খুলনার বাস্তুহারায় মুক্তিযোদ্ধা কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযানে স্থানীয়দের বাধা -সংবাদ
খুলনার বাস্তুহারা এলাকার মুক্তিযোদ্ধা কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযানের সময় পুলিশের সঙ্গে বাসিন্দাদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পুলিশ সদস্য, স্থানীয় বাসিন্দা ও সাংবাদিকসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন।
রোববার,(২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫) সকালে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করলে তারা উচ্ছেদ করতে দিবেন না।
খালিশপুর থানার ওসি মীর আতাহার আলী জানান, সকালে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের যুগ্ম সচিবসহ অন্য কর্মকর্তারা ছিলেন। আমরা সতর্ক করলেও বাসিন্দারা সরেননি।
ওসি বলেন, আমরা একটু এগোতে গেলে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু হয়। এ সময় তিনি সহ পুলিশের ১৪ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
ওসি বলেন, অভিযান স্থগিত করে ফিরে আসছি। এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল শনিবার রাতে গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ এলাকায় মাইকিং করে সকালের মধ্যে বাসা ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়। রোববার, সকাল আটটার দিক থেকে ওই এলাকায় এক্সকাভেটর, বুলডোজার ঢুকতে থাকে। এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সেখানে পুলিশ সদস্যরা যান।
এ সময় এলাকার মসজিদের মাইক থেকে বাসিন্দাদের রাস্তায় আসার আহ্বান জানানো হয়। লোকজন জড়ো হয়ে পুলিশের সামনে ব্যারিকেড তৈরি করেন। পুলিশ একপর্যায়ে লাঠিপেটা শুরু করে।
এ সময় অন্তত তিনজনের মাথায় আঘাত লাগে। স্থানীয় লোকজন এক্সকাভেটর চালককে অবরুদ্ধ করেন। পুলিশ তখন কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়া শুরু করে।
এলাকাবাসী পাল্টা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে এবং টায়ার জ্বালিয়ে, গাছের গুঁড়ি ফেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন। তখন পুলিশ পিছু হটে। এ সময় এক্সকাভেটর ভাঙচুর করে জনতা।
এ ঘটনায় পুলিশ সদস্য, স্থানীয় বাসিন্দা ও সাংবাদিকসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন।
গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাস্তুহারা নামে পরিচিত ওই এলাকা ‘বয়রা আবাসিক এলাকা’। সেখানে প্রায় ৩০ একর জায়গা রয়েছে। এর মধ্যে ‘সি’ ব্লকে তাদের ৫৫টির মতো প্লট আছে। যেগুলো ১৯৮৭ সালে স্থায়ী বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে ৪২টি প্লট বেদখল হয়ে থাকায় ৩৮ বছর ধরে তারা প্রকৃত মালিকদের বুঝিয়ে দিতে পারেনি। বিভিন্ন সময় পাঁচ দফায় উচ্ছেদ করতে গেলেও রাজনৈতিক কারণে দখলদারদের সরানো যায়নি। বিভিন্ন সরকারের আমলে মন্ত্রী, মেয়র, প্রভাবশালী নেতারা উচ্ছেদ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করেছেন।
গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ জানান, আগাম ঘোষণা দিয়ে আজ ওই ৪২টি প্লটের জায়গায় উচ্ছেদ অভিযান চালাতে যায় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ।
গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউর রহমান বলেন, বয়রা আবাসিক এলাকার ‘সি’ ব্লকের ৪২টি প্লট দখলদারের দখলে। আগে অনেকবার চেষ্টা করেও দখলদার উচ্ছেদ করে প্লট বুঝিয়ে দেয়া যায়নি। আজ সকালে উচ্ছেদ অভিযানে গেলে বাধার সম্মুখীন হই।
জিয়াউর বলেন, উচ্ছেদ অভিযানের সময় আমাদের কয়েকজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আপাতত উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত করা হয়েছে।
খুলনার বাস্তুহারায় মুক্তিযোদ্ধা কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযানে স্থানীয়দের বাধা -সংবাদ
রোববার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
খুলনার বাস্তুহারা এলাকার মুক্তিযোদ্ধা কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযানের সময় পুলিশের সঙ্গে বাসিন্দাদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পুলিশ সদস্য, স্থানীয় বাসিন্দা ও সাংবাদিকসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন।
রোববার,(২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫) সকালে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করলে তারা উচ্ছেদ করতে দিবেন না।
খালিশপুর থানার ওসি মীর আতাহার আলী জানান, সকালে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের যুগ্ম সচিবসহ অন্য কর্মকর্তারা ছিলেন। আমরা সতর্ক করলেও বাসিন্দারা সরেননি।
ওসি বলেন, আমরা একটু এগোতে গেলে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু হয়। এ সময় তিনি সহ পুলিশের ১৪ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
ওসি বলেন, অভিযান স্থগিত করে ফিরে আসছি। এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল শনিবার রাতে গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ এলাকায় মাইকিং করে সকালের মধ্যে বাসা ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়। রোববার, সকাল আটটার দিক থেকে ওই এলাকায় এক্সকাভেটর, বুলডোজার ঢুকতে থাকে। এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সেখানে পুলিশ সদস্যরা যান।
এ সময় এলাকার মসজিদের মাইক থেকে বাসিন্দাদের রাস্তায় আসার আহ্বান জানানো হয়। লোকজন জড়ো হয়ে পুলিশের সামনে ব্যারিকেড তৈরি করেন। পুলিশ একপর্যায়ে লাঠিপেটা শুরু করে।
এ সময় অন্তত তিনজনের মাথায় আঘাত লাগে। স্থানীয় লোকজন এক্সকাভেটর চালককে অবরুদ্ধ করেন। পুলিশ তখন কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়া শুরু করে।
এলাকাবাসী পাল্টা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে এবং টায়ার জ্বালিয়ে, গাছের গুঁড়ি ফেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন। তখন পুলিশ পিছু হটে। এ সময় এক্সকাভেটর ভাঙচুর করে জনতা।
এ ঘটনায় পুলিশ সদস্য, স্থানীয় বাসিন্দা ও সাংবাদিকসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন।
গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাস্তুহারা নামে পরিচিত ওই এলাকা ‘বয়রা আবাসিক এলাকা’। সেখানে প্রায় ৩০ একর জায়গা রয়েছে। এর মধ্যে ‘সি’ ব্লকে তাদের ৫৫টির মতো প্লট আছে। যেগুলো ১৯৮৭ সালে স্থায়ী বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে ৪২টি প্লট বেদখল হয়ে থাকায় ৩৮ বছর ধরে তারা প্রকৃত মালিকদের বুঝিয়ে দিতে পারেনি। বিভিন্ন সময় পাঁচ দফায় উচ্ছেদ করতে গেলেও রাজনৈতিক কারণে দখলদারদের সরানো যায়নি। বিভিন্ন সরকারের আমলে মন্ত্রী, মেয়র, প্রভাবশালী নেতারা উচ্ছেদ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করেছেন।
গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ জানান, আগাম ঘোষণা দিয়ে আজ ওই ৪২টি প্লটের জায়গায় উচ্ছেদ অভিযান চালাতে যায় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ।
গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউর রহমান বলেন, বয়রা আবাসিক এলাকার ‘সি’ ব্লকের ৪২টি প্লট দখলদারের দখলে। আগে অনেকবার চেষ্টা করেও দখলদার উচ্ছেদ করে প্লট বুঝিয়ে দেয়া যায়নি। আজ সকালে উচ্ছেদ অভিযানে গেলে বাধার সম্মুখীন হই।
জিয়াউর বলেন, উচ্ছেদ অভিযানের সময় আমাদের কয়েকজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আপাতত উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত করা হয়েছে।