ডুমুরিয়ার নলঘোনা বিলে মাচায় পদ্ধতিতে ব্যাপক চাষ হয়েছে বর্ষাকালীন তরমুজ। মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় এবং বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় অফসিজন তরমুজ চাষে আগ্রহ বেড়েছে বিলের অধিকাংশ কৃষকের। এ পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করায় কৃষকরা যেমন অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী হচ্ছে তেমনি দেশের দক্ষিণাঞ্চলে অর্থনীতিতেও নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে। এখানকার তরমুজ সিলেট জেলার শ্রীমঙ্গলের বাজারে পর্যন্ত চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ঢাকা, বরিশাল, কুমিল্লাসহ দেশের অন্যান্য জেলাতেও চলে যাচ্ছে ডুমুরিয়ার তরমুজ। সরজমিনে দেখা গেছে, ডুমুরিয়া উপজেলার নলঘোনা বিলে মৎস্য ঘেরে মাচা পদ্ধতিতে ব্যাপক চাষ হয়েছে বর্ষাকালীন তরমুজ। জমিতে পানি জমার কারণে কৃষকরা নতুন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছে তরমুজ। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির মাধ্যমে একই জমিতে ঘেরে মাছ চাষ এবং ঘেরের আইলে তরমুজ ও বিভিন্ন শাকসবজি চাষ হচ্ছে এখানে। কৃষি প্রযুক্তির অগ্রগতির কারণে কৃষকরা বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশেও তরমুজ চাষ করতে সক্ষম হচ্ছেন। ডুমুরিয়ার তরমুজ মিষ্টি, সুস্বাদু, পুষ্টিগুণ ও আকারের দিক থেকে আকর্ষণীয় হওয়ায় স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি বাহিরের বাজারেও চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক একটি তরমুজ ৪ থেকে ৫ কেজি বা তার চেয়েও বড় সাইজের হয়েছে। ভিতরে টুকটুকে লাল এবং খুবই মিষ্টি ও সুস্বাদু। ওই বিলে ডুমুরিয়া, রাজিবপুর দক্ষিণমহল, রাজাপুর, মৈখালী, ঘোনাবান্দা, উলা, তালতলা, লোহাইডাঙ্গা ও কাটাখালী এলাকার ৪/৫’শ কৃষক বর্ষাকালীন তরমুজ চাষ করেছেন। তবে এ বছর অতি বৃষ্টির কারণে ফলন কিছুটা কম হলেও বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় বেশ লাভের আশা দেখছেন কৃষকরা। প্রতি বিঘায় ২০/২৫ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে তরমুজ চাষীদের। এছাড়া দক্ষিণ ডুমুরিয়া অঞ্চলের অধিকাংশ বিলে মাচায় প্রচুর পরিমাণে অফসিজন তরমুজ চাষাবাদ হয়েছে। শরাফপুর ইউনিয়নের এক সময়ের নদীভাঙা এলাকা চাঁদগড়,আখড়া,সুন্দর মহল জুড়েও একই পদ্ধতিতে ব্যাপক তরমুজ চাষ লক্ষ্য করা গেছে।রোববার,২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বিকেল বেলায় রাজিবপুর দক্ষিণমহল তালতলা মোড়ে সরেজিমেন যেয়ে দেখা গেছে নলঘোনা বিলের তরমুজ সিলেটের শ্রীমঙ্গলে নেয়ার জন্য ট্রাকে তোলা হচ্ছে। বিলের অনেক কৃষক সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় কথা হয় কৃষক শের আলী গাজির সাথে।তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, প্রায় আড়াই বিঘা জমিতে তিনি তরমুজ চাষ করেছেন। ২৮০টি মাদায় ৫৬০টি চারা রোপন করেছিলেন। এবারই তিনি প্রথম চাষ করেছেন এই তরমুজ। শুরুতে প্রতিকেজি ৫০/৫৫ টাকায় বিক্রি হয়। এখন ৩৬/৩৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষক আবু হাসান বাকের মোল্লা জানান, দুই একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন তিনি। একেকটির ওজন ৪ থেকে ৫ কেজি হয়েছে। ভালো দাম পাওয়ায় অনেক লাভের আশা করছেন তিনি।তরমুজ ব্যাপারী নাজমুল গাজি ও হাফিজুর জানান, স্থানীয় বাজারের চেয়ে বাহিরে দাম একটু বেশি। যদিও ট্রাক ভাড়া অনেক বেশি তবুও তুলনামূলক বাজার দাম বেশি পাওয়া যাচ্ছে। সিলেটের শ্রীমঙ্গল বাজারে তরমুজের মোকাম খুবই ভালো।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ইনসাদ ইবনে আমিন জানান, ডুমুরিয়ায় এ বছর ২৩০ হেক্টর জমিতে অফসিজন তরমুজ চাষ হয়েছে। হেক্টরপ্রতি ৪০ থেকে ৪৫ মেট্রিক টন উৎপাদন সম্ভাবনা রয়েছে। নলঘোনা, কুলবাড়িয়া, খুটোখালী, শোভনা, আটলিয়া, আখড়া, চাঁদগড়, সাহস, সুন্দর মহল, বৃত্তিভুলবাড়িয়াসহ বিশেষ করে দক্ষিণ ডুমুরিয়া অঞ্চলে বেশি চাষাবাদ হয়েছে এ তরমুজ।খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, ডুমুরিয়ার সাংবাদিক শেখ মাহতাব প্রথমে তার মাছের ঘেরের আইলে অফ সিজনে তরমুজ চাষ শুরু করেছিলেন কয়েক বছর আগে।
তার দেখাদেখি উপজেলার অন্যন্য এলাকার কৃষকেরাও ঘেরের আইলে তরমুজ চাষ শুরু করেছিলেন। আজ তা প্রসারতা লাভ করে গোটা উপজেলা জুড়েই চাষাবাদ হচ্ছে।
রোববার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ডুমুরিয়ার নলঘোনা বিলে মাচায় পদ্ধতিতে ব্যাপক চাষ হয়েছে বর্ষাকালীন তরমুজ। মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় এবং বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় অফসিজন তরমুজ চাষে আগ্রহ বেড়েছে বিলের অধিকাংশ কৃষকের। এ পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করায় কৃষকরা যেমন অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী হচ্ছে তেমনি দেশের দক্ষিণাঞ্চলে অর্থনীতিতেও নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে। এখানকার তরমুজ সিলেট জেলার শ্রীমঙ্গলের বাজারে পর্যন্ত চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ঢাকা, বরিশাল, কুমিল্লাসহ দেশের অন্যান্য জেলাতেও চলে যাচ্ছে ডুমুরিয়ার তরমুজ। সরজমিনে দেখা গেছে, ডুমুরিয়া উপজেলার নলঘোনা বিলে মৎস্য ঘেরে মাচা পদ্ধতিতে ব্যাপক চাষ হয়েছে বর্ষাকালীন তরমুজ। জমিতে পানি জমার কারণে কৃষকরা নতুন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছে তরমুজ। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির মাধ্যমে একই জমিতে ঘেরে মাছ চাষ এবং ঘেরের আইলে তরমুজ ও বিভিন্ন শাকসবজি চাষ হচ্ছে এখানে। কৃষি প্রযুক্তির অগ্রগতির কারণে কৃষকরা বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশেও তরমুজ চাষ করতে সক্ষম হচ্ছেন। ডুমুরিয়ার তরমুজ মিষ্টি, সুস্বাদু, পুষ্টিগুণ ও আকারের দিক থেকে আকর্ষণীয় হওয়ায় স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি বাহিরের বাজারেও চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক একটি তরমুজ ৪ থেকে ৫ কেজি বা তার চেয়েও বড় সাইজের হয়েছে। ভিতরে টুকটুকে লাল এবং খুবই মিষ্টি ও সুস্বাদু। ওই বিলে ডুমুরিয়া, রাজিবপুর দক্ষিণমহল, রাজাপুর, মৈখালী, ঘোনাবান্দা, উলা, তালতলা, লোহাইডাঙ্গা ও কাটাখালী এলাকার ৪/৫’শ কৃষক বর্ষাকালীন তরমুজ চাষ করেছেন। তবে এ বছর অতি বৃষ্টির কারণে ফলন কিছুটা কম হলেও বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় বেশ লাভের আশা দেখছেন কৃষকরা। প্রতি বিঘায় ২০/২৫ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে তরমুজ চাষীদের। এছাড়া দক্ষিণ ডুমুরিয়া অঞ্চলের অধিকাংশ বিলে মাচায় প্রচুর পরিমাণে অফসিজন তরমুজ চাষাবাদ হয়েছে। শরাফপুর ইউনিয়নের এক সময়ের নদীভাঙা এলাকা চাঁদগড়,আখড়া,সুন্দর মহল জুড়েও একই পদ্ধতিতে ব্যাপক তরমুজ চাষ লক্ষ্য করা গেছে।রোববার,২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বিকেল বেলায় রাজিবপুর দক্ষিণমহল তালতলা মোড়ে সরেজিমেন যেয়ে দেখা গেছে নলঘোনা বিলের তরমুজ সিলেটের শ্রীমঙ্গলে নেয়ার জন্য ট্রাকে তোলা হচ্ছে। বিলের অনেক কৃষক সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় কথা হয় কৃষক শের আলী গাজির সাথে।তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, প্রায় আড়াই বিঘা জমিতে তিনি তরমুজ চাষ করেছেন। ২৮০টি মাদায় ৫৬০টি চারা রোপন করেছিলেন। এবারই তিনি প্রথম চাষ করেছেন এই তরমুজ। শুরুতে প্রতিকেজি ৫০/৫৫ টাকায় বিক্রি হয়। এখন ৩৬/৩৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষক আবু হাসান বাকের মোল্লা জানান, দুই একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন তিনি। একেকটির ওজন ৪ থেকে ৫ কেজি হয়েছে। ভালো দাম পাওয়ায় অনেক লাভের আশা করছেন তিনি।তরমুজ ব্যাপারী নাজমুল গাজি ও হাফিজুর জানান, স্থানীয় বাজারের চেয়ে বাহিরে দাম একটু বেশি। যদিও ট্রাক ভাড়া অনেক বেশি তবুও তুলনামূলক বাজার দাম বেশি পাওয়া যাচ্ছে। সিলেটের শ্রীমঙ্গল বাজারে তরমুজের মোকাম খুবই ভালো।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ইনসাদ ইবনে আমিন জানান, ডুমুরিয়ায় এ বছর ২৩০ হেক্টর জমিতে অফসিজন তরমুজ চাষ হয়েছে। হেক্টরপ্রতি ৪০ থেকে ৪৫ মেট্রিক টন উৎপাদন সম্ভাবনা রয়েছে। নলঘোনা, কুলবাড়িয়া, খুটোখালী, শোভনা, আটলিয়া, আখড়া, চাঁদগড়, সাহস, সুন্দর মহল, বৃত্তিভুলবাড়িয়াসহ বিশেষ করে দক্ষিণ ডুমুরিয়া অঞ্চলে বেশি চাষাবাদ হয়েছে এ তরমুজ।খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, ডুমুরিয়ার সাংবাদিক শেখ মাহতাব প্রথমে তার মাছের ঘেরের আইলে অফ সিজনে তরমুজ চাষ শুরু করেছিলেন কয়েক বছর আগে।
তার দেখাদেখি উপজেলার অন্যন্য এলাকার কৃষকেরাও ঘেরের আইলে তরমুজ চাষ শুরু করেছিলেন। আজ তা প্রসারতা লাভ করে গোটা উপজেলা জুড়েই চাষাবাদ হচ্ছে।