাসীদেরও ভোগান্তি বাড়বে। ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের প্রকল্প-পরিচালক শাহ জুলফিকার হায়দার বলেন, বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের নকশায় কিছু সমস্যা ছিল। নকশা তৈরি করা কোরিয়ান কোম্পানিই এই ভুল করেছে। এ কারণে ওসমানী বিমানবন্দর সম্প্রসারণ কাজ আটকে আছে। সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণে প্রায় ১৭ হাজার টাকার প্রকল্প পাস হয়। প্রকল্পের নকশা প্রণয়নের পর ২০২০ সালে এসে ত্রুটি ধরা পড়ে। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়ে ২০২৬ সালের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে এই প্রকল্পের কাজই শুরু হয় ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এরপর ২ বছরের অধিক সময় পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কাজ এগিয়েছে মাত্র ১৫ থেকে ১৬ শতাংশ। জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় কাজ হচ্ছে ধীরগতিতে। বর্তমানে সড়কের দু’পাশে ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণের কাজ চলছে। প্রকল্পের কাজে আশানুরূপ অগ্রগতি না হওয়ায় যাতায়াত ভোগান্তিতে সিলেট অঞ্চলের কোটি মানুষ। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মহাসড়কটি ৬ লেনে উন্নীতকরণের কাজ কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। সময়মতো কাজ শেষ না হওয়ায় ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়েও তৈরি হবে জটিলতা। ঢাকা-সিলেট ৬ লেন প্রকল্পের সিলেট অংশের প্রজেক্ট ম্যানেজার দেবাশীষ রায় বলেন, প্রকল্পের কাজ এখন পর্যন্ত ১৫/১৬ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। আমাদের ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতা ছিল। এ কারণে কাজ আশানুরুপ এগোয়নি। এই প্রকল্পের প্রকল্প-পরিচালক এ কে মোহাম্মদ ফজলুল করীম জানান, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। ইতোমধ্যে বিদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো সময় বৃদ্ধি ও ক্ষতিপূরণের জন্য চিঠি দেয়া শুরু করেছে। তবে সম্প্রতি সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম জানিয়েছেন, ২/৩ মাসের মধ্যে এই মহাসড়কের সিলেট অংশের ভূমি অধিগ্রহণ শেষ হবে। আর ৬ মাসের মধ্যে সড়কের কাজ পুরোদমে শুরু হবে। সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণের প্রকল্পটি নিয়েও হতাশা দেখা দিয়েছে। জমি অধিগ্রহণে আটকে আছে প্রকল্পের ভবিষ্যৎ। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ ছিল। কিন্তু এখনও প্রকল্পটির কাজ দৃশ্যমান হয়নি।

এ প্রসঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, উন্নয়ন বন্টনে সিলেট সবসময় পিছিয়ে ছিল। তাই উন্নয়নে সমতা আনতে প্রধান উপদেষ্টাসহ বর্তমান সরকারের উচিত সিলেটকে গুরুত্ব দেয়া। অতীতে মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে জনপ্রতিনিধি হিসেবে সিলেট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের তদারকির অভাব ছিল। যেভাবে দায়িত্ব পালনের কথা ছিল, তিনি সেভাবে করেননি। যে কারণে অনেক প্রকল্প সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন হয়নি, উল্টো থমকে গেছে।

ছবি

খুলনায় চাঁদাবাজির অভিযোগে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

ছবি

শরণখোলায় সুন্দরবনের কচিখালিতে পর্যটকের মৃত্যু

ছবি

আওয়ামী লীগের মিছিল: ‘অভিযানে না গিয়ে থানায়’, ৩ পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

ছবি

কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে এসেছে মৃত ডলফিন

ছবি

দুর্গাপূজায় ২৯টি জেলা ঝুঁকিপূর্ণ

ছবি

সিলেটে উরাং সম্প্রদায়ের জন্য এক টাকার পূজোর বাজার

ছবি

বাংলাদেশসহ ৯ দেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আমিরাতের

ছবি

মহাসড়কের পাশে পরিস্কারের পর দুসপ্তাহেই আবার ময়লার স্তূপ

ছবি

পলাশে পঙ্গু যুবককে মালামালসহ দোকান করে দিল ‘আমরা দুর্বার’ সংগঠন

ছবি

কাশফুলের শুভ্রতা উপভোগে যমুনার পারে প্রকৃতি প্রেমীরা

ছবি

বেনাপোলের বড়আঁচড়ার মাঠপাড়ার একমাত্র রাস্তাটির বেহাল দশা

ছবি

জালে আটকে গেল ৮ ফুট লম্বা আজগর

ছবি

দ্বিতীয় তিস্তা সেতু রক্ষা বাঁধের ভাঙন পরিদর্শনে এলজিইডির টিম

ছবি

আলুর চিপসের ফেরিওয়ালা আব্দুল মান্নানের জীবন জীবিকার গল্প

ছবি

অযত্ন অবহেলায় ঐতিহ্য হারাচ্ছে মীর্জানগর প্রাচীন হাম্মামখানার

ছবি

কোম্পানীগঞ্জে বালু-পাথর লুটপাট রোধে নৌকা চলাচলের নতুন নির্দেশনা জারি, দুইজনকে কারাদণ্ড

ছবি

বিরামপুরে মাদ্রাসা চলাকালে প্রভাষক দম্পতির হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিত

ছবি

আদমদীঘিতে খাদ্যবান্ধব কর্মসুচির ১২০ বস্তা চাল জব্দ, গুদাম সিলগালা

ছবি

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ মহড়া শেষ

ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে মন্ডপে মন্ডপে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ

ছবি

দ্বিতীয়বার উদ্বোধন করা হলো মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের নবনির্মিত ভবন

ছবি

বিয়ের দাওয়াতে যেতে নিষেধ করায় গলায় ফাঁস দিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা

ছবি

ভাঙ্গায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় দুই চেয়ারম্যানসহ ২১ জনের নামে মামলা

ছবি

প্রতিমা শিল্পীর তুলির আঁচড়ে সাজছে দেবী দুর্গা

ছবি

খাগড়াছড়িতে সেনাবাহিনী ও ইউপিডিএফের গোলাগুলির ঘটনা

ছবি

আমরা আশাবাদী একটা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারবো: বদিউল আলম মজুমদার

ছবি

ভৈরবে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১০

ছবি

মহেশপুরের প্রথম চাষ হচ্ছে বিদেশি ফল প্যাশন

ছবি

ডুমুরিয়ায় চুন কারখানার বিষাক্ত ধোঁয়ায় জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে

ছবি

ডিমলায় প্রশাসনকে ম্যানেজ চলছে বালু উত্তোলন

ছবি

স্কুলযাত্রায় শিক্ষার্থীদের ভরসা মাঝিবিহীন ডিঙি নৌকা

ছবি

মীরসরাইয়ে আমনের ডগায় দুলছে কৃষকের নবান্নের স্বপ্ন

ছবি

চকরিয়ায় ধাওয়া খেয়ে নিখোঁজের ৩২ ঘণ্টা পর খাল থেকে যুবকের ভাসমান মরদেহ উদ্ধার

ছবি

দেশব্যাপী অভিযান: ১৮৪৯ জন গ্রেপ্তার

ছবি

শেরপুরে বন্যার পরিস্থিতির উন্নতি, ক্ষতির চিত্র ভেসে উঠছে

ছবি

প্রাথমিকে গানের শিক্ষক নিয়োগের প্রতিবাদে ওলামাদের বিক্ষোভ

tab

সিলেটের তিন বৃহৎ প্রকল্পে স্থবিরতা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, সিলেট

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সিলেটের ৩টি মেগা প্রকল্পের কাজে স্থবিরতা দেখা দেখা দিয়েছে। এতে দুর্ভোগ বাড়ছে এই অঞ্চলের মানুষের। এই প্রকল্পগুলোর কাজ কবে শেষ হবে, এ ব্যাপারেও নিশ্চিত নয় কেউ। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সিলেটের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে নেয়া হয়েছিল ৩টি মেগা প্রকল্প। বিগত সরকারের আমলেই নানা জটিলতায় প্রকল্প ৩টির কাজে স্থবিরতা দেখা দেয়। নতুন সরকারের আমলেও এসব প্রকল্পের কাজে আশানুরুপ গতি পায়নি। এসব মেগা প্রকল্পগুলোতে দেখা দেয় ‘মেগা জট’। ৪ বছরে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজ হয়েছে মাত্র ২২ ভাগ। নকশার ত্রুটির অজুহাতে প্রায় ২ বছরের অধিক সময় ধরে বন্ধ রয়েছে প্রকল্পের কাজ। সিলেট-ঢাকা মহাসড়ককে ৬ লেনে উন্নীতকরণের আশ্বাস শুনতে শুনতে বিরক্ত সিলেটবাসী। মহাসড়কটির উন্নয়ন কাজ হয়েছে মাত্র ১৬ ভাগ। আর সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণের কাজ এখনও দৃশ্যমানই হয়নি। ফলে মেগা প্রকল্পগুলো নিয়ে রীতিমতো আশাহত সিলেটের মানুষ। ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর ওসমানী বিমানবন্দর সম্প্রসারণ মেগা প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। প্রায় ২২০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পের আওতায় দ্বিতল বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন, ৬টি বোর্ডিং ব্রিজ, কনভেয়ার বেল্টসহ ৩৬টি চেক ইন কাউন্টার, ২৪টি পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টার, ৬টি এস্কেলেটর, ৯টি লিফট, ৩টি লাগেজ কনভেয়ার বেল্ট, কার্গো ভবন, জেট ফুয়েল ডিপো ও কন্ট্রোল টাওয়ারসহ আনুষাঙ্গিক আরও কিছু অবকাঠামো নির্মাণের কথা ছিল। ২০২০ সালের ১ অক্টোবর উদ্বোধন হওয়া প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। কিন্তু ২২ শতাংশ কাজ হওয়ার পর নকশায় ত্রুটির কথা বলে বন্ধ রাখা হয় প্রকল্পের কাজ। প্রায় এক পঞ্চমাংশ কাজ শেষ হওয়ার পর নকশায় ত্রুটি ধরা পড়ার বিষয়টিকে রহস্যজনক বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

অনেকের দাবি, সময়ক্ষেপণ করে প্রকল্পের বরাদ্দ বাড়ানোর পাঁয়তারা ও সঠিক তদরকির অভাবে ওসমানী বিমানবন্দরের মেগা প্রকল্পটি আটকে আছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বিমানবন্দরের পুরো টার্মিনাল ভবনটিই ভুল নকশায় তৈরি করা হয়েছে। কোরিয়ান প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে করানো সেই ভুল নকশায় কাজ হলে ওসমানী বিমানবন্দরের সক্ষমতা কমবে। এই নকশায় আন্তর্জাতিক রুটে উড়োজাহাজ চলতে গেলে ভেঙে ফেলতে হবে টার্মিনাল ভবন। এছাড়া পুরনো নকশায় থাকা অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচল উপযোগী ছোট আকারের উড়োজাহাজের জন্য নির্মিতব্য বোর্ডিং ব্রিজের নকশা পরিবর্তন করে আন্তর্জাতিক রুটের উপযোগী করতে হবে। ভুল নকশায় কাজ আটকে থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেলস এজেন্ট অব বাংলাদেশ (আটাব) সিলেটের সাবেক সভাপতি আবদুল জব্বার জলিল বলেন, ‘কাজ শুরু করার আগেই নকশা যাচাই করা দরকার ছিল। তাহলে এ সমস্যা হতো না। এখন মাঝপথে ধরা পড়ায় অনেক লোকসান গুণতে হবে। সিলেটের প্রবাসীদেরও ভোগান্তি বাড়বে। ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের প্রকল্প-পরিচালক শাহ জুলফিকার হায়দার বলেন, বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের নকশায় কিছু সমস্যা ছিল। নকশা তৈরি করা কোরিয়ান কোম্পানিই এই ভুল করেছে। এ কারণে ওসমানী বিমানবন্দর সম্প্রসারণ কাজ আটকে আছে। সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণে প্রায় ১৭ হাজার টাকার প্রকল্প পাস হয়। প্রকল্পের নকশা প্রণয়নের পর ২০২০ সালে এসে ত্রুটি ধরা পড়ে। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়ে ২০২৬ সালের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে এই প্রকল্পের কাজই শুরু হয় ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এরপর ২ বছরের অধিক সময় পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কাজ এগিয়েছে মাত্র ১৫ থেকে ১৬ শতাংশ। জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় কাজ হচ্ছে ধীরগতিতে। বর্তমানে সড়কের দু’পাশে ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণের কাজ চলছে। প্রকল্পের কাজে আশানুরূপ অগ্রগতি না হওয়ায় যাতায়াত ভোগান্তিতে সিলেট অঞ্চলের কোটি মানুষ। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মহাসড়কটি ৬ লেনে উন্নীতকরণের কাজ কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। সময়মতো কাজ শেষ না হওয়ায় ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়েও তৈরি হবে জটিলতা। ঢাকা-সিলেট ৬ লেন প্রকল্পের সিলেট অংশের প্রজেক্ট ম্যানেজার দেবাশীষ রায় বলেন, প্রকল্পের কাজ এখন পর্যন্ত ১৫/১৬ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। আমাদের ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতা ছিল। এ কারণে কাজ আশানুরুপ এগোয়নি। এই প্রকল্পের প্রকল্প-পরিচালক এ কে মোহাম্মদ ফজলুল করীম জানান, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। ইতোমধ্যে বিদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো সময় বৃদ্ধি ও ক্ষতিপূরণের জন্য চিঠি দেয়া শুরু করেছে। তবে সম্প্রতি সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম জানিয়েছেন, ২/৩ মাসের মধ্যে এই মহাসড়কের সিলেট অংশের ভূমি অধিগ্রহণ শেষ হবে। আর ৬ মাসের মধ্যে সড়কের কাজ পুরোদমে শুরু হবে। সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণের প্রকল্পটি নিয়েও হতাশা দেখা দিয়েছে। জমি অধিগ্রহণে আটকে আছে প্রকল্পের ভবিষ্যৎ। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ ছিল। কিন্তু এখনও প্রকল্পটির কাজ দৃশ্যমান হয়নি।

এ প্রসঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, উন্নয়ন বন্টনে সিলেট সবসময় পিছিয়ে ছিল। তাই উন্নয়নে সমতা আনতে প্রধান উপদেষ্টাসহ বর্তমান সরকারের উচিত সিলেটকে গুরুত্ব দেয়া। অতীতে মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে জনপ্রতিনিধি হিসেবে সিলেট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের তদারকির অভাব ছিল। যেভাবে দায়িত্ব পালনের কথা ছিল, তিনি সেভাবে করেননি। যে কারণে অনেক প্রকল্প সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন হয়নি, উল্টো থমকে গেছে।

back to top