মুরাদনগর (কুমিল্লা) : মুরাদনগর উপজেলার কুড়াখাল কুরুন্ডি দাখিল মাদরাসায় শ্রেনি কক্ষের অভাবে গাছতলায় বসে পাঠদানের একাংশ -সংবাদ
কুমিল্লার মুরাদনগরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তীব্র ভবন ও শ্রেণিকক্ষ সংকটে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মুখে পড়েছে। উপজেলার ৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত অবকাঠামো নেই, যার মধ্যে ৫টি প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব কোনো ভবনই নেই। বছরের পর বছর ধরে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা খোলা আকাশের নিচে বা জরাজীর্ণ টিনের ঘরে ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে। ভুক্তভোগী শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা দীর্ঘদিন ধরে ভবন নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে আসছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাদের দাবি, মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে দ্রুত এই সংকট সমাধান করা হোক।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, শুশুন্ডা উচ্চ বিদ্যালয়, দেওড়া উচ্চ বিদ্যালয়, দিঘিরপাড় বেগম সুফিয়া সৈকত কলেজ, যাত্রাপুর তানজিমুল মিল্লাত দাখিল মাদরাসা এবং চৈনপুর দাখিল মাদরাসায় কোন স্থায়ী ভবন নেই। এর ফলে বৃষ্টি, ঝড় বা অতিরিক্ত গরমে ক্লাস বন্ধ করে দিতে হয়, যা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যাপক ক্ষতি করছে। অন্যদিকে, শ্রেনিকক্ষ ও অতিরিক্ত ভবন না থাকায় শিক্ষার্থীরা গাদাগাদি করে বসে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে, এমন প্রতিষ্ঠান গুলো হচ্ছে- যাত্রাপুর এ. কে উচ্চ বিদ্যালয়, পাঁচপুকুরিয়া বাজার উচ্চ বিদ্যালয়, রামচন্দ্রপুর রামকান্ত উচ্চ বিদ্যালয়, বাঁশকাইট পি. জে. উচ্চ বিদ্যালয়, বাবুটিপাড়া জিবিডি আমির হামজা উচ্চ বিদ্যালয়, আকুবপুর ইয়াকুব আলী ভুইয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়, বলিঘর হুজুরীশাহ্ উচ্চ বিদ্যালয়, ধামঘর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, আন্দিকুট সৈয়দ গোলাম জিলানী উচ্চ বিদ্যালয়, ঘোড়াশাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মুরাদনগর নুরুন্নাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কুড়াখাল কুরুন্ডি দাখিল মাদরাসা, খামারগ্রাম ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা, সরমাকান্দা ইসলামিয়া আদর্শ দাখিল মাদরাসা, ধামঘর শাহ্ কাজেম আলিম মাদরাসা, রামচন্দ্রপুর সোনা মিয়া মোল্লা দাখিল মাদরাসা, আকুবপুর মোহাম্মদিয়া আলিম মাদরাসা, পালাসুতা দাখিল মাদরাসা, কোম্পানীগঞ্জ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা, মুরাদনগর মোসলেম মিয়া দাখিল মাদরাসা, নোয়াপুস্করিনী কেরামতিয়া দাখিল মাদরাসা, শ্রীকাইল সরকারি কলেজ, মুরাদনগর কাজী নোমান আহমেদ ডিগ্রী কলেজ, বাঁশকাইট ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ডিগ্রি কলেজ ও রামচন্দ্রপুর অধ্যাপক আবদুল মজিদ কলেজ।
কুড়াখাল কুরুন্ডি দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আ.ন. ম. জসিম উদ্দিন মোল্লা বলেন, ১৯৯৮ সালে নির্মিত আমাদের একমাত্র ভবনটি এখন পুরোপুরি ঝুঁকিপূর্ণ। দু’টি মাত্র কক্ষে কোনমতে চলে মাদ্রাসার কার্যক্রম। শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবে ক্লাস করানোটা আমাদের জন্য খুবই কষ্টের। ঝড়-বৃষ্টির দিনে বাধ্য হয়ে জরাজীর্ণ টিনের ঘরে ক্লাস করাই, বাকি সময়টা খোলা আকাশের নিচে বসেই শিক্ষার্থীদের ক্লাশ করাতে হচ্ছে। গত ২৭ বছর ধরে একটি নতুন ভবনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে বহুবার আকুতি-মিনতি জানিয়েছি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। আমাদের এই দুর্ভোগের কথা কেউ শুনছে না। একটি নতুন ভবন নির্মাণ হলে শিক্ষার্থীরা নিরাপদে এবং সুষ্ঠু পরিবেশে পড়াশোনা করতে পারবে। আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করছি, আমাদের এই চরম দুর্দশার দিকে একটু নজর দিন।
মুরাদনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সফিউল আলম তালুকদারও এই পরিস্থিতি স্বীকার করে বলেন, শিক্ষার্থীদের সঠিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে নতুন ভবন নির্মাণ এবং পুরোনো ভবনগুলোর সম্প্রসারণ খুবই জরুরি। শিক্ষার পরিবেশ উন্নত করতে সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
মুরাদনগর (কুমিল্লা) : মুরাদনগর উপজেলার কুড়াখাল কুরুন্ডি দাখিল মাদরাসায় শ্রেনি কক্ষের অভাবে গাছতলায় বসে পাঠদানের একাংশ -সংবাদ
সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
কুমিল্লার মুরাদনগরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তীব্র ভবন ও শ্রেণিকক্ষ সংকটে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মুখে পড়েছে। উপজেলার ৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত অবকাঠামো নেই, যার মধ্যে ৫টি প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব কোনো ভবনই নেই। বছরের পর বছর ধরে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা খোলা আকাশের নিচে বা জরাজীর্ণ টিনের ঘরে ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে। ভুক্তভোগী শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা দীর্ঘদিন ধরে ভবন নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে আসছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাদের দাবি, মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে দ্রুত এই সংকট সমাধান করা হোক।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, শুশুন্ডা উচ্চ বিদ্যালয়, দেওড়া উচ্চ বিদ্যালয়, দিঘিরপাড় বেগম সুফিয়া সৈকত কলেজ, যাত্রাপুর তানজিমুল মিল্লাত দাখিল মাদরাসা এবং চৈনপুর দাখিল মাদরাসায় কোন স্থায়ী ভবন নেই। এর ফলে বৃষ্টি, ঝড় বা অতিরিক্ত গরমে ক্লাস বন্ধ করে দিতে হয়, যা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যাপক ক্ষতি করছে। অন্যদিকে, শ্রেনিকক্ষ ও অতিরিক্ত ভবন না থাকায় শিক্ষার্থীরা গাদাগাদি করে বসে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে, এমন প্রতিষ্ঠান গুলো হচ্ছে- যাত্রাপুর এ. কে উচ্চ বিদ্যালয়, পাঁচপুকুরিয়া বাজার উচ্চ বিদ্যালয়, রামচন্দ্রপুর রামকান্ত উচ্চ বিদ্যালয়, বাঁশকাইট পি. জে. উচ্চ বিদ্যালয়, বাবুটিপাড়া জিবিডি আমির হামজা উচ্চ বিদ্যালয়, আকুবপুর ইয়াকুব আলী ভুইয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়, বলিঘর হুজুরীশাহ্ উচ্চ বিদ্যালয়, ধামঘর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, আন্দিকুট সৈয়দ গোলাম জিলানী উচ্চ বিদ্যালয়, ঘোড়াশাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মুরাদনগর নুরুন্নাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কুড়াখাল কুরুন্ডি দাখিল মাদরাসা, খামারগ্রাম ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা, সরমাকান্দা ইসলামিয়া আদর্শ দাখিল মাদরাসা, ধামঘর শাহ্ কাজেম আলিম মাদরাসা, রামচন্দ্রপুর সোনা মিয়া মোল্লা দাখিল মাদরাসা, আকুবপুর মোহাম্মদিয়া আলিম মাদরাসা, পালাসুতা দাখিল মাদরাসা, কোম্পানীগঞ্জ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা, মুরাদনগর মোসলেম মিয়া দাখিল মাদরাসা, নোয়াপুস্করিনী কেরামতিয়া দাখিল মাদরাসা, শ্রীকাইল সরকারি কলেজ, মুরাদনগর কাজী নোমান আহমেদ ডিগ্রী কলেজ, বাঁশকাইট ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ডিগ্রি কলেজ ও রামচন্দ্রপুর অধ্যাপক আবদুল মজিদ কলেজ।
কুড়াখাল কুরুন্ডি দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আ.ন. ম. জসিম উদ্দিন মোল্লা বলেন, ১৯৯৮ সালে নির্মিত আমাদের একমাত্র ভবনটি এখন পুরোপুরি ঝুঁকিপূর্ণ। দু’টি মাত্র কক্ষে কোনমতে চলে মাদ্রাসার কার্যক্রম। শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবে ক্লাস করানোটা আমাদের জন্য খুবই কষ্টের। ঝড়-বৃষ্টির দিনে বাধ্য হয়ে জরাজীর্ণ টিনের ঘরে ক্লাস করাই, বাকি সময়টা খোলা আকাশের নিচে বসেই শিক্ষার্থীদের ক্লাশ করাতে হচ্ছে। গত ২৭ বছর ধরে একটি নতুন ভবনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে বহুবার আকুতি-মিনতি জানিয়েছি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। আমাদের এই দুর্ভোগের কথা কেউ শুনছে না। একটি নতুন ভবন নির্মাণ হলে শিক্ষার্থীরা নিরাপদে এবং সুষ্ঠু পরিবেশে পড়াশোনা করতে পারবে। আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করছি, আমাদের এই চরম দুর্দশার দিকে একটু নজর দিন।
মুরাদনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সফিউল আলম তালুকদারও এই পরিস্থিতি স্বীকার করে বলেন, শিক্ষার্থীদের সঠিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে নতুন ভবন নির্মাণ এবং পুরোনো ভবনগুলোর সম্প্রসারণ খুবই জরুরি। শিক্ষার পরিবেশ উন্নত করতে সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।