ভৈরব বিসিক শিল্পনগরী প্লট বরাদ্দের ৩ বছরে উৎপাদনে গেছে মাত্র ১টি শিল্প কারখানা। বরাদ্দপ্রাপ্ত প্লটগুলোর বেশিরভাগই পড়ে আছে ফাঁকা। সেখানে গজিয়ে উঠেছে কাঁশবন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ভৈরব-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক সড়কের পাশে বিশাল এলাকা জুড়ে গড়ে উঠেছে বিসিক শিল্প নগরী। প্রধান ফটক পেরিলে চোখে পড়ে কয়েকটি নির্মাণীন কারখানা। তাদের মধ্যে মেসার্স জিলানী ফ্লাওয়ার মিলস এন্ড ফুড প্রোডাক্টস নামের একটি কারখানা উৎপাদন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তবে বাকি কয়েকটি কারখানা নির্মাণ কাজ চলছে। একটু সামনে এগোতেই দেখা মিলছে সারি সারি কাঁশবন। প্রতিটি প্লটেই ফুটেছে ফুল। নেই কোনো কর্মচাঞ্চল্য।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৩ সালে ভৈরব উপজেলার কালিকাপ্রসাদ এলাকায় ৪০ একর ভূমিতে বিসিক শিল্প নগরী গড়ে তোলার জন্য সরকার অনুমোদন দেয়। কিন্তু নানা জটিলতার কারণে নির্মাণ কাজ শুরু করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছিলো। পরবর্তীতে ২০২১ সালে সেপ্টেম্বরে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে ২০২২ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। শিল্পের বিকাশ ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কাজ শুরু হলেও আশানুরূপভাবে এগোচ্ছে না ভৈরব বিসিক শিল্পনগরীর কার্যক্রম। ২০২১ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পটির কাজ শেষ হয় ২০২২ সালে। প্লট বরাদ্দের পর ৩ বছরে মাত্র ১টি শিল্প কারখানা উৎপাদন শুরু করেছে। এছাড়া উৎপাদনের অপেক্ষায় ৮টি শিল্প প্রতিষ্ঠান, নির্মাণাধীন ৭টি, নির্মাণের অপেক্ষায় ১৮টি শিল্প প্রতিষ্ঠান। বাকি ২২টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তারা এখনো কোন দৃশ্যমান কার্যক্রম শুরু করেনি।
ভৈরব বিসিক শিল্প নগরীতে ১২৪ শিল্প ইউনিটে ২৩৪ প্লট বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে খাদ্য উৎপাদন খাতে ৪০টি, বস্ত্র উৎপাদন খাতে ৩টি, রসায়ন খাতে ৪০টি, চামড়া ও রাবার শিল্প উৎপাদন খাতে ২২টি, প্রকৌশলী উৎপাদন খাতে ১৪টি ও প্যাকেজিং উৎপাদন খাতে ৫টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যদি শিল্প নগরীর সব কারখানা চালু হয় তাহলে প্রায় ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং এলাকার আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে। বদলে যাবে ভৈরবের মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা। এ অঞ্চলের মানুষের প্রধান পেশা পাদুকা শিল্পের ক্লাষ্টারের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এতে এ শিল্পে জড়িতরা সহজ শর্তে ঋণসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে।
কিন্তু দেশের পট পরিবর্তনের ফলে বিসিক শিল্প নগরীর কার্যক্রমে নেই কোন অগ্রগতি। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি সরকার যেন অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে ভৈরব বিসিক শিল্পের বরাদ্দকৃত সকল কারখানা উৎপাদনের যেতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। স্থানীয় বাসিন্দা মিলাত মিয়া বলেন, বিসিক শিল্পের কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু না হওয়ায় এখানে রাত হলেই অপরাধ চক্রের দৌরাত্ম বেড়ে যায়। যার ফলে বিসিক সংলগ্ন এলাকায় ছিনতাইসহ ঘটছে নানা ধরণের অপরাধমূলক কর্মকা-।
কালিকাপ্রসাদ ইউপি চেয়ারম্যান মো. লিটন মিয়া বলেন, প্রশাসনের নিকট আবেদন অতি দ্রুত যেন বিসিকের সকল কার্যক্রম শুরু করে। তাহলে এলাকার হাজারো মানুষের কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
ভৈরব চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রি সভাপতি আলহাজ্ব জাহিদুল হক জাবেদ বলেন, বিসিক শিল্পে ৩ বছরে মাত্র একটি কারখানা উৎপাদনে যেতে পেরেছেন। বাকিগুলি এখনো উৎপাদনে যেতে পারেনি। তাদের মধ্যে বরাদ্দ পাওয়া বেশিভাগই এখনো স্থাপনার কাজ শুরু করেনি। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি থাকবে যারা বিসিক শিল্পে এখনো তাদের বরাদ্দকৃত প্লট কোন কাজ শুরু করেনি সেসব প্লট মালিকদের বাতিল করে নতুন ভাবে প্লট বরাদ্দের দাবি তার।
এ বিষয়ে ভৈরব শিল্প নগরীর কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবিদুর রহমান খান জানান, ভৈরব বিসিক শিল্পে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই ১টি শিল্প কারখানা উৎপাদন শুরু করেছে। এছাড়া উৎপাদনের অপেক্ষায় ৮টি শিল্প প্রতিষ্ঠান, নির্মাণাধীন ৭টি, নির্মাণের অপেক্ষায় ১৮টি শিল্প প্রতিষ্ঠান। বাকি ২২টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ওইসব প্লটে খুব দ্রুতই নির্মাণ কাজ শুরু করবেন বলে তিনি জানান।
রোববার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ভৈরব বিসিক শিল্পনগরী প্লট বরাদ্দের ৩ বছরে উৎপাদনে গেছে মাত্র ১টি শিল্প কারখানা। বরাদ্দপ্রাপ্ত প্লটগুলোর বেশিরভাগই পড়ে আছে ফাঁকা। সেখানে গজিয়ে উঠেছে কাঁশবন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ভৈরব-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক সড়কের পাশে বিশাল এলাকা জুড়ে গড়ে উঠেছে বিসিক শিল্প নগরী। প্রধান ফটক পেরিলে চোখে পড়ে কয়েকটি নির্মাণীন কারখানা। তাদের মধ্যে মেসার্স জিলানী ফ্লাওয়ার মিলস এন্ড ফুড প্রোডাক্টস নামের একটি কারখানা উৎপাদন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তবে বাকি কয়েকটি কারখানা নির্মাণ কাজ চলছে। একটু সামনে এগোতেই দেখা মিলছে সারি সারি কাঁশবন। প্রতিটি প্লটেই ফুটেছে ফুল। নেই কোনো কর্মচাঞ্চল্য।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৩ সালে ভৈরব উপজেলার কালিকাপ্রসাদ এলাকায় ৪০ একর ভূমিতে বিসিক শিল্প নগরী গড়ে তোলার জন্য সরকার অনুমোদন দেয়। কিন্তু নানা জটিলতার কারণে নির্মাণ কাজ শুরু করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছিলো। পরবর্তীতে ২০২১ সালে সেপ্টেম্বরে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে ২০২২ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। শিল্পের বিকাশ ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কাজ শুরু হলেও আশানুরূপভাবে এগোচ্ছে না ভৈরব বিসিক শিল্পনগরীর কার্যক্রম। ২০২১ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পটির কাজ শেষ হয় ২০২২ সালে। প্লট বরাদ্দের পর ৩ বছরে মাত্র ১টি শিল্প কারখানা উৎপাদন শুরু করেছে। এছাড়া উৎপাদনের অপেক্ষায় ৮টি শিল্প প্রতিষ্ঠান, নির্মাণাধীন ৭টি, নির্মাণের অপেক্ষায় ১৮টি শিল্প প্রতিষ্ঠান। বাকি ২২টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তারা এখনো কোন দৃশ্যমান কার্যক্রম শুরু করেনি।
ভৈরব বিসিক শিল্প নগরীতে ১২৪ শিল্প ইউনিটে ২৩৪ প্লট বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে খাদ্য উৎপাদন খাতে ৪০টি, বস্ত্র উৎপাদন খাতে ৩টি, রসায়ন খাতে ৪০টি, চামড়া ও রাবার শিল্প উৎপাদন খাতে ২২টি, প্রকৌশলী উৎপাদন খাতে ১৪টি ও প্যাকেজিং উৎপাদন খাতে ৫টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যদি শিল্প নগরীর সব কারখানা চালু হয় তাহলে প্রায় ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং এলাকার আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে। বদলে যাবে ভৈরবের মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা। এ অঞ্চলের মানুষের প্রধান পেশা পাদুকা শিল্পের ক্লাষ্টারের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এতে এ শিল্পে জড়িতরা সহজ শর্তে ঋণসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে।
কিন্তু দেশের পট পরিবর্তনের ফলে বিসিক শিল্প নগরীর কার্যক্রমে নেই কোন অগ্রগতি। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি সরকার যেন অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে ভৈরব বিসিক শিল্পের বরাদ্দকৃত সকল কারখানা উৎপাদনের যেতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। স্থানীয় বাসিন্দা মিলাত মিয়া বলেন, বিসিক শিল্পের কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু না হওয়ায় এখানে রাত হলেই অপরাধ চক্রের দৌরাত্ম বেড়ে যায়। যার ফলে বিসিক সংলগ্ন এলাকায় ছিনতাইসহ ঘটছে নানা ধরণের অপরাধমূলক কর্মকা-।
কালিকাপ্রসাদ ইউপি চেয়ারম্যান মো. লিটন মিয়া বলেন, প্রশাসনের নিকট আবেদন অতি দ্রুত যেন বিসিকের সকল কার্যক্রম শুরু করে। তাহলে এলাকার হাজারো মানুষের কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
ভৈরব চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রি সভাপতি আলহাজ্ব জাহিদুল হক জাবেদ বলেন, বিসিক শিল্পে ৩ বছরে মাত্র একটি কারখানা উৎপাদনে যেতে পেরেছেন। বাকিগুলি এখনো উৎপাদনে যেতে পারেনি। তাদের মধ্যে বরাদ্দ পাওয়া বেশিভাগই এখনো স্থাপনার কাজ শুরু করেনি। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি থাকবে যারা বিসিক শিল্পে এখনো তাদের বরাদ্দকৃত প্লট কোন কাজ শুরু করেনি সেসব প্লট মালিকদের বাতিল করে নতুন ভাবে প্লট বরাদ্দের দাবি তার।
এ বিষয়ে ভৈরব শিল্প নগরীর কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবিদুর রহমান খান জানান, ভৈরব বিসিক শিল্পে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই ১টি শিল্প কারখানা উৎপাদন শুরু করেছে। এছাড়া উৎপাদনের অপেক্ষায় ৮টি শিল্প প্রতিষ্ঠান, নির্মাণাধীন ৭টি, নির্মাণের অপেক্ষায় ১৮টি শিল্প প্রতিষ্ঠান। বাকি ২২টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ওইসব প্লটে খুব দ্রুতই নির্মাণ কাজ শুরু করবেন বলে তিনি জানান।